× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার
Image

ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তির বাধা দূর করতে হবে


দেশে রোগমুক্ত সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ড্রামে খোলা ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ একটি বড় বাধা। একইসাথে ভোজ্যতেলে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধকরণ ও গুণগত প্যাকেজিং অত্যন্ত জরুরি। রাজধানীর বিআইপি কনফারেন্স রুমে আজ (২৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত “সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়" শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞগণ। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।কর্মশালায় জানানো হয়, জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, প্রাক্‌-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন ‘এ’ এবং দুইজন শিশু ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাত করা নিষিদ্ধ। আইসিডিডিআর,বি-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে কোনো ভিটামিন এ নেই, আর ৩৪ শতাংশ তেলে রয়েছে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাত্রায়। মাত্র ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইন অনুসারে ভিটামিন এ-এর নির্ধারিত পরিমাণ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আইনটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।কর্মশালায় আরও জানানো হয়, নন-ফুড গ্রেড উপকরণে তৈরি ড্রাম দিয়ে ভোজ্যতেল পরিবহন করা হয়- যেগুলো আগে কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ধরনের ড্রামে সংরক্ষিত খোলা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, পাশাপাশি এতে ভেজাল মেশানোর আশঙ্কাও থাকে। এই পুরোনো ড্রামগুলোতে কোনো লেবেল বা উৎস সম্পর্কিত তথ্য না থাকায় তেলের উৎপত্তিস্থল বা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা যায় না। তাই খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ আইন বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।কর্মশালায় জানানো হয়, জুলাই ২০২২ এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর ২০২২ এর পর থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাই নিরাপদ ভোজ্যতেল ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।ভিটামিন এ-এর ঘাটতি অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুসহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাব রিকেটস ও হাড় ক্ষয়ের পাশাপাশি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে, ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ ও ডি সমৃদ্ধকরণ একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে সহজেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পেতে পারে।এছাড়াও কর্মশালায় ভোজ্যতেলে গুণগতমানের প্যাকেজিং নিশ্চিতের উপরও জোর দেওয়া হয়। সাধারণত সূর্যরশ্মিসহ যেকোন আলোর সংস্পর্শে ভিটামিন এ নষ্ট হতে থাকে এবং একপর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। ভোজ্যতেল বাজারজাত হয় যেসব বোতলে সেগুলোর অধিকাংশই আলো প্রতিরোধী না হওয়ায় ভোজ্যতেলের গুণগত ও পুষ্টিমান হ্রাস পায়। সে কারণে ভোজ্যতেলের প্যাকেজিংয়ের জন্য আলো প্রতিরোধী অস্বচ্ছ উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর উপপরিচালক (সিএম) এস এম আবু সাঈদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, কনসালটেন্ট ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম, বাংলাদেশ ফার্স্ট পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোর্শেদ নোমান, এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন কান্ট্রি এডভোকেসি বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রীনা রাণী পাল এবং প্রজ্ঞা’র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার। ভোরের আকাশ/মি 

