ইশরাক হোসেনকে ক্রেস্ট প্রদান করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, সরকার তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর আয়োজন না করলে নিজেই সমর্থকদের নিয়ে শপথ আয়োজন করবেন।
এরপর গতকাল রোববার তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, জনগণের দৈনন্দিন সেবা, আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে। এ ছাড়া প্রধান ফটকে তালা দেওয়া থাকবে।
আজ সোমবার (১৬ জুন) নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে একটি সভা করেছেন ইশরাক হোসেন। সভার ব্যানারে ইশরাক হোসেনের নামের আগে ‘মাননীয় মেয়র’ লেখা রয়েছে।
সভা সূত্রে জানা যায়, নগর ভবনের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। পরিচ্ছন্ন ঢাকা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকল্পে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ব্যানারে তার নামের পাশে ‘মাননীয় মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন’ লেখা রয়েছে। সভায় ইশরাক হোসনকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান করতে দেখা গেছে কয়েকজনকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে ফের অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। পরে বেলা ১১টার পর নগর ভবনে আসেন ইশরাক হোসেন।
রোববারের ঘোষণা অনুযায়ী, জরুরি সেবার চালু রাখতে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন তিনি।
পরে সভার সিদ্ধান্ত এবং নতুন কর্মসূচি জানাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার কথা রয়েছে ইশরাকের।
প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হয়। সেসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেয় হাইকোর্টের বেঞ্চ।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে একটি আধুনিক ও পরিবর্তিত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষায়, বর্তমান প্রজন্ম আগের তুলনায় অনেক বেশি অগ্রসর এবং তারা একদিন দেশের ভবিষ্যৎ রূপদান করবে।৮ জুলাই (মঙ্গলবার) বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস–২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ আয়োজনটি যৌথভাবে পরিচালনা করে ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি ও দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ।গণতন্ত্রের ঘাটতির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্র চর্চা অব্যবহৃত থেকেছে। পাকিস্তান আমল থেকেই আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছি। কিছু সময়ের জন্য সুযোগ মিললেও তা স্থায়ী হয়নি।রাজনীতিতে তরুণদের আগ্রহ কমে যাওয়ার একটি জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, মাত্র ১.৮৭ শতাংশ তরুণ রাজনীতিতে আগ্রহী—এই তথ্য তাকে হতাশ করেছিল। তবে অনুষ্ঠানে তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা দেখেছেন, তাতে আশাবাদ ফিরে পেয়েছেন বলে জানান।বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মতভেদ থাকবেই, সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। একজন বলবে, অন্যজন পাল্টা বলবে—এই ভাবনাই একটি উদার গণতন্ত্রের ভিত্তি।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের এক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেই নেতা একজন দেহরক্ষী নিয়েই সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। অথচ আমাদের দেশে কেউ একবার মন্ত্রী হলেই গাড়ির বহর, প্রটোকল—সব মিলিয়ে একেবারে আলাদা এক জগতে প্রবেশ করেন। এই মানসিকতা বদলাতে হবে।তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই, যারা নেতৃত্ব দেবে, ভাববে, কাজ করবে—এবং বাংলাদেশকে বদলে দেবে। এই তরুণরাই হবে ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক হেলথ স্পেশালিস্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইলিয়াস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু এবং আইনজীবী রাশনা ইমাম। ভোরের আকাশ/হ.র
জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, ‘আমরা চেয়ারম্যানের চিঠি পেয়েছি। আপনার লাভ লেটার পেয়েছি। আমরা আপনাকে বহিষ্কার করিনি। আমরা আপনাকে ফেলে যেতে চাই না। আমরা দলকে শক্তিশালী করবো। আবার বৃহৎ ঐক্য করবো। আপনাকে আবারও বলবো, আসেন। আপনাকে আমরা সম্মান দেবো। কিন্তু দল ভাঙবে, দল ছোট হবে, এই রাজনীতি আমরা করবো না।’মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।এর আগে গতকাল জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর আজ সংবাদ সম্মেলনে আসেন অব্যাহতি পাওয়া নেতারা। গুলশানে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন হাওলাদার দলের চেয়ারম্যানের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, ‘কাদের সাহেব কেন এই কাজটি করলেন? তার কী হয়েছিল? তার অসুস্থতা আছে না কি, এটা পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে। কারণ, মানুষকে ভালোবেসে আপন করা, সহযোগিতা নেওয়া, সহযোগিতা করা, এটা কঠিন কাজ। আর এখানে ইজি গো-ইন, আপনি আমাদের চিঠি দিলেন। আমরা চিঠি পেয়েছি। ’এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার আরও বলেন, ‘আমাদের ঘামে, আমাদের পরিশ্রমে, আমাদের টাকায়, আমাদের সারা দেশের মানুষের কাছে যাওয়া, আমাদের আবেদনে মানুষ সাড়া দিয়েছে। আর আজকে আমাদের দল থেকে অব্যাহতি দিলেন। সারা দেশের মানুষ আজ অবাক। প্রাথমিক সদস্য পর্যন্ত আপনি রাখেননি। আপনি কোন সাল থেকে রাজনীতি করছেন আমার জিজ্ঞাসা। এটা কী রাজনৈতিক আচরণ?’এ সময় কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ছোট হতে হতে আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একদম ধ্বংসের কিনারায়। সেখান থেকে জাতীয় পার্টিকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়, কী ভাবে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, রাজনীতিতে আবার আমাদের অবস্থান ফিরে পেতে পারি, সেই জন্য আজ এই সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘আনিস ভাই দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান, কী দেখছি, চট চট করে সবাইকে বাহির করে উনি (জিএম কাদের) একা থাকবেন। একা একটা কোম্পানি করা যায়, বউয়ের সাথে সংসার করা যায়, রাজনীতি করা যায় না। সব চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক উনি (জিএম কাদের) আমাদের দলের চেয়ারম্যান। একটা মাথা খারাপ লোক, অসুস্থ লোক, মেন্টালি সিক। তার সাথে রাজনীতি করা যায় না।’সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘উনি (জিএম কাদের) যে কী করেন নিজেই বুঝতে পারছেন না। তিনি কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন নিজেই জানেন না। উনার মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কি না ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করা দরকার। জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমরা পার্টি করি। জনাব, কাদের সাহেব আপনি আমাদের দল ও পদ থেকে অব্যাহতি দিলেন, ওকে। কিন্তু প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দিলেন, যাতে আগামী কাউন্সিলে কোনো চ্যালেঞ্জ না হয়। আপনি যাতে এক দফা ভাবে নেতা নির্বাচন হন।’ভোরের আকাশ/জাআ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ''প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই 'মব কালচার' এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে মব কালচারের নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে।''মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।রিজভী বলেন, পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরি সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করবে। জনগণ মনে করে এটি নির্বাচন পেছানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার আমলে অদ্ভুত উন্নয়নের বয়ানের মতো এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরনের বয়ান দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।ভোরের আকাশ/আজাসা
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যারা পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়, তারা আসলে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়।মঙ্গলবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যারা আসলে আওয়ামী লীগকে ফেরাতে চায়, তারা অন্ধকারের শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে চায়। জনগণ এই ষড়যন্ত্র বুঝে গেছে।তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাতে দেশে একটি গণতান্ত্রিক এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ।তিনি বলেন, এখন কেউ কেউ পিআর পদ্ধতির কথা বলছেন। এটা নতুন ফাঁদ। জনগণের রায় ছিনিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ফেরত আনতে তারা নতুন পথ খুঁজছেন। এ চক্রান্ত সফল হবে না।শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যদি কেউ পিআর পদ্ধতি চালু করতে চায়, তাহলে সোজাসুজি জাতির সামনে এসে নিজেদের রাজনৈতিক প্রস্তাব তুলে ধরুক, নির্বাচন করুক, জয়লাভ করুক— তারপর পিআর আনুক। কিন্তু বিএনপির ঘাড়ে চেপে কিংবা রাষ্ট্রের ঘাড়ে চাপিয়ে কিছু আদায় করা যাবে না। জাতি এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, কৃষক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদী, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।ভোরের আকাশ/জাআ