ঘরে বসেই মিলবে কুয়েতের ই-ভিসা, সুবিধা পাবেন যেসব শ্রেণির যাত্রী
ভ্রমণপ্রক্রিয়া সহজ ও ডিজিটালাইজেশনে আরও একধাপ এগিয়ে গেল কুয়েত। দেশটি সম্প্রতি চালু করেছে নতুন ইলেকট্রনিক ভিসা (ই-ভিসা) সেবা, যার মাধ্যমে এখন ঘরে বসেই অনলাইনে কুয়েতের ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন এই ই-ভিসা প্ল্যাটফর্ম চালু করার লক্ষ্য— ডিজিটাল অবকাঠামো আরও শক্তিশালী করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংযোগ বৃদ্ধি। এটি শুধু পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও কূটনীতিকদের জন্যও একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।
ই-ভিসা ব্যবস্থায় যেসব সুবিধা মিলবে:
চলতি সপ্তাহে চালু হওয়া ই-ভিসা সিস্টেমে চার ধরনের ভিসা দেওয়া হচ্ছে—
পর্যটন ভিসা:
সাধারণ পর্যটকদের জন্য এই ভিসা চালু হয়েছে। এর মেয়াদ ৯০ দিন। এতে সহজেই কুয়েত ভ্রমণ করা যাবে।
পারিবারিক ভিসা:
যেসব ব্যক্তি কুয়েতে বসবাস করেন, তারা এখন সহজেই তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য অনলাইনে ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
ব্যবসায়িক ভিসা:
ব্যবসায়িক বৈঠক, সেমিনার বা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে যারা কুয়েতে যেতে চান, তারা ৩০ দিনের ব্যবসায়িক ভিসা পাবেন।
সরকারি ও কূটনৈতিক ভিসা:
সরকারি প্রতিনিধিদল বা কূটনৈতিক মিশনের সদস্যদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নতুন ই-ভিসা কার্যক্রমের ফলে বাংলাদেশি প্রবাসী ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য কুয়েতে প্রবেশ আরও সহজ হবে। এতে করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেমন বাড়বে, তেমনি পরিবার ভ্রমণ বা কর্মসূত্রে যাতায়াতও অনেকটাই সহজতর হবে।
কুয়েত অচিরেই জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা সিস্টেমে যুক্ত হতে যাচ্ছে। এর আওতায় ছয়টি উপসাগরীয় দেশের (GCC) মধ্যে একটি ভিসা দিয়েই ঘুরে বেড়ানো যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে পর্যটন ও ব্যবসার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
এই উদ্যোগ শুধু কুয়েত নয়, গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলে ভ্রমণ ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
লিবিয়ায় ভয়াবহ মানব পাচার ও নির্মম নির্যাতনের কবলে পড়ে নয় মাস ধরে বন্দিদশায় থাকা দুই বাংলাদেশি তরুণ দেশে ফিরছেন। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় বুরাক এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট নম্বর: UZ222) একটি ফ্লাইটে তাদের ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। ফিরছেন ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ।২০২৩ সালে গ্রামের দালালদের প্রলোভনে পড়ে তারা পরিবার থেকে ৪ লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়ায় পাড়ি জমান, আশ্বাস ছিল একটি ভালো চাকরির। কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজের সুযোগ ছিল না। পরে দালালচক্র তাদের বিক্রি করে দেয় একটি সশস্ত্র মাফিয়া চক্রের কাছে, যারা প্রতিশ্রুতি দেয় ইতালিতে পাঠানোর।এই মাফিয়া চক্রের হাতে তারা ৮০ জন বাংলাদেশির সঙ্গে একটি ঘরে আটক থাকেন, যেখানে শুরু হয় নিষ্ঠুর নির্যাতন। লোহার রড, লাঠি, বৈদ্যুতিক শকসহ নানাভাবে দিনের পর দিন চালানো হয় পৈশাচিক নিপীড়ন। একপর্যায়ে তাদের অবস্থা এতই খারাপ হয়ে পড়ে যে পাচারকারীরা ভেবে নেয় তারা আর বাঁচবে না—এবং তাদের ফেলে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে ভাগ্যক্রমে তারা ত্রিপোলিতে এক আত্মীয়ের কাছে আশ্রয় পান।পরিবারের পক্ষ থেকে ব্র্যাকের মাধ্যমে সহযোগিতা চাইলে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের টিপ (Trafficking in Persons) অফিস ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আইজেএম (International Justice Mission) বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নেয়। এরপর আইওএম হেডকোয়ার্টার ও লিবিয়ার স্থানীয় ইউনিটের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে একটি নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়।সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে অবশেষে তারা দেশে ফিরছেন। তাদের এই ফিরে আসা শুধু ব্যক্তিগত মুক্তির গল্প নয়—বরং এটি আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা, মানবিক উদ্যোগ এবং রাষ্ট্র ও পরিবারের সম্মিলিত প্রচেষ্টার এক বাস্তব উদাহরণ।এই দুই তরুণের প্রত্যাবর্তন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানব পাচার প্রতিরোধে সচেতনতা ও যৌথ পদক্ষেপ কতটা জরুরি—এবং কীভাবে একটি প্রক্রিয়াগত সহায়তা জীবনের আশাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। ভোরের আকাশ/হ.র
