কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ৬ জনের প্রাণহানি
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে গত দুইদিনে ৩ জন পর্যটকসহ মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) দুপুর ২টার দিকে সৈকতের কলাতলী সায়মন বিচ পয়েন্ট এলাকায় গোসলে নেমে শাহীনুর রহমান (৬০) এবং তার ছেলে সিফাত (২০) নিহত হন। তারা রাজশাহী থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছিলেন।
গতকাল রোববার বিকেলে লাবণী পয়েন্টে গোসলে নেমে চট্টগ্রামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, গত শনিবার সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে মাছ ধরতে গিয়ে এক পর্যটক ও স্থানীয় এক বাসিন্দা ভেসে যান। পরে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন লাইফগার্ডের কর্মীরা।
এদিকে সোমবার দুপুরে টেকনাফ মেরিনড্রাইভের রামুর হিমছড়ি কাকড়া বিচে একটি রিসোর্টের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে পুলিশ ও লাইফগার্ডের কর্মীরা জানান, গত দুই দিনে কক্সবাজার সমুদ্রের বিভিন্ন পয়েন্টে গোসলে নেমে তিন পর্যটকসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
সৈকতে পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ‘সি সেফ লাইফগার্ড স্টেশন’ এর লাইফগার্ড মোহাম্মদ শুক্কুর জানান, কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগর উত্তাল। বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক গর্তের (গুপ্তখাল) সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রের পানিতে উল্টো স্রোতের টানও বেশি দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় গুপ্তখাল সৃষ্টি হওয়াটা বেশ ঝুঁকির। সৈকতে গোসলে নামতে নিষেধ করে লাইফগার্ড আওতাভুক্ত এলাকায় একাধিক নিশানা টাঙানো হয়েছে। কিন্তু লাইফগার্ডের আওতার বাইরে আজ দুপুরে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
লাইফগার্ডের কর্মীরা আরও জানান, আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে বাবা-ছেলে দুজন হোটেল সায়মান বিচ রিসোর্টের সামনে সৈকতে গোসলে নামেন। সেখানে লাল নিশানা টাঙানো ছিল। কিছুক্ষণ পর ঢেউয়ের ধাক্কায় বাবা-ছেলে ভেসে যেতে থাকেন। এ সময় সাঁতার কেটেও তাঁরা তীরের দিকে ফিরতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা স্রোতের টানে গুপ্তখালে আটকা পড়েন। ওই সময় লাইফগার্ডের কর্মীরা দ্রুতগতির জলযান ‘জেটস্কি’ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। সেখান থেকে তাঁদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি বলেন, সৈকতে গোসলে নেমে বাবা-ছেলে নিহত হয়েছে। গুপ্তখালে আটকা পড়ে তারা নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় নিশানাও টাঙানো হয়েছে।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
বরিশালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পরিচালিত এক অভিযানে ২০ পিস এ্যামফিটামিনযুক্ত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক নারীকে আটক করা হয়েছে।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল জেলার কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কোস্টাল বরফকল (বটতলা) এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা কার্যালয় বরিশাল সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে একটি টিনের ছাউনিযুক্ত এককক্ষ বিশিষ্ট বসতঘর থেকে একটি ছোট কাপড়ের থলির ভেতর থাকা জিপারযুক্ত পলিথিন প্যাকেটে মোট ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ট্যাবলেটগুলোর মোট ওজন প্রায় ২ গ্রাম।এ ঘটনায় আটককৃত ব্যক্তির নাম মোসা. মাহফুজা (৩৭) কোস্টাল বরফকল (বটতলা) এলাকার বাসিন্দা। তার স্বামীর নাম জাকির হাওলাদার এবং পিতার নাম জব্বার হাওলাদার।আটকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক।ভোরের আকাশ/জাআ
ফেনীতে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের অন্তত পাঁচটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিভিন্ন নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে মাইকিং করছে।ফেনী আবহাওয়া কার্যালয়ের ইনচার্জ মো. মজিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। আগামী ২-৩ দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি।ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাঁধের পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে গেছে।সকালে ফুলগাজী বাজারের শ্রীপুর রোড সংলগ্ন মুহুরী নদীর তীরে বাঁধ ভেঙে পড়লে নদীগর্ভে হারিয়ে যায় কয়েকটি দোকান।মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান জানান, মঙ্গলবার বিকেলে সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে দেখা যায়। নদীর পানি ছড়িয়ে পড়ে সুবার বাজারের দক্ষিণাংশ প্লাবিত করেছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনা, গদানগর এবং ফুলগাজীর দেড়পাড়া ও সাহেব নগরের বেড়িবাঁধে ভাঙনের কারণে ওইসব এলাকার একাধিক গ্রামের নিচু অংশে পানি ঢুকে পড়েছে। ভোরের আকাশ/হ.র
টানা বর্ষণ এবং ভারতীয় উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে ফেনীর মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় রেকর্ড ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ৩টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২-৩ দিন এমন বৃষ্টিপাত চলতে পারে বলে সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।সরেজমিনে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভারী বর্ষণের কারণে ফেনী শহরের একাধিক এলাকা পানির নিচে চলে গেছে। বিশেষ করে ডাক্তারপাড়া, শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, একাডেমি, পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস, শাহীন একাডেমি, পাঠান বাড়ি, নাজির রোড, মিজান রোড, সদর হাসপাতাল মোড় এবং পেট্রো বাংলা এলাকা সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতার শিকার। দোকানপাটে পানি ঢুকে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মালপত্র। অনেক এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফেনীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোর বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে।"ফেনী পৌর প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, অতিবৃষ্টি ও অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে শহরের জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি থামলে পানি নেমে যাবে। ইতোমধ্যে পৌরসভার ৭টি টিম জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, পানি নিষ্কাশনে যেসব জায়গায় সমস্যা রয়েছে, সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।ভোরের আকাশ/আজাসা
বরগুনায় ডেঙ্গু বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে, পাশাপাশি বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাসিনা বেগম (৪৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল ১০টায় মৃত্যুবরণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একই বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষিকা খায়রুন্নাহার। তিনি জানান, ডেঙ্গু শনাক্তের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসিনাকে রোববার ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮৪ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৬০৬।এর মধ্যে বরগুনা সদরে ৩,১৭৯, পাথরঘাটায় ১৭৫, বামনায় ১১৪, তালতলীতে ৫৭, আমতলীতে ৪৩ এবং বেতাগীতে ৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ২২৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যার মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছেন ১৫০ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, “ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি, তবে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে।”ভোরের আকাশ/জাআ