রাজধানীর বনানী ১১ নম্বর রোড এলাকায় লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারধর করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। রিকশা চালানোর দাবিতে তারা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছে। আজ আন্দোলন চলাকালে যারা ছবি-ভিডিও ধারণ করেন তাদের ওপর চালকরা হামলা করেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরের দিকে বনানী ১১ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।বনানী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে গুলশান সোসাইটি ঘোষণা করে ওই এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু সোসাইটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি রিকশাচালকরা। তারা গত কয়েকদিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। আজ সোসাইটির লোকজন গুলশানের শেষ মাথায় এবং বনানী এলাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করছিল। এতে চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে যান। তারা বনানী ১১ নম্বর এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন। এসময় যারা আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও তুলতে আসেন তাদের লাঠিপেটা করেন তারা।বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বর্তমানে বনানী ১১ নম্বর রোডে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল)-এর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা।সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।সভায় এনসিপির পক্ষ থেকে ‘আগে মৌলিক সংস্কার, পরে নির্বাচন’ এই অবস্থানটি তুলে ধরা হয়। দলটির প্রতিনিধিরা নির্বাচনি সংস্কারের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য করার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচিত হয় নাগরিকদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর উপায়, বিশেষত তরুণদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার বিষয়ে।এনসিপির পক্ষে সভায় অংশ নেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং মাহবুব আলম। আনফ্রেলের পক্ষে ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্দু আবেরাথনা, প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট মে বুথয় এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মেয়ে।সোমবার (২১ এপ্রিল) উপজেলায় কুচাইপট্রি ইউনিয়নের চরমাইজারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষার্থী মুন্নি আক্তার চরমাইজারী গ্রামের কাশেম মৃধার মেয়ে।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে মুন্নি সবার ছোট। সোমবার ভোরে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার মা জলেখা। মায়ের লাশ ঘরে রেখেই কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন এ শিক্ষার্থী।মুন্নির চাচি কমলা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিল আমার জা। আজ ভোরে তিনি মারা যান। মুন্নির মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছে। মুন্নি বাড়িতে আসলে তার মাকে কবর দেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় অভিযানে উদাখালি ইউনিয়ন আ.লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে ফুলছড়ি থানা পুলিশ।সোমবার ভোররাতে ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামে অভিযান চালিয়ে ফরহাদের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আ.লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন ওই গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলছড়ি থানা ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ফরহাদ হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জে ৩ দিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সদর উপজেলা চত্বরে মেলার উদ্বোধন করা হয়। কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলার উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে কৃষিখাত। এই খাতকে আরও বেশি প্রযুক্তি নির্ভর করতে হবে।সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ জা মু আহসান শহিদ সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ সদর ইউএনও মো. মনোয়ার হোসেন ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনোয়ার সাদাত।তিন দিন ব্যাপি এ মেলায় ২০টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, সবজি, বীজ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনসহ নানা নিয়মাবলির লিফলেট প্রদর্শন করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পিরোজপুরের কাউখালীতে স্কুল ও কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেওয়ায় থানা পুলিশ ৭ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে। পরে মুচলেকার মাধ্যমে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাউখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দিচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭ শিক্ষার্থীকে আটক করে।কাউখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান জানান, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আড্ডা দিচ্ছে এমন খবরে পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাজেট ব্যয়ের বড় চাপে পড়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নেই মাসে লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হবে সরকারকে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের পরও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে রাজস্ব ঘাটতি ছাড়িয়ে গেছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার নিরিখে পিছিয়ে আছে প্রায় ২১ শতাংশ।এদিকে বিপুল ব্যয়ের চাপ থাকলেও পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান নেই সরকারের। রাজস্ব আদায়ে গতি শ্লথ। বিদেশি উৎস থেকে কাক্সিক্ষত ঋণ মিলছে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও টাকা ছাপিয়ে সরকারকে দিচ্ছে না। উল্টো আগের দেওয়া টাকা ফেরত নিচ্ছে। জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ায় মানুষ সঞ্চয়পত্র কেনার পরিবর্তে ভাঙাচ্ছে বেশি। এতে বাজেট ঘাটতি পূরণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে সরকার। হু হু করে বাড়ছে সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ হার।ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে স্বল্প মেয়াদি ও বন্ডের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদি ব্যাংক ঋণ সংগ্রহ করে সরকার। বিল ও বন্ডে বাড়তি সুদ পেয়ে ব্যাংকগুলোও এখন সরকারকে ঋণ দিতে উৎসাহী হচ্ছে। এই খাতটি নিরাপদ ও লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া একপ্রকার বন্ধই রেখেছে ব্যাংকগুলো। এতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছেছে। কমেছে বেসরকারি বিনিয়োগ। সংকুচিত হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ শতাংশের কম বাজেট বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সরকার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৩ লাখ ১৮ হাজার কোটি। বাজেট লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হলে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে বাকি ৪ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। এত প্রতি মাসে ব্যয় করতে হবে ১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকার মতো। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এটি মূল বাজেটের থেকে ৫৩ হাজার কোটি টাকা কম।অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের মতে, বছরের শেষ সময়ে একসঙ্গে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি অপচয়, দুর্নীতি ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকে। অর্থ বিভাগ এ শঙ্কার কথা জানিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শেষ সময়ে মন্ত্রণালয়গুলোর অস্বাভাবিক খরচের কারণে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এছাড়া রাজস্ব আহরণ ও ব্যয়-এ দুয়ের মধ্যে কোনো পরিকল্পনা থাকছে না। এতে অপরিকল্পিত ঋণ গ্রহণ এবং ঋণসংক্রান্ত ব্যয়ের দায়ভার বহন করতে হয় সরকারকে যা আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে দিচ্ছে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সরকার পরিচালনায় ৫ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে বাজেট বাস্তবায়নে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অর্থায়নের সমস্যা। গত সপ্তাহে বাজেট সংক্রান্ত এক সভায় এই পর্যবেক্ষণ এসেছে অর্থ বিভাগ থেকে। বাজেট প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়নের তদারকি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি।রাজস্ব আদায়ে সুখবর নেই : জুলাই-আগস্টের তুমুল আন্দোলন, সহিংসতা ও ক্ষমতার পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নামে। এর জের টানতে গিয়ে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যে রাশ টেনেও আহরণের ক্ষেত্রে সুবিধা করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।এনবিআরের হালনাগাদ প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার ৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৮১৭ কোটি ৯ লাখ টাকা; অর্থাৎ এ সময়ে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরের জন্য এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের মাঝপথে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি করা হয়।গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই লাখ ১৭ হাজার ৯৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে; যা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। রাজস্বের এ ঘাটতি কাটাতে সরকার সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে। পরে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের বাধা ও দাবির মুখে বহু পণ্যেই সেখান থেকে ফিরে আসার তথ্যও দিয়েছে এনবিআর।