অর্থনীতি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ১২:০০ এএম
এনবিআর সংকট: আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায় ব্যবসায়ীরা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের ইন্ধন বা সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে উদ্ভূত সংকট নিরসনে সরকারকে দ্রুত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, সময়ক্ষেপণ না করে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)–কে দ্রুত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যদিও আন্দোলনের মুখে সেই অধ্যাদেশ স্থগিত করা হয়েছে, তবুও এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শনিবার সকাল থেকে দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন।
এ পরিস্থিতিতে গত ২৫ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এনবিআর সংস্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে সরকারপন্থী কিছু ব্যবসায়ীর ইন্ধন থাকতে পারে।
তবে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু এ মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ যদি থেকে থাকে, তবে নির্দিষ্টভাবে ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে হবে। পুরো ব্যবসায়ী সমাজকে দায়ী করা অনুচিত।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পোশাকশিল্প সবচেয়ে বড় খাত, যেখানে দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। এনবিআর কর্মীদের আন্দোলনের কারণে এই বিশাল পরিমাণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। এটা দেশের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
চলমান অচলাবস্থায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, “বর্তমানে ব্যবসায়ীরা বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনৈতিক চাপে আছেন। এর মধ্যে এনবিআরের অচলাবস্থা নতুন করে আরও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সরকারকে দ্রুত সমাধানের পথে ফিরে আসতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণ কোনো স্থায়ী সমাধান নয় এবং এতে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না।”
বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনের কারণে আমদানি-রপ্তানি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রপ্তানিকারকরা কাঁচামাল সময়মতো খালাস করতে পারছেন না, বন্দরগুলোতে পণ্য আটকে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প খাত।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো সরকারের কাছে ৭ দফা সুপারিশ পেশ করে। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের শর্তহীনভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেট্রো চেম্বার সভাপতি কামরান টি রহমান, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ এবং বিসিএমইএ সভাপতি মঈনুল ইসলাম প্রমুখ।
ভোরের আকাশ//হ.র