× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বর্ষা উপলক্ষে শিবচরে নৌকা তৈরির ধুম

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৫ ০৩:২৯ পিএম

নৌকা  মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন  কাঠ মিস্ত্রিরা।

নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠ মিস্ত্রিরা।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরী ছোট বড়  নৌকা (কোষা) মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন  কাঠ মিস্ত্রিরা।  মাদারীপুরের শিবচরে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এসকল দিন মজুরেরা। এসব খেটে খাওয়া মানুষেরা বর্ষা মৌসুম ছাড়াও অন্য পেশায় শ্রম দিয়ে থাকেন।  

বর্ষা মৌসুমের আগেই তারা বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় নৌকা বা ‘কোষা’ তৈরীতে ব্যস্ত থাকেন।শিবচর নদী বিধৌত এলাকা হলেও নদী শাসনের ফলে পানি প্রবেশের দ্বার দিয়ে চাহিদা পরিমাণ বর্ষার মৌসুমে জোয়ারের পানি ডুকছে না।  পানি না থাকায় নৌকার চাহিদা কম,তবুও নৌকার দাম বাড়তি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার বেশ কিছু  গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘুরে এসব নৌকা তৈরীর কারিগরদের নৌকা বানাতে ব্যস্ত দেখা যায়,উপজেলার কাঁওড়াকান্দি পুরাতন ফেরিঘাট, চরজানাজাত, মাদবরেরচর হাটের পদ্মাপাড়ে, আড়য়াল খা নদীর পাড়, উতরাইল, চর শ্যামাইল, শেখপুর বাজার, পাঁচ্চর, উপশহর এলাকায়সহ শিবচরের বেশ কিছু জায়গায় এই নৌকা মেরামতে কর্ম ব্যস্ত দেখা যায় সাধারণ দিন মজুরদের। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এসব কোষা বানিয়ে আয় রোজগার করছে সাধারণ কাঠ মিস্ত্রীরা।

স্হানীয় লোকজন বলেন, আজকাল দেশের অনেক অঞ্চলেই সেই ৯০ দশকের মত পানি তেমন বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে না বিধায় নৌকার প্রচলন দিন দিন অনেকটাই কম দেখা যাচ্ছে।  মাঝে মাঝে বিল এলাকা ও নদী এলাকায় কিছু নৌকা দেখা গেলেও এসব নৌকা দিয়ে খেয়া ঘাটে সল্প পরিসরে যাত্রী পারাপার,সল্প দুরে বিল থেকে কাটা ধান,পাটসহ যে কোনো বর্ষা মৌসুমের ফসল বয়ে নেওয়ার কাজে লাগছে।এছাড়াও নদী,বিলের মাছ ধরার কাজসহ এই নৌকা ব্যবহার করছে অনেকেই। বিশেষ করে কৃষকদের কাজে বেশি ব্যবহিত করছে।আবার অনেকেই শখের বসে এই নৌকা ব্যবহার করছে।

৯০ দশকের তুলনায় নৌকার চাহিদা কিছুটা কম। কারণ আগের মত জোয়ারের পানি বিভিন্ন খাল বিলে তেমর প্রবেশ করছে না।  ‘পদ্মা বেড়িবাঁধ’ নদী শাসনের ফলে অনেক শাখা নদীর মুখ বন্ধ রয়েছে দেওয়া হয়েছে কালবাট।তাই চাহিদা অনুযায়ী পানি ডুকছে না। যতটুকু পানি আসে তাও বেশি দিন স্হায়ী থাকছে না। তাই দিন দিন নৌকার চাহিদা কমছে।নৌকার চাহিদা কম থাকলেও বাড়ছে নৌকার দাম।

একাধিক শ্রমজীবী বলেন,এখন আর আগের মত পানি ও হয় না। পদ্মা বেড়িবাঁধের কারনণ বিভিন্ন খাল,বিলে পানি ডুকছে না। পানির অভাবে নৌকার চাহিদা কম। তবুও আমরা পেটের দায়ে রোজ মায়না হিসাবে কাজ করছি।কাজের মজুরী হিসাবে রোজ ৮ থেকে ১২ শত টাকা মায়না পাই।কোন মতে দিনকাল পার করছি। বর্ষার মৌসুম ছাড়া কাম কম থাকে। তখন ঘর বাঁধার কাজ করে থাকি। এসব নৌকা তৈরী করতে অনেক পরিশ্রম হয়।এসব নৌকা তৈরী করতে বিভিন্ন গাছের কাঠ,লোহার পেরাক,পাতাম,বিট ফোম,আলকাতরা,ধুপ কাঠের আঠাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা নৌকা বানিয়ে থাকি।সাধারণত একটি নৌকা মেরামত করতে আমাদের কমপক্ষে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগে।বিভিন্ন নকশি আকারে এই নৌকা বানিয়ে থাকি।

দাম বৃদ্ধির এব্যাপারে মহাদেব নামে এক মহাজন বলেন, প্রতিবছর আমরা নৌকা তৈরী করে থাকি।তবে বর্ষা মৌসুমে আষাঢ়,শ্রাবণ,ভাদ্র এই তিন মাসে আমরা নৌকা তৈরীতে একটু বেশি ব্যস্ত থাকি।ছোট,বড় ও মাঝারি ধরতেন কোষা বানিয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রী করছি। গাছ ও মজুরীর দামের উপর ভিত্তি করে নৌকার দামের তারতম্য হয়।এছাড়াও কি কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী করছি,সেটার উপর বিবেচনা করে দাম কম বেশি নিয়ে থাকি।

নৌকার দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে দিলীপ বাবু বলেন,সাধারণত চাম্বুল গাছের নৌকার দাম সবচেয়ে কম,চাম্বুল গাছের ৮ হাতের একটি নৌকা ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা কঁড়াই গাছের ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা এবং মেহেগুনী গাছের একই হাতের একটি নৌকা ৫ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি।

এছাড়াও পরি সূত্র দর বলেন, ১০ হাত একটি নৌকা ভালো কাঠের ৯ হাজার,১১ হাতের একটি নৌকা ১০ হাজার এবং ১২ হাতের একটি নৌকা ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রী হয়ে থাকে।এসব নৌকা খুচরা হিসাবে বাজারে আরো কম বা বাড়তি দামেও বিক্রি করে থাকি।

ভোরের আকাশ/আজাসা

  • শেয়ার করুন-
 মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

সংশ্লিষ্ট

ইতিহাসের হারানো শহর: রহস্যে ঘেরা সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী

ইতিহাসের হারানো শহর: রহস্যে ঘেরা সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী

গবাদিপশুর রোগ অ্যানথ্রাক্স যখন মানবদেহে, করণীয় কী?

গবাদিপশুর রোগ অ্যানথ্রাক্স যখন মানবদেহে, করণীয় কী?

বরিশালের সাতলা গ্রাম: ফুটে থাকা শাপলার রঙিন সমারোহ

বরিশালের সাতলা গ্রাম: ফুটে থাকা শাপলার রঙিন সমারোহ

অপার সৌন্দর্যের রানী শ্রীমঙ্গল

অপার সৌন্দর্যের রানী শ্রীমঙ্গল