১৩ ঘন্টা আগে

Image

সকালে নাস্তা না করলে যে শরীরে ক্ষতি হয়


ক্ষুধা পেলেও অনেক সময় আমরা এড়িয়ে যাই বা দেরি করে খাই। সকালে না খেয়ে ডায়েট করেন এতে শরীর আস্তে আস্তে বিপদের দিকে ধাবিত হয়। সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি মেলে ও কম ক্লান্তিবোধ হয়। আবার যারা অতিরিক্ত ওজনে ভুগছেন সকালের নাস্তা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রেকফাস্ট নিঃসন্দেহে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় ২৬০ ক্যালোরির বেশি খায়, তাদের ওজন যারা সকালে নাস্তা করে না তাদের তুলনায় অন্তত এক পাউন্ড বেশি হয়। তবে সকালের নাস্তায় ক্যালসিয়াম ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।পুষ্টিবিদদের মতে, সকালের খাবার কখনো এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। কারণ ব্রেকফাস্ট আপনাকে দেবে শক্তি। সকালে ভরপেট নাস্তা করলে দিনের পরের দিকে আপনার খুব বেশি ক্ষিদে লাগবে না। ফলে এটা সেটা খাওয়ার দরকার পড়বে না। আর আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানোর জন্য নাস্তা বেশ জরুরি।ঠিক তেমনই সকালের নাস্তা বাদ দিলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যার মধ্যে অন্যতম হলো ডিমেনশিয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি চারগুণ বাড়িয়ে তোলে সকালে নাস্তা না করা হলে।২০১১ সালে জাপানিজ জার্নাল অব হিউম্যান সায়েন্সেস অব হেলথ-সোশ্যাল সার্ভিসেস এ প্রকাশিত ফলাফলে জানা গেছে এই তথ্য। এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল জীবনযাত্রার অভ্যাস ও ডিমেনশিয়ার মধ্যকার যোগসূত্রতা বোঝা। সকালে নাস্তা বাদ দিলে আরও যেসব রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দিনের পর দিন সকালের নাস্তা না করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ সকালে নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্বাস্থ্যকর নাস্তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।দেখে নিন সকালে না খাওয়ার ৫টি খারাপ প্রভাব-১. রক্তে চিনি কমে যায়: রাতভর উপবাসের পর শরীর গ্লুকোজের অভাবে পড়ে। নাশতা না করলে শক্তির ঘাটতি হয়, ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা মনোযোগের অভাব হতে পারে।২. বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়: সকালের নাশতা বিপাকক্রিয়া চালু করে। নাশতা না করলে শরীর শক্তি সাশ্রয় করার দিকে চলে যায়, ফলে ওজন কমার পরিবর্তে মেটাবলিজম কমে যেতে পারে।৩. অতিরিক্ত ক্ষুধা ও ওভারইটিং: নাশতা বাদ দিলে দুপুর বা পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগে, তখন অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলা হয়, যা ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়।৪. মানসিক অবস্থা খারাপ হতে পারে: নাশতা না খেলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, মনোযোগ কমে, স্মৃতিশক্তিও সাময়িকভাবে দুর্বল হতে পারে।৫. দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত নাশতা না খাওয়ার অভ্যাস থাকলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।ভোরের আকশ/এসআই

