স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫ ০১:৫২ এএম
দীর্ঘজীবন ও তারুণ্যের রহস্য উন্মোচন করলেন ১০২ বছরের চিকিৎসক ডা. হাওয়ার্ড টাকার
বিশ্বের অন্যতম বয়সী সক্রিয় চিকিৎসক ডা. হাওয়ার্ড টাকার ১৯৪৭ সাল থেকে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত আছেন এবং চলতি মাসেই পা দিচ্ছেন ১০২ বছরে। শতবর্ষ পেরিয়েও তিনি নতুন কাজের সন্ধানে রয়েছেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দীর্ঘ জীবন ও তারুণ্যের পেছনের রহস্য ও জীবন উপভোগের মূলমন্ত্র শেয়ার করেছেন তিনি।
২০২২ সালে যেখানে তিনি শিক্ষকতা করতেন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও থেমে যাননি ডা. হাওয়ার্ড। যদিও নিয়মিত রোগী দেখানো থেকে দূরে আছেন, তবুও চিকিৎসাবিজ্ঞানে তার আগ্রহ অটুট রয়েছে। নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ১৯৫৩ সালে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও কোরিয়ান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর প্রধান নিউরোলজিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৯ সালে ৬৭ বছর বয়সে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করে ওহাইওর বার পরীক্ষাও পাস করেন। করোনা মহামারির শুরুর দিকেও সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এখনো ক্লিভল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা ও আইন দুই বিষয়ের ক্লাস নেন এবং আইনি পরামর্শ দেন।
তার জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে তার নাতি ও বন্ধু কর্তৃক নির্মিত তথ্যচিত্র ‘What’s Next?’ এর মাধ্যমে। এছাড়া টিকটকেও লক্ষাধিক অনুসারী রয়েছে, যেখানে তিনি জীবন, স্বাস্থ্য ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন।
ডা. হাওয়ার্ড দীর্ঘজীবনের জন্য জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক যোগাযোগকে প্রধান কারণ মনে করেন। তার মতে, অবসর জীবন দীর্ঘজীবনের সবচেয়ে বড় বাধা। কাজ চালিয়ে গেলে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা কমে না।
সকালে ৮৯ বছর বয়সী স্ত্রীর সঙ্গে ফল ও টোস্ট খেয়ে দিন শুরু করেন। রাতের খাবারে মাছ, মুরগি ও সালাদ থাকে। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, অতিরিক্ত চিনি ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলেন। মাঝে মাঝে আইসক্রিম বা ডোনাট খাওয়ারও কথা স্বীকার করেন।
কঠোর ডায়েট না মেনে পরিমিতিবোধ বজায় রাখতে বলেন। বয়সের কারণে কড়া ব্যায়াম না করলেও প্রতিদিন হালকা শরীরচর্চা অপরিহার্য মনে করেন। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো ও স্ত্রীর সান্নিধ্য তাকে তরুণ রাখে।
ডা. হাওয়ার্ড বলেন, “আপনার কাজ এমন হওয়া উচিত যা শরীর ও মনের পক্ষে ভালো। যদি বর্তমান পেশা ক্ষতিকর হয়, তবে নতুন কিছু শিখে নিজেকে উপযোগী কাজে নিয়োজিত করতে হবে।” তার মতে, শিখতে থাকা, চিন্তা করা এবং সমাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা দীর্ঘ ও প্রাণবন্ত জীবনের চাবিকাঠি।
ভোরের আকাশ//হ.র