২০২৪ সালের জুনে বাজেট ঘোষণার পর মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, রিজার্ভের পতনসহ অর্থনীতিতে নানা সংকট শুরু হয়। বাজেট পাসের দুই সপ্তাহের মধ্যে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং এর ধারাবাহিকতায় গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলনের ধাক্কা ও সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ার প্রেক্ষাপটে আমদানি, রপ্তানি ও উৎপাদনসহ অর্থনীতির সব সূচক ধীর হয়ে আসে। এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ কমার ধারাও অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে এসে একক মাসের হিসাবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে দেখা গেছে রাজস্ব আহরণ। পরের মাস জানুয়ারিতেও তা বজায় ছিল। তবে ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলেও এ হার আবার ধীর হয়ে পড়েছে।মিলছে না কাক্সিক্ষত বাজেট সহায়তা : চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড় ও প্রতিশ্রুতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অপরদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণের প্রতিশ্রুতি ৬৭ শতাংশের বেশি কমেছে। এই সময়ে ২৩৫ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে।গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৭২০ কোটি ডলারের। প্রতিশ্রুতি নেমে এসেছে এক-তৃতীয়াংশে। এসময় চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে ৪১৩ কোটি ডলার ছাড় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৯৯ কোটি ডলার। এই হিসাবে অর্থছাড় কমেছে ১৭ শতাংশের বেশি। ঋণ কম আসলেও সরকারকে পরিশোধ করতে হচ্ছে বেশি। আলোচ্য আট মাসে সরকারকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বাড়াতে হয়েছে ৩০ শতাংশ। গত অর্থবছরে যেখানে ২০৩ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল, এবার সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৪ কোটি ডলারে।ব্যাংক ঋণেই ভরসা সরকারের : অর্থ সংস্থানের উৎস সংকুচিত হওয়ায় ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারকে। যে কারণে সরকারের ব্যাংকঋণ বাড়ছে দ্রুতগতিতে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ৯৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে কোন ঋণ দেয়নি। উল্টো আগের দেওয়া ঋণের ৪১ হাজার কোটি টাকার বেশি আদায় করেছে সরকারের কাছ থেকে। মূলত টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তাই মূল্যস্ফীতির বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবার সরকারকে ঋণ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংককে পরিশোধ করা ঋণের হিসাব বাদ দিলে মার্চ শেষে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নেওয়া নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ছিল মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত দুই মাসে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ সাড়ে তিনগুণের বেশি বেড়েছে।চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। পরবর্তিতে সেই লক্ষ্যমাত্রা ২৭ শতাংশ কমিয়ে ৯৯ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত ঋণের চাহিদা কম থাকায় এই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়। তবে এখন চাহিদা বাড়তে থাকায় সরকারের ব্যাংক ঋণ সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আটকে রাখা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।এদিকে সরকার ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ার সুযোগ নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। মূলত স্বল্প মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও দীর্ঘ মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিভিন্ন সময়ে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয় সরকার। এই বিলের বিপরীতে সরকারের থেকে সুদ পায় ব্যাংকগুলো। আবার জরুরি প্রয়োজনে এসব বিল বা বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে নগদ অর্থ নিতে পারে ব্যাংকগুলো। তাই শিল্পবাণিজ্য ঋণের ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ খাতে ঝুঁকেছে দেশের ব্যাংকগুলো।যে কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি নেমেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ব অবস্থানে, ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সরাসরি সম্পৃক্ত। আর বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া। এদিকে সরকারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিলামে বেশি সুদ দাবি করছে ব্যাংকগুলো। সরকারের সামনে বিকল্প উৎস না থাকায় বাড়তি সুদেই ঋণ নিচ্ছে ব্যাংক থেকে।বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের মার্চের ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত ট্রেজারি বিলের নিলামে ৯১ দিনের বিল ১০.৯০ শতাংশ হারে, ১৮২ দিনের বিল ১১.২৫ শতাংশ হারে ও ৩৬৪ দিনের বিল ১১.৩০ শতাংশ সুদহারে বিক্রি হয়েছে। এর পরের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে এপ্রিলের ১৫ তারিখ। ওই দিন ৯১ দিনের বিল ১১.৪৫ শতাংশ হারে, ১৮২ দিনের বিল ১১.৭৫ শতাংশ হারে ও ৩৬৪ দিনের বিল ১১.৮৬ শতাংশ সুদহারে কিনেছে সরকার। একইভাবে বেড়েছে ট্রেজারি বন্ডের সুদ হারও। ১৬ এপ্রিল ৩ বছর ও ৫ বছর মেয়াদি সরকারি ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন বছর মেয়াদি বন্ডের সুদের হার বেড়ে দাঁয়িছে ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশে। এর আগের সর্বশেষ নিলামে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। পাশাপাশি পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ড বিক্রি হয়েছে ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ হারে পূর্বে যা ছিল ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
শীত মৌসুম শেষ হয়েছে আরও আগে। বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মের সবজি। তবে এসব সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। একই সঙ্গে তেল, চাল, পেঁয়াজের দামও বাড়তি। তবে ঈদের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মুরগির দামে, কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার ও সোনালি জাতের মুরগি।শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর শেওড়াপাড়া, কাপ্তান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল, কারওয়ান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়েছে। পাম তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১২ টাকা।এদিকে, পহেলা বৈশাখ থেকে চড়েছে পেঁয়াজের বাজার। গত সপ্তাহে যেখানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, সেখানে আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।সপ্তাহ ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজিতে দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর এখনো পুরোপুরি সচল হয়নি সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে শাক-সবজি কম আসায় দাম বাড়ছে। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে শাক-সবজি কম আসছে। এতে দাম বাড়ছে কিছুটা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে সবজির। সপ্তাহ ব্যবধানে কোনো কোনো সবজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্তও বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঝিঙা প্রতি কেজি মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শজনে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ধনেপাতা ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও দেশি শসা ৮০ টাকা। প্রতি পিস চালকুমড়া ৬০ টাকা। কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ক্রেতারা বলছেন, রমজানে সবজির দাম কম থাকলেও, ঈদের পর থেকেই শাক-সবজির বাজার চড়া। দাম কমাতে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। না হলে ফের অস্থির হয়ে উঠবে নিত্যপণ্যের বাজার।তবে, রমজানজুড়ে ভোগানো লেবুর ডজন নেমে এসেছে ৫০-৬০ টাকায়। বিক্রেতার বলছেন, রমজানে যেখানে লেবুর হালি বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকায়, সেখানে এখন দাম কমে ডজনই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।ঈদের পর বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০–১৭০ টাকায়, যেখানে ঈদের আগে দাম ছিল ২২০–২৩০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম নেমে এসেছে ২২০–২৬০ টাকায়, যা আগে ছিল ৩০০–৩৩০ টাকা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজস্ব আয় বাড়ানো ও ভর্তুকি ব্যয় কমাতে গিয়ে শিল্পগ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্যেও ওপর। ফলে, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, ডিম ও সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না আগে থেকেই বাড়তে থাকা চাল ও ডালের দামে। এছাড়া সরকারের মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতিতে সমন্বয় না থাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা খুব সফল হচ্ছে না। গত মাসেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল। যে কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো জেঁকে বসার শঙ্কা অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদদের।এদিকে, প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমানে কঠোর মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে গেছে। সর্বনিম্ন অবস্থানে গেছে বেসরকরি খাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি। সংকুচিত হয়েছে কর্মসংস্থান। বৃহত্তর স্বার্থে এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও উল্টো পথে হাঁটছে সরকার।ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ, মোটা চাল, খোলা আটা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, ডিমের দাম বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। সবজির দাম বেড়েছে গড়ে ২০ টাকার মতো। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এতে সরকারের মাসে রাজস্ব আয় বাড়বে সাড়ে ৫শ কোটি টাকা। শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়ানো হয়েছে ৩৩ শতাংশ। পাশাপাশি পুরনো ব্যবহারকারীরা প্রতিশ্রুতির অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করলে একই হারে বাড়তি দাম দিতে হবে।এতে সরকারের কী পরিমাণ ভর্তুকি কমে আসবে সেটি অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কর্পোরেশন। তবে, এর প্রভাবে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কারণ, অনেক কারখানাই ঘোষিত লোডের অতিরিক্ত গ্যস ব্যবহার করে বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা মেটাতে।পেট্রোবাংলার হিসাবে, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শিল্পে অনুমোদিত লোডের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। আর কারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্যাপটিভ) ৫ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এই পরিমাণ গ্যাসের দাম বাড়তি হারে দিতে হবে শিল্প মালিকদের।এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বেড়েছিল লিটারে ৮ টাকা। এরপরও ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়ে দাম বাড়ানোর চিঠি দিয়েছিলেন। তবে সরকার শুল্ক-করে ছাড় দিয়ে মূল্য বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখে। গত ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন করের হার (মূসক/ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে সরকার। নভেম্বরে আরও কমিয়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।তেলকল মালিক সমিতি বলছে, ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে। ফলে সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম হওয়ার কথা ১৯৮ টাকা। তবে ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৯ টাকা।গত মঙ্গলবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন।বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এত দিন সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ছাড় দিয়েছে। রমজান পর্যন্ত গত কয়েক মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিচালনার ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে এভাবে রাজস্ব ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে।মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে আজ যে মূল্যবৃদ্ধি করতে বাধ্য হলাম, আমি মনে করছি, এই বাধ্যবাধকতা সাময়িক। অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমানো সম্ভব হবে।তিনি বলেন, ভ্যাট অব্যাহতি আরেকটু দীর্ঘায়িত করা যেত কি না, সরকার সেই চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেল, এ মুহূর্তে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া সরকারের জন্য খুবই সংবেদনশীল বিষয়।এদিকে বাজারে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। পবিত্র রমজান মাসে পেঁয়াজের দাম কম ছিল। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কেনা গেছে। তবে গত চার দিন ধরে দাম বাড়ছে। গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। জানা গেছে, চার দিন আগে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে।সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) জানিয়েছে, দেশি পেঁয়াজের দর কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছর পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। এ কারণে মৌসুমের শুরু থেকেই দাম গত বছরের তুলনায় কম ছিল। তবে এখন দাম বেড়ে গেছে।মগবাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফার্মের মুরগির বাদামি এক ডজন ডিম বড় বাজারে ১২০-১২৫ টাকা এবং মহল্লার মুদি দোকানে ১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, এক সপ্তাহে ডজনে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর চাহিদা কমায় বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে।বুধবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০-২৬০ টাকায়। চালের দাম অনেক দিন ধরেই চড়া। নতুন করে দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।তবে টিসিবি জানাচ্ছে, খোলা আটার সর্বনিম্ন দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। ডালের দাম আগের মতোই বেশি। নতুন করে হেরফের হয়নি। চিনির দামও আগের মতো রয়েছে, কেজি ১২০ টাকার আশপাশে। এদিকে বেড়েছে সবজির দাম।ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ শেষ। এখন গ্রীষ্মের সবজির চাহিদা বেশি। নতুন সবজি আসছে, দাম চড়া। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ১৪টি সবজির দামের হিসাব দেয়।গত বুধবারের হিসাবে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে ১৪ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইডেন গার্ডেন্সে সফরকারী দল গুজরাট টাইটান্সের টপ অর্ডার ঝলক দেখালেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ ব্যর্থ। প্রতিপক্ষ দলের বোলাররা কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য। রশিদ খান ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা জোড়া উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মিতব্যয়ী বোলিং করে রেখেছেন দারুণ অবদান। কলকাতার মাঠে গুজরাটের ৩৯ রানের জয়ের ভিত অবশ্য গড়ে দেন দুই ওপেনার শুবমান গিল ও সাই কিশোর। দুজনেই ফিফটি করেন।গিল ও সুদর্শন ৭৪ বলে ১১৪ রানের জুটি গড়ে দিয়ে যান। সুদর্শন ৩৬ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৫২ রানে আউট হলে এই জুটি ভাঙে। তারপর গিল ও জস বাটলারের ঝড়ো ৫৮ রানের জুটি। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন গিল। ৫৫ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৯০ রান করে আউট হন তিনি।শেষ দিকে ২৩ বলে ৮ চারে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলীয় স্কোরবোর্ড জাঁকালো করেন বাটলার। ৫ বলে ১১ রান করে অবদান রাখেন শাহরুখ খান। লক্ষ্যে নেমে কেবল আজিঙ্কা রাহানের ব্যাট হেসেছে। দুই প্রান্ত থেকে রশিদ ও প্রসিদ্ধ কলকাতাকে চেপে ধরেন। দুজনে মিলে ৮ ওভারে মাত্র ৫০ রান দেন, ভাগাভাগি করেন চার উইকেট।৩৬ বলে ৫০ রান করেন রাহানে। শেষ দিকে আংক্রিশ রাঘুবংশী ১৩ বলে ২৭ রান করে স্কোর দেড়শ পার করেন। এছাড়া ২১ রান আসে আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে। ৮ উইকেটে ১৫৯ রানে থামে কলকাতা। রশিদ ও প্রসিদ্ধ সমান ২৫ রান দেন, নেনও দুটি করে উইকেট। সাই কিশোর ৩ ওভারে ১৯ রান খরচায় এক উইকেট নিয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারলো কলকাতা। যদিও সপ্তম স্থানেই আছে তারা। আর গুজরাট আট ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান সুসংহত করলো।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ছয় দফা দাবি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে না মানলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ডাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’।রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে হওয়া মহাসমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি নিশান রহমান।মহাসমাবেশ ঘিরে সকাল থেকে বিভিন্ন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হোন। এ সময় তারা ৬ দফা দাবি পূরণে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে একত্রিত হোন শেরে বাংলানগর মহিলা পলিটেকনিক এর সামনে।শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের আন্দোলন যৌক্তিক। তবে তারা রাস্তায় থেকে যানজট তৈরি করতে চাচ্ছেন না। দীর্ঘ আট মাস ধরে আন্দোলন করলেও সরকার আমলে নিচ্ছেন না। তাদেরকে সরকার রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে তারা আর সময় দেয়ার পক্ষে নয়। খুব শিগগিরই তাদের দাবি পূরণ করা না হলে আরও কঠোর থেকে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।তারা আরও জানান, শিক্ষার্থীরা যানজট বা জনদুর্ভোগ চায় না। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না। সমাবেশে কুমিল্লায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদও জানানো হয়।এর আগে সকাল থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার পর থেকে তারা সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তাদের হাতে দাবি-দাওয়া সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। ভোরের আকাশ/এসএইচ
