হাইব্রিড বা নব্যদের বিষয়ে কিছু লেখার আগে একটি সংক্ষিপ্ত পারিবারিক উদাহরণ না বললেই নয়। ধরুন, কোনো শিশুর মা মারা গেলে বা বাবার সঙ্গে তার মায়ের বিচ্ছেদ হলে, বাবা শিশুকে লালন-পালনের জন্য পুনরায় বিয়ে করেন। তখন শিশুটির জীবনে আসে একজন নতুন ‘মা’। শিশুটি তাকে ভালোবাসে, মায়ের মতোই ধরে নেয়, এবং সেই মা-ও শিশুটিকে আপন সন্তানের মতোই লালন-পালন করেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে শিশুটি বড় হলে বুঝে ফেলে, এই ‘মা’ তার জন্মদাত্রী নন। তখন তার হৃদয়ে জন্ম নেয় শূন্যতা। সে খুঁজে ফেরে তার প্রকৃত মাকে। যেখানে থাকুন না কেন, জন্মদাত্রী মা যেন ভালো থাকেন, সেটাই হয় তার প্রার্থনা।রাজনীতির ময়দানেও কিছুটা এমনই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী দলের ক্ষেত্রে বর্তমানে ‘হাইব্রিড’ বা ‘নব্য’ নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য দলের প্রকৃত চেতনা ও আত্মত্যাগের ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গঠিত এই দলটি বিগত প্রায় পাঁচ দশকে পাঁচবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল এবং দুবার বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন আপসহীন নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতে একশ্রেণির নব্য নেতাকর্মীর আগমন ঘটেছে, যাদের অতীতে দলের দুঃসময়ে মাঠে দেখা যায়নি। ২০০৯ সালের পর থেকে ১৬ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী শাসনামলে গুম-খুন, মামলা-হামলা, কারাবরণসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই দুঃসময়ে যারা রাজপথে ছিলেন না, বরং নিজেদের গুটিয়ে রেখেছিলেন, তারাই আজ পদ-পদবি পাওয়ার আশায় সক্রিয়। জনপ্রিয় এই দলটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই অনেকে আবার দলের নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করছেন, জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। এসব ঘটনায় বিএনপিকে পড়তে হচ্ছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। অথচ দলের জন্য যাদের ত্যাগ রয়েছে, তারা দলের ক্ষতি হোক এটা কখনোই চাইবে না।গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর, বিএনপিতে এসব হাইব্রিড নেতার দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। পদ-পদবি নিয়ে সংঘর্ষ, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার-এসব ঘটনায় বিএনপির ত্যাগী ও মূলধারার নেতাকর্মীদের মনে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা দলটিকে আরও চাপে ফেলেছে।যদিও এ ঘটনায় অভিযুক্তদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে, তবুও জনসম্মুখে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। বিএনপিকে লক্ষ্য করে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ও নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় উঠে। জামায়াত ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সমালোচনার মূখে পড়তে হয়েছে খোদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও।আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দলের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নেতা দায়িত্বশীলতার অভাব দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে দলের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিচ্ছেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্য তার উদাহরণ। শোকজ ও বহিষ্কারের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, তার বক্তব্যের প্রভাব থেকে যায়। এতে দলের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা সহজে মেরামতযোগ্য নয়।ইদানীং দেখা যাচ্ছে, ‘বিএনপি’, ‘জিয়া’, ‘আরাফাত রহমান কোকো’ প্রভৃতি নাম ব্যবহার করে প্রায় শতাধিক ভূইঁফোড় সংগঠন গজিয়েছে, এই ভূঁইফোড় সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের নাম করে অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত লোকদের পদ-পদবি দিচ্ছে, এরাই আবার দলবিরোধী কাজে জড়াচ্ছে। এগুলো দলটির ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।