সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নতুন সিদ্ধান্ত
সর্বজনীন পেনশন স্কিম গতিশীল করতে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব সিদ্ধান্তের প্রচারণা কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক) এবং ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।
বুধবার (১৪ মে) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পেনশন কর্তৃপক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নুতন সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে প্রবাসীদের জন্য চালু করা প্রবাস স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হবে। সেইসঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবীদের মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হবে। পাশাপাশি একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে। একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর বিষয়টি পরীক্ষা করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।
ভোরের আকাশ/এসআই
সংশ্লিষ্ট
মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দিয়েছেন মো. সাফায়েত আলম। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই গ্রাহক সেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।সোমবার (১২ মে) তিনি এ দায়িত্ব নেন। তিন দশক ধরে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসহ স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন মো. সাফায়েত আলম। এসব জায়গায় তিনি মূলত ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন্স, ইনফরমেশন টেকনোলোজি, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ বিভিন্ন খাতে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করেন।২০১৯ সালে বাণিজ্যিকভাবে নগদের যাত্রার আগ থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। তারপর থেকে গত সাত বছরে নগদের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতৃত্ব দেন। এখন প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন মো. সাফায়েত আলম।নগদের নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে মো. সাফায়েত আলম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিটি নিয়ম ও বিধিবিধান মেনে খুব কম সময়ে দেশের এমএফএস মার্কেটে একটি সাড়া জাগানো ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নগদ। সামনের দিনেও তাদের পরামর্শ নিয়ে গ্রাহক সেবাকে আরও ত্বরান্বিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা আমাদের থাকবে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক নির্দেশনায় দেশে ক্যাশসেল প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করতে চাই।তিনি বলেন, নগদ নানাভাবে তার উদ্ভাবন দিয়ে মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। এখন আমরা এর পরিধিকে আরও বিস্তৃত করতে চাই। ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগির চুক্তির আওতায় পরিচালিত নগদে বর্তমানে আট কোটির বেশি গ্রাহক রয়েছে। সারা দেশে তিন লাখের বেশি উদ্যোক্তা পয়েন্টের মাধ্যমে বিস্তৃত সেবা সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। শুরু থেকেই সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের খরচের বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখে প্রতিষ্ঠানটি। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাজারের সর্ব নিম্ন চার্জে ক্যাশআউট এবং ফ্রি সেন্ড মানি সেবা দিয়ে আসছে নগদ। ফলে সহজেই ডিজিটাল আর্থিক সেবার সুবিধা নেওয়ার স্বাধীনতা পেয়েছে গ্রাহক। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে দিনে দুই হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হচ্ছে নগদের মাধ্যমে।গত আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে তখন উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হন মো. সাফায়েত আলম। গত সপ্তাহে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত নগদে প্রশাসক নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেন। তারপরই প্রতিষ্ঠানটির নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সর্বজনীন পেনশন স্কিম গতিশীল করতে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এসব সিদ্ধান্তের প্রচারণা কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক) এবং ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।বুধবার (১৪ মে) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পেনশন কর্তৃপক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।সভা সূত্রে জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নুতন সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে প্রবাসীদের জন্য চালু করা প্রবাস স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হবে। সেইসঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবীদের মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হবে। পাশাপাশি একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে। একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে।সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর বিষয়টি পরীক্ষা করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়। ভোরের আকাশ/এসআই
