গাজাবাসীদের জন্য ‘বিশেষ ভিসা স্কিম’ চালুর আহ্বান ব্রিটিশ এমপিদের
গাজাবাসীদের জন্য ‘বিশেষ ভিসা স্কিম’ চালুর আহ্বান জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে চিঠি দিয়েছেন দেশটির ৬৭ জন সংসদ সদস্য ও লর্ডস সদস্য। ইউক্রেন যুদ্ধের সময় চালু হওয়া ‘ইউক্রেন ফ্যামিলি স্কিম’-এর অনুরূপ একটি উদ্যোগ গাজাবাসীদের জন্যও গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (৩০ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ–এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এমপিদের এই চিঠিতে ‘গাজা ফ্যামিলি স্কিম’ নামে একটি নতুন ভিসা প্রকল্প চালুর দাবি জানানো হয়েছে, যাতে গাজার ফিলিস্তিনিরা তাদের যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে পারেন। চিঠিতে এই সুবিধা গাজা উপত্যকা নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “যেভাবে যুক্তরাজ্য হংকং ও ইউক্রেন থেকে নির্যাতিতদের আশ্রয় দিয়েছে, তেমনি এবার গাজাবাসীদের প্রতিও মানবিকতা ও উদারতা দেখানো উচিত।”
২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর ব্রিটিশ সরকার চালু করেছিল ‘ইউক্রেন ফ্যামিলি স্কিম’। এই স্কিমের আওতায় ইউক্রেনীয়রা যুক্তরাজ্যে তিন বছর পর্যন্ত থাকার পাশাপাশি কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন।
চিঠিতে সই করেছেন লেবার পার্টির ৩৫ জন এমপি ও লর্ডস সদস্য, গ্রিন পার্টির চার এমপি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি টিম ফ্যারন ও লায়লা মোরান, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের কয়েকজন এমপি।
এছাড়া এতে রয়েছেন সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিন, জন ম্যাকডনেল এবং কনজারভেটিভ পার্টির একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ব্যারোনেস হেলিক।
চিঠিতে এমপিরা অভিযোগ করেন, গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে, ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে এবং খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তারা জানান, গাজার বহু মানুষ যুক্তরাজ্যে আসতে আগ্রহী হলেও ভিসা আবেদন করতে পারছেন না। কারণ গাজার বায়োমেট্রিক আবেদন কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে এবং রাফা সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। অনেকে মিশরে গিয়ে আটকে পড়েছেন, যেখানে তাদের শিক্ষার বা চিকিৎসার সুযোগ নেই।
চিঠির অন্যতম উদ্যোক্তা, লেবার এমপি মার্শা ডে করডোভা স্কাই নিউজকে বলেন, “ইউক্রেনের জন্য যেভাবে পরিবারভিত্তিক ভিসা স্কিম চালু হয়েছিল, গাজার ক্ষেত্রেও এমন উদ্যোগ নেয়া উচিত। এতে প্রমাণ হবে, সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিবারগুলোর পাশে আছে।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় নির্ধারিত সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিল করেছে জেরুজালেম জেলা আদালত। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি এবং আস্থাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে, যা প্রমাণিত হলে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে।রোববার (২৯ জুন) ইসরায়েলি দৈনিক ইদিওথ আহারনোথের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে। আদালতের রুদ্ধদ্বার শুনানির পর নেতানিয়াহুর অনুরোধে সাক্ষ্যগ্রহণ আপাতত স্থগিত করা হয়। আদালত জানায়, “নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে পূর্বের তুলনায় নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরিবর্তন এসেছে, তাই আমরা আংশিকভাবে তার আবেদন মঞ্জুর করছি।”শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান শ্লোমি বিন্ডার এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালক ডেভিড বারনিয়া। নেতানিয়াহু তার ট্রায়ালের শুনানি দুই সপ্তাহ পিছানোর আবেদন করলেও, অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ পর্যাপ্ত কারণ উল্লেখ ছিল না।এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার নেতানিয়াহুর বিচার বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই বিচারকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে “ডাইনি শিকার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।নেতানিয়াহু বর্তমানে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত—কেস ১০০০, ২০০০ এবং ৪০০০—যেগুলো ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জমা দেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের মে থেকে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, যিনি ফৌজদারি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।