বিএনপিকে এখনই এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। তাই বিএনপি ও তার অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে আমি বলতে চাই, হাইব্রিড-নব্যদের দৈারাত্ব এখনই থামান। নতুবা এরাই হবে বিএনপির গলার কাঁটা। এদেরকে চিহিৃত করা উচিত। দলের নেতৃবৃন্দকে বুঝতে হবে, যারা দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন, নির্যাতিত হয়েছেন, তারাই প্রকৃত বিএনপিকর্মী। বিভিন্ন সময়ের দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের চিত্র অবলোকন করলে আচ করা যায় হাইব্রিড-নব্যদের মধ্যে স্নাইপার গ্রুপের সদস্যরাও ঘাপটি মেরে রয়েছে। যারা দেশে-বিদেশে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করার চক্রান্তে লিপ্ত। দলটির হাইকমাণ্ডকেও ভাবতে হবে, সুবিধাজনক সময়ে যারা সুবিধা নিতে এসে ‘বিএনপির লোক’ সেজেছেন, তারাই আদতে দলের ক্ষতির কারণ। এসব হাইব্রিড, সুবিধাবাদী, সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিদের দলে ঠাঁই দিলে দলের অস্তিত্বই প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। আমি মনে করি, আজ প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত শুদ্ধি অভিযান। হাইব্রিড ও নব্যদের সনাক্ত করার পাশাপাশি দলের নেতৃবৃন্দকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দলের প্রতি দায়বদ্ধ, আদর্শনিষ্ঠ, পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের হাতেই দলের ভবিষ্যৎ দায়িত্ব তুলে দিতে হবে। তাহলে বিএনপি আবারও ফিরে পেতে পারে তার হারানো গৌরব।লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
১ মাস আগে
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নিজ বাসভবনে ‘জন সুনওয়াই’ বা জনতার অভাব অভিযোগ শোনার সেশন চলাকালে এক যুবকের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। হামলার পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।জানা গেছে, বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনতে আয়োজিত সাপ্তাহিক জনশুনানি চলছিল। ঠিক তখনই ভিড়ের মধ্য থেকে এক যুবক উঠে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে চড় মারেন এবং চুল ধরে টান দেন বলে অভিযোগ। হামলাকারীর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর।ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা অভিযুক্ত যুবককে আটক করে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ জানতে চাচ্ছে, এই হামলা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, নাকি যুবকটি মানসিক ভারসাম্যহীন।এ ঘটনায় দিল্লির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দিল্লির মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা অভিযোগ করেছেন, ‘বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার উন্নয়নমূলক কাজ সহ্য করতে পারছে না। এটা পরিকল্পিত হামলা বলেই মনে হচ্ছে।’ বিজেপির আরেক নেতা হরিশ খুরানা বলেন, ‘এটা শুধুই হামলা নয়, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত।’অন্যদিকে, আম আদমি পার্টির নেত্রী এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অতীশি ঘটনার নিন্দা করে বলেন, ‘মতবিরোধ ও প্রতিবাদের অধিকার গণতন্ত্রে আছে, কিন্তু হিংসার কোনো স্থান নেই।’ তিনি দ্রুত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।ঘটনার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১ মাস আগে
২১ জুলাই, রোববার, ২০২৪। সারাদেশে কোটা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে কারফিউ জারি করে সরকার। নির্বাহী আদেশে সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়। সুপ্রীম কোর্ট তার উভয় বিভাগে জরুরী কার্যক্রম চালু রাখার কথা বললেও বিচারিক আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখেন।কোটার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল শুনানীর জন্য সকাল ৯ টার পরিবর্তে সকাল ১০ টায় বসে মহামান্য আপীল বিভাগ। যেহেতু, অন্যান্য মামলা কারফিউ-এর মধ্যে হবে না বলে সকালে কোর্টে যাওয়ার কথা থাকলেও বাসাতেই থেকে যাই। দেরিতে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে টিভিতে দেশের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। প্রায় সকল টিভি চ্যানেলে কারফিউ আর আদালতের খবর প্রচার করছে। ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে সরকার।রাজনৈতিক সহকর্মী, বন্ধু বান্ধব অনেকে ফোন করে আদালতের রায় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। ছাত্রদলসহ যে সকল রাজনৈতিক সহকর্মী বিভিন্ন স্থানে আহত হয়েছে, তাদের সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।এসময়ে জানতে পারলাম, আপীল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে সরাসরি বাতিল করে ৭% কোটা রেখে বাকি ৯৩% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের আদেশ প্রদান করে।এখানে উল্লেখ্য যে, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী হাইকোর্টের রায়ে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে প্রাথমিক শুনানী শেষে আপিল বিভাগ উক্ত লিভ-টু-আপিলে লিভ প্রদান করে প্রয়োজনীয় পেপারবুক প্রস্তুত পূর্বক শুনানী গ্রহণ করে রায় প্রদান করে থাকেন এবং এক্ষেত্রে আদালত মনে করলে হাই কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করতে পারেন।