× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আন্দোলনে সৃষ্ট দুর্ভোগের শেষ কোথায়?

আব্দুর রহিম

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫ ০৪:২৬ পিএম

আব্দুর রহিম

আব্দুর রহিম

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে থেকেই আন্দোলনের শহরে রূপ নেয় ঢাকা। গত বছরের জুলাই শুরু হওয়া কোটাবিরোধী আন্দোলনের রেশ কিছুতেই কাটছে না। ৫২ গলি আর ৫৩ রাস্তার শহরটিতে যে যেভাবে পারছে, আন্দোলন করছে। কিন্তু এতে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে, সেটা কারো মাথায় নেই।

সরকার বিষয়টি ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পারছে না। ফলে আজ এ দল তো, কাল ও দল, গোষ্ঠী আন্দোলন করে তাদের শক্তি জানান দিচ্ছে। মাঝখানে বলির পাঠা হচ্ছে জনগণ। এখন আবহাওয়ার মতো কোন রাস্তায় কে কখন আন্দোলন করছে, সেটা জেনে রাস্তায় বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে। এই পরামর্শকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ এই আন্দোলনের কারণে ৩০ মিনিটের রাস্তা যেতে কারো কারো চার ঘণ্টাও লাগছে।  

বৃহস্পতিবার (২২ মে) একটি জাতীয় দৈনিক অনলাইন ভার্সনে ‘আজ ঢাকায় কোথায় কী’ শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে। এতে লেখা হয়েছে- সকাল ১০টা থেকে নগর ভবন (ডিএসসিসি), হাইকোর্ট এলাকা, মৎস্য ভবন ও কাকরাইলে ইশরাক সমর্থকদের সড়ক অবরোধ। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি। বিকেল ৪.৩০ যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তায় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ মিছিল।’

প্রিয় পাঠক, হয়তো বলবেন- আন্দোলন করা তো গণতান্ত্রিক অধিকার। হ্যাঁ, অবশ্যই গণতান্ত্রিক অধিকার। আমিও এই অধিকারের পক্ষে। কিন্তু একজন তার অধিকার আদায় করতে গিয়ে আরও হাজারো মানুষকে দুর্ভোগে ফেলবেন- এটা কেমন গো? আপনি কারো যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করলেন মানে তার সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করলেন। আপনি যদি এই তীব্র যানজটে কখনো আটকে পড়েন, তাহলে দুর্ভোগের মাত্রা বুঝতে পারবেন।

গত ৯ মাসে ঢাকা শহরে পাঁচ শতাধিক আন্দোলন হয়েছে। এই মুহূর্তে পাঁচটির বেশি পক্ষ রাজপথে আছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হিসাবে, ঢাকায় গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটি আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়। সে হিসেবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে পাঁচ শতাধিক আন্দোলন হয়েছে ঢাকার বুকে। কিছু কিছু আন্দোলন হাস্যরও সৃষ্টি করেছে। যেমন এর আগে কিছু শিক্ষার্থী অটোপাসের দাবিতে আন্দোলন করে।

গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অটোরিকশার চালু; আনসারদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো; চাকরিচ্যুত সেনা ও পুলিশ সদস্যদের পুনর্বহাল; বিডিআর বিদ্রোহে কারাবন্দি সদস্যদের মুক্তি, ক্ষতিপূরণ ও চাকরিতে পুনর্বহাল; নিয়োগ বঞ্চিত বিসিএস ক্যাডারদের নিয়োগ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত সাত কলেজ পৃথকীকরণ এবং স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠন; এবতেদায়ী শিক্ষকদের জাতীয়করণ; সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে মিছিল, সমাবেশ ও বিক্ষোভ হয়েছে।

পলিটেকনিক্যালের শিক্ষার্থীদের অবরোধ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধির আন্দোলন, রেলের কর্মচারীদের আন্দোলনও হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, ওয়াসা, ডেসা, সচিবালয় কর্মচারি থেকে বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান মাঠে নামে।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির আন্দোলন শেষ না হতেই ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সকে স্নাতক সমমানের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে মাঠে শিক্ষার্থীরা। ৭০ শতাংশ আবাসন ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড় অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ টু গাজা’ কর্মসূচিতেও মানুষের ঢল নামে। ১৮ মে চাকরিচ্যুত সেনাসদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একই দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করাতে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা।

বৃহস্পতিবারও ইশরাক সমর্থকরা কাকরাইল ও মৎস্য ভবন এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যলালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও, শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এখন প্রশ্ন হলো- আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে এতো আন্দোলন হয়নি। তখন সরকারের পেটুয়া বাহিনী পুলিশ সব আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করেছে। সেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন যেহেতু আন্দোলনে হয়েছে, সেহুতু এখনই দাবি আদায়ের মোক্ষম সময় মনে করছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। কিন্তু এখন আন্দোলন মানেই মিছিল, সমাবেশ, অবরোধ।