নির্ধারিত সময়সীমার পর দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনও অনুমোদন হয়নি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৭ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন। অনুমোদনের বিষয়টি ঝুলে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। এতে ব্যাংকগুলোও বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারছে না। পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারছে না। এ কারণে এসব ব্যাংকের শেয়ারধারীরা অনিশ্চয়তায় আছেন। কবে নাগাদ বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিবে তা নিয়েও ধোয়াশা তৈরি হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গভর্নর দুবাই সফর থেকে ফেরার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে কবে ফিরবেন তিনি, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল ছিল ২০২৪ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত ও তার ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ ঘোষণার শেষ দিন। এজন্য ব্যাংকগুলো ২০২৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকে। বার্ষিক প্রতিবেদন ও লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন বা অনাপত্তি না পাওয়ায় এপ্রিলের শেষে ওই ব্যাংকগুলোর পর্ষদের সভাও সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। আর্থিক প্রতিনেদন নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সময় ক্ষেপণে ১৭ ব্যাংকের গত ছয় মাসের আয়-ব্যয়ের চিত্র জানতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। এই সময়ে ব্যাংকগুলো কিভাবে চলছে তা নিয়ে পুরো অন্ধকারে তারা।লভ্যাংশ ঘোষণা করতে না পারা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ভোরের আকাশ’কে বলেছেন, বিভিন্ন কারণে এসব ব্যাংকের নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এর মধ্যে রয়েছে, খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে এর বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ করতে না পারা ও প্রকৃত খেলাপির কিছু চিত্র না দেখানো। ব্যাংকগুলো যখন আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা তখন যুক্তি দেখিয়েছিলেন, গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বিদেশে থাকায় স্পর্ষকাতর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন না।জানা গেছে, গভর্নর গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশে ছিলেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সভা শেষে গত ১ মে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন। গভর্নর অফিস শুরু করলে এ বিষয়ে নির্দেশনা আসতে পারে বলে আশা করছিলেন ব্যাংকাররা। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘বর্ধিত সময়ের জন্য আইনি জটিলতা এড়াতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য দু’একদিন সময় আরও বেশি লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’এরপর গত বুধবার (৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান ভোরের আকাশ’কে বলেন, ‘যেহেতু ৩০ তারিখের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই আইনি জটিলতা এড়ানোর জন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। সময় বাড়ানোর আবেদনে মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়ে চলতি মে মাসের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে বলে দিয়েছে।’এ বিষয়ে একই কথা জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক। ভোরের আকাশ’কে তিনি বলেন, ‘এর আগেও এরকম হয়েছিল একবার। সেই রেফারেন্স বাংলাদেশ ব্যাংকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা সময় চাওয়ায় মে মাস পর্যন্ত লভ্যাংশ দেওয়ার সময়টি বাড়িয়ে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।’ এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর গত ৮ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন দিয়ে তফসিলি ব্যাংকগুলোর বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলের সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।এদিকে ব্যাংক কোম্পানি আইন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ব্যাংকগুলোকে আগের হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার বাধ্যবাধকতা আছে নতুন হিসাব বছরের প্রথম দুই মাসের মধ্যে। এ সময়ে নিরীক্ষা শেষে আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে না পারলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলে আরো দুই মাস বাড়িয়ে দিতে পারে সময়।বছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে না পারলে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়। সেটি না করলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিএসইসি) এর নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো জরিমানার মুখে পড়ে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো সিদ্ধান্তে আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে না পারলে বিএসইসিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবহিত করতে হয়। এরকম পরিস্থিতি হলে কত সময়ের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে হবে, তার কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি বিএসইসি।জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ না থাকায় মতামত নিতে হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জুন মাসে বাংলাদেশের ঋণের দুটি কিস্তি ছাড় করতে রাজি হওয়ায় প্রায় ২৯৫ কোটি ডলার বা ৩৬ হাজার কোটি টাকার অর্থসংস্থান নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। এর মাধ্যমে আগামী জাতীয় বাজেটের জন্য অর্থসংস্থান নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা কাটলো অন্তর্বর্তী সরকারের। নানা শর্তে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল বা আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার ঝুলে যাওয়ায় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক ও জাইকার ১৬৫ কোটি ডলারের ঋণপ্রাপ্তি নিয়ে। কারণ- সংস্থাগুলোও আইএমএফের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে ছিল। এখন আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ে রাজি হওয়ায় এই সংস্থাগুলো থেকেও ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে ঋণ না পেলে বাজেটে অর্থসংস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়াসহ আরও কিছু সংকট তৈরি হতে পারে, এই আশঙ্কায় আইএমএফের সঙ্গে সমঝোতায় আসে বাংলাদেশ।