হিমালয়ের এক উপত্যকায় ভারী বর্ষণের কারণে চীন ও নেপালের সীমানায় হঠাৎ বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং অন্তত ২৮ জনের সম্পর্কে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।প্রবল পানিস্রোতের কারণে নেপাল ও চীনকে সংযোগকারী একটি প্রধান সেতু ভেঙে পড়ে। এই সেতুটি ভোটেকোশি নদীর ওপর নির্মিত ছিল।দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষাকাল অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা সাধারণ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ঘন ঘন ঘটছে।নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।বন্যায় জীবনের জন্য লড়াই করা এক তরুণী তার পরিবারের কাছে শেষবারের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির বর্ণনা পাঠিয়েছে।চীনের দিক থেকে এখনও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা গত বছর সতর্কবার্তা দিয়েছে, ঘন ঘন বন্যা ও খরার ঘটনা ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।অন্যদিকে, কাঠমান্ডুভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট এ বছরের বর্ষাকালে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের জন্য বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে জুনে সতর্কতা জারি করেছিল। ভোরের আকাশ/হ.র
বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস আর বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির তালিকায় নেই। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স-এর হালনাগাদ তথ্যে এ তথ্য উঠে এসেছে।ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, বিল গেটসের মোট সম্পদ ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার থেকে কমে এখন ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ তার সম্পদ কমেছে প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার।বর্তমানে তিনি বিশ্ব ধনীদের মধ্যে ১২তম স্থানে অবস্থান করছেন।ব্লুমবার্গ প্রকাশিত হালনাগাদ তালিকায় শীর্ষ ১২ ধনীর অবস্থান হলো:১. ইলন মাস্ক – ৩৬,১০০ কোটি ডলার২. মার্ক জুকারবার্গ – ২৫,৪০০ কোটি ডলার৩. ল্যারি এলিসন – ২৫,৩০০ কোটি ডলার৪. জেফ বেজোস – ২৪,৪০০ কোটি ডলার৫. স্টিভ বালমার – ১৭,২০০ কোটি ডলার৬. ল্যারি পেইজ – ১৬,৩০০ কোটি ডলার৭. বেরনার্ড আর্নল্ট – ১৬,১০০ কোটি ডলার৮. সের্গেই ব্রিন – ১৫,৪০০ কোটি ডলার৯. ওয়ারেন বাফেট – ১৪,৬০০ কোটি ডলার১০. জেনসেন হুয়াং – ১৩,৯০০ কোটি ডলার১১. মাইকেল ডেল – ১৩,৮০০ কোটি ডলার১২. বিল গেটস – ১২,৪০০ কোটি ডলারবিশ্লেষকরা বলছেন, বিল গেটসের সম্পদ হ্রাসের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে তার ধারাবাহিক দান ও সমাজসেবামূলক কাজ।তিনি দীর্ঘদিন ধরেই গেটস-মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আসছেন। বিশেষ করে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণায় তার অনুদান ছিল উল্লেখযোগ্য।মজার ব্যাপার হলো, বিল গেটসের এক সময়কার অধঃস্তন স্টিভ বালমার এখন তার চেয়ে এগিয়ে। মাইক্রোসফটের সাবেক এই সিইও প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিয়েও এখনো কোম্পানির প্রায় ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক। অপরদিকে গেটসের মালিকানার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।স্টিভ বালমার ছাড়াও, বিল গেটসকে পেছনে ফেলেছেন অনেক তরুণ টেক উদ্যোক্তা, যেমন: মার্ক জুকারবার্গ, সের্গেই ব্রিন ও ল্যারি পেইজ। এদের বেশিরভাগই এখনো নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ভোরের আকাশ/হ.র
চীনের গানসু প্রদেশের তিয়ানশুই শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ‘খাদ্য অনুপযোগী রং’ দিয়ে তৈরি খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ২৩৩ শিশু। পরীক্ষায় শিশুদের রক্তে জাতীয় সীমার তুলনায় প্রায় ২,০০০ গুণ বেশি সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।স্কুলের রান্নাঘর থেকে সংগৃহীত খাবারের নমুনা পরীক্ষায় এই বিপজ্জনক মাত্রার সীসার উপস্থিতি ধরা পড়ে। ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলপ্রধান রান্নার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের অনলাইনে রং কিনে আনতে বলেন। তবে যে রংটি ব্যবহার করা হয়, তার গায়ে স্পষ্টভাবে লেখা ছিলো, “খাদ্য গ্রহণের জন্য নয়”।শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর রংটি গোপনে লুকিয়ে ফেলা হয়, পরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করে পুলিশ।একজন অভিভাবক জানান, তার সন্তানের লিভার ও পরিপাকতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।আরেক অভিভাবক বলেন, সন্তানের মধ্যে ক্ষুধামন্দা, পেটব্যথা ও দুর্বলতা লক্ষ করেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা অন্তত ১০ দিনের চিকিৎসা চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে—কর্মীরা খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন রঙিন উপাদান মেশাচ্ছেন।এখনো নিশ্চিত নয় কতদিন ধরে এই ধরনের রং ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে বেশ কিছু অভিভাবক দাবি করেছেন, গত মার্চ থেকেই শিশুদের পেটব্যথা ও পায়ের ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছিল।আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত ও স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ খাবার সরবরাহের অভিযোগে তদন্ত চলছে। আক্রান্ত শিশুরা এখন চিকিৎসাধীন।ভোরের আকাশ/হ.র