ছয় দফা দাবি আদায় ও কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কাফনের কাপড় পড়ে ও মাথায় সাদা কাপড় বেঁধে গণমিছিল করছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা।শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুম্মার নামাজ শেষে তেজগাঁও পলিটেকনিক থেকে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে মিছিল করবেন তারা।এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকাসহ সারা দেশে মশাল মিছিল করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।এ সময় তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেকে নাটকীয় বৈঠক করে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে তারা কুমিল্লায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কূটনৈতিক দলসহ ভারত সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। সোমবার (২১ এপ্রিল) মোদির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন তিনি।দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন এমন একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে চায়, যা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই লাভবান হবে।সম্প্রতি বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে লাভজনক বাণিজ্য চুক্তির জন্যেই এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।গণতান্ত্রিক বিশ্বের রক্ষক হওয়ার সুবাদে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ে বরাবরই নিজেদের বিশেষ অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে বলেছে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি।অবশ্য সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যালোচনা করে অনেক কূটনীতি বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, চীনের সাম্প্রতিক ‘বাণিজ্য যুদ্ধের’ ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাণিজ্যচুক্তি ইস্যুতে ভারতের কোনো ‘তাড়া’ নেই।নয়াদিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ভ্যান্সের এবারের সফরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বহুমুখী বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিভিন্ন খাতের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১২ ঘণ্টা আগে
দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র ঢাকায় ডেলিভারিম্যান পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত ১৯ মার্চ থেকেই আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী আরো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।প্রতিষ্ঠানের নাম: দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডপদের নাম: ডেলিভারিম্যানপদসংখ্যা: নির্ধারিত নয়শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি/সমমানঅন্যান্য যোগ্যতা: সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অভিজ্ঞতা: প্রযোজ্য নয়চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিককর্মক্ষেত্র: মাঠ পর্যায়ে প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষবয়সসীমা: নির্ধারিত নয়কর্মস্থল: ঢাকাকম্পেন্সেশন এবং অন্যান্য সুবিধাসমূহ: হাজিরা বোনাস - ৩,৫০০ টাকা (২৬ দিন উপস্থিত থাকতে হবে), পার্সেল প্রতি কমিশন - ১৮ টাকা থেকে ৩৭ টাকা, কাস্টমারদের ফোন করার জন্য কোম্পানী থেকে সিম দেয়া হবে, উৎসব ভাতা, দুর্ঘটনা জনিত চিকিৎসা সুবিধা, জীবন বীমা সুবিধা।আবেদন যেভাবে: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ সময়: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিলেন।নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন- রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তার ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন।বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।আকরামের পরিবারের বরাত দিয়ে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাশিয়ার সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।রাশিয়া থেকে মুঠোফোনে তার এক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা আকরামের লাশ দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দুজনই বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।শনিবার (১২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ জন ভর্তি হন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে।ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা তিনজন করে মোট ছয়জন। ঢাকা বিভাগের জেলা পর্যায়ে ভর্তি রোগী চারজন। বাকি দুজন চট্টগ্রাম বিভাগের।গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনসহ চলতি বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৬ জন।ভোরের আকাশ/এসএই
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৯ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার (৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সাতজন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনজন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) দুইজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন রয়েছেন।গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত ১ হাজার ৯০৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ২৬ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৯ শতাংশ নারী রয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত ডেঙ্গুতে ১৪ জন মারা গেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫৭৫ জন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল চত্বরে সরকারি ফার্মেসি চালু করবে সরকার। বহুল ব্যবহৃত ২৫০ ধরণের ওষুধ মিলবে এসব ফার্মেসিতে। ওষুধও কেনা যাবে তিন ভাগের এক ভাগ দামে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সারাদেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল চত্বরে সরকারি ফার্মেসি চালু করা হবে। গুণগত ও মানসম্পন্ন ওষুধ সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ২৫০ ধরনের ওষুধ এক-তৃতীয়াংশ দামে পাবেন সাধারণ মানুষ।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ল্যাব সার্ভিস আছে, অন্য প্রাইমারি হেলথকেয়ার সার্ভিস আছে, কিন্তু কোথাও কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল সার্ভিস নেই। নতুন উদ্যোগ হিসেবে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল চত্বরে সরকারি ফার্মেসি চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এতে ২৫০ ধরনের ওষুধ এক-তৃতীয়াংশ দামে পাবেন সাধারণ মানুষ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ। দিবসটি উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশও এ বছর দিবসটি উদযাপন করবে। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত’। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব স্তরের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার নারী ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে একটি সুরক্ষিত ও আলোচিত জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বে দাঁড় করাতে অঙ্গীকারবদ্ধ।মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানোর লক্ষ্যে অধিকতর কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। এ জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব পর্যায় থেকে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি।উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৪৬ সালের জুন ও জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়। ১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালনের প্রস্তাব দেওয়া হলে তা ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আগামী বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে সিনহা হত্যামামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি গ্রহন করবে হাইকোর্ট। সোমবার (২১ এপ্রিল) দৈনন্দিন কার্যতালিকায় এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা হতে মূলতবি/ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ডেথ রেফারেন্স (১৪/২০২২) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার পাঁচদিন পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদি হয়ে আদালতে মামলা করেন।২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় র্যাব। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।এছাড়া কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকি সাত আসামি খালাস পান। পরে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজধানীর বনানী ১১ নম্বর রোড এলাকায় লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারধর করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। রিকশা চালানোর দাবিতে তারা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছে। আজ আন্দোলন চলাকালে যারা ছবি-ভিডিও ধারণ করেন তাদের ওপর চালকরা হামলা করেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরের দিকে বনানী ১১ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।বনানী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে গুলশান সোসাইটি ঘোষণা করে ওই এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু সোসাইটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি রিকশাচালকরা। তারা গত কয়েকদিন ধরে গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। আজ সোসাইটির লোকজন গুলশানের শেষ মাথায় এবং বনানী এলাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করছিল। এতে চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে যান। তারা বনানী ১১ নম্বর এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন। এসময় যারা আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও তুলতে আসেন তাদের লাঠিপেটা করেন তারা।বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বর্তমানে বনানী ১১ নম্বর রোডে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও একজন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের খালকুলা মাঠে এ ঘটনা ঘটে বলে বালিয়াকান্দি থানার ওসি জামালউদ্দিন জানান। নিহত ওই কৃষকের নাম কামাল শেখ। তিনি খালকুলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবু সাইদ শেখের ছেলে।