কিন্তু এক্ষেত্রে নজীরবিহীন এই রায়ে আদালত সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ এর সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবীকে আইনে গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় নিয়ে ৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় প্রদান করে কোটা প্রথা সংস্কারের জন্য সরকারকে নির্দেশ প্রদান করেন। যেখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫% ও অন্যান্য কোটা ২% সংরক্ষণ করে সরকারকে ৩ (তিন) মাসের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারী করতে বলা হয়।বাস্তবে এই রায় ছিল তৎকালীন ভোটারবিহীন সরকারকে টিকিয়ে রাখার একটি বিচারিক প্রয়াস, কেননা আন্দোলনের পূর্বে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে স্থগিত করেনি।যাইহোক দিনভর বাসায় থেকে বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করি। আমার ছেলে সিমাক শেখ বাসায় থাকলে কম্পিউটারে বসে থাকতে ভালবাসে, সে চিন্তা থেকে ওকে বললাম বাবা চল মসজিদে গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়ি। বাসার গেটের বাইরে এসে দেখি চারটি মটর সাইকেল নিয়ে ৭/৮ জন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে নাম ও গন্তব্য জিজ্ঞাসা করল। আমি তাৎক্ষণিকভাবে উত্তর দিলাম, মাগরিবের নামাজের জন্য বেরিয়েছি। এর পর দুইজন আমাকে টেনে মটর সাইকেলে উঠায়, সামনে একজন ও পিছনে একজন, আর আমাকে মাঝখানে বসিয়ে ধানমন্ডি থানায় নিয়ে আসে।ওসি পারভেজ ইসলাম (পিপিএম, বার, বিপি: ৮২০৪১০০৩৪৭) প্রথমে আমাকে বসতে দেয়, আর সে চেয়ারে বসে টেবিলের উপর পা উঠিয়ে দিয়ে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে। একপর্যায়ে আমার গ্রেফতার অভিযানের দুই জন এসআই এসে আমাকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই শরীরিক নির্যাতন করে ও ক্রস ফায়ারে নিয়ে যেতে চায়।একপর্যায়ে ওসি পারভেজ ইসলাম আমার মোবাইল ব্যবহার করে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য মনির ফরাজিকে কল করে এবং পরে তাকে ধানমন্ডির ৯/এ থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে, আমি দেখতে পাই পুলিশের দুই জন এসআই মনির ফরাজিকে ওসির রুমে নিয়ে আসে, তখন তার দুই হাত পেছনের দিকে হাতকড়া পরা অবস্থায় ছিল, কিছুক্ষণ পর তাকে ওসির রুম থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরবর্তীতে আমি তাকে হাজতের গারদখানায় দেখতে পাই। এরপর আসে দীর্ঘ দেহী আদনান নামের এক লোক, পরে জানতে পারি সে পুলিশের দালাল (ঞড়ঁঃ)।সে আমাকে বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখায় ও মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। এক পর্যায়ে ওসি পারভেজ ফোন দিয়ে আমার স্ত্রী (লিমা) কে থানায় আসতে বলে। লিমা আসার পর আদনান ও পারভেজ মিলে আমার কাছে টাকা দাবী করে এবং সাথে আসা আমার এ -লেভেল পড়ুয়া মেয়েকে কোটা আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কথা বলে গ্রেফতারের ভয় দেখায়।তাৎক্ষণিক লিমা পারভেজকে দুই লক্ষ টাকা দিলে সে কিছুটা ভদ্র আচরণ শুরু করে। তার সহযোগী আমাকে চা বানিয়ে দেয় ও বসতে দেয়। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে আমাকে তিনটি মামলার যে কোন একটিতে গ্রেফতার দেখানোর প্রস্তাব দেয়।মামলাগুলি হল-(১) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাড়ী ভাঙচুর মামলা(২) যাত্রাবাড়ী পুলিশ হত্যা মামলা ও (৩) শঙ্করে গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলাআমি ওসি পারভেজকে বললাম “আমার কোন চয়েজ নেই, আমি কোনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত না”, আপনার বিবেচনা। যাই হোক রাত ১২ টার পর আমাকে লক-আপে ঢুকিয়ে দেয়। সেন্ট্রি এসে আমাকে একটি পানির বোতল দেয়, মাথায় দিয়ে ঘুমানোর জন্য। কিন্তু সারারাত পুলিশ সদস্যরা গারদের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে যার ফলে নির্ঘুম রাত পার করি। সকালে প্রিজন ভ্যানে প্রথমে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে নিয়ে আসে। সেখানে এসে দেখি কারফিউ উপেক্ষা করে আমার ছোট ভাই জাবিরসহ আমার চেম্বারের সকল সহকর্মী ও অসংখ্য গুণাগ্রাহী উপস্থিত। আদালতে এসে জানতে পারলাম আমাকে ধানমন্ডির শঙ্করে গাড়ী পোড়ানো ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামী হিসাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ধানমন্ডি থানার মামলা নং- ১৬ (০৭) ২০২৪ জি. আর ১২১/২০২৪ ধারা-১৪৩/১৪৪/১৪৭/১৪৮/ ১৫০/ ১৫২/১৫৩/ ৩৩২/৩৩৩/৩৫৩ /৩০৭/৮২৭ /৪৩৫/৫০৬ /৩৪ পেনাল কোড ও তৎসহ ৩/৪/৬ ধারা বিস্ফোরক দ্রব্য আইন।মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব আমার জামিন আবেদন বাতিল করে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ধানমন্ডি থানায় পাঠিয়ে দেয়। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মোঃ মারুফ মেহেদী (৯৩২১২৩৮০৬১) আমাকে রিমান্ডে এনে আমার সাথে কোন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেনি, শুধুমাত্র আমার স্ত্রীকে ডেকে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। এই মিথ্যা মামলাটি ধানমন্ডি থানায় দায়ের করে এস আই (নি:)- মোঃ কামরুল ইসলাম (বিপি-৭৬৯.৬০১৩৮৯৬)।একদিন পরেই মামলাটি ধহঃর-ঃবৎৎড়ৎরংস এ বদলী হয়। ২৩ জুলাই, ২০২৪ যখন আমি ধানমন্ডি থানায় রিমান্ডে, রাত প্রায় ১ টা, হঠাৎ ৭/৮ জন সজ্জিত অস্ত্রধারী ও হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্য হাজতের সামনে এসে আমার নাম ধরে ডাকে, আমি সাড়া দিতে তারা আমাকে বের করে, দুই হাতে হাতকড়া পরিয়ে দুজন মিলে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসে, বাকী পুলিশ সদস্যরা আমাদের অনুসরণ করে। নিচ তলায় এসে দেখতে পাই কারফিউ এর মধ্যে লিমা ও আমার বড় বোনের মেয়ে চুমকী দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাদের সাহস দেওয়ার জন্য ধমক দিয়ে বলি, ‘‘কারফিউ এর মধ্যে এত রাতে এখানে কি করছো, দ্রত বাসায় যাও’’। পুলিশ আমাকে একটি কাল রংয়ের মাইক্রোবাসে উঠায়, চির পরিচিত ঢাকা শহর আমার ভীষণ ভিন্ন লাগতে শুরু করে। ফ্যাল ফ্যাল করে বাহিরে তাকিয়ে থাকি। দুচোখ দিয়ে পানি পড়ছে, আমার অনাগত ভবিষ্যতের জন্য নয়, নিরপরাধ দুজন অদম্য সাহসী মহিয়সী মহিলার সাথে খারাপ আচরণের জন্য। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারি আমাকে ডিবি অফিসে আনা হয়েছে। সেখানে আমাকে একটি খাঁচায় ঢুকানো হয়, ঐ একই খাঁচায় আমি, এ্যাডভোকেট ওবায়েদ ভাই ও উত্তরবঙ্গের একটি ছেলে ছিলাম। সারারাত নির্ঘুম কাটে, ফজরের আজান শুনতে পাই। ফজরের নামাজ আদায় করি। সকাল ৭টার দিকে পলিথিনে বাধা একটু ডাল ও দুটো রুটি খাঁচার মধ্যে আমাকে খেতে দেওয়া হয়। খাওয়ার চেষ্টা করি। সকাল ১১ টায় আমাকে খাঁচা থেকে বের করে হাতকড়া পরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। মামলার পরবর্তী আইও এসএম রাইসুল ইসলাম, সিটিটিসি, ডিএমপি ঢাকা আমার সাথে অত্যন্ত সৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং নির্ভয় প্রদান করে। পরে ডিবি অফিস চত্ত্বরে নিয়ে একটি প্রিজন ভ্যানে ওঠানো হয়। প্রচন্ড গরমে প্রায় শতাধিক আসামীর মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে মনে হচ্ছিল মারা যাচ্ছি, কিছুক্ষণ পরে প্রিজন ভ্যানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ওঠানো হয় ও আদালতে আনা হয় । আদালতে আমার জামিন শুনানী করেন এ্যাড. ফয়সাল হাসান আরিফ ও এ্যাড. মিজানুর রহমান। আমি আইনজীবী বিধায় আমাকে কিছু বলতে বলা হয়।আমি আদালতে বলি, ‘‘আপনি বিচারক, বিচারকের আসন অত্যন্ত পবিত্র, আল্লাহ-ই বিচারের মালিক, আপনি দুনিয়ায় বসে বিচার করছেন, পবিত্রতম জায়গায় বসে অবিচার করবেন না, আপনি যদি ন্যায় বিচার না করেন, তবে আপনার সন্তানের নিকট আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে, কাল কিয়ামতের মাঠে জবাব দিতে হবে। চাকুরীর ভয় পাবেননা, আমাকে জামিন দিয়ে প্রমাণ করেন আপনি ন্যায় বিচার করতে পারেন, কারণ ঋওজ ও ঢ়ড়ষরপব ভড়ৎধিৎফরহম-এ আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই ”। আরো অনেক কথা বললাম, কিন্তু মো: তোফাজ্জল হোসেন, অতি: চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা আমার জামিন আবেদন খারিজ করে আমাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন। তখন বিচারককে বললাম, ’’ঠিক আছে স্বাধীন দেশে দেখা হবে’’। বিস্ময়কর বিষয় হল, যে সকল পুলিশ ভাইয়েরা আমাকে আদালতে আনা নেওয়া করেছেন তারা সবাই বকশিস চাচ্ছে। আমি তো রিমান্ড থেকে আসছি, আমার কাছে কিছুই নেই। ওষ্ঠাগত প্রাণ নিয়ে আমার পাশে যারা ছিল তাদেরকে বললাম ওদেরকে ঃধশব পধৎব করার জন্য।এরপর প্রিজন ভ্যানে আমাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। কারাগারের গেটের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আমাকে পাঠানো হয় “আমদানী’’ নামক জায়গায়। বিশাল হলরুম প্রায় ৪/৫ শত কয়েদী। কারাগারে অনেকগুলি ভবন রয়েছে, এর একটি ’’মেঘনা’’। মেঘনার নীচতলায় এই ’’আমদানীর’’ অবস্থান। আমার সাথে থাকা এ্যাডভোকেট ওবায়েদ ও আমি অসহায় অবস্থায় ঘুরাফেরা করছি। এর মধ্যে অল্প বয়সী একটি ছেলে এসে আমাদের বসার জন্য ও পরবর্তীতে রাতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করল। পরদিন সকালে আমাকে ও ওবায়েদ ভাইকে একই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় স্থানান্তর করা হল। আমার একটা কয়েদী নম্বর পড়ল, নাম্বারটি হল ২৯৯৬৮/২৪। আমি মেঘনা সেলের তৃতীয় তলার ২ নং সেলের বন্দী। এই সেলে মোট ৩৫ জন বন্দী রয়েছে। সবাই ঢাকার বিভিন্ন থানার নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হয়ে এসেছে। আমাদের সেলে ২২ বছরের ছাত্র থেকে শুরু করে ৬৭ বৎসরের সিনিয়র সিটিজেন রয়েছে। রয়েছেন চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ। মেঘনার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এই কাম্পাসের মধ্যে একটা বেকারী আছে যেখানে পাউরুটি, চানাচুর, বিস্কিট, ড্রাই কেকসহ বিভিন্ন ধরনের টাটকা বেকারী আইটেম পাওয়া যায়। যদিও বেকারির সামনে হাজার হাজার মাছি ভনভন করতে থাকে সারাক্ষণ। বাসায় কিংবা অফিসে একটা মাছি ঢুকলে তা তাড়ানোর জন্য কি প্রাণপণ প্রচেষ্টা। কিন্তু তখন হাজার হাজার মাছি দেখেও আমার কোন ঘৃণা হয়নি, মনে হয়েছে আমার মত এক একটা প্রাণী এবং ওরা অনেকটা স্বাধীন। ইচ্ছামত উড়ে বেড়াচ্ছে, কেউ বলছেনা হাঁটাহাঁটি নিষেধ, যার যার সেলে ঢুকেন, আপনারা নাশকতার মামলায় এখানে এসেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, মেঘনার সকল আসামীদের বের করে, শুধুমাত্র যাদের রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের এখানে রাখা হয়েছে।কারাগারের এই অংশকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। এই ভবনের মূল ফটক সব সময় বন্ধ রাখা হয়েছে যাতে মেঘনার কোন আসামী সাধারণ কোন আসামীর সাথে দেখা করতে না পারে। প্রতিদিন সকল আসামীকে কারাগারের মাঠে হাটতে দেওয়া হয়। কিন্তু রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার কারণে আমাদের সেই সুযোগ দেওয়া হত না। আমাদের রংড়ষধঃব করে মানসিক যন্ত্রণায় রেখে কষ্ট দেওয়া প্রশাসনের একটি অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। জেলের একটি নিজস্ব ভাষা আছে, খাওয়ার একটি সংস্কৃতি আছে, আমাদের ভবনের বাইরে একটি দোকান আছে যাহা সকাল ৭টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে, যে কেউ পধংয বা চঈ তে টাকা থাকলে সেখান থেকে সদাই কিনতে পারেন, টয়লেট টিস্যু, সাবান, বিস্কুট, চাসহ প্রায় সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এখানে পাওয়া যায়। ভবনের সামনে একটি আম, কাঁঠাল ও মৌসুমী ফলের দোকান আছে, যে যার মত কিনছে। এই দোকানে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার কেনা যায়। রাতের তরকারি বিকেল ৫ টার আগেই ক্রয় করতে হয়, কেননা ৫ টায় সবাই লকারে যায়, প্রত্যেক সেলে একজন ইনচার্জ, একজন রাইটার ও একজন সেবক থাকে। ইনচার্জ সাধারণত বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে থাকে। আমাদের সেলের ইনচার্জ ছিলেন টিটো মিয়া, দীর্ঘ ১৮ বছর জেলে আছে, মার্ডার কেসে ৩১ বছর সাজার রায় হয়েছে। রাইটার ছিলেন ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- মাসুম। রাজনৈতিক অস্থিরতার ওই সময়টা ছিল গুজবের, কারণ বন্দিরা জানতে পারেনা বাইরে কি হচ্ছে। এখানে কোন পত্রিকা আসেনা, টেলিভিশন কিংবা বাইরের সাথে যোগাযোগের কোন মাধ্যম নেই।জেলখানায় সব প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ঘটনার সাক্ষী হচ্ছি। হাজতবাসের দ্বিতীয় দিন মোঃ মাসুদ রানা, বাড়ী নাটোর-সাজাপ্রাপ্ত আসামী, কারাগারে কাজ করে, আমার পরিবারের দেওয়া কাপড় নিয়ে এসেছে। একটি লক্ষণীয় বিষয় হল এরা এসেই প্রথমে বলবে আপনাকে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান, আমি কি আর বলব, অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি এই বন্দির কৌশলি বক্তব্যের দিকে। আমি তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই কিন্তু পরে সে বলে আমার বকশিস দেন, ১০০ টাকা বের করে দেই, সে চলে যায়। এর পর আমার কাছে আসে শাকিল নামের আর এক গবংংবহমবৎ, সেও এসে একই কথা, ততক্ষণে আমি এদের কৌশল বুঝতে পেরেছি দাবী তাদের ১০০ টাকাই। সে বলল নায়েক মজনুর মাধ্যমে আপনার কাছে টাকা পাঠানো হয়েছে। সে আমার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমার ছেলের নাম জিজ্ঞাসা করে। টাকা দিয়ে, সে তার বকশিস দাবী করে।আমি তাকে ১০০ টাকার নোট ধরিয়ে দেই। সে চলে যায়, কিছুক্ষণ পর সে আবার এসে আমাকে জানায় নায়েক মজনু ডাকছে, আমি গেলাম, গিয়ে বুঝতে পারলাম সে এ্যাডভোকেট সাব্বির হামজা চৌধুরী সোহাগের বিশেষ পরিচিত। তাই সোহাগের অনুরোধে সে আমার খোঁজ খবর রাখছে।জেলে ঘুম থেকে উঠতে হয় খুব ভোরে, সকাল সাড়ে পাাঁচটার আগেই। কারারক্ষী আসে গননা করতে, সবাইকে উঠে চারজন করে বসতে হয়। জেলের ভাষায় এটাকে বলা হয় "ফাইল"। ফাইল হচ্ছে অনেকটা আমাদের সময়ে স্কুলে স্যার আসার আগে সবাই যেমন টঠস্থ থাকতাম ঠিক সেই রকম। কারারক্ষী আসলে সুনসান নীরবতা, গণনা করে তারপর চলে যায়। কারারক্ষী অবশ্য প্রায়শঃ ইনচার্জকে বিভিন্ন ভুল ধরে বকাঝকা করে তাদের ক্ষমতা দেখাতে ভুল করে না। কারাগারে আমাদের এই সেল ৪৫০ স্কয়ার ফিটের মত হবে। এই ঘরে আমরা মোট ৩৫ জন বন্দি ছিলাম। আমিসহ বন্দি এ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক, হাজারীবাগ থানা থেকে জনাব মোঃ সোহেল আমীন, যিনি একজন ট্যানারী ব্যবসায়ী এবং তার ভাগ্নে আলতাফ যিনি হাজারীবাগে রাজীব লেদার স্টোরের মালিক, আমাদের সাথে একই সেলে