৩ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার
জনস্বার্থে তিনজন সচিব ও এক সংস্থাপ্রধানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া সচিবরা হলেন—বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক কাজী এনামুল হাসান, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক সুকেশ কুমার সরকার এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। একইসঙ্গে গ্রেড-১ পদমর্যাদার কর্মকর্তা ড. লিপিকা ভদ্র, যিনি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাকেও অবসরে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনগুলোতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ২৫ বছরের বেশি সময় সরকারি চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন। সরকারের মতে, জনস্বার্থে তাদের চাকরি থেকে অবসর প্রয়োজন, তাই বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী তাদের চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হলো।
এছাড়া, তারা বিধিমালার আওতায় অবসরকালীন সব ধরনের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হবেন বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী ২৫ বছর চাকরি পূর্ণ হওয়ার পর সরকার কোনো কর্মকর্তাকে জনস্বার্থে অবসর দিতে পারে, তবে সাধারণত এই ধরনের সিদ্ধান্তের পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় না।
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত কয়েকজন ব্যক্তি। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আহত ব্যক্তিরা। তাদের অভিযোগ, দ্বিতীয় দফায় সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস দিলেও বারবার সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। নির্ধারিত দিনে অর্থ না পাওয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।একপর্যায়ে প্রায় ২০-২৫ জন আহত ব্যক্তি অফিসে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন এবং বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ভাঙচুর করেন। ঘটনার সময় অফিসের কক্ষগুলোতে চেয়ার ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় পাওয়া যায়, দরজার কাচ ভাঙে এবং পানির ফিল্টারসহ বেশ কিছু জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।আহত মামুন হোসেন অভিযোগ করেন, “আমার মাথার ভেতরে এখনও গুলি রয়ে গেছে। ১১ মাস ধরে চিকিৎসা নিচ্ছি। অথচ এই ফাউন্ডেশন আমাদের কোনো সহায়তা করছে না। আজও যখন পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা হয়, তখন কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।”আরেকজন আহত শিক্ষার্থী, নাজমুল হোসেন বলেন, “সাত মাস ধরে ঘুরছি। কিন্তু যাদের ভেতরের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তারা আগেই টাকা পেয়ে গেছে। আমরা গুরুতর আহত হয়েও বঞ্চিত।”ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, আহতদের অনেকেই ট্রমার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, তাই তাদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে হবে। তিনি জানান, অভিযোগ না করে ফাউন্ডেশন তাদের সহানুভূতির চোখে দেখছে। তার ভাষায়, “দ্বিতীয় দফায় ৮০৬ জনকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিদেরও সহযোগিতা দেয়া হবে।”তিনি আরও জানান, ৭ কোটি টাকার তহবিল থেকে সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং কিছু ভুয়া দাবিদার ও শহীদের নাম বাতিলের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।পরবর্তীতে আহতদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। আলোচনার পর সিইও কামাল আকবর জানান, আগামী রোববার থেকে দ্বিতীয় ধাপের অর্থ বিতরণ শুরু হবে। ভোরের আকাশ/হ.র
ধানমন্ডি এলাকায় নির্মাণাধীন একটি আবাসিক প্রকল্পের ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে ১২ জন সাবেক সচিব ও বিচারকের। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা লঙ্ঘন ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের পরিত্যক্ত কিছু বাড়ির জায়গায় ‘গৃহায়ন ধানমন্ডি (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সড়ক নম্বর-১৩, বাড়ি নম্বর-৭১১ প্লটে নির্মাণাধীন ভবনে বরাদ্দ দেয়া ফ্ল্যাটগুলো বাতিল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সংস্থাটির ২৭৪তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে।ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিলের আওতায় যারা আছেন, তারা হচ্ছেন: দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. জহুরুল হক (৪১০৫.০৫ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান (২৩১৫.