ছবি: সংগৃহীত
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আজও সরকারি সব অফিস ও ব্যাংক খোলা রয়েছে। ব্যাংকে স্বাভাবিক সব ধরনের লেনদেন করতে পারবেন গ্রাহকরা। শনিবার (২৪ মে) লেনদেন শুরু হবে সকাল ১০টায়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার টানা ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এজন্য আগামী ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এর আগে ১৭ ও ২৪ মে শনিবার সরকারি ছুটির দিনে অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী আজ শনিবারও অফিস, ব্যাংক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে।
এ ছাড়া শনিবারও যথারীতি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে সরকারি অফিস। এর আগে গত শনিবারেরও খোলা ছিল অফিস ও ব্যাংক। তবে সরকারি অফিস ছিল অনেকটাই ঢিলেঢালা, উপস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম।
গত ৭ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদনের পর ঈদে নির্বাহী আদেশে দুদিন (১১ ও ১২ জুন) ছুটি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ছুটির দিনে (১৭ ও ২৪ মে) অফিস খোলা রাখার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন (১৭ ও ২৪ মে) সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে আগামী ৭ জুন। এবার ঈদুল আজহায় ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
টানা দুই দফায় দাম বাড়ার পর এবার দেশের বাজারে সোনার মূল্য কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৭৪ টাকা পর্যন্ত দাম কমানো হয়েছে।ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।নতুন দাম অনুযায়ী, ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা। যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭৫ টাকা।বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে।নতুন দাম অনুযায়ী ভরিপ্রতি সোনার দাম হবে:২২ ক্যারেট: ১,৭১,৬০১ টাকা২১ ক্যারেট: ১,৬৩,৭৯৮ টাকা১৮ ক্যারেট: ১,৪০,৪০০ টাকাসনাতন পদ্ধতি: ১,১৬,১২৭ টাকাতবে সোনার দামে পরিবর্তন এলেও রুপার দামে কোনো হেরফের হয়নি।বর্তমানে রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে:২২ ক্যারেট: ২,৮১১ টাকা২১ ক্যারেট: ২,৬৮৩ টাকা১৮ ক্যারেট: ২,২৯৮ টাকাসনাতন পদ্ধতি: ১,৭২৬ টাকাউল্লেখ্য, এর আগে গত ২২ ও ২৩ জুলাই দুই দফায় সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। সর্বশেষ নির্ধারিত সেই দাম ২৪ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর ছিল।ভোরের আকাশ//হ.র
সমালোচনার মুখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোশাক পরার নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কর্মক্ষেত্রে পোশাক পরিধান নিয়ে আলোচনা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং কোনো সার্কুলার জারি করেনি বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি একটি অভ্যন্তরীণ আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি খসড়া নির্দেশনাকে ‘পরামর্শমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করে তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বয়সের তারতম্যের কারণে পোশাকের রুচি ও বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়, যা নারী-নারী ও পুরুষ-পুরুষ সহকর্মীদের মাঝে মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও পেশাদার পরিবেশ গড়ে তুলতেই একটি পরামর্শমূলক সার্কুলার খসড়া আকারে তৈরি হয়েছিল, যাতে কারুকার্যপূর্ণ পোশাক নিরুৎসাহিত করা হয়।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী সহকর্মীদের বোরকা বা হিজাব পরিধানে কোনো বাধ্যবাধকতা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। সার্কুলারটি এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল যাতে কারও পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন না হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, বিষয়টি এখনো নীতিগতভাবে অনুমোদিত নয় এবং এই সংক্রান্ত কোনো চূড়ান্ত সার্কুলারটি জারি হয়নি। শুধুমাত্র বিভাগীয় পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে এবং তা থেকে সাময়িকভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং নির্দেশ দেন বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করতে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী এই পোশাকবিধি সংক্রান্ত পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হয়েছে।এদিকে জানা গেছে, গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ (বেনিফিটস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন উইং) থেকে অনুষ্ঠিত একটি মাসিক বিভাগীয় সভার কার্যবিবরণীতে পোশাকসহ আচরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার এবং দাপ্তরিক শিষ্টাচার বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শমূলক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় নারী কর্মীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না এবং পুরুষের জন্য ফরমাল শার্ট-প্যান্ট নির্ধারণ, লেগিংস, শর্ট স্লিভ ড্রেস, জিনস ও গ্যাবার্ডিন পরিহার সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি দাপ্তরিক শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি অনুসরণ, সময়ানুবর্তিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করেছে যে, সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরার বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং সম্মানজনক কর্মপরিবেশ বজায় রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।