কিডনি চিকিৎসার চিত্র (শেষ পর্ব)
নিখিল মানখিন
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫ ০৯:৩৫ এএম
কোথায় বসবে কে চালাবে ঠিক না করেই মেশিন কেনার তোড়জোড়
কিডনি প্রতিস্থাপনে রয়েছে আইনি নানা জটিলতা। একইসঙ্গে চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। দরিদ্র মানুষের পক্ষে কিডনি প্রতিস্থাপন করে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তাদের বেঁচে থাকার সম্বল এই ডায়ালাইসিস। তথ্য বলছে, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হয়। এ রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল।
এ ছাড়া ৮০ শতাংশ সেবাকেন্দ্র ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে অতল সাগরে পড়েন জেলা পর্যায় ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা। এমন বাস্তবতায় কিডনি চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকরণ ও রোগীর ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সালে প্রায় ২৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকার ‘১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪টি জেলায় ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন’ নামে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল সরকার। সেই প্রকল্পটি আজও আলোর মুখ দেখেনি। প্রকল্প পরিচালক বদল হয়েছেন পাঁচ জন। প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়েছে তিন বার। তারপরও কাজের অগ্রগতি শূন্য। প্রকল্পটি যেন কচ্ছপের পিঠে চড়ে বসেছে।
পাঁচ বছর পার হলেও নানা ফিকির আর ষড়যন্ত্রে এক আনা কাজও এগোয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শুধু বাড়ছেই। তৃতীয় বারের মতো প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু ৩ হাজার ৮৭৪ জনবল নিয়োগের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত জায়গা। এর আগেই যন্ত্রপাতি কেনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে কয়েকটি চক্র।
জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির কেন এমন দশা তা জানতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে ভোরের আকাশ। তারা বলছেন, জনবল নিয়োগ না হওয়া এবং স্থান সংকটের কারণেই এখনও শুরু করা যায়নি কাজ। এর বাইরে রয়েছে কমিশন বাণিজ্য। স্বাস্থ্য খাতে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন বাণিজ্য হয়। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ঠিকাদার গ্রুপ অধিকহারে কমিশন দিতে পারে। কেনাকাটার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ চক্রটি যোগসাজোশ করে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে অধিক মুনাফা হাতিয়ে নিতে উদগ্রীব ছিল।
তবে অন্য চক্রগুলো কাজ না পেয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে এ করে প্রকল্পের কেনাকাটার প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের টাকা খরচ হয়েছে মাত্র দুই লাখ। পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে গোঁজামিল দিয়ে তিন দফা দরপত্র আহ্বান করে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ। তবে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রতিবারই দরপত্র বাতিল করতে হয়। কেনা যায়নি যন্ত্রপাতি। ফলে ‘১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪ জেলার কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস সেবা এখনও অধরা থেকে গেছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে আগামী ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ ভোরের আকাশকে বলেন, এ ধরনের প্রকল্পের জন্য আগে স্থান নির্ধারণ করতে হয়। এরপর দক্ষ জনবল নিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই দুইটি কাজ এখনও শুরুই হয়নি। এর আগের যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় নজর দেওয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতি কিনে কোথায় রাখা হবে-সেই জায়গাই তো নেই। আবার এগুলো কারা অপারেট করবে-তারাও নেই। তাহলে যন্ত্রপাতি কিনে কী লাভ হবে। এগুলো ফেলে রাখতে তো নষ্ট হয়ে যাবে।
স্বাস্থ্যে এ ধরনের অনেক যন্ত্রপাতি ক্রয় করে বছরের পর বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। যেগুলো অপারেট করার মতো জনবল নেই। এ কারণে বাক্সবন্দি থেকেই হাজার হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় গৃহীত এ প্রকল্পটির যেন এ অবস্থা না হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দেওয়ার অনুরোধ জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) মো. মঈনুল আহসান বলেন, একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে অবকাঠামো নির্মাণে জন্য জায়গা নির্বাচন করা হয়। অনেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জায়গা দিতে পারেনি। এ ছাড়া কেনাকাটায় জটিলতা তো রয়েছেই। কেনাকাটা শেষ হলে তিন হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে পাঁচ বছর পেরোলেও এই প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই-এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
ভাগবাটোয়ারার ফাঁদে প্রকল্পটি
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু কমিশন ভাগবাটোয়ারা নিয়ে জটিলতার ফাঁদে পড়ে জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখছে না। এর জন্য দায়ী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা। এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে এখনই শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করা সম্ভব হবে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কেনাকাটায় জটিলতা তো আছেই। তবে জনবল নিয়োগ না হওয়া ও স্থান সংকটের কারণে এখনও শুরু করা যায়নি প্রকল্পের কাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫টি মেডিকেল কলেজে ৫০ শয্যা করে আর ৪৪ জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পটি ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও যন্ত্রপাতি কেনাকাটা জটিলতায় সেটি থেমে যায়। এরপর এক বছর করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের মাত্র ২ লাখ টাকা খবর হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সর্বশেষ গত বছর যন্ত্রপাতি ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে প্রকল্পের জিডিই-১ লটের আওতায় গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আট মেডিকেল কলেজ ও ১৬ জেলার জন্য ডায়ালাইসিস যন্ত্র কেনাকাটার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে প্রাক্কলন খরচ ধরা হয় ৯৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। এতে চার প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। তবে দরপত্রে এমন নির্দেশাবলি (স্পেসিফিকেশন) দেওয়া হয়, যাতে নিপ্রো-জেএমআই ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিতে না পারে। নিপ্রো-জেএমআই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। করোনাকালে যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সে সময় তিনি গ্রেপ্তারও হন।