১৪ ঘন্টা আগে

Image

ডেঙ্গুর ভয়াবহতার শঙ্কা


চলতি বছর দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, স্থবির হয়ে পড়েছে মশক নিধন কার্যক্রম। উঁকি দিচ্ছে ডেঙ্গুর পিক মৌসুম। ডেঙ্গু মোকাবিলার প্রাক প্রস্তুতি চোখে পড়ছে না। বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হবে জলাবদ্ধতা। বাড়বে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তবে এবার মশক নিধন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থার্ড পার্টি থেকে সরিয়ে সেনাবাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।ডেঙ্গুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর হলো ডেঙ্গুর পিক মৌসুম। তবে জুন থেকেই ডেঙ্গুরোগী ও মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে। ডেঙ্গুরোগের বাহক এডিস মশার বংশবিস্তারের তিন স্তর হলো- লার্ভা, বাড়ন্ত ও উড়ন্ত। লার্ভা ধ্বংসে সফলতা দেখাতে পারছেন না দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সীমিত সংখ্যক বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করে লার্ভা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাড়াতে হবে জনসম্পৃক্ততা।গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক চার শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ছয় শতাংশ নারী রয়েছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৮ জন মারা গেছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২০২৪ সালে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর ৫৭৫ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। বছরের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয় ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। তাদের মধ্যে ছাড়া পেয়েছে ১ লাখ ৪০ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছরের জানুয়ারিতে ১৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৫ জন, মার্চে ৬ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ১২ জন, জুনে ৮ জন, জুলাইয়ে ১৪ জন, আগস্টে ৩০ জন, সেপ্টেম্বরে ৮৭ জন, অক্টোবরে ১৩৫ জন, নভেম্বরে ১৭৩ জন এবং ডিসেম্বরে ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী : বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। অবস্থা এমন যে, শুধু রাতে নয় দিনেও কয়েল জ্বালিয়ে বা মশারির মধ্যে থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশনের চলমান কার্যক্রম কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর। ফলে দিন দিন মশা বাড়ছে বলে দাবি তাদের। নগরবাসীর শঙ্কা, বর্ষা শুরুর আগেই মশা নিধনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব পুনরায় বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।রাজধানীর মগবাজার এলাকার দিলুরোডের বাসিন্দা জয়নাল মিয়া বলেন, ছয়তলায় একটি ফ্লাটে স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকি। মশার উৎপাত এতই বেশি যে সন্ধ্যার পর ছেলে-মেয়েকে মশারির মধ্যে রাখতে হয়। মশার যন্ত্রণায় বাসায় কোথাও একটানা বসে থাকা যায় না। মশার কামড়ে স্বাভাবিক কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিন্তু মশা মারতে করপোরেশনের লোকজন স্প্রে করে গেলেও তা কোনো কাজে দিচ্ছে না।নগরীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা ইয়াসমিন আক্তার জানান, দিনেও ঘরের মধ্যে মশার যন্ত্রণায় থাকা যায় না। কয়েল জ্বালালেও মশা যায় না। সন্ধ্যার পর তো এই অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মনে হয় যেন মশা উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ২৪ ঘণ্টা ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। বাচ্চাদের তো মশারির মধ্যেই রাখতে হয়।রাজধানীর ফার্মগেটের তেজকুনিপাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে, আর বৃষ্টিতে এডিস মশা বৃদ্ধি পায়। তাতে ডেঙ্গুর প্রকোপও বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। সাধারণত বর্ষার সময়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি। এ সময়কে ডেঙ্গুর মৌসুম বলা হয়। তবে সিটি করপোরেশন যে ওষুধ ছিটাচ্ছে, তা মশা মারতে কতটা কার্যকর পরীক্ষা করে দেখা দরকার।’ শুধু এই কয়েকটা এলাকা নয়, পুরো রাজধানীজুড়ে চলছে মশার উৎপাত।কার্যকর মশক নিধন ও জনসচেতনতার বিকল্প নেই : বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ ভোরের আকাশকে বলেন, ‘আমাদের মশা মারার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু মশা মারার সঠিক পদ্ধতি ও ব্যবস্থাপনা এখনো গ্রহণ করা হয়নি।বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি পদ্ধতি প্রয়োগ করে ধাপে ধাপে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ এখনই হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সামনে বিপদ। তাই রোগী যাতে আর না বাড়ে সে জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। মশার নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এটার সমাধান সম্ভব না। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর অন্য রোগব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। যে কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সারোয়ার ভোরের আকাশকে বলেন, শত্রুর সঙ্গে তো আপনি ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে লড়াই করতে পারবেন না। আবার এই লড়াইয়ের জন্য আপনার পর্যাপ্ত সামরিক জ্ঞান থাকতে হবে। তা না হলে আপনার গুলি শত্রুর গায়ে না লেগে নিজের গায়েও লাগতে পারে। আমরা তো শত্রু চিনি। এডিস মশা। কিন্তু দেশে মশা মারার সঠিক ব্যবস্থাপনা তো নেই। ওষুধের প্রয়োগ, সঠিক সময় ও প্রশিক্ষিত জনবল- এই তিনটি ব্যবস্থা বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপনায় থাকতে হবে। কিন্তু আমরা কী সেটা করতে পারছি? ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কিটনাশক ছিটানো ছাড়া তো সংঘবদ্ধভাবে কোনো কাজ নেই। কীটততত্ত্ববিদ দিয়ে দল গঠন করে এডিস মশার প্রজননস্থল খোঁজা হচ্ছে না, মশার লার্ভা ধ্বংস করা হচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গুও নিয়ন্ত্রণে আসছে না।জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের মানসম্মত ব্যবস্থাপনার (স্ট্যান্ডার্ড ম্যানেজমেন্ট) মধ্য দিয়ে সেবা দিতে হবে। ডেঙ্গু চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গাইডলাইন মেনে সেবা দিলে মৃত্যুহার কমে আসবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত ও ভর্তির তথ্যর মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। রোগীর সংখ্যা ঠিক না থাকায় ব্যবস্থাপনায় মুশকিল হয়।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, দেশে ডেঙ্গুজ্বরে মৃত রোগীর হার অনেক বেশি। মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করলে সমস্যাগুলো শনাক্ত করা যাবে এবং সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া যাবে। হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গুর ক্রস ট্রান্সমিশন হচ্ছে। হাসপাতালে রোগী দেখতে এসে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। জনবল কম থাকায় পরিচ্ছন্ন রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরেও আমরা ডেঙ্গু ওয়ার্ডের রোগীদের মশারির ভিতরে রাখার চেষ্টা করি। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সিটি করপোরেশন সহযোগিতা করলে সমন্বিতভাবে কাজ করা সম্ভব। এভাবে ক্রসট্রান্সমিশনের ঝুঁকি কমানো যাবে।ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ক্রসট্রান্সমিশন ঠেকাতে আমরা হাসপাতালগুলোতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নিচ্ছি। ডিএনসিসির উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে ডেঙ্গু টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মশক নিধনে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এম এইচ চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। মশা মারা হচ্ছে না, ডেঙ্গুর ভাইরাস নিয়ে গবেষণা হচ্ছে না এবং মশা মারার জন্য পরিকল্পনাও নেই। অবশ্য এ পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনও অনেকাংশে দায়ী। তার আশঙ্কা, কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় ডিসেম্বরেও ভোগাতে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ।মশক নিধন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে সেনাবাহিনী : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ‘বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের পরিবর্তন হয় কিন্তু মাঠপর্যায়ের তেমন কোনো কর্মী পরিবর্তন হয় না। আমরা প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করে থাকি তবে থার্ড পার্টিরা মূলত ব্যবসা করার জন্য আসে। তাই মশক নিধন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থার্ড পার্টি থেকে সরিয়ে সেনাবাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে।’গত মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে ডিএনসিসি নগর ভবনের হল রুমে ‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন খাল পরিষ্কার ও মশক নিধনের জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মাসে জনপ্রতি বিল দেওয়া হয় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু এই কর্মীরা আসলে হাতে পান ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রায় ১০ হাজার টাকা নাই। এক হাজার লোকের ১০ হাজার টাকা নাই মানে কোটি টাকার বাণিজ্য। আমরা মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সরাসরি বিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ভোরের আকাশ/এসএইচ