এর আগে ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কী পোশাক পরতে হবে, তা ঠিক করে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ নির্দেশনা জারি করে। গতকাল বুধবার রাতে তা প্রথম আলোতে প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু করে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অনেকে। নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না এবং অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস, অর্থাৎ ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যর পোশাক ও লেগিংস পরিহার করতে বলা হয়েছে। ওই নির্দেশনায় ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেড স্কার্ফ বা হিজাব পরতে বলা হয়েছে। পুরুষের পোশাকের ক্ষেত্রে লম্বা বা হাফ হাতার ফরমাল (আনুষ্ঠানিক) শার্ট ও ফরমাল প্যান্ট পরতে বলা হয়েছে। পরিহার করতে বলা হয়েছে জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট। নির্দেশনা না মানলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।এ নির্দেশনার বিষয়ে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, এক প্রতিষ্ঠানে সবাই এক ধরনের পোশাক পরবে, সেই লক্ষ্য থেকেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২১ জুলাই থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে।তিনি বলেন, পোশাক নিয়ে যেন সাম্য ও ঐক্য থাকে, কোনো ধরনের মানসিক বৈষম্য না থাকে। আর শালীন পোশাক যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নারী-পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক। নারীদের ক্ষেত্রে শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস ও লেগিংস পরিহার করতে বলা হয়েছে। কাউকে হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়নি। তবে যারা পরবেন, তাদের সাদামাটা রঙের হিজাব পরতে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনে মার্কিন মুদ্রাটির দাম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবারও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে নিলামের মাধ্যমে আরও ১০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ডলারের বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী করার ইঙ্গিত দিতে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে এসব ডলার কেনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর নিলামে ডলার কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কেনার ক্ষেত্রে ১২১.৯৫ টাকা কাট-অফ রেট নির্ধারণ করা হয়েছে।এর আগে, এক সপ্তাহের মধ্যে ডলারের দাম প্রায় ৩ টাকা কমে যাওয়ার পর গত ১৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনে। সেদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১২১.৫০ টাকা দরে ১৭৩ মিলিয়ন ডলার কেনে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরেকটি নিলামের মাধ্যমে একই দরে আরও ৩১৩ মিলিয়ন ডলার কেনে।পরপর দুটি নিলামে বেশি দামে ডলার কেনার পর মুদ্রাটির দাম বাড়তে শুরু করে। গতকাল রেমিট্যান্স ও আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের দর ১২২ টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে ব্যাংকগুলো আমদানি এলসি নিষ্পত্তির জন্য ১২২.৫০ টাকা পর্যন্ত রাখছে।বাজারের গতিপ্রকৃতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশল : পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার কেনার নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো কী পরিমাণ ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রি করবে, সেটি তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিনে বাজারে ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো আমদানি এলসি (ঋণপত্র) খোলার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করায় ডলারের বাজার বর্তমানে কিছুটা টাইট।’মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে ডলারের প্রবাহ বাড়লে বাজারের তারল্য পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। ‘ডলারের বাজার প্রতি সপ্তাহেই ওঠা-নামা করে। গত কয়েকদিনে ডলারের রেট বাড়লেও সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে না বলেই আমাদের মনে হয়। সপ্তাহ দুয়েক আগে ডলারের বাজারে যে অস্থিতিশীলতা ছিল, সেটি এখন প্রায় নেই বললেই চলে। তবে বাজারকে আমাদের আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ডলারের বাজারে স্পট বিনিময় হার ছিল ১২১.৯৪ টাকা। আর ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক বাজারে ১২১.৬০ টাকা থেকে ১২২.০২ টাকা দরে ডলার লেনদেন করেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকজন নীতি নির্ধারণী কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ডলারের রেট সরাসরি নির্ধারণ করতো, তখন একটি নির্দিষ্ট দরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনত। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে নেওয়া ঋণের শর্তানুযায়ী, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা হয়।