বিশেষ করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কোনো সড়কে বা মোড় অবরোধ করা হলে তার ফলে ওই এলাকায় যে তীব্র যানজট তৈরি হয়। আশপাশের সকল সড়কে, অলি-গলিতে এবং ধীরে ধীরে সেই ভোগান্তি ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। কেননা, সবাই তখন বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে চায়। এখন আন্দোলনের মোক্ষম জায়গা হলো শাহবাগ মোড়।

দেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বারডেম হাসপাতাল সেখানে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই দুটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। অসংখ্য রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা যান। ফলে শাহবাগ মোড়ে যখন অবরোধ হয়, তার প্রধান ভিকটিম হন এই মানুষগুলো। অনেক সময় চিকিৎসক ও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরাও সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না। তাতে রোগীদের সেবা ব্যাহত হয়।

যারা আন্দোলন করছেন, তাদের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। সরকারের উচিত শাহবাগ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আন্দোলন নিষিদ্ধ করা। এক্ষত্রে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা-সমাবেশ করতে পারে আন্দোলনরতরা। এতে কিছুটা হলেও মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

লেখক: সাংবাদিক।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
অপূর্ণাঙ্গই থাকছে জুলাই সনদ

অপূর্ণাঙ্গই থাকছে জুলাই সনদ

নাসিক প্রশাসকের সঙ্গে এনসিপি নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ

নাসিক প্রশাসকের সঙ্গে এনসিপি নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস

সুষ্ঠু ভোটের চ্যালেঞ্জ

সুষ্ঠু ভোটের চ্যালেঞ্জ

 মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

 তুর্কি ড্রামা ‘কুরলুস উসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন স্কটল্যান্ডের নারী

তুর্কি ড্রামা ‘কুরলুস উসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন স্কটল্যান্ডের নারী

 মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবস্থলে সামরিক বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৪০

মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবস্থলে সামরিক বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৪০

 বদলি ও পদায়নে নতুন নীতিমালা কার্যকর করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বদলি ও পদায়নে নতুন নীতিমালা কার্যকর করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

 যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে

 ট্রাম্পের জন্মদিনে হোয়াইট হাউসে ইউএফসি লড়াই: ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

ট্রাম্পের জন্মদিনে হোয়াইট হাউসে ইউএফসি লড়াই: ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

 বিয়ের সাজে কেয়া পায়েল: অভিনয় ও ব্যবসার দুই জগতেই নজর কাড়লেন তিনি

বিয়ের সাজে কেয়া পায়েল: অভিনয় ও ব্যবসার দুই জগতেই নজর কাড়লেন তিনি

 শাকিব খানের ‘সোলজার’-এর প্রথম লুক প্রকাশ

শাকিব খানের ‘সোলজার’-এর প্রথম লুক প্রকাশ

 বিসিবি নির্বাচনের পর কমিটিতে দায়িত্ব বণ্টন সম্পন্ন

বিসিবি নির্বাচনের পর কমিটিতে দায়িত্ব বণ্টন সম্পন্ন

 আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে সিরিজ শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে সিরিজ শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের

 বাংলাদেশ-সৌদি আরবের সম্পর্ক ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের প্রতীক’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশ-সৌদি আরবের সম্পর্ক ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের প্রতীক’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

 ২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

 পে স্কেল নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

পে স্কেল নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

 দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৫০ ইমাম নিহত, ৮৩৫ মসজিদ ধ্বংস

দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৫০ ইমাম নিহত, ৮৩৫ মসজিদ ধ্বংস

 নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মালদ্বীপে প্রবাসীদের স্মারকলিপি

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মালদ্বীপে প্রবাসীদের স্মারকলিপি

 কখন বুঝবেন আপনার শরীর ও মন বিশ্রাম চাইছে

কখন বুঝবেন আপনার শরীর ও মন বিশ্রাম চাইছে

 সকালে কমলার রস খাওয়া কি ক্ষতিকর? জানুন বিশেষজ্ঞদের মতামত

সকালে কমলার রস খাওয়া কি ক্ষতিকর? জানুন বিশেষজ্ঞদের মতামত

 যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় কখনোই এআইয়ের পরামর্শ নেওয়া উচিত নয়

যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় কখনোই এআইয়ের পরামর্শ নেওয়া উচিত নয়

 শেখ হাসিনা ও কামাল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা

শেখ হাসিনা ও কামাল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা

সংশ্লিষ্ট

হাইব্রিড-নব্যরাই বিএনপির কাঁটা

হাইব্রিড-নব্যরাই বিএনপির কাঁটা

নিজ বাসভবনে হামলার শিকার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী

নিজ বাসভবনে হামলার শিকার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী

জুলাই চব্বিশের উপকথা

জুলাই চব্বিশের উপকথা

বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রংপুর এগিয়ে থাকবে

বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রংপুর এগিয়ে থাকবে