দেশে বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত একটি নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। গত সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে একটি তত্ত্বাবধায়ক (অন্তর্র্বর্তীকালীন) সরকার রয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণে অর্থনীতিতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। যারা নতুন শিল্প স্থাপন বা ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন, তারাও একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা করছেন।বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যত দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটি বৈধ সরকার গঠিত হবে, তত দ্রুত দেশের অর্থনৈতিক গতি ফিরে আসবে, বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।এই শিল্প মালিক জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় তার একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে বেকার যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শিল্প খাতে নিয়োজিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।মতবিনিময় সভায় সাহিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের সভাপতি শহিদুজ্জামান তোরিক, জামান গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ, চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচিসহ স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩ দিন আগে
ঈদুল ফিতরের ধারাবাহিকতায় ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করেও দেশে রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছে। গত মার্চে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা এক মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয়। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মে মাসেও এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার। এমনকি জুন মাসের শুরুতেই এই ধারা বজায় রয়েছে। জুনের প্রথম তিন দিনে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ আয়। এদিকে দ্বিতীয় মাসের মতো সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। মাঝে বেশ কিছু মাস এটি যুক্তরাষ্ট্রের দখলে থাকলেও পূর্বে সৌদি আরব থেকেই বাংলাদেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসত।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ দশমিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে মাত্র এক অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এই প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী এ সংখ্যা ২০ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার।উল্লেখ্য, এই হিসাব পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়বদ্ধ ও অলভ্যাংশ বাদ দিয়ে কেবল প্রকৃত রিজার্ভ দেখানো হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠিয়ে থাকেন, যাতে দেশে তাদের প্রিয়জনেরা উৎসব আনন্দে অংশ নিতে পারেন। এই উৎসবকালীন প্রেরণায় প্রবাসী আয় অনেক সময় দ্বিগুণ হয়ে যায়। মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে প্রাপ্ত মোট ২৯৭ কোটি ডলারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার এসেছে সৌদি আরব থেকে, যা প্রায় ১৮ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত (৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার) ও তৃতীয় যুক্তরাজ্য (৩৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার)। এরপর রয়েছে মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর। অপরদিকে, মার্চে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার। এরপরে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত (৫০ কোটি ৮৩ লাখ), সৌদি আরব (৪৪ কোটি ৮৪ লাখ), যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়া।রেমিট্যান্সের প্রকৃত উৎস নির্ধারণ : বিগত বছরগুলোতে রেমিট্যান্সের উৎস হিসেবে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্র, আমিরাত বা যুক্তরাজ্যকে শীর্ষে দেখা গেলেও বাস্তবে অনেক সময়ই এগুলো ছিল ‘ক্লিয়ারিং দেশের’ ভিত্তিতে।সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স মূলত আনুষ্ঠানিক চ্যানেল হিসেবে ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে দেশে আসে। এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে সংগৃহীত রেমিট্যান্স স্থানীয় ব্যাংকগুলো কিনে নেয় এবং সুবিধাভোগীদের কাছে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিট্যান্সের বড় অংশই আসে এই এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে। যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউজ নিবন্ধিত, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সবচেয়ে এগিয়ে। ফলে প্রবাসীরা পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই টাকা পাঠান না কেন, অনেক সময় সেই অর্থ ক্লিয়ার হয় ওই নিবন্ধিত দেশ থেকেই।