স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মুকুল সিকদার জানান, সকালে কামাল তার বাবা সাইদ ও ভাগিনা রাজুকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পাশে মরিচ খেতে কৃষিকাজ করতে যান। এ সময় হঠাৎই বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে তারা তিনজন খেত থেকে দৌড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার সময় বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই কামাল মারা যান। রাজু অজ্ঞান হয়ে গেলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। তিনি এখন সুস্থ আছেন।বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দীন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল)-এর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা।সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।সভায় এনসিপির পক্ষ থেকে ‘আগে মৌলিক সংস্কার, পরে নির্বাচন’ এই অবস্থানটি তুলে ধরা হয়। দলটির প্রতিনিধিরা নির্বাচনি সংস্কারের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য করার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচিত হয় নাগরিকদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর উপায়, বিশেষত তরুণদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার বিষয়ে।এনসিপির পক্ষে সভায় অংশ নেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং মাহবুব আলম। আনফ্রেলের পক্ষে ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্দু আবেরাথনা, প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট মে বুথয় এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বলিউডের ব্যবসাসফল সিনেমার অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম দিব্যা দত্ত। নিজের অভিনয় জীবনে অনেক হিট সিনেমায় কাজ করেছেন। ‘বীর-জারা’, ‘আজা নাচলে’ সহ বহু ছবিতে নিজের অভিনয় গুণে দর্শকদের মন জয় করেছেন। শাহরুখ খান ও প্রীতি জিনতা থেকে শুরু করে ইরফান খানের সঙ্গে একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন দিব্যা। যদিও নায়িকা নয়, নজর কেড়েছেন পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেই।সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি নাইন বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শৈশবের একটি ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন দিব্যা। জানান, ছোটবেলায় বাথরুমেই বসে পড়াশোনা করতে হতো তাকে! এই অদ্ভুত অভ্যাসের পেছনে রয়েছে মজার একটি কারণ। দিব্যা জানান, ছোটবেলায় শুয়ে শুয়ে পড়ার অভ্যাস ছিল তার। ফলে প্রায়ই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যেতেন। একদিন মা রেগে গিয়ে বলেন, এভাবে পড়লে চলবে না, সোজা হয়ে চেয়ারে বসে পড়তে হবে। তখন দিব্যা মজার ছলেই বলেন, তাহলে আমাকে বাথরুমেই চেয়ার-টেবিল দিয়ে দাও। মায়ের কাছে কথাটি ছিল মজার না, বরং কার্যকর এক কৌশল। সত্যিই তিনি বাথরুমে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে দেন! এরপর থেকে বাথরুমেই পড়তে বসতেন দিব্যা। কারণ সেখানে ঘুমিয়ে পড়ার সুযোগ ছিল না।হাসতে হাসতে দিব্যা বলেন, সেই বছরই আমি ক্লাসে ফার্স্ট হয়েছিলাম। আজও এ ঘটনা মনে পড়লে মজা পাই। যদিও তখন এটাকে শাস্তিই মনে হতো।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইডেন গার্ডেন্সে সফরকারী দল গুজরাট টাইটান্সের টপ অর্ডার ঝলক দেখালেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ ব্যর্থ। প্রতিপক্ষ দলের বোলাররা কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য। রশিদ খান ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা জোড়া উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মিতব্যয়ী বোলিং করে রেখেছেন দারুণ অবদান। কলকাতার মাঠে গুজরাটের ৩৯ রানের জয়ের ভিত অবশ্য গড়ে দেন দুই ওপেনার শুবমান গিল ও সাই কিশোর। দুজনেই ফিফটি করেন।গিল ও সুদর্শন ৭৪ বলে ১১৪ রানের জুটি গড়ে দিয়ে যান। সুদর্শন ৩৬ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৫২ রানে আউট হলে এই জুটি ভাঙে। তারপর গিল ও জস বাটলারের ঝড়ো ৫৮ রানের জুটি। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন গিল। ৫৫ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৯০ রান করে আউট হন তিনি।শেষ দিকে ২৩ বলে ৮ চারে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলীয় স্কোরবোর্ড জাঁকালো করেন বাটলার। ৫ বলে ১১ রান করে অবদান রাখেন শাহরুখ খান। লক্ষ্যে নেমে কেবল আজিঙ্কা রাহানের ব্যাট হেসেছে। দুই প্রান্ত থেকে রশিদ ও প্রসিদ্ধ কলকাতাকে চেপে ধরেন। দুজনে মিলে ৮ ওভারে মাত্র ৫০ রান দেন, ভাগাভাগি করেন চার উইকেট।৩৬ বলে ৫০ রান করেন রাহানে। শেষ দিকে আংক্রিশ রাঘুবংশী ১৩ বলে ২৭ রান করে স্কোর দেড়শ পার করেন। এছাড়া ২১ রান আসে আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে। ৮ উইকেটে ১৫৯ রানে থামে কলকাতা। রশিদ ও প্রসিদ্ধ সমান ২৫ রান দেন, নেনও দুটি করে উইকেট। সাই কিশোর ৩ ওভারে ১৯ রান খরচায় এক উইকেট নিয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারলো কলকাতা। যদিও সপ্তম স্থানেই আছে তারা। আর গুজরাট আট ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান সুসংহত করলো।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকেন পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠেী। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়িদের প্রধান এ সামাজিক উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে এরই মধ্যে বৈসাবি উৎসবের রং লেগেছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে পাহাড়। ঘরে ঘরে আনন্দের ধ্বনি। বসেছে আনন্দ-উল্লাস আর নাচ-গানের আসর।পুরনো বছরের বিদায় ও নতুন বছরের আগমনের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে নতুন সাজে সেজেছে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলার মধ্য দিয়ে জেলায় জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এ উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাজধানীতে বসবাসরত পাহাড়ি তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ, জায়া-জননীরা মিলেমিশে প্রাণের এ উৎসবে অংশ নিতে যাচ্ছে। শনিবার রাজধানীতে বৈসাবি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। বেইলি রোডের পার্বত্য কমপ্লেক্স হতে রমনা পার্কের লেকে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিরা মেতে উঠবে ‘বৈসাবি’ উৎসবে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীদের রং-বেরঙের সাজ আনন্দ বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। জনশ্রুতি রয়েছে, বৈসাবির শিকড় মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস ও কম্বোডিয়া একই সময়ে নববর্ষ উদযাপিত হয়-যা ‘সংক্রান’ নামে পরিচিত।ধারণা করা হয়, শত শত বছর আগে আরাকান ও বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) থেকে মারমা জনগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার সময় তাদের সাংগ্রাই উৎসব সঙ্গে নিয়ে আসে। একইভাবে চাকমা ও ত্রিপুরাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও উৎসবও ধীরে ধীরে একসঙ্গে মিলিত হয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ হয়েছে।চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা বৃহত্তর মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত। বৈশাখ মাসে তিব্বত থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত নতুন বছর শুরু হয়। পার্বত্য এলাকার জনগোষ্ঠীর সবাই নিজেদের নববর্ষ পালন করে থাকে এ সময়টিতে। বৈসাবি নামটি তিনটি জনগোষ্ঠীর উৎসবের আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে। চাকমাদের ‘বিঝু’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ ও ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’-এই তিন উৎসব সমন্বয়ে ‘বৈসাবি’। তবে শুধু বৈসাবি পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির অনুষ্ঠানের বহুমাত্রিকতাকে প্রকাশ করে না।বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় উৎসবকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর লোকজন ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে। চাকমারা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিসু হিসেবে পালন করে ‘বৈসাবি’ উৎসবকে। বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই উৎসব পালন করা হয়। বিঝু চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান আনন্দ-উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। ১২ এপ্রিল পালন করা হয় ফুলবিঝু।এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই ছেলেমেয়েরা বেরিয়ে পড়ে ফুল সংগ্রহের জন্য। সংগৃহীত ফুলের একভাগ দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করা হয়, আর অন্যভাগ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ফুলগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পালন করা হয় মূল বিঝু। এদিন সকালে বুদ্ধমূর্তি স্নান করিয়ে পূজা করা হয়। ছেলে-মেয়েরা তাদের বৃদ্ধ ঠাকুরদা-ঠাকুরমা এবং দাদু-দিদাকে স্নান করায় এবং আশীর্বাদ নেয়। এদিন ঘরে ঘরে পোলাও, পায়েস, পাচনসহ (বিভিন্ন রকমের সবজির মিশ্রণে তৈরি এক ধরনের তরকারি) অনেক সুস্বাদু খাবার রান্না করা হয়।১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পালন করা হয় গোজ্যেপোজ্যে দিন (অবসর বা বিশ্রাম নেয়ার সময়)। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পাহাড়ে বসবাসকারী জনপদগুলো এ দিনে মেতে ওঠে ভিন্ন এক আনন্দে। বড় কোনো গাছ থাকলে তার নিচে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে সম্মান জানানো হয় এ দিনে। বিঝু উৎসব চলাকালে কোনো জীবিত প্রাণী হত্যা করা নিষেধ রয়েছে চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে।চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন এই তিন দিনব্যাপী পালিত হয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব বৈসু। প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কতাল। মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয়ে থাকে এ দিনে। হারি বৈসুতে ভোরবেলায় গাছ থেকে ফুল তোলার হিড়িক পড়ে যায়। সেই ফুল দিয়ে বাড়িঘর সাজানো ও পবিত্র স্থানগুলোতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বৈসাবি উৎসবের জনপ্রিয় খাবার ‘গণত্মক বা পাচন’ রান্না হবে প্রায় সব ত্রিপুরাদের ঘরে। ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজির মিশ্রণে রান্না করা হয় এ বিশেষ সবজি।এছাড়া পিঠা, সেমাই, মুড়ি-মুড়কি, চানাচুর, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ঠাণ্ডা পানীয় তো থাকছেই। ত্রিপুরা ও মারমাদের পানি উৎসব প্রায় কমবেশি অনেকের কাছে জনপ্রিয়। এটি বৈসাবি উৎসবেরই একটি অংশ। এই উৎসবে সবাই পরস্পরের দিকে পানি ছুঁড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন, যেন গত বছরের সব দুঃখ, গ্লানি ও পাপ ধুয়ে যায়। এর আগে হয় জলপূজা। এর মাধ্যমে পরস্পরের বন্ধন আরো দৃঢ় হয়। মারমা সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের প্রিয় মানুষটির দিকে পানি ছিটানোর মাধ্যমে সবার সামনে ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়। ভালোবাসার এমন বর্ণাঢ্য উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি ‘গান্ধর্ব্য’ কেবল বৈসাবি উৎসবেই শোভা পায়।বান্দরবানের তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিষু উৎসব পালন করে থাকে। এদিন সাংগু নদীতে কলাপাতায় ভক্তি ও শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর পূজা করে থাকেন তারা। ঘিলা খেলার মাধ্যমে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর বিষু উৎসব শুরু হয়। সঙ্গে থাকে ২০ থেকে ৩০ পদের সবজি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাচন রান্না আর ভোজন। বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় এবার চার দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের আয়োজন করেছে।উৎসবকে ঘিরে দুদিনব্যাপী পানিখেলা, পিঠা তৈরি, বলীখেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন চলবে। সাংগ্রাই উৎসবের মূল আকর্ষণ-মৈত্রী পানিবর্ষণ জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠবে জলকেলি বা পানি ছিটানো খেলায়। এছাড়া দিনব্যাপী চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৌদ্ধ বিহারসমূহে (ক্যায়াং) অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন। এই সময় হাজার হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে পাহাড়ি নারী-পুরুষরা প্রার্থনায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করবেন। অসমের জাতীয় উৎসব হলো বিহু। বিহু সমাজের সবাই এই উৎসব উদযাপন করে থাকে। এর মূল অংশ হলো কৃষি ভিত্তিক উৎসব। বি শব্দটির অর্থ প্রার্থনা এবং শু শব্দের অর্থ শান্তি ও সমৃদ্ধি। বিশু শব্দ থেকে বিবর্তনের ধারায় বিহু শব্দের উৎপত্তি। জনশ্রুতি আছে বিহু মূলত আসামের চুটিয়া উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত।এক্ষেত্রে হু শব্দটি তারা দান অর্থে ব্যবহার করে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসম জাতি চৈত্র সংক্রান্তিতে বিহু উৎসব উদযাপন করে থাকে। বান্দরবানে ম্রো সম্প্রদায় চৈত্র সংক্রান্তিতে পালন করে চাংক্রান উৎসব। প্রতিবছর বর্ষবরণ উপলক্ষে ম্রো সম্প্রদায়ের পিঠা উৎসব, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও তাদের তৈরি বিশাল আকারের বাঁশের প্লোং বাঁশি বাদ্যযন্ত্র উৎসবের আকর্ষণকে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে।এছাড়া উৎসব ঘিরে পানিখেলা, তৈলাক্ত বাঁশে বেয়ে ওঠা, লাঠি দিয়ে শক্তি প্রদর্শন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কূটনৈতিক দলসহ ভারত সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। সোমবার (২১ এপ্রিল) মোদির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন তিনি।দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন এমন একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে চায়, যা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই লাভবান হবে।সম্প্রতি বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে লাভজনক বাণিজ্য চুক্তির জন্যেই এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।গণতান্ত্রিক বিশ্বের রক্ষক হওয়ার সুবাদে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ে বরাবরই নিজেদের বিশেষ অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে বলেছে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি।অবশ্য সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যালোচনা করে অনেক কূটনীতি বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, চীনের সাম্প্রতিক ‘বাণিজ্য যুদ্ধের’ ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাণিজ্যচুক্তি ইস্যুতে ভারতের কোনো ‘তাড়া’ নেই।নয়াদিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ভ্যান্সের এবারের সফরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বহুমুখী বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিভিন্ন খাতের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পর্দা — একটি শব্দ, যার ভেতর লুকিয়ে রয়েছে মানব সমাজের নৈতিকতা, সৌন্দর্যবোধ, আত্মমর্যাদা এবং শালীনতার নিপুণ পরিচায়ক। ইসলাম এই পর্দা প্রথাকে শুধু একটি আচার বা ঐতিহ্যগত নিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং এটিকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনের শান্তি ও সুস্থতার অপরিহার্য শর্ত হিসেবে নির্দেশ করেছে। কুরআন ও সুন্নাহয় স্পষ্টভাবে নারীর পর্দা পালনের নির্দেশনা এসেছে, যা কেবল ইহকালীন সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষাই নয়, বরং আত্মশুদ্ধি এবং পরকালীন মুক্তির মাধ্যমও।ইসলামে নারীর মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ। পবিত্র কুরআনে নারীকে সম্মান, অধিকার এবং মর্যাদার যে আসন প্রদান করা হয়েছে, তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে অনন্য। নারীর শালীনতা ও সম্মান রক্ষায় ইসলাম পর্দা প্রথাকে অপরিহার্য বিধান হিসেবে নির্ধারণ করেছে। পর্দা নারীকে লাঞ্ছনা, অসম্মান এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি, এটি পুরুষের দৃষ্টিশুদ্ধি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চাও নিশ্চিত করে।পবিত্র কুরআনে পর্দা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: “মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। এতে তাদের জন্য রয়েছে পরিশুদ্ধি। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ সম্যক জানেন। এবং মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, যা নিজে থেকেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে তা ছাড়া।” (সূরা আন-নূর, ২৪:৩০-৩১)এই আয়াত দ্ব্যর্থহীনভাবে বুঝিয়ে দেয়, পর্দা শুধুমাত্র নারীর জন্য নয়, পুরুষের জন্যও দায়িত্ব। পর্দা মানে কেবল পোশাকের সীমারেখা নয়, বরং দৃষ্টির সংযম, আচরণে শালীনতা, এবং হৃদয়ের পবিত্রতা। পর্দা মানে নিজেকে এমনভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে অন্যের কাছে প্ররোচনা বা লোভের বস্তু হয়ে না দাঁড়ায়।ইসলামে পর্দা শুধু নারী-পুরুষের শারীরিক সৌন্দর্য আড়াল করার মাধ্যম নয়, বরং এটি চরিত্রের পবিত্রতা রক্ষার প্রতীক। পোশাকের মধ্যে লুকিয়ে থাকে ব্যক্তির পরিচয়, মনস্তত্ত্ব এবং জীবনদর্শন। একজন নারীর পর্দাশীল জীবনাচার তার ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করে, সমাজে তাকে মর্যাদাশীল অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করে এবং তাকে হয়রানি, কু-প্রস্তাব ও লাঞ্ছনা থেকে নিরাপদ রাখে।রাসূলুল্লাহ (স.) এর জীবনে পর্দা প্রথার গুরুত্বরাসূলুল্লাহ (স.) নারীর মর্যাদা ও পর্দা প্রসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা।” (বুখারি ও মুসলিম) নারীর লজ্জাশীলতা তার পর্দাশীলতার অন্যতম অভিব্যক্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে লজ্জা একটি পূর্ণাঙ্গ নৈতিক গুণ, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের চরিত্র গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নারীর জন্য এটি তার নিজস্ব অস্তিত্বের অংশ। কারণ, নারীর দেহের গঠন এবং সৌন্দর্য সহজাতভাবে পুরুষকে আকর্ষণ করে, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তাই ইসলাম নারীর জন্য পর্দাকে বাধ্যতামূলক করেছে।পর্দা প্রথার সামাজিক তাৎপর্যএকটি সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্দা প্রথা এক অপরিহার্য উপাদান। পর্দাহীনতা কেবল ব্যক্তিগত অবক্ষয়ই নয়, সামাজিক নৈতিকতাকেও ভেঙে দেয়। ইসলাম চায় একটি সুন্দর, নিরাপদ এবং সদাচারপূর্ণ সমাজ, যেখানে নারী-পুরুষ উভয়েই মর্যাদাশীল অবস্থায় বসবাস করবে। পর্দা সমাজে পবিত্রতা, সৌহার্দ্য এবং শালীনতার আবহ তৈরি করে।যদি একজন নারী নিজেকে পর্দার মধ্যে রাখেন, তবে তার প্রতি অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি সম্মানজনক হয়। একইভাবে, একজন পুরুষ যদি তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে, তাহলে সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। দুই পক্ষের সম্মিলিত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে একটি সুস্থ, নৈতিক সমাজ ব্যবস্থা।পর্দার মানসিক ও আত্মিক গুরুত্বপর্দা শুধুমাত্র বাহ্যিক নয়, এটি মানসিক এবং আত্মিক পর্দাও বটে। একজন মুমিন নারী যখন নিজেকে শালীন পোশাকে ঢেকে রাখেন এবং বিনয় ও সংযমের আচরণ চর্চা করেন, তখন তার অন্তরের পর্দাও দৃঢ় হয়। এতে করে সে নিজেকে অহঙ্কার, অসততা, কামনা-বাসনা ইত্যাদি আত্মিক ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে পারে।