৮৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও দুদকের সাবেক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান (৪৩০৮.৬৮ বর্গফুট), সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার (২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ড. এম আসলাম আলম (২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ (২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সচিব মো. সিরাজুল হক খান (২৩১৫.৮৩ বর্গফুট)।সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ (২৩১৫.৮৩ বর্গফুট), সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম (২০৪৯.১৩ বর্গফুট), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ (২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান (২৩১৫.৮৩ বর্গফুট) এবং সাবেক সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক (২০৪৯.১৩ বর্গফুট)ও রয়েছেন এ তালিকায়। ভোরের আকাশ/হ.র
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ইলেকশনের তারিখ তো আমি নিজেও জানি না। সকালে একবার বলেছি, আমি আপনাদের জানাবো। দুই মাস আগে জানাবো, পুরো ডিটেইলস জানিয়ে দেবো। কোন দিন ভোট হবে, কোন দিন নমিনেশন হবে, ডিটেইল জানিয়ে দেবো, ভোটের তারিখের আগে। সুতরাং এজন্য একটু ধৈর্য ধরেন। যথাসময়ে আপনারা জানতে পারবেন আর আমাদের প্রস্তুতির বিষয়ে আপনারা জানেন। ইলেকশনের তারিখ নিয়ে আর কথা বলবো না।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, আমাদের প্রশাসন গার্ডারে তাদের যে, ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে, এদের ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি এফেক্টেড হয়েছে। পুলিশের ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি এফেক্টেড হয়েছে। এই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের এটাই হচ্ছে সুযোগ। আমার সহকর্মীরা যারা এই ইলেকশনের সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদের কাছে করজোড়ে আবেদন জানাবো যে, আপনারা মানুষের শ্রদ্ধা অর্জনের চেষ্টা করুন। ভাবমূর্তি যেটা নষ্ট হয়েছে, সেটা থেকে আমরা-আপনারা উঠে আসুন এবং আমরা প্রমাণ করতে চাই। আমরা পারি, সরকারি কর্মচারীরা পারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারে, যদি তারা সত্যিকার অর্থে আন্তরিক হয়।তিনি আরও বলেন, আমি সেই মেসেজটা আপনাদের মাধ্যমে আমার সহকর্মীদের দিতে চাই। যারা বিশেষ করে ইলেকশনের সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের কাছে এই মেসেজটা আমি দিতে চাই। আমি প্রমাণ করতে চাই বা আপনাদের মাধ্যমে তাদের কাছে আবেদন থাকবে। আসুন প্রমাণ করি আমরা ৯১-তে যেমন পেরেছি, ৯৬-তে যেমন পেরেছি, ২০০১-এ যেমন পেরেছি, এবারও ইনশাআল্লাহ সেভাবে প্রমাণ করে ছাড়বো।সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আপনারা সিরিয়াসলি এবং তারা প্রিপারেশন নিচ্ছে যাতে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন ও এক্সেপটেবল, ক্রেডিবল নির্বাচন যাতে আমরা উপহার দিতে পারি সেই মেসেজটা আপনারা দয়া করে দেবেন।সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হয়ে গেছে, পজিটিভ একটা ক্যাপশন দিলে কেউ পড়তে চায় না। নেগেটিভ যদি কিছু একটা লেখেন এটা আগ্রহ করে দেখেন। সাংবাদিকদের আমরা পার্টনার করে আমাদের অ্যাওয়ারনেস রেজিং ক্যাম্পেইনের মধ্যে ইনভলভ করবো। ভোরের আকাশ/জাআ
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশে বেআইনি সমাবেশের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না করতে আবারও সতর্ক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে জারি করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৯ জুলাই থেকে বাংলাদেশ সচিবালয় (সংলগ্ন এলাকা) এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং, অফিসার্স ক্লাব ক্রসিং ও মিন্টু রোড ক্রসিংয়ের মধ্যবর্তী এলাকা) যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, শোভাযাত্রা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ও ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. সরওয়ার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জনশৃঙ্খলা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্সের (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি বিসিএস পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে কোনো ধরনের জমায়েত না করতে সতর্ক করেছিল ডিএমপি। তবে সোমবার (৭ জুলাই) ৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ফের যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা চালান চাকরিচ্যুত বিজিবির সদস্যরা। পরে পুলিশ তাদের সেখান থেকে হটিয়ে দেয়। ভোরের আকাশ/জাআ