উদাহরণস্বরূপ, কেউ সৌদি আরব থেকে অর্থ পাঠালেও, যদি তা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে পাঠানো হয়, তাহলে তা রেকর্ড হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্স হিসেবে। এই প্রক্রিয়ার কারণে বেশ কিছু বছর ধরে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে প্রকৃত উৎস নয়, বরং এক্সচেঞ্জ হাউস- নিবন্ধনের দেশগুলোর নাম উঠে আসছে। কারণ, বেশির ভাগ ব্যাংক ক্লিয়ারিং-এর দেশকেই রেমিট্যান্সের উৎস দেশ হিসেবে দেখিয়ে রিপোর্ট করত, প্রকৃত উৎস নয়। এই ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ হিসেবে অনেক সময় প্রকৃত দেশ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম প্রকাশ পেয়েছে।এ পরিস্থিতির পরিবর্তনে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে প্রতিটি ব্যাংক প্রকৃত উৎস দেশ অনুযায়ী রেমিট্যান্স হিসাব করে রিপোর্ট প্রদান করে। এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় এখন রেমিট্যান্সের সঠিক উৎস দেশ চিহ্নিত হচ্ছে এবং তথ্য উপস্থাপনেও স্বচ্ছতা ফিরেছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রতিমাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের মার্চে, রেকর্ড পরিমাণ ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে। এটি ওই মাসে সর্বোচ্চ উৎস দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এই জোয়ারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো আগের মতো ডলার সংকটে নেই, আর বাজারে অস্থিরতা অনেকটাই কমেছে। আমদানি দায় পরিশোধ, এলসি খোলা কিংবা রিজার্ভ ব্যবস্থাপনাতেও এখন তুলনামূলক স্বস্তি দেখা যাচ্ছে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতেই রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে, যা একটি ইতিবাচক মাইলফলক হবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান গণমাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ৫ শতাংশ রেমিট্যান্স কর বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। এ ধরনের পদক্ষেপ কার্যকর হলে আগামী দিনে প্রবাসীরা আনুষ্ঠানিক চ্যানেল এড়িয়ে অনানুষ্ঠানিক বা হুন্ডি চ্যানেলের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ বাড়বে।তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। ব্যাংকিং সেবা সহজ ও কার্যকর করা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বাড়ানো এবং কম খরচে দ্রুত টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে সক্রিয় যোগাযোগ জরুরি, যাতে তারা এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে অবহিত থাকেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩ দিন আগে
বিশ্ববাজারে চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আবারও বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়েছে সোনার বাজার। মার্কিন-চীন বাণিজ্যে শুল্ক নিয়ে ইতিবাচক আলোচনায় বিশ্ববাজারে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম কমছে।সপ্তাহের শুরুর তুলনায় মঙ্গলবার (১০ জুন) স্বর্ণের দামে হালকা পতন দেখা গেছে। তবে দাম এখনও তুলনামূলকভাবে উচ্চ পর্যায়েই রয়েছে।খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিনের শুরুতে দুবাইয়ের বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনা প্রতি গ্রাম ৩৯৮.৫০ দিরহামে বিক্রি হচ্ছিল। ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেটের দাম ছিল যথাক্রমে ৩৬৯, ৩৫৪ এবং ৩০৩ দিরমা। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ৩ হাজার ৩০৮.০৫ ডলার যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ০.৭৭ শতাংশ কম।বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক চাকরির বাজার সংক্রান্ত তথ্য, সুদের হার নিয়ে রাজনৈতিক চাপ ও ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারণ- সব মিলিয়ে সোনার দামে সাময়িক টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে।এদিকে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সুদের হার ১ শতাংশ কমানো দরকার এবং ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল দেশের ক্ষতি করছেন। তার এই বক্তব্য বাজারে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।বেলবারকা বলেন, ফেড অতীতেও রাজনৈতিক চাপ সামলেছে, কিন্তু এখন বাজার ভাবছে-ফেড আদৌ কতটা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এই অনিশ্চয়তা স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে, কারণ অনেকেই এখন এটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন।তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে সোনার দাম কিছুটা ওঠানামার মধ্যে আছে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক তথ্যের কারণে সুদের হার না কমার সম্ভাবনা বাড়লেও, অনেকে এখনও হার কমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। আজ গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় দাম মূলত বাজারের মনের ওপর নির্ভর করছে।তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি ট্রাম্প আবার উত্তেজনাপূর্ণ কিছু বলেন বা চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে টানাপোড়েন বাড়ে, তাহলে সোনার দাম ৩ হাজার ৩৫০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর ফেড যদি কড়া অবস্থান নেয়, তাহলে দাম ৩ হাজার ৩০০ ডলারের আশেপাশে স্থির থাকতে পারে।ভোরের আকাশ/আজাসা
৪ দিন আগে
চলতি বছর সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালেও বাস্তবে বাজারে তার প্রতিফলন নেই। বিশেষ করে গরুর কাঁচা চামড়া আগের মতোই কম দামে হাতবদল হচ্ছে। আর অন্যান্য বছরের মতো এবারও ছাগলের চামড়া কিনতে আগ্রহ দেখাননি অধিকাংশ আড়তদার।ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামেও চামড়া নিয়ে হতাশার খবর পাওয়া যাচ্ছে সংশ্লিদের কাছ থেকে। সেখানে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি নিয়ে এবারও বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ঈদের দিন দুপুর থেকেই নগরীর বিভিন্ন মোড়ে সড়কের ওপর চামড়া সাজিয়ে অপেক্ষা করলেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি তারা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির পশুর চামড়ার দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও সেটি প্রতিপালন হচ্ছে না মাঠ পর্যায়ে। ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই বড় গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে। ছোট গরু হলে দাম আরও কম।বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, গতবারের চেয়ে এবার দাম ৫ টাকা বাড়ানো হলেও রাজধানীতে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না চামড়া। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকায় কুরবানির গরুর কাঁচা চামড়া মানভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বরাবরের মতো ছাগলের চামড়ায় আগ্রহ নেই ব্যাপারিদের।মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম বলে ৫০০ টাকা। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, কিন্তু তারা তো কিনবে না। যারা মাঠ পর্যায়ে কেনে, তারা দাম না দিলে কী করবেন?’তারই প্রতিবেশী রাইসুল বলেন, ‘গরিবের এই হকের ওপর যদি সরকার নজরদারি করতো তাহলে ভালো হতো। দাম নির্ধারণের পর সেই দামের অর্ধেকও দিতে চাইছেন না ক্রেতারা।’অপরদিকে বিক্রেতাদের দাবি, চামড়ার মান তুলনামূলক ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য মিলছে না।সরেজমিনে ঘুরে তুলনামূলক ছোট আকারের গরুর কাঁচা চামড়ার দাম সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত হাঁকছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে মানভেদে বেশিরভাগ গরুর চামড়ার দাম হাঁকানো হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।একাধিক আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এমনটাই জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, না বুঝেই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসেন। তবে চামড়ার বাজার ভালো না।এদিকে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের আড়তদাররা বলছেন, লবণযুক্ত সংরক্ষিত চামড়ার জন্য যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কাঁচা বা লবণবিহীন চামড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ফলে বেশি দামে চামড়া কিনে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী লোকসানের মুখে পড়ছেন।মোহাম্মদ হোছাইন নামের এক মৌসুমি বিক্রেতা বলেন, প্রতিটি চামড়া গড়ে ৪০০ টাকায় কিনেছি। আড়তদাররা বলছেন ৩০০ টাকা পর্যন্ত দিতে পারবেন। এবারও তো শুধু লোকসানই হবে। গত বছরও ৫০ হাজার টাকার মতো লোকসান দিয়েছিলাম।মো. এহেসান নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ৫০টা বড় গরুর চামড়া কিনেছি গড়ে ৪৫০ টাকা করে। বিকেলে বিক্রি করেছি ৩৭০ টাকা করে।প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কুরবানি ঈদে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ট্যানারি মালিকেরা। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাঁচা চামড়া কিনছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চলতি বছর চামড়ার সরবরাহ ভালো হলেও ছোট গরুর চামড়াই বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি চামড়ায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দাম রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।ভোরের আকাশ/আজাসা
৬ দিন আগে