আইএমএফের শর্ত মেনে ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারমুখী করার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে আসলেও শেষ পর্যন্ত নমনীয় হয়েছে ঢাকা। এখন বাংলাদেশ ডলারের বিনিময় হার বাজারে ছেড়ে দিবে বলে আইএমএফকে জানিয়েছে। তবে ডলারের বিনিময় হারের একটি ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হবে যেটি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করবে না বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে আজ দেশের সকল ব্যাংকের (এডি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ডেকে নির্দেশনা জানিয়ে দেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হবেন গভর্নর। ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠকের পর ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের ঋণপ্রাপ্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের জানাবেন তিনি।অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রণয়ন কাজে সংযুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান বাজেটের তুলনায় আগামী বাজেটে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বাজেটে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্য ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ১ লাখ কোটি টাকা বা ৮১৯ কোটি ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।এর মধ্যে ৫ উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকেই প্রতিশ্রুতি রয়েছে ৩০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তার। এই প্রতিশ্রুতির মধ্যে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার, বিশ^ব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫০ কোটি ডলার, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) ৪০ কোটি ডলার ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ২৫ কোটি ডলার রয়েছে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোরের আকাশ’কে বলেন, ‘আইএমএফের ঋণপ্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম আগামী বাজেটের অর্থ সংস্থান নিয়ে। কারণ, আইএমএফ ঋণ না দিলে অন্যান্য দাতাসংস্থাগুলোও ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করে। এখন এই সংকট কেটে যাওয়ায় আগামী বাজেটের অর্থসংস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। আশা করি যথাসময়ে আমরা প্রতিশ্রুত ঋণগুলোর অর্থ পাবো।’অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটর আকার হবে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় তা সাত হাজার কোটি টাকা কম। মোট বাজেটের মধ্যে উন্নয়ন বাজেট বা এডিপি ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ও পরিচালন বাজেট ২৮ হাজার কোটি টাকা বেড়ে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। বাজেট ঘাটতি জিডিপির পাঁচ শতাংশের নিচে থাকবে বলে আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশন ভাষণে বাজেট উপস্থাপন করবেন।এদিকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বড় ঘাটতি নিয়ে সরকার বাজেট দেবে না। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।উপদেষ্টা বলেন, আমরা মোটামুটিভাবে বাজেটটাকে বাস্তবায়ন করব। বিরাট একটা গ্যাপ (ঘাটতি) নিয়ে বাজেট করব না। বড়-বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে ধার করে ডেফিসিট (ঘাটতি) দিয়ে এসব করব না। কিছুটা বাজেট ঘাটতি থাকবে। সেটা আমরা আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে বসে প্রজেক্টের বিষয়ে নেগোশিয়েট করব।কল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্য : অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সমতাভিত্তিক ও কল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এবারের বাজেটে থাকছে কর প্রশাসন সহজ করার উপায়। অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা আনা এবং বিনিয়োগ ও ব্যবসার উপযোগী পরিবেশ তৈরির কয়েকটি কৌশলও থাকছে এতে। বাজেটের লক্ষ্য থাকছে মূল্যস্ফীতি কমানো এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। বাজেটে ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।সূত্র জানিয়েছে, উন্নয়নের জন্য রাজস্ব অপরিহার্য মনে করে বর্তমান সরকার। তাই রাজস্ব বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এ বছরের জাতীয় বাজেটে যৌক্তিকভাবে কর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে রাজস্ব আদায় বাড়ানো এখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করে সরকার। রাজস্ব বাড়ানোর জন্য সরকারের ওপর ব্যাপক চাপ রয়েছে বিধায় রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর জন্যই এটি করা হচ্ছে। সরকার মনে করে কাক্সিক্ষত রাজস্ব সংগ্রহ করতে না পারলে অগ্রগতি নিশ্চিত ব্যর্থ হবে।এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাঁচ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কর আদায় না হওয়ায় চলতি অর্থবছরে রাজস্বের লক্ষ্য কমিয়ে চার লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