জিডিই-১ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জিডি-২ লটে ডায়ালাইসিস যন্ত্রের ১২ ইঞ্চি বা এর চেয়ে বড় টিউনাবল টাচ স্ক্রিনের শর্ত দেওয়া হয়। তবে জিডি-১ লটে ১০ ইঞ্চি বা এর চেয়ে বড় টিউনাবল টাচ স্ক্রিন চাওয়া হয়। প্রকল্পের ২০২২ সালের কেনাকাটায় ডায়ালাইসিস মেশিনের ডায়ালাইসেট ফ্লোরেট ৩০০-৮০০ মিলি/মিনিটের মধ্যে হওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। তবে এই লটে ফ্লো রেট চাওয়া হয়েছে ২০০-৮০০ মিলি/ মিনিট। জিডিই-১ প্রকল্পের কেনাকাটায় হেমোডায়ালাইসিস ফাংশন (এইচডিএফ) চাওয়া হয়েছে।
এর আগে ডায়ালাইসিস যন্ত্র কেনাকাটার দরপত্রে এইচডিএফ চাওয়া হয়নি। সরবরাহকারীকে পাঁচ বছরের মধ্যে একটি দরপত্রে শুধু ডায়ালাইসিস যন্ত্র কেনাকাটায় ৭০ কোটি কিংবা তার বেশি টাকার যন্ত্র সরবরাহের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। অথচ এই প্রকল্পে ২০২২ সালের জিডি-২ লটের কেনাকাটায় পাঁচ বছরের মধ্যে আলাদা দুটি দরপত্রে ২২ কোটি টাকার মেডিকেল যন্ত্রপাতি সরবরাহের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়।
এমন শর্ত ও অনিয়মের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেন একাধিক দরদাতা। পরে ওই দরপত্র বাতিল হয়ে যায়। এর আগে তিনবার দরপত্র আহ্বান করা হলেও যোগ্য দরদাতা নির্বাচন করা যায়নি। এরই মধ্যে তিনবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগামী জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত পাঁচ বছরে প্রকল্পের মাত্র দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কাজের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতিও নেই। প্রকল্প পরিচালক বদল হয়েছেন পাঁচ জন।
প্রকল্পের পরিচালক ডা. আ ন ম এহসানুল করিম ভোরের আকাশকে বলেন, আগের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আগামী জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। জুনের মধ্যে কেনাকাটা করা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার বিষয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান ভোরের আকাশকে বলেন, প্রকল্পটির দরপত্রের শর্তে কিছু ত্রুটি থাকায় এতদিন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রত্যশা, দ্রুত সময়ে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
কেনাকাটায় অনিয়ম, দুদকের হানা
‘১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪টি জেলায় ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন প্রকল্প’ -এর আওতায় ডায়ালাইসিস মেশিন ক্রয়ের দরপত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বদলি বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে গত মার্চ মাসে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। টিম প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে।
পরবর্তীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজিতে (এনআইকেডিইউ) অবস্থিত প্রকল্প অফিস থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র যাচাই করে। টিম জানতে পারে, ওই প্রকল্পের টেন্ডার মোট ৩ বার আহ্বান করা হয়। প্রথম টেন্ডারের ক্ষেত্রে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেনি এবং সর্বশেষ টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির পরে মৌখিক নির্দেশনায় বাতিল করা হয়েছে।
সার্বিক বিবেচনায়, অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের টেন্ডার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে আছে বলে দুদকের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। কতিপয় গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে বারবার প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন করার কারণে টেন্ডার কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযানকালে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে। টিম অভিযানকালে টেন্ডার সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আবু জামিল ফয়সাল ভোরের আকাশকে বলেন, যন্ত্র কেনাকাটায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দক্ষতার অভাব নেই। তবে টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে জটিলতার কারণে এসব প্রকল্প আটকে যায়। এর জন্য দায়ী রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা। আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে দেওয়া হয় বিভিন্ন শর্ত। এতে অন্য যোগ্য কোম্পানিগুলো বাদ পড়ে। এখানে লাগে বিপত্তি। এতে বছরের পর বছর আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীকে।
দেশে মোট রোগীর মাত্র ২০ শতাংশ ডায়ালাইসিস করার সুযোগ পায়। ৪৪ জেলায় ডায়ালাইসিস সুবিধা নিশ্চিত হলে এই সেবার জন্য মানুষকে ঢাকামুখী হতে হতো না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের লোকজন জানে এই প্রকল্প কার কারণে আটকে রয়েছে। কমিশনখোর ব্যক্তিদের এই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া জরুরি। অন্যথায় এ প্রকল্প কোনোদিন আলোর মুখ দেখবে না বলে মনে করেন তিনি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘কিডনি রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকার ১ হাজার ডায়ালাইসিস মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যে হারে কিডনি রোগী বাড়ছে, তাতে হাজার যন্ত্র স্থাপনের পরেও সব রোগীর ডায়ালাইসিস দেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ নানা ধরনের কিডনি জটিলতায় ভুগছে। এই রোগীদের ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হলেও প্রায় ৭০ শতাংশই এই সেবা নিতে পারছে না। এই সংকট নিরসনে ডায়ালাইসিস মেশিন কেনার পাশাপাশি কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া সহজ করতে আইনি জটিলতা সংশোধন করছে সরকার। স্কুল পাঠ্যপুস্তকে কিডনি রোগ সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে।
এছাড়া দেশে কতজন কিডনি রোগী আছে, তা জানতে রাষ্ট্রীয়ভাবে কিডনি রোগী নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অভ কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিকে। এছাড়া কিডনি প্রতিস্থাপনে আইনি জটিলতা রয়েছে। এটি সংশোধন করা হচ্ছে। চাইলে এ বিষয়ে যে কেউ মতামত দিতে পারেন।’
ভোরের আকাশ/এসএইচ