পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী খুন : অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪ জন
রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯)–কে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিমন শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং বাকি দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২)–এর পরিচয় জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, গত ৯ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন সড়কে ভাঙাড়ির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে সোহাগকে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও ইট-সিমেন্টের টুকরো দিয়ে থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পর কোতোয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরে নিহত সোহাগের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ডিসি তালেবুর রহমান আরও জানান, ঘটনার পরপরই আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ব্যবসায়িক আধিপত্য ও পুরনো শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, র্যাবও সমান্তরালভাবে অভিযান চালিয়ে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯)–কে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিমন শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান।তিনি জানান, অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং বাকি দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২)–এর পরিচয় জানা গেছে।পুলিশ জানায়, গত ৯ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন সড়কে ভাঙাড়ির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে সোহাগকে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও ইট-সিমেন্টের টুকরো দিয়ে থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।ঘটনার পর কোতোয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরে নিহত সোহাগের বড় বোন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।ডিসি তালেবুর রহমান আরও জানান, ঘটনার পরপরই আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়।পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ব্যবসায়িক আধিপত্য ও পুরনো শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এদিকে, র্যাবও সমান্তরালভাবে অভিযান চালিয়ে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।ভোরের আকাশ//হ.র
অপহরণকারীদের কবল থেকে এখনো উদ্ধার হয়নি বেঙ্গল বিল্ডার্স এন্ড কনসট্রোকশন এর কর্মী হায়দার হোসেন। গত মঙ্গলবার হাতিয়ায় প্রকল্প এলাকা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে হায়দার আলীকে অপহরণ করে খালিদুজ্জামান এর লোকজন। এর পর থেকে হায়দার আলী তাদের হেফাজতেই রয়েছে। হায়দার আলীকে ছেড়ে দেয়ার শর্ত হিসেবে বেঙ্গল বিল্ডার্স এন্ড কনসট্রোকশন কর্তৃপক্ষের কাছে খারিদুজ্জামান ৩৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে আসছে।অপহরণের বিষয়ে আলোচিত খালিদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, “এটা কোন অপহরণের ঘটনা নয়। ব্যবসায়িক লেন দেনের ঝামেলা থাকায় টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবে তাকে সম্মানের সাথে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। লেন দেনের হিসেব শেষ হলেই সে চলে যাবে”।গণমাধ্যমের সাথে কথা হওয়ার সময়ে খালিদের ফোন থেকেই কথা বলেন তুহিন ইমরান নামের এক ব্যাক্তি। তিনি জানান, এটা অপহরণের কোন ঘটনা নয়, খালিদ টাকা পাবে। এটা সবাই জানে। আমরাও জানি। আমরা হায়দারকে থানার গোল ঘরে বসিয়ে রেখেছি। সে নিরাপদে আছে। কোম্পানীর কাছে টাকা লেনে দেনের জেরে কোম্পানীতে চাকুরিরত কাউকে আটকে রাখা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান তুহিন বলেন, আইনের দৃষ্টিতে তা হয়তো যায় না। এটা যেমন ঠিক তেমনি পাওয়ানা টাকা আদায় করতে ’মব’ ছাড়া কোন উপায়ও তো নেই।মব কোন সমস্যার সমাধান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান তুহিন বলেন, আইন যেহেতু পাওয়ানা টাকা তুলে দেয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছে না তাহলে উপায় কি?এ বিষয়ে সুধারাম থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হায়দার নামে কোন ব্যক্তি আমার থানায় আটক বা উদ্ধার নেই। ইমরান তুহিন যখন বলেছে হায়দারকে থানার গোল ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছে,সেখানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় চরম উৎকন্ঠা তৈরী হয়েছে হায়দারের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। হায়দারের স্ত্রী গণমাধ্যমের কাছে তার স্বামীর নিরপাত্তা প্রাপ্তির আকুতি জানিয়ে বলেছেন, চাকুরি করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকিতে যেন সে না পড়ে। রাষ্ট্রের কাছে স্বামীর জীবনের নিরাপত্তা চান তিনি।এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ফারুকের নাম্বারে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।