ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ০২:৩৬ এএম
পানি পানের সময় যে কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন মহানবী (সা.)
পানি মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামত। শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পরিমাণমতো পানি পান করা জরুরি। তবে পানি পান করার ক্ষেত্রে কিছু শিষ্টাচার ও আদব রয়েছে, যেগুলো ইসলাম ধর্মে গুরুত্বসহকারে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কিছু অভ্যাস থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো—পানি পানের সময় পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা ও তাতে ফুঁ দেওয়া।
ইসলামী শরিয়তের আলোকে জানা যায়, রাসূল (সা.) পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তাতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন,
“রাসূল (সা.) পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তাতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন।”
(তিরমিজি, হাদিস: ১৮৮৮; মিশকাত, হাদিস: ৪২৭৭)
ধারনা করা হয়, পানিতে ফুঁ দিলে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে জীবাণু পানিতে মিশে যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এ কারণে গরম চা বা কফি ঠান্ডা করার সময়ও ফুঁ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী পানি পান করার আদব
পানি পানের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) যেসব নিয়ম অনুসরণ করতেন এবং অনুসারীদের করতে বলেছেন, তা হলো—
✅ ডান হাতে পানি পান করা
✅ বসে বসে পানি পান করা
✅ শুরুতে 'বিসমিল্লাহ' বলা এবং শেষে 'আলহামদুলিল্লাহ' বলা
কোরআনের বর্ণনায় পানির গুরুত্ব
পানির নিয়ামত সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেছেন—
“তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না?”
(সুরা ওয়াক্বিয়া, আয়াত: ৬৮–৭০)
ফতোয়া ও মতামত
প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ শায়খ উছায়মীন বলেন,
“পানীয় ঠান্ডা করার জন্য ফুঁ দেওয়াকে কেউ কেউ প্রয়োজন সাপেক্ষে বৈধ বলেছেন, তবে উত্তম হচ্ছে এ কাজ থেকে বিরত থাকা। খাবার গরম হলে তা ঠান্ডা করার জন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করা উচিত।”
(শরহ রিয়াযুছ ছালেহীন, ৪/২৪৪–৪৫)
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসলাম শুধু ইবাদতের নিয়মই নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের আদব ও স্বাস্থ্যবিধিও শিক্ষা দেয়। পানি পানের আদবগুলো অনুসরণ করলে তা যেমন সুন্নাত পালন হয়, তেমনি স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও তা উপকারী।
ভোরের আকাশ//হ.র