ছবি: সংগৃহীত
দেশের পাঁচটি বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে রংপুর বিভাগে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হতে পারে। সোমবার (২৩ জুন) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস জানায়, মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ৯টার মধ্যে রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এর ফলে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে এবং সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে এবং সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে এবং সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ ছাড়া আগামী পাঁচ দিনের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হলে আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের চিন্তাভাবনা করছে সরকার—এ কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।শুক্রবার (১১ জুলাই) কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।তিনি বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার কাজ করছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছে এবং তারা নিজেদের মতো করে ঘোষণাপত্রের খসড়া কপি সরকারকে দিয়েছে। এখন আবারও নতুন করে কার্যক্রম চলছে।”তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, একটি সমন্বিত ও ঐকমত্যভিত্তিক ঘোষণাপত্র হোক। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি ঐকমত্য তৈরি হয়, তবে ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।”এর আগে শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত এক স্মৃতিফলক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ বলেন, “২৪ সালের ১১ জুলাই ছিল গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধের দিন। আমরা এ দিনটিকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করছি।”‘গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ দিবস: ১১ জুলাই’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “১১ জুলাই আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটির স্মৃতি ধরে রাখতেই আমরা স্মৃতির মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।”অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী।এর আগে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাবেক সভাপতি মো. ইসমাইল ও কাজী নাজমুস সাদাত। সভাপতিত্ব করেন বর্তমান জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ।ভোরের আকাশ//হ.র
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বোমা রয়েছে, উড়াল দিলেও তা বিস্ফোরিত হবে’-অজ্ঞাত স্থান থেকে এমন ফোনো হুমকির পর কাঠমান্ডুগামী একটি ফ্লাইটের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিজি ৩৭৩ ফ্লাইটটিতে তল্লাশি চালাচ্ছেন বোমা বিশেষজ্ঞরা।বার্তা পেয়েই বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে কর্তৃপক্ষ। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ফ্লাইটের সব যাত্রীকে; সেইসঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে ফ্লাইটটি।বর্তমানে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ অবস্থান করছে। বিমানটি তল্লাশিতে নেমেছে ক্রাইসিস রেসপন্স টিম এবং কে-নাইন পুলিশ টিম। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। উড়োজাহাজটির বৈমানিক ছিলেন ক্যাপ্টেন আবদুর রহমান। তবে, ফ্লাইট ছাড়ার আগে অজ্ঞাতনামা একটি সূত্র থেকে বোমা থাকার বার্তা আসে। এরপরই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় নেওয়া হয়।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম রওশন কবীর গণমাধ্যমকে জানান, একটি অজ্ঞাতনামা নম্বর থেকে ফোনকলের মাধ্যমে জানানো হয় যে, বিমানের ফ্লাইটে বোমা রয়েছে। সে সময় ফ্লাইটটি উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যাত্রীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।বোমা হুমকির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উড়োজাহাজে থাকা সব যাত্রীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে বিমানবন্দরের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উড়োজাহাজে তল্লাশি শুরু করে। যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়েছে।হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র স্কোয়াড্রন লিডার মো. মাহমুদুল হাসান মাসুম জানান, উড়োজাহাজ থেকে সব যাত্রীকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। এখন বোম্ব ডিসপোজাল টিম তল্লাশি চালাচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ইউনিট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থাও কাজ করছে।বিমানবন্দর সূত্র জানায়, এটি একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট হওয়ায় বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা কী উদ্দেশ্যে এই হুমকি দিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোরের আকাশ/জাআ