অপরদিকে, বাহ্যিক পর্দার অভাব ধীরে ধীরে আত্মিক দূষণ সৃষ্টি করে। কারণ, যখন দৃষ্টিশীলতা ও আচরণে শালীনতা লুপ্ত হয়, তখন মনও কলুষিত হয়ে পড়ে। আর এই অভ্যাসই একসময় সমাজে চরিত্রহীনতার প্রসার ঘটায়।পর্দা: নারী স্বাধীনতার প্রতিকূল নয়বর্তমানে অনেকে মনে করেন, পর্দা নারীর স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে। এটি একেবারে ভ্রান্ত ধারণা। বরং পর্দা নারীকে তার প্রকৃত মর্যাদা ও স্বাধীনতা দেয়। পর্দাশীল নারী নিজেকে বাজারের পণ্যের মতো উপস্থাপন করতে বাধ্য হয় না। সে নিজের ইচ্ছা ও মর্জি অনুযায়ী সম্মান বজায় রেখে সমাজে অবাধ চলাফেরা করতে পারে। পর্দা নারীর ব্যক্তিত্বের সম্মান রক্ষা করে এবং তাকে পুরুষতান্ত্রিক লোলুপতার শিকার হওয়া থেকে বাঁচায়। ইসলাম নারীর জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান, গবেষণা, ব্যবসা, সমাজসেবা সবকিছুর অনুমোদন দিয়েছে; তবে তা শালীনতা, সম্মান ও নিরাপত্তার শর্ত সাপেক্ষে। আর এই শালীনতার সবচেয়ে বড় প্রহরী হলো পর্দা।পর্দার সুফলপর্দার সুফল কেবল একজন নারী বা তার পরিবার পর্যন্ত সীমিত থাকে না; বরং একটি জাতি ও সমাজের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে নারীর পর্দাশীলতার উপর। একজন পর্দানশীন মা তার সন্তানকে শালীনতা, নৈতিকতা ও আদর্শের শিক্ষা দিতে পারেন। পর্দাশীল সমাজে লাম্পট্য, যৌন হয়রানি, ব্যভিচার, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মতো সামাজিক ব্যাধি কমে আসে। এতে পরিবার হয় দৃঢ়, সমাজ হয় নিরাপদ এবং রাষ্ট্র হয় নৈতিকতাসম্পন্ন।ইসলাম নারীর জন্য পর্দা প্রথাকে বাধ্যতামূলক করে তাকে অসম্মান বা অবহেলার শিকার করেনি, বরং তার মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পর্দা নারীর আত্মমর্যাদার ঢাল, তার আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি এবং সমাজে তার সম্মানের বাহক। পর্দা শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতার পরিচায়ক। এটি একদিকে যেমন নারীকে রক্ষা করে, তেমনি পুরুষকেও সংযত রাখে। ইসলামী সমাজব্যবস্থায় পর্দা প্রথা একটি অপরিহার্য অনুশীলন, যা ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের শান্তি, স্থিতি ও কল্যাণের জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করে।আজকের বিশ্ব যখন পর্দাহীনতার নামে নারী স্বাধীনতার অপব্যাখ্যা করছে, তখন ইসলামের এই চিরন্তন পর্দা প্রথা মানব জাতির জন্য আদর্শ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পর্দা নারীকে যেমন আত্মিক শক্তি দেয়, তেমনি সমাজকেও করে নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। তাই ইসলামী পর্দা প্রথার গুরুত্ব ও তাৎপর্য মানবজীবনে অপরিসীম।লেখক: গণসংযোগ কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভোরের আকাশ/মি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিলেন।নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন- রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তার ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন।বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।আকরামের পরিবারের বরাত দিয়ে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাশিয়ার সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।রাশিয়া থেকে মুঠোফোনে তার এক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা আকরামের লাশ দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কূটনৈতিক দলসহ ভারত সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। সোমবার (২১ এপ্রিল) মোদির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন তিনি।দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন এমন একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে চায়, যা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই লাভবান হবে।সম্প্রতি বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে লাভজনক বাণিজ্য চুক্তির জন্যেই এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।গণতান্ত্রিক বিশ্বের রক্ষক হওয়ার সুবাদে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ে বরাবরই নিজেদের বিশেষ অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে বলেছে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি।অবশ্য সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যালোচনা করে অনেক কূটনীতি বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, চীনের সাম্প্রতিক ‘বাণিজ্য যুদ্ধের’ ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাণিজ্যচুক্তি ইস্যুতে ভারতের কোনো ‘তাড়া’ নেই।নয়াদিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ভ্যান্সের এবারের সফরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বহুমুখী বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিভিন্ন খাতের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাজেট ব্যয়ের বড় চাপে পড়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নেই মাসে লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হবে সরকারকে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের পরও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে রাজস্ব ঘাটতি ছাড়িয়ে গেছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার নিরিখে পিছিয়ে আছে প্রায় ২১ শতাংশ।এদিকে বিপুল ব্যয়ের চাপ থাকলেও পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান নেই সরকারের। রাজস্ব আদায়ে গতি শ্লথ। বিদেশি উৎস থেকে কাক্সিক্ষত ঋণ মিলছে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও টাকা ছাপিয়ে সরকারকে দিচ্ছে না। উল্টো আগের দেওয়া টাকা ফেরত নিচ্ছে। জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ায় মানুষ সঞ্চয়পত্র কেনার পরিবর্তে ভাঙাচ্ছে বেশি। এতে বাজেট ঘাটতি পূরণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে সরকার। হু হু করে বাড়ছে সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ হার।ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে স্বল্প মেয়াদি ও বন্ডের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদি ব্যাংক ঋণ সংগ্রহ করে সরকার। বিল ও বন্ডে বাড়তি সুদ পেয়ে ব্যাংকগুলোও এখন সরকারকে ঋণ দিতে উৎসাহী হচ্ছে। এই খাতটি নিরাপদ ও লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া একপ্রকার বন্ধই রেখেছে ব্যাংকগুলো। এতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছেছে। কমেছে বেসরকারি বিনিয়োগ। সংকুচিত হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ শতাংশের কম বাজেট বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সরকার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৩ লাখ ১৮ হাজার কোটি। বাজেট লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হলে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে বাকি ৪ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। এত প্রতি মাসে ব্যয় করতে হবে ১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকার মতো। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এটি মূল বাজেটের থেকে ৫৩ হাজার কোটি টাকা কম।অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের মতে, বছরের শেষ সময়ে একসঙ্গে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। পাশাপাশি অপচয়, দুর্নীতি ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকে। অর্থ বিভাগ এ শঙ্কার কথা জানিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শেষ সময়ে মন্ত্রণালয়গুলোর অস্বাভাবিক খরচের কারণে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এছাড়া রাজস্ব আহরণ ও ব্যয়-এ দুয়ের মধ্যে কোনো পরিকল্পনা থাকছে না। এতে অপরিকল্পিত ঋণ গ্রহণ এবং ঋণসংক্রান্ত ব্যয়ের দায়ভার বহন করতে হয় সরকারকে যা আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে দিচ্ছে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সরকার পরিচালনায় ৫ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে বাজেট বাস্তবায়নে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অর্থায়নের সমস্যা। গত সপ্তাহে বাজেট সংক্রান্ত এক সভায় এই পর্যবেক্ষণ এসেছে অর্থ বিভাগ থেকে। বাজেট প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়নের তদারকি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি।রাজস্ব আদায়ে সুখবর নেই : জুলাই-আগস্টের তুমুল আন্দোলন, সহিংসতা ও ক্ষমতার পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নামে। এর জের টানতে গিয়ে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যে রাশ টেনেও আহরণের ক্ষেত্রে সুবিধা করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।এনবিআরের হালনাগাদ প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার ৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৮১৭ কোটি ৯ লাখ টাকা; অর্থাৎ এ সময়ে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরের জন্য এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের মাঝপথে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি করা হয়।গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই লাখ ১৭ হাজার ৯৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে; যা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। রাজস্বের এ ঘাটতি কাটাতে সরকার সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে। পরে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের বাধা ও দাবির মুখে বহু পণ্যেই সেখান থেকে ফিরে আসার তথ্যও দিয়েছে এনবিআর।