তবে শুধু দুর্নীতির অভিযোগ নয়, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ২০২৪ সালের নভেম্বরে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা অঞ্চল থেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে অন্তত ৫৬,৫০০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর বিচার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হাওয়াইদ মরুভূমিতে একটি স্বর্ণখনি ধসে অন্তত ৫০ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি রবিবার সকালের দিকে ঘটে।স্থানীয় দৈনিক আলরাকোবার প্রতিবেদনে জানা গেছে, খনির একটি অংশে বিপুল পরিমাণ পাথর ও বালি ধসে পড়ে শ্রমিকরা আটকা পড়েন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ও অন্যান্য শ্রমিকেরা উদ্ধারকাজ শুরু করলে কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে উদ্ধারকারী বাহিনীর কাছে প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া অধিকাংশ শ্রমিককে উদ্ধার করা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারণা করছেন, আটকা পড়াদের সবাই নিহত হয়েছে।প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, খনিতে শ্রমিকদের নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া দুই মাস আগে একই স্থানে একটি ধস নেমেছিল, কিন্তু সে সময় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।সুদান বিশ্বের অন্যতম বড় স্বর্ণ রপ্তানিকারী দেশ হলেও বেশিরভাগ খনিতে শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা আন্তর্জাতিক মহলে সুদান সরকারের ব্যাপক সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সূত্র: আনাদোলু এজেন্সিভোরের আকাশ//হ.র
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি টিকটক বিক্রির জন্য ‘অত্যন্ত ধনী’ এক ক্রেতার সন্ধান পেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।রোববার (৩০ জুন) ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমাদের কাছে টিকটকের জন্য একজন সম্ভাব্য ক্রেতা রয়েছে, তবে বিক্রি করতে হলে চীনের অনুমতি প্রয়োজন হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হয়তো সেই অনুমতি দেবেন।” তিনি আরও জানান, এই ক্রেতারা মূলত ধনী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল, তবে কোনো বড় প্রযুক্তি কোম্পানির নাম উল্লেখ করেননি।টিকটকের মার্কিন শাখার সম্ভাব্য বিক্রির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ, যা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ২০২৪ সালে দ্বিদলীয় সমর্থনে একটি আইন পাস করার মাধ্যমে জোরালো করেছে। আইন অনুযায়ী, যদি চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি না করে, তবে পুরো অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হবে।মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এই আইন বৈধ ঘোষণা করে। এরপর ট্রাম্প ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়ান। বর্তমানে টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর সেবা প্রদান করছে।সূত্র: বার্তাসংস্থা আনাদোলুভোরের আকাশ//হ.র
তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইজমিরে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।রোববার রাত থেকে ইজমিরের কুয়ুজাক ও দোয়ানব এলাকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে, যা আগুনকে আরও তীব্রতর করছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইউমাকলি। আগুনের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় চারটি গ্রাম ও দুটি পাড়া থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।ইউমাকলি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার, অগ্নিনির্বাপক বিমান এবং বিভিন্ন যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি এক হাজারের বেশি উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর কাজ করছেন।গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, পানির ট্রেলার, ট্রাক্টর এবং পানি বহনকারী হেলিকপ্টার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি পোড়া গাছ-পালা ঢেকে থাকা পাহাড় থেকে ধোঁয়া উঠছে যা পরিস্থিতিকে সংকটাপন্ন করছে।তুরস্কের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দাবানলের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রীষ্মকাল গরম ও শুষ্ক হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।তুরস্কের দাবানল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করেছে।ভোরের আকাশ//হ.র