ছোট আয়তনের তুলনায় বিপুল জনসংখ্যার চাপ সামাল দিতে পারছে না বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অনেক আগেই স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিষয়ে সরকারের আগ্রহও যেন কমে গেছে। কিন্তু জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপ দিতেও পারছে না সরকার। মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই কর্মক্ষম অর্থাৎ বয়সের দিক দিয়ে তারা কাজের উপযোগী আছেন। কিন্তু দেশে নেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আবার দেশের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধদের মতো নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির শঙ্কা রয়ে গেছে। অতীতে চীন-জাপানের মতো দেশগুলো তাদের বাড়তি কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারলেও বাংলাদেশ সেটা কতটা কাজে লাগাতে পারছে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন অবস্থার মধ্যদিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। আর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বানীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। গত ৭ জুলাই জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ, যা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে।ইউএনএফপিএ’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ক্যাথরিন ব্রিন কামকং প্রতিবেদন উন্মোচন করে বলেন, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে জনসংখ্যা ১৭৫.৭ মিলিয়ন, যার অর্ধেক নারী এবং দুই-তৃতীয়াংশ (১১৫ মিলিয়ন) কর্মক্ষম। এটি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল অর্জনের একটি সুযোগ।তিনি বলেন, জনসংখ্যার ৭ শতাংশ প্রায় ১.২ কোটি মানুষ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি, যা বয়স্ক জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।তরুণদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ (প্রায় ৩৩ মিলিয়ন) কিশোর-কিশোরী এবং ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন যা জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ। বাংলাদেশের মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ২.১, যা মধ্যম স্তরে রয়েছে। তবে দেশের কিছু অঞ্চলে এখনও কিশোর বয়সে নারীদের গর্ভধারণের হার বেশি, যা বাল্যবিবাহ, জন্মনিরোধ ব্যবস্থার সীমিত ব্যবহার এবং যৌনশিক্ষার অভাবে হয়ে থাকে।২৪ বছরেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তেমন কমেনি গত সাড়ে ২৪ বছরে দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক হার প্রায় একই অবস্থানে ওঠানামা করছে। গত ২০০১ সালে জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ২০১৮ সালে ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর ২০২৫ সালেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশেই রয়ে গেছে।জনসংখ্যা জনসম্পদ, না বোঝা?ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, আয়তনের তুলনায় বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বাংলাদেশের জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম থেকে সরে গেছে সরকার। সরকারের নানা উদ্যোগ গ্রহণের পরও দেশের জনসংখ্যাকে প্রত্যাশিত মাত্রায় জনশক্তিতে রূপ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে বর্তমানে মোট জনসংখ্যার বিপুল সংখ্যক যুবক কোন ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ গ্রহণ অথবা কর্মের মধ্যে নেই। তারা পড়াশোনা যতটুকু করার করেছেন এবং বসে আছেন। জীবনের কোন পরিকল্পনা নেই, প্রচেষ্টা নেই কর্ম সুযোগ তৈরি করার। একটাই পরিকল্পনা, একটাই প্রত্যাশা যে কবে চাকরি হবে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ, জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, জনশক্তি পরিকল্পনা, মানবসম্পদ রপ্তানি ও কর্মসংস্থানের স্থায়ী ক্ষেত্র তৈরি করার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।দেশটিতে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর চেয়ে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এটি বলা হচ্ছে, ‘ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট’ বা ‘জনমিতিক লভ্যাংশের বোনাসকাল’। বাংলাদেশ জনমিতিক লভ্যাংশের বোনাসকালের যুগে প্রবেশ করেছে ২০০৫ সালের পরে। তখন থেকে এটি ক্রমাগত ঊর্দ্ধমুখী, যা এখনো বজায় আছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম বলেন, শ্রমশক্তির দিক দিয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকলেও এটা বেশিদিন পাওয়া যাবে না। আমাদের দেশে জনসংখ্যা নিয়ে যে প্রক্ষেপণ দেখা যাচ্ছে, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের যে সুবিধা সেটা সর্বোচ্চ ২০৩৫ বা ২০৩৭ সাল পর্যন্ত এটা ঊর্দ্ধমুখী থাকবে। অর্থাৎ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বাড়তে থাকবে। কিন্তু এরপর এটা কমতে থাকবে। ২০৪৭ সালের দিকে গিয়ে দেখা যাবে, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর চেয়ে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তাহলে যেটা হবে জনসংখ্যা কাঠামোয় এখন যে পরিবর্তন যেটা ২০৩৭ সাল পর্যন্ত আমাদের অনকূলে থাকবে। কোনও দেশে শ্রমশক্তি বাড়লে সেটা ঐ দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দিতে পারে। এজন্য দরকার হয় শ্রমশক্তি অর্থনীতিতে কাজে লাগানো। অর্থনীতিতে ব্যবহার করতে পারলেই সেটা ‘লভ্যাংশ’ হিসেবে বিবেচিত হবে।অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম বলেন,‘অথনীতির যে বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি সেটা আরও বাড়ানোটাই হচ্ছে জনমিতিক লভ্যাংশ। এটা তখনই বাড়বে যখন কর্মক্ষম লোকগুলোকে কাজে লাগানো যাবে। এজন্য তাদেরকে শ্রম বাজারে আনতে হবে, চাকরি দিতে হবে, মানসম্মত জীবন-যাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস-এর হিসেবে দেশটিতে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৯০ হাজার। যদিও বাস্তবে সংখ্যাটা আরও বেশি বলেই মত অর্থনীতিবিদদের। এছাড়া বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা বিআইডিএস-এর তথ্যানুযায়ী দেশে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে যুব বেকারত্বই প্রায় ৮০ শতাংশ। ফলে দেশটিতে ব্যাপক কর্মসংস্থান দরকার। কিন্তু কাজের সুযোগ যথেষ্ট তৈরি হচ্ছে না। মোটাদাগে এর তিনটি কারণ তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো হলো- কর্মমুখী শিক্ষায় ঘাটতি। গতানুগতিক শিক্ষা শেষে কাজ পাচ্ছে না তরুণরা। কারণ বাজারে যেসব কাজের চাহিদা, দেশের শিক্ষাপদ্ধতিতে তরুণদের মধ্যে সে দক্ষতা তৈরি হচ্ছে না। বিদেশে নতুন শ্রমবাজার সেভাবে উন্মুক্ত হচ্ছে না। ফলে বেকারদের একটা বড় অংশের গন্তব্য অভিবাসন। কিন্তু সেটার সুযোগ সবার নেই। আবার যারা শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের দক্ষতায়ও ঘাটতি থাকছে। ফলে তারা নিম্নমজুরির কাজ করছেন। এর ফলে রেমিটেন্সও কম আসছে। দেশে উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ উন্নত নয়। ফলে এখানে কোন চাকরিতে না গিয়ে যারা উদ্যোক্তা হতে চান, তারা যথেষ্ট পুঁজি পাচ্ছেন না এবং ব্যবসার পরিবেশেও ঘাটতি আছে।জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারকে কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করতে হবে। এখানে তরুণদের যে দক্ষতা অর্জন হচ্ছে না, কাজ পাচ্ছে না এটার দায় শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রকেই নিতে হয়।তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিন্তু হচ্ছে। কিন্তু সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। কারণ এখানে বিনিয়োগ নেই। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ, বৈদেশিক বিনিয়োগ আশানুরূপ হচ্ছে না। যার কারণে এই অবস্থা। তরুণদের যে শিক্ষাগত যোগ্যতা সেটা চাকরিতে কাজে লাগছে না। সবাই গতানুগতিক অনার্স, মাস্টার্সের পড়াশোনা করছে। অথবা বিবিএ-এমবিএ করছে। বাজারে তো এতো চাহিদা নেই। এজন্য দক্ষতা-ভিত্তিক মানবসম্পদ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।’ বলছিলেন ফাহমিদা খাতুন।অর্থনীতিবিদ ও জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে বাড়তি শ্রমশক্তি কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির রূপান্তর ঘটানোর জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা প্রধানত দুটি খাতের কথা তুলে ধরছেন। একটি হচ্ছে, কর্মমুখী শিক্ষা। অপরটি হচ্ছে স্বাস্থ্য। কিন্তু দুটোতেই বাংলাদেশের বাজেটে সরকারি বরাদ্দ নামমাত্র। শিক্ষার ক্ষেত্রে এটা জিডিপির দুই শতাংশের কম, আর স্বাস্থ্যে সেটা এক শতাংশেরও নিচে।অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেল (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশের এখন দরকার মানবসম্পদ উন্নয়নে মেগা প্রজেক্ট। আমাদের এখানে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যেমন মেগা প্রজেক্ট আছে। তেমনই সামাজিক উন্নয়নেও মেগা প্রকল্প দরকার। সেটা হবে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাখাতে।তিনি মনে করেন, আগামী কয়েক বছরে এই দুটো খাতে খুব বড় ধরনের বিনিয়োগ না হলে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীকে হারিয়ে ফেলবে বাংলাদেশ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পুরো নির্বাচনী আসনের ভোটগ্রহণ বাতিলের ক্ষমতা ফেরত পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের আমলে এই ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) অষ্টম কমিশন সভা শেষে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।তিনি বলেন, “ভোটে কারচুপির অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রভিত্তিক ভোট বাতিল করার ক্ষমতা আমাদের আছে। তবে সম্পূর্ণ আসনের ভোট বাতিলের যে ক্ষমতা একসময় ছিল, তা বর্তমানে নেই। আমরা সেই ক্ষমতা পুনরায় ফিরে পেতে উদ্যোগ নিয়েছি এবং আশা করছি, এটি ফিরে পাব।”এছাড়া হলফনামায় মিথ্যা তথ্য প্রদানের বিষয়েও কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, “এই সংক্রান্ত আইনে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশেষ করে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে তা ঘোষণা দিতে হবে, উপযুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে। এছাড়াও প্রার্থীর জীবনে করা সব ফৌজদারি মামলার ইতিহাস জানাতে হবে।”তিনি আরও জানান, প্রার্থীর নিকট আত্মীয়—যেমন নির্ভরশীল ভাই-বোন বা অন্যান্য আত্মীয়—যাদের সম্পর্কে আরপিওতে (নির্বাচনী আইন) নির্ধারিত সংজ্ঞা রয়েছে, তাদের সম্পদের হিসাবও হলফনামার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বর্তমানে আইনে একটি অস্পষ্টতা রয়েছে—হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে কি না। আমরা চাই, কমিশনের সেই ক্ষমতা নিশ্চিত করতে আইনি কাঠামো সংশোধন করা হোক।”নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, তা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।ভোরের আকাশ//হ.র