২০২৪ সালের জুনে বাজেট ঘোষণার পর মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, রিজার্ভের পতনসহ অর্থনীতিতে নানা সংকট শুরু হয়। বাজেট পাসের দুই সপ্তাহের মধ্যে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং এর ধারাবাহিকতায় গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলনের ধাক্কা ও সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ার প্রেক্ষাপটে আমদানি, রপ্তানি ও উৎপাদনসহ অর্থনীতির সব সূচক ধীর হয়ে আসে। এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ কমার ধারাও অব্যাহত থাকে। তবে ডিসেম্বরে এসে একক মাসের হিসাবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে দেখা গেছে রাজস্ব আহরণ। পরের মাস জানুয়ারিতেও তা বজায় ছিল। তবে ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলেও এ হার আবার ধীর হয়ে পড়েছে।মিলছে না কাক্সিক্ষত বাজেট সহায়তা : চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড় ও প্রতিশ্রুতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অপরদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণের প্রতিশ্রুতি ৬৭ শতাংশের বেশি কমেছে। এই সময়ে ২৩৫ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে।গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৭২০ কোটি ডলারের। প্রতিশ্রুতি নেমে এসেছে এক-তৃতীয়াংশে। এসময় চীন, ভারত ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো কোনো ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয়নি। একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে ৪১৩ কোটি ডলার ছাড় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৯৯ কোটি ডলার। এই হিসাবে অর্থছাড় কমেছে ১৭ শতাংশের বেশি। ঋণ কম আসলেও সরকারকে পরিশোধ করতে হচ্ছে বেশি। আলোচ্য আট মাসে সরকারকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বাড়াতে হয়েছে ৩০ শতাংশ। গত অর্থবছরে যেখানে ২০৩ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল, এবার সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৪ কোটি ডলারে।ব্যাংক ঋণেই ভরসা সরকারের : অর্থ সংস্থানের উৎস সংকুচিত হওয়ায় ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারকে। যে কারণে সরকারের ব্যাংকঋণ বাড়ছে দ্রুতগতিতে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ৯৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে কোন ঋণ দেয়নি। উল্টো আগের দেওয়া ঋণের ৪১ হাজার কোটি টাকার বেশি আদায় করেছে সরকারের কাছ থেকে। মূলত টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তাই মূল্যস্ফীতির বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবার সরকারকে ঋণ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংককে পরিশোধ করা ঋণের হিসাব বাদ দিলে মার্চ শেষে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নেওয়া নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে নিট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ছিল মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত দুই মাসে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ সাড়ে তিনগুণের বেশি বেড়েছে।চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। পরবর্তিতে সেই লক্ষ্যমাত্রা ২৭ শতাংশ কমিয়ে ৯৯ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত ঋণের চাহিদা কম থাকায় এই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়। তবে এখন চাহিদা বাড়তে থাকায় সরকারের ব্যাংক ঋণ সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আটকে রাখা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।এদিকে সরকার ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ার সুযোগ নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। মূলত স্বল্প মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও দীর্ঘ মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিভিন্ন সময়ে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয় সরকার। এই বিলের বিপরীতে সরকারের থেকে সুদ পায় ব্যাংকগুলো। আবার জরুরি প্রয়োজনে এসব বিল বা বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে নগদ অর্থ নিতে পারে ব্যাংকগুলো। তাই শিল্পবাণিজ্য ঋণের ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ খাতে ঝুঁকেছে দেশের ব্যাংকগুলো।যে কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি নেমেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ব অবস্থানে, ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সরাসরি সম্পৃক্ত। আর বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া। এদিকে সরকারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিলামে বেশি সুদ দাবি করছে ব্যাংকগুলো। সরকারের সামনে বিকল্প উৎস না থাকায় বাড়তি সুদেই ঋণ নিচ্ছে ব্যাংক থেকে।বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের মার্চের ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত ট্রেজারি বিলের নিলামে ৯১ দিনের বিল ১০.৯০ শতাংশ হারে, ১৮২ দিনের বিল ১১.২৫ শতাংশ হারে ও ৩৬৪ দিনের বিল ১১.৩০ শতাংশ সুদহারে বিক্রি হয়েছে। এর পরের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে এপ্রিলের ১৫ তারিখ। ওই দিন ৯১ দিনের বিল ১১.৪৫ শতাংশ হারে, ১৮২ দিনের বিল ১১.৭৫ শতাংশ হারে ও ৩৬৪ দিনের বিল ১১.৮৬ শতাংশ সুদহারে কিনেছে সরকার। একইভাবে বেড়েছে ট্রেজারি বন্ডের সুদ হারও। ১৬ এপ্রিল ৩ বছর ও ৫ বছর মেয়াদি সরকারি ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন বছর মেয়াদি বন্ডের সুদের হার বেড়ে দাঁয়িছে ১৩ দশমিক ০৬ শতাংশে। এর আগের সর্বশেষ নিলামে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ। পাশাপাশি পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ড বিক্রি হয়েছে ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ হারে পূর্বে যা ছিল ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ছয় দফা দাবি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে না মানলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ডাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’।রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে হওয়া মহাসমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি নিশান রহমান।মহাসমাবেশ ঘিরে সকাল থেকে বিভিন্ন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হোন। এ সময় তারা ৬ দফা দাবি পূরণে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে একত্রিত হোন শেরে বাংলানগর মহিলা পলিটেকনিক এর সামনে।শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের আন্দোলন যৌক্তিক। তবে তারা রাস্তায় থেকে যানজট তৈরি করতে চাচ্ছেন না। দীর্ঘ আট মাস ধরে আন্দোলন করলেও সরকার আমলে নিচ্ছেন না। তাদেরকে সরকার রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে তারা আর সময় দেয়ার পক্ষে নয়। খুব শিগগিরই তাদের দাবি পূরণ করা না হলে আরও কঠোর থেকে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।তারা আরও জানান, শিক্ষার্থীরা যানজট বা জনদুর্ভোগ চায় না। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না। সমাবেশে কুমিল্লায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদও জানানো হয়।এর আগে সকাল থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার পর থেকে তারা সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তাদের হাতে দাবি-দাওয়া সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঝিনাইদহে ১৬০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে আউশ ধানের বীজ ও সার বিতরণ শুরু হয়েছে।সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টায় সদর উপজেলা কৃষি অফিসে দুইদিন ব্যাপী বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী।সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর এ নবী'র সভাপতিত্বে বীজ ও সার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ জুনাইদ হাবীব ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মীর রাকিবুল ইসলাম।দুই দিনে প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হবে। সদর উপজেলায় ১৬০০ কৃষকের মধ্যে মোট ৮ মেট্রিক টন বীজ ও ৩২ মেট্রিক টন সার বিতরণ করা হচ্ছে। সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার এসব বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার দেখান।এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বৈষম্যববিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুর থানাধীন গোল চত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেফতার দেখান। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেফতার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৮ এপ্রিল তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যববিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট মিরপুর গোলচত্তর এলাকায় গুলিতে নিহত হন আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী। এ ঘটনায় তার বাবা আল আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, এরইমধ্যে সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যার মাধ্যমে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব।সোমবার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনের এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলতে চাই বর্তমান সরকার এক মুহূর্তের জন্যও ইন্টারনেট শাটডাউন করবে না। ভবিষ্যতে ইন্টারনেট যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে দেশীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদকদের সরকার শুল্ক সুবিধা দিচ্ছে বলেও জানান আহমেদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। আগামী মে মাসের মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