৫ দিন আগে

Image

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু


দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দুজনই বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।শনিবার (১২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ জন ভর্তি হন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে।ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা তিনজন করে মোট ছয়জন। ঢাকা বিভাগের জেলা পর্যায়ে ভর্তি রোগী চারজন। বাকি দুজন চট্টগ্রাম বিভাগের।গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনসহ চলতি বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৬ জন।ভোরের আকাশ/এসএই

২ সপ্তাহ আগে

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৯ জন

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৯ জন

১০ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৩০ এএম

সব হাসপাতালে হচ্ছে সরকারি ফার্মেসি, স্বল্প দামে মিলবে ওষুধ

সব হাসপাতালে হচ্ছে সরকারি ফার্মেসি, স্বল্প দামে মিলবে ওষুধ

০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০৭ এএম

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

০৭ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৪ এএম

বাংলাদেশে বছরে এক লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু

বাংলাদেশে বছরে এক লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু

০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৫৯ এএম

বিএমইউ’র বহির্বিভাগ ২৯ মার্চ ও ২ এপ্রিল খোলা

বিএমইউ’র বহির্বিভাগ ২৯ মার্চ ও ২ এপ্রিল খোলা

২৭ মার্চ ২০২৫ ০২:১৫ পিএম

বাজেটে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: কর্মশালায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

বাজেটে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে: কর্মশালায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

১৯ মার্চ ২০২৫ ০৪:৩২ পিএম

ওষুধের বাজার চরম অস্থির

ওষুধের বাজার চরম অস্থির

১৯ মার্চ ২০২৫ ১২:২৪ পিএম

বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি মুক্তাদির, মহাসচিব জাকির

বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি মুক্তাদির, মহাসচিব জাকির

১৭ মার্চ ২০২৫ ০১:৩৬ পিএম

ভুয়া চিকিৎসকদের  দৌরাত্ম্য কমেনি

ভুয়া চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য কমেনি

১৫ মার্চ ২০২৫ ০২:৩৬ পিএম

পদোন্নতির জন্য দ্বারে দ্বারে  ঘুরছেন এক চিকিৎসক

পদোন্নতির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক চিকিৎসক

০৩ মার্চ ২০২৫ ০৩:০২ পিএম