ছিলেন। তারা দুজন সারাক্ষণ আমাদের সেবা যত্ন করছেন। খাবার দাবার এগিয়ে দেওয়া, খাওয়া শেষে প্লেট ধোঁয়াসহ যাবতীয় কাজে আমাদের সহায়তা করছেন। বেশ সুঠাম দেহের এই মানুষ দুইটি যে আমাদের এভাবে সহযোগিতা করবে সেটা কখনও ভাবতে পারি নাই। কারাবন্দিদের সেবায় নিয়োজিত শাকিল এসেছে আমার প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে, সাথে পরিবারের একটি চিঠি। সেপ্টেম্বরে কোর্ট বন্ধ থাকবে, তাই এই সময়টা আমাদের পেশাগত কাজে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়। আমাদের দেশের ওকালতি অনেকটা এক ব্যক্তি নির্ভর, কেননা ক্লায়েন্টরা ওই ব্যক্তিকে দেখে মামলা দেয়, তাই তারা অন্য আইনজীবী সে যতই ভাল হোক, আস্থাহীনতায় ভোগে, সেক্ষেত্রে ওই সময়টা ছিল অত্যন্ত ঢ়রপশ ঃরসব এবং কাজের বাইরে থাকা পেশার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমি জেলে বসে সারাক্ষণ চিন্তা করেছি আমার জামিনের আবেদন কিভাবে করছে, অবশ্য এ্যাডভোকেট রাজিয়া সুলতানা আসমানীসহ অন্যান্যরা খুব দক্ষতার সাথে পুরো বিষয়টি ম্যানেজ করতে পেরেছিল। ২৪ জুলাই ২০২৪ তারিখ আমার জামিন নামঞ্জুরের সময় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কারাবিধি অনুযায়ী চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। কারা হসপিটালের ডাক্তার মাঝারি বয়সী ঝিনাইদহের, ভদ্রলোক খুব ভারী গলায় বললেন কি কি ওষুধ খান। আমি বললাম, ডাক্তার সাহেব আর কোন কথা জিজ্ঞাসা না করে আমাকে একটা প্রেসক্রিপসন লিখে দেন, এরপর কারা ফার্মেসী থেকে আমাকে ৩ দিনের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। মেডিকেল সেন্টারে হাবীব ভাইয়ের (সাতক্ষীরা) সাথে দেখা হয়, উনি মেয়ের কথা বলে কাঁদলেন, ড্রাইকেক ও কফি খাওয়ালেন। অসহায় এই মানুষটির আর্তনাদ আমাকেও কাঁদিয়েছে। এর পর দেখা পেলাম বাগেরহাট বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালামের সাথে। পরে বিল্লাল নামের এক যুবক যিনি কারা হাসপাতালে কাজ করেন, আমাকে কারা ল্যাবে নিয়ে যায়। সেখানে আমার ডায়েবেটিস টেস্ট করে তারা ৎধহফড়স ংঁমধৎ পায় ৬.৫। এখানে উল্লেখ্য যে কারাগারের অভ্যন্তরে যারা কাজ করে তারা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। মূলত বিডিআর বিদ্রোহে আটককৃতরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কাজ করে।আমাদের সেলে মোট ৩৫ জন বন্দি রয়েছে। টিটু মিয়া ছাড়া সবাই রাজনৈতিক মামলার আসামী। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র আমাদের সাথে আছে, সে কখনো ভাত খায় না, শুধু পাউরুটি খেয়ে দিন পার করে, কারণ পুলিশ তাকে তার মহাখালীর বাসা থেকে গ্রেফতারের সময় বলেছিল “তোকে জেলের ভাত খাওয়াব” সে নাকি বলেছিল ’’পারবেন না’’। আমরা সকলে মিলে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু তাকে ভাত খাওয়াতে পারিনি। কার্ড খেলা, গল্প গুজব করা ও ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে করে আদায় করা, এই আমাদের কাজের পরিধি। আর আমি প্রতিদিন আসরের নামাজের পর সবাইকে নিয়ে রহংঢ়রৎধঃরড়হ ংঢ়ববপয দিতাম, চলত মাগরিব পর্যন্ত। ২৮ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যার পর আমরা যখন কারা সেলের মধ্যে বসে আছি তখন একজন কারারক্ষী এসে আমার ও এ্যাড. ওবায়েদ ভাইয়ের নাম ধরে ডাকল এবং বলল্, ”আপনাদের কাশিমপুর কারাগারে বদলী করা হয়েছে, সকাল ৫.৩০ মিনিটে প্রস্তুত থাকবেন, ডাকার সাথে সাথে বের হয়ে আসতে হবে, সময় দেওয়া হবেনা”।আমি প্রিজন ভ্যানের মধ্যে বেশীক্ষণ থাকতে পারি না, দম বন্ধ হয়ে আসে, ভীষণ ভয় পাচ্ছি। সেদিন ছিল বুধবার, তাই কেরানীগঞ্জ থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর যেতে হয়তো ৪/৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। বেদনার ছাপ বাকী ৩৩ জন বন্দী সকলের। যাইহোক সবাই মিলে এশার নামাজ আদায় করলাম, নামাজে ইমামতি করতেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-সমন্বয়ক, উনি সাধারণত মোনাজাত করতেন না। ওইদিন মোনাজাত করলেন; অনেক কাঁদলেন, মোনাজাতের ভাষা ছিল এরকম ’’হে আল্লাহ আর কত জুলুম অত্যাচার হলে, আমরা এই জালেম হাসিনার হাত থেকে মুক্তি পাব’’। রাতে ঘুম হল না, ভোর পাঁচটা নাগাদ আমি ও ওবায়েদ ভাই জেলারের সাথে দেখা করতে সক্ষম হলাম। ওবায়েদ ভাইয়ের বয়স ৬৭, তাই তার কাশিমপুরের চালান বাতিল করে মেঘনার বৃদ্ধ সেলে পাঠিয়ে দিলেন। আমি বললাম, ”আমারও বয়স হয়েছে আমাকেও বৃদ্ধ সেলে পাঠিয়ে দিন” কি বুঝল জানিনা, তিনি আমাকেও বৃদ্ধ সেলে পাঠিয়ে দিলেন।