এদিকে খালিদের চাঁদাদাবি ও অপহরণের ঘটনায় হুমকীর মুখে পড়েছে হাতিয়ায় চলমান নদী ভাঙ্গন রোধে চলমান প্রকল্পের কাজ। এতে উদ্বিগ্ন এলাকাবসি। এলাকবাসি জানিয়েছে এ কাজ বন্ধ হলে অনেক এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।এদিকে ঘটনার সার্বিক দিক জানতে চাইলে বেঙ্গল বিল্ডার্স এন্ড কনস্ট্রাকশনের জিএম এইচ এম আপজাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “খালিদের সাথে আমাদের ব্যবসায়িক চুক্তি আছে। চুক্তি অনুযায়ী এবং দেশের আইন মেনে আমরা সমস্যার সমাধানে বার বার তাদের সাথে বসেছি। কিন্তু চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে খালিদ পূর্বেও আমাদের ব্লাকমেইলিং করে টাকা নিয়েছে। এখন কোম্পানীর লোককে অপহরণ করে ৩৫ লাখ টাকা দাবি করছে।তিনি বলেন, দেশে আইন আদালত রয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু যা হচ্ছে কাম্য হতে পারে না”। তিনিও খালিদের লোকজনের হাতে আটক থাকা হায়দারের নিরাপদ ফিরে আসার কামনা করেন।ঘটনার অতীত ঘেটে জানা যায়, নোয়াখালীর হাতিয়া সংলগ্ন মেঘনা পাড়ের মানুষের আজীবনের দুঃখ নদীর ভাঙ্গন। আর সেই ভাঙ্গন রোধে সরকার তথা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে চলছে হাতিয়ায় নলের চর এলাকার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ। সেখানে চলমান ২৮টি প্রকল্পের মধ্যে ১১ এবং ১৩ এই দুটি প্রকল্পে জিও ব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি করছে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।সম্প্রতি স্থানীয় খালিদ নামের এক ব্যক্তি এই কাজে বাধার সৃষ্টি করে বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছে সে ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। সেই সাথে চাঁদা না দিলে চলমান কাজ বন্ধে করে দেয়ার হুমকী দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের মাধ্যমে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড প্যাকেজ-১১ ও ১৩ নামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুটি প্রকল্পে নোয়াখালীর হাতিয়ায় নলের চর এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে ৭৫৪ মিটার এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধের কাজ পায়। সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা, ব্লক তৈরি ও ফেলানোর কাজ চলমান। চলতি বছরের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকির জন্য বেঙ্গল বিল্ডার্সেও একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকল্প এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।এদিকে কাজের সুবিধার্থে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড প্যাকেজ-১১ এ ৩৭৭ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজের ব্যবস্থপনার দায়িত্ব দেয় ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। খালিদুজ্জামান হচ্ছে ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ এর স্বত্তাধিকারি।এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (অপারেশন্স) বশির আহমদ এবং আল খায়ের ট্রেডিং এর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাপ্টেন (অব.) মাসুদুর রহমান। চুক্তিতে ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ শুধু প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এছাড়া চুক্তির শর্তানুযায়ী ২০ শতাংশ লভ্যাংশের মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স পাবে ১৫ শতাংশ, আর ‘আল খায়ের ট্রেডিং’ ম্যানেজমেন্ট ফি হিসেবে পাবে ৫ শতাংশ।উভয় পক্ষের চুক্তি অনুযায়ী কাজ চলমান থাকা অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোম্পানীটি কাজের বিল বিল পায় ২২ লাখ ৫৬ হাজার একশ টাকা। যার মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স কর্তৃক পূর্বে কাজ করা ছিল ৮ লাখ ৩৮ হাজার ১৮৮ টাকার। আর ১ম বিলের কাজ শেষে ৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার মালামাল ‘আল খায়ের ট্রেডিং’ এর পক্ষে জনৈক খঅলিদ বুঝে নেয়। বিনিয়োগের তুলনায় কম বিল পাওয়া নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।এই বিরোধের জেরে ১ম বিলের কাজ শেষে হিসাব নিকাশ চুড়ান্ত করে বেঙ্গল বিল্ডার্সের অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে মাসুদুর রহমান বেঙ্গল বিল্ডার্সের অনুকুলে ১০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করে ১ম বিলের হিসাব ও ১ম চুক্তি সমাপ্ত করেন।পরবর্তীতে আলোচনার সাপেক্ষে ‘বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ ও ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ এর মধ্যে দ্বিতীয় দফা চুক্তি (সংশোধিত চুক্তি) স্বাক্ষরিত হয়। দ্বিতীয় চুক্তিটির (সংশোধিত) শর্তে উল্লেখ থাকে যে, এই চুক্তির সকল কার্যক্রম ১ম বিলের কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হবে।এই চুক্তির শর্তানুযায়ী খালিদ বিল পাওয়ার পর্যন্ত সর্বোচচ ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করিতে পারবে। আর বিল পাবার তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিনিয়োগকৃত ৪০ লাখ টাকা ফেরত পাবে। যদি তাকে ৪০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হয় তাহলে ৪০ লাখের অতিরিক্ত বিনিয়োগকৃত টাকা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স পরিশোধ করবে। এক্ষেত্রে বেঙ্গল বিল্ডার্স ১৫% লভ্যাংশের পরিবর্তে ৮% লভ্যাংশ পাবে মর্মে নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি কাজে খরচের আগে বেঙ্গল বিল্ডার্স থেকে আল খায়ের ট্রেডিং-কে অনুমোদন নেয়ার শর্ত যোগ করা হয় এবং চুক্তি করা হয়।চুক্তি মতে, প্রজেক্টের কাজের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়ার পরই কেবল আল খায়ের ট্রেডিং সেই কাজ করতে পারবে। এদিকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা সময়ে দ্বিতীয় চুক্তি অনুযায়ী খালিদ ১২ লাখ টাকা বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছ থেকে গ্রহণ করলেও প্রকল্পে কোনো কাজই সে করে না। শুধু তালবাহানা করে কাজ বন্ধ রাখে এবং সময়ক্ষেপণ করে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখার কারণে খুলনা শিপইয়াড নোটিশ দিয়ে একটি সভা আহ্বান করে। পূর্বনির্ধারিত সভায় খালিদ অনুপস্থিত থাকে। যার ফলে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ বেঙ্গল বিল্ডার্সকে কাজ চালু রাখার বিষয়ে প্রচন্ড চাপ দেয়। প্রকল্পের কাজ চালু রাখা ও বেঙ্গল বিল্ডার্সের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে দ্বিতীয় চুক্তির শর্তানুযায়ী দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখার কারণে খালিদকে লিখিতভাবে নোটিশ দিয়ে চুক্তিটি বাতিল করা হয়।লিখিতভাবে চূড়ান্ত নোটিশও প্রদান করা হয়। নোটিশের ৪ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয় যে, If you there are any outstanding payments, we request that you provide official documentary evidence of approval from the Water Development Board and bring it to the head office of Bengal Builders & Construction Ltd.কিন্ত খালিদ বেঙ্গল বিল্ডার্সের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে প্রকল্প এলাকা থেকে বেঙ্গল বিল্ডার্সের প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ট্রাক ভর্তি ৫ হাজার ১৭৬টি জিও ব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এ নিয়ে স্থানীয় থানায় খালিদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রথমত অভিযোগ করা হয়, পরবর্তীতে একটি এজাহার দায়ের করে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এ সময় খালিদ বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছে এক কোটি টাকা চাদা দাবি করে। খালিদের সে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে গত ২৩ এপ্রিল রাতে হাতিয়া থেকে ঢাকা আসার সময় সোনাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে বেঙ্গল বিল্ডার্সের তিনজন কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়। তাদেরকে মাইজদীর নবাব হোটেলে ৪ দিন ধরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে।এ খবর পেয়ে ২৭ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সেখান থেকে অপহৃত বেঙ্গল বিল্ডার্সের জেনারেল ম্যানেজার এইচ এম আফজাল হোসাইন, ম্যানেজার মো. রাসেল মাহমুদ ও ইঞ্জিনিয়ার রাকিবকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মুক্তি পেয়ে তারা ঢাকায় ফেরেন। বেঙ্গল বিল্ডার্সের অভিযোগ- খালিদের লোকজন তাদেরকে অপহরণ করে।এদিকে গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড-এর হিসাব রক্ষক মো. হায়দার হোসেনকে (৫৫) অস্ত্রে মুখে অপহরণ করে খালিদ ও তার লোকজন।এ বিষয়ে হায়দারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘ আমি হাতিয়া প্রজেক্ট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মাইজদীর সোনাপুর বাসস্ট্যান্ড নামলে বিকেল ৪ টার দিকে খালেদ ও তার বাহিনীর ২৫-৩০ জন সশ্রস্ত্র ক্যাডার আমাকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।এ সময় তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে ঢাকাস্থ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলে। তারা আমাকে ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ৩৫ লাখ টাকা দাবি করে। এসময় তারা আমার সাথে থাকা ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেয় এবং জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। জানা গেছে,এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখার স্বার্থে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে খালিদকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে বিভিন্ন হিসাব দাখিল করা হয়।তাতে দেখা যায়, ১ম বিলের হিসাব সমাপ্তির পর দ্বিতীয় চুক্তি অনুযায়ী মালামালসহ খালিদ প্রায় সাড়ে ৪১ লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্তু সেই পরিমাণ কাজ খালিদ করেনি। বেঙ্গল বিল্ডার্স কর্র্তৃক খালিদের কাজের হিসাব পাওয়া যায়। প্রকল্পে কর্মরতরা জানায়, খালিদ প্রজেক্টে ২২-২৫ লাখ টাকার কাজ করেছে। ইঞ্জিনিয়ার আশিকুর রহমান (আশিক) প্যাকেজ-১১ এর সরেজমিনে খালিদের কাজের রিপোর্টও দিয়েছেন ২৮,২০,৮