এই ঋণের আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফকে আশ্বস্ত করেছিল, তারা আগের মতো আর সরাসরি বাজারে হস্তক্ষেপ করবে না, কখনও বাজার থেকে ডলার কেনার প্রয়োজন হলে মার্কেট রেটেই কিনবে। সে অনুযায়ীই বর্তমানে বাজার থেকে ডলার কেনার ক্ষেত্রে নিলামের আয়োজন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে স্থিতিশীল ছিল ডলারের বাজার। লেনদেন হয়েছে ১২১ থেকে ১২২ টাকার মধ্যে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাজারভিত্তিক করা হয় ডলারের দাম। এরপর কিছুটা বাড়তে থাকে বিনিময় মূল্য। লেনদেন হয় সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ৯৫ পয়সায়। তবে জুনের মাঝামাঝি থেকেই কমতে থাকে দাম। ১৪ জুলাই দাম কমে দাঁড়ায় ১১৯ টাকা ৫০ পয়সায়। মূলত রফতানি ও রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে যোগান বাড়ে ডলারের। এর সাথে যোগ হয় ৫ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ। ফলে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলারে। কমে আসে বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতিও। যার প্রভাব পড়ে বিনিময় মূল্যে।মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, রপ্তানি বেড়েছে, অন্যদিকে আমদানির কিন্তু চাপ কমে গেছে। ক্যাপিটাল আমদানি প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গেছে। হুন্ডির একটা চাহিদা ছিল, মানে বৈদেশিক মুদ্রার একটা ডিমান্ড ছিল বাইরে, সেটা কিন্তু এখন আর নেই। পেমেন্টের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার যে চাপ তা অনেকটাই বলতে গেলে নাই। তাই বাজার এখন স্থিতিশীল। বাজারে তারল্য আসায় দাম পড়ে গেছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত গোলটেবিলে উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে দেশ থেকে পাচার হওয়া মোট অর্থের প্রায় ৭৫ শতাংশই পাচার হয় বাণিজ্য চ্যানেল ব্যবহার করে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের হাতে থাকা ৯৫টি অর্থ পাচার সংক্রান্ত কেস স্ট্যাডির ফলাফল হিসেবে গবেষণা পেপারটি তৈরি করা হয়েছে।শুল্ক গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভর করে তৈরি গবেষণাপত্রে ২০১৫ সালের অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন সংশোধনের পর কেস গুলো এখানে যুক্ত করা হয়েছে। গবেষণাপত্রে বলা হযেছে উক্ত ৯৫টি কেসস্যটাডির ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তার আর্থিক পরিমাণ ছিল তিন হাজার ২০১ কোটি টাকা। বিআইবিএমের তিন শিক্ষক, বেসরকারি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক কর্মকর্তা মিলে ৩৭টি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রশ্নোত্তরের তথ্য দিয়ে গবেষণাপত্রটি তৈরি করা হয়।গবেষণার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের শিক্ষক আহসান হাবিব। আহসান হাবিব বলেন, ‘অর্থ পাচারে অপরাধীরা বাণিজ্য চ্যানেলটি ব্যবহার করে, তার পেছনে কয়েকটি বড় কারণ রয়েছে। প্রথমত, বাণিজ্যর মাধ্যমে বড় পরিমাণের অর্থ নেওয়া যায়। অন্য যেকোনো মাধ্যমের চেয়ে বাণিজ্যের মাধ্যমে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা সম্ভব হয়। ফলে এই মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাঠানোর আগ্রহ বেশি থাকে।’অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বলেন, ‘কম দাম দেখিয়ে আমদানি ও রপ্তানির মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়; এটাও বাণিজ্য অর্থায়নের মধ্যে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাণিজ্য এমনভাবে করা হয় যে বাইরের দৃষ্টিতে সব ঠিকঠাক মনে হয়। তবে ভেতরে অন্য কিছু লুকানো থাকে। অনেক সময় চোখে ধূলা দেওয়ার মতো অবস্থা হয়। বলা হয় এক কথা, আসলে ভেতরে অন্য কিছু চলছে। তাই ভালোভাবে দেখা জরুরি।’মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনায় আহসান হাবিব বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমদানি ও রপ্তানির সময় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮.২৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ।’ এ সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরের তথ্য-উপাত্তও এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।মূলপ্রবন্ধে বলা হয়, ২০২৪ সালে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা জিডিপির ৩.৪ শতাংশ। এই অর্থপাচার মূলত বস্ত্র, ভোগ্যপণ্য ও জ্বালানি পণ্য আমদানিতে হয়। গবেষণায় প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, দেশে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সুরক্ষাকাঠামোতে দুর্বলতা আছে।জরিপে অংশ নেওয়া শতভাগ ব্যাংক জানায়, নিষেধাজ্ঞা তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া, অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা যাচাইয়ের সক্ষমতা রয়েছে। ৯৫ শতাংশ ব্যাংকের রয়েছে সনাতনি তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া। ১০০ শতাংশ ব্যাংকের লেনদেনের নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি মূল্য যাচাইয়ের তথ্যভাণ্ডারে সুবিধা নিতে পারে ৫০ শতাংশ ব্যাংক।বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বলেন, ‘যারা বিদেশে টাকা পাচার করেন, তারা কৌশলে কাজটি করেন। শুধু নিয়ম মেনে চললেই তাদের ধরা যাবে না। বুদ্ধি খাটাতে হয়। তাদের ধরতে খুব সতর্ক থাকতে হয়।’গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য দেন বিআইবিএমের একে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক ফারুক এম আহমেদ, বিআইবিএমের মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, বিআইবিএমের শিক্ষক আলী হোসেইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক এ কে এম রেজাউল করিম, বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইউ) পরিচালক মোস্তাকুর রহমান প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