যাইহোক কাশিমপুর যাওয়া থেকে পরিত্রাণ পেলাম। আমাদের অবশ্য মেঘনার বৃদ্ধ সেলে যেতে হয়নি, কারাগারের জমাদ্দারদের সহায়তায় পুরনো সেলে থেকেছি ৪ ঠা আগস্ট রাত পর্যন্ত। ৪ ঠা আগস্ট সন্ধ্যা ৭ টায় খবর আসে আমার ও এ্যাডভোকেট ওবায়েদ ভাইয়ের জামিন হয়েছে। সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট নাগাদ জেল গেটে আসি। সেখানে একজন ডেপুটি জেলার আমার নিকট আসে, বাড়ী যশোর, তিনি জানান অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার মাধ্যমে আমার খোঁজ-খবর রেখেছে। এখানে বিভিন্ন রহঃবষষরমবহপব ধমবধহপু রয়েছে, তারা আমাকে পুনরায় গ্রেফতার করতে পারে, কিন্তু ডেপুটি জেলার সাহেব আমাকে সর্বাত্মক সহায়তা করলেন এবং অবশেষে রাত ৮টা নাগাদ জেল থেকে বের হই। জেল গেটে লিমা, চুমকী, মোবাশ্বের একটি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসেছে। ডা: রাশেদুল বারী রাসেল এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছে। সারা ঢাকা শহর তখন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। প্রায় সকল রাস্তা বন্ধ, বিভিন্ন স্থানে আগুন জ¦লছে, প্রায় ৪ (চার) ঘণ্টা সময় লেগেছে আমার ধানমন্ডি বাসায় আসতে। রাতে আর ঘুম হল না। পরদিন সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের চেষ্টা করলাম। এরপর আসল সেই মহেন্দ্রক্ষণ, ৫ই আগস্ট, ২০২৪। প্রত্যক্ষ করলাম স্বৈরাচার হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার সেই শুভক্ষণ। ঢাকার রাজপথে নেমে এলাম, লাখো জনতা তখন ঢাকার রাজপথে, জনতার সাথে মিশে গিয়ে উপভোগ করলাম স্বাধীনতার স্বাদ। এখন প্রত্যাশা জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, আমার ও আপনার সন্তানদের জন্য, প্রতিজ্ঞা স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনব্যারিস্টার-এ্যাট-লসিনিয়র এ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টভোরের আকাশ/জাআ
২ মাস আগে
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রংপুর সবার আগে আছে। সামনের দিনেও এগিয়ে থাকবে। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। আমাদের ছেলের সাহসী রক্তদানের পথ ধরেই এদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিদায় হয়েছে। আর জুলাই আন্দোলনের নেপথ্য কারিগর হিসেবে এই আন্দোলনকে আপটু মার্কে নিয়ে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সুদুর লন্ডনে বসে তিনি বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে এবং মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বৈপ্লবিক অবদান রেখেছেন। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী চূড়ান্ত বিজয় লাভ করলেও এ আন্দোলকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যেতে বিএনপি নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের ত্যাগের বিষয়টি সবার জানা। গুম, খুনসহ, হাজারো মামলায় জর্জরিত হয়েছে বিএনপির শীর্ষ থেকে একেবারেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এখনো বিএনপি’কে বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগোতে হচ্ছে। দৈনিক ভোরের আকাশের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিশেষ লাইভ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন ভোরের আকাশের বার্তা সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম শিশির-ভোরের আকাশ : নির্বাচনের এখনো কোনো পরিষ্কার রোডম্যাপ বা দিনক্ষণ পাওয়া গেল না। আপনার ভাবনা কী?সাইফুল ইসলাম : বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনে বিএনপি সম্মুখ সারিতে ছিল। বলতে পারেন, দেশ ও জনগণের ভালো যা কিছু হয়েছে, তার সবখানে বিএনপির অবদান রয়েছে। এখন বিএনপিকে নতুন করে ভোটের অধিকারের জন্য কথা বলতে হচ্ছে, আন্দোলন করতে হচ্ছে। আপনারা জানেন, জুলাই বিপ্লবের পর দেশের জনগণ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এর আগে জনগণ ভুলতে বসেছিল যে তারা এদেশের মানুষ। এখানে তাদের জন্য ন্যূনতম স্পেস রয়েছে, সে কথা বলতে পারবে। স্বাধীনভাবে পথ চলতে পারবে। জনগণ ভুলতে বসেছিল তাদের সব অধিকারের কথা। ফ্যাসিস্ট সরকার সবকিছুকে এক কেন্দ্রে এনে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে নগ্নভাবে ব্যবহার করে মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নেওয়ার চূড়ান্ত অবস্থা তৈরি করেছিল। সেই অবস্থার প্রতিবাদ করাই আমাদের দলের চেয়ারপারসন আপসহীন নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালো জিয়াকে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রাখা হয়। মিথ্যে মামলায় তাকে জেলে আটেকে রাখা হয়; যা কল্পনাতীতি এক অধ্যায়। মিথ্যে মামলায় আসামি সাজিয়ে তারেক রহমানকে দেশান্তরী করা হয়। সে এক দুঃসহ সময়। মামলার পর মামলা দিয়ে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ বন্ধ করা হয়। সব মিলে বন্দি করা হয় দেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র চর্চার সব অধ্যায়। জনগণের পক্ষে যা ভুলে যাওয়া অসম্ভব। জুলাই বিপ্লবের এক বছর পরে এসে এখন আবার বিএনপিকে নির্বাচনের জোর দাবি তুলতে হচ্ছে। আর এই দাবি তোলা নিয়ে দলটিকে কেউ কেউ সমালোচনা করার চেষ্টা করছেন। এটাও এক ধরনের ষড়যন্ত্র। বিএনপি নিজের জন্য শুধু নির্বাচনের দাবি সামনে আনছে এমন নয়। এটি এখন গণমানুষের দাবি। মানুষ বহুদিন কথা বলতে পারেনি। ভোট দিতে পারেনি। এখন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি সহসা আমরা একটি পরিচ্ছন্ন ও গ্রহণ যোগ্য নির্বাচন পাব। এ নিয়ে পানি ঘোলা করতে অনেক পক্ষ কাজ করছে । কিন্তু বিএনপি এদেশের গণমানুষের দল। কারো পক্ষে গণদাবি ঠেকিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। এখনতো দেশে অনেকটাই নির্বাচনমুখী একটা আবহ তৈরি হয়েছে। ভোরের আকাশ : রংপুরকে বলা হয় জাতীয় পার্টির দুর্গ। এখন সেখানে বিএনপির কী অবস্থা?সাইফুল ইসলাম : এক কথায় বলা যাবে- রংপুর এখন বিএনপির দুর্গ হয়ে উঠেছে। অতীতের রংপুর আর এখনকার রংপুর এক নয়। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের হত্যার যে চিত্র রংপুরবাসী দেখেছে তা কেউ মেনে নিতে পারিনি। সে ঘটনার পর থেকে রংপুরের ফ্যাসিস্টের দুর্গ ভেঙ্গে খানখান হয়ে গেছে। ফ্যাসিস্টদের অন্যতম দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টিকেও মন থেকে মুছে ফেলেছে রংপুরবাসী। আপনারা জানেন, সে সময় রংপুর অঞ্চলের সব ঘর থেকে মা বোনেরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। এই সময় বিএনপি রাজনৈতিকদল হিসেবে যে রোল প্লে করেছে তা মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এখন রংপুরে বিএনপিকে ঘিরে এক ধরনের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূতির্তে দলের চেয়ার পারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমন যে বক্তব্য রেখেছেন তা আপনারা দেখেছেন। জাতি এ বক্তব্যে অনেক বেশী আশাবাদী হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমরা দলের আদর্শ এবং নির্দেশনা মেনে দলকে গণমানুষের আস্থার ঠিকানা করে তুলতে কাজ করছি। দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চা রয়েছে। এখন নেতাকর্মীরা অনেক বেশি সুসংগঠিত। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনায় নতুন বাংলাদেশের পথ চলায় বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী বিশ্বাস করে দেশকে একটি সম্মান জনক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বিএনপিকে পালন করতে হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী শাসকরা দেশের গুম খুন, অনাচার, মানুষের কণ্ঠ রোধের যে নির্মম ইতিহাস রেখে গেছে সে ভয় থেকে জাতিকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে বিএনপিকেই দেশ পরিচালনার দায়িত্বে দেখতে চায় জনগণ। কারণ জনগণ জানে এদেশের প্রতিটা ভাল কাজের সাথে বিএনপি তথা জিয়া পরিবারের অবদান রয়েছে। জিয়া পরিবারের হাত ধরেই দেশ স্বাধীনতা পেছে, গণতন্ত্র, বহুদলীয় পথ, সংসদ সব পেয়েছে। শহীদ জিয়ার ১৯ দফকে আরো যুগোপযোগী করে তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন; যা দেশ পরিচালনার গাইড লাইন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি আগামী দিনের বাংলাদেশ অবশ্যই সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ স্থান হয়ে উঠবে।ভোরের আকাশ: রাজনীতিতে এ সময়ে কোন শঙ্কা দেখছেন কিনা?সাইফুল ইসলাম: আগেও বলেছি। বাংলাদেশের রাজনীতির পথ বিএনপির জন্য কখনো কুসুমাস্তীর্ণ হয়নি। তবে দেশের যে কোন সংকটে সামনে এসে দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছে জিয়া পরিবারকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। শেখ হাসিনার চরম নির্যাতন নিপীড়ন, গুম খুন আয়না ঘরের মতো কালো অধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীরাই জীবন বাজি রেখেছে। সে ধারাবাহিকতায় জুলাই অন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু দোসররা রয়ে গেছে। তারা নানা কূটচালে বিএনপিকেও রাজনীতির মাঠ থেকে বিদায় করার ষড়যন্ত্রে মেতে রয়েছে। কিন্তু জনগণ সবসময় বিএনপিকে ভালবেসেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিএনপির ডাকে সারা দেশে যে কোন সময়ে মানুষ মাঠে নামে। প্রয়োজন হলে আবারো নামবে। তবে একটা কথা সত্য লন্ডনে প্রফেসর ইঊনূস তারেক রহমানের বৈঠকের পর রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে যেতে শুরু করেছে। এখন বিএনপি এদেশের মানুষের আস্থার ঠিকানা হয়ে উঠেছে। মানুষের এই জাগরণকে কোন কিছু দিয়ে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন নিয়ে নানা কথা হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে আমি আপাতত কোন শঙ্কা দেখি না।ভোরের আকাশ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদসাইফুল ইসলাম: দৈনিক ভোরের আকাশ পত্রিকা পরিবারের জন্য আমার পক্ষ থেকে এবং আমার দল বিএনপির পক্ষ থেকে নিরন্তর শুভেচ্ছ ও শুভ কামনা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩ মাস আগে