ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫ ০১:২৫ এএম
মাইগ্রেন কমাতে ১২টি প্রাকৃতিক উপায়
মাথাব্যথার মধ্যে সবচেয়ে কষ্টদায়ক হলো মাইগ্রেন। এটি সাধারণত মাথার এক পাশে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং সঙ্গে থাকে বমিভাব, আলো ও শব্দে সংবেদনশীলতা। ওষুধ ছাড়াও কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে মাইগ্রেনের ব্যথা অনেকাংশে উপশম করা সম্ভব।
নিচে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ১২টি প্রাকৃতিক পদ্ধতি তুলে ধরা হলো—
১. শরীরে পানিশূন্যতা রোধ করুন
পর্যাপ্ত পানি না খেলে মাইগ্রেনের ঝুঁকি বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন। চাইলে ডাবের পানি বা হারবাল চা পান করলেও উপকার পাবেন।
২. ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক দিন
কপালে ঠাণ্ডা কমপ্রেস বা গলায় গরম প্যাড ব্যবহার করলে ব্যথা ও পেশির চাপ হ্রাস পায়। ঠাণ্ডা সেঁকে স্নায়ুর শীতলতা আসে, গরম সেঁকে পেশি শিথিল হয়।
৩. মানসিক চাপ কমান
স্ট্রেস মাইগ্রেনের একটি বড় কারণ। নিয়মিত মেডিটেশন, শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ এবং রিল্যাক্সেশন ব্যায়াম মানসিক প্রশান্তি আনে।
৪. ঘুমের মান ঠিক রাখুন
ঘুমের অভাব মাইগ্রেন বাড়াতে পারে। প্রতিদিন ৭–৯ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুমানোর আগে স্ক্রিন এড়িয়ে চলা, ঘর অন্ধকার রাখা এবং নিরিবিলি পরিবেশ বজায় রাখুন।
৫. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন
আদা মাথাব্যথা ও বমি উপশমে কার্যকর। আদা চা বা ক্যাপসুল গ্রহণ করা যায়। পিপারমিন্ট ও ল্যাভেন্ডার অয়েল মাথায় মালিশ বা ঘ্রাণ নেওয়ার মাধ্যমে আরাম দেয়।
৬. নিয়মিত ও সুষম খাবার গ্রহণ করুন
অনিয়মিত খাবার গ্রহণ বা খালি পেটে থাকা মাইগ্রেনকে বাড়াতে পারে। প্রতি ৩–৪ ঘণ্টা অন্তর কিছু খাওয়ার অভ্যাস করুন। চকলেট, পুরনো চিজ, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও কৃত্রিম মিষ্টি এড়িয়ে চলুন।
৭. প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করুন
ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি২, ওমেগা–৩, ও CoQ10—এইসব উপাদান স্নায়ুর কাজ ঠিক রাখে ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
৮. ট্রিগার শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করুন
মাইগ্রেন ডায়েরি রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন—কী খেয়েছেন, কেমন ঘুম হয়েছে, কী ধরনের পরিবেশে ছিলেন—এসব লিখে রাখলে ট্রিগার বোঝা সহজ হবে।
৯. হালকা ব্যায়াম করুন
নিয়মিত শরীরচর্চা যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম বা সাঁতার স্নায়ুকে সক্রিয় ও শিথিল রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যোগব্যায়ামে মাইগ্রেনের মাত্রা ও ঘনত্ব কমে।
১০. অ্যাকুপ্রেশার ও আকুপাংচার চর্চা করুন
শরীরের নির্দিষ্ট অংশে (যেমন—হাতের LI–4 পয়েন্টে) চাপ প্রয়োগে ব্যথা উপশম হতে পারে। আকুপাংচারে সূচ প্রয়োগের মাধ্যমে শরীরের শক্তি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
১১. পা গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন
গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখা রক্ত চলাচল বাড়ায়, যা মাথার ভার কমাতে সাহায্য করে। পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার বা পিপারমিন্ট অয়েল দিলে অতিরিক্ত আরাম পাওয়া যায়।
১২. স্ক্রিন ব্যবহারে সংযমী হোন
দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে মাইগ্রেনের সম্ভাবনা বাড়ে। ‘২০-২০-২০’ নিয়ম অনুসরণ করুন—প্রতি ২০ মিনিটে ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে তাকান। বিশেষ করে রাতে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারে সতর্কতা বজায় রাখুন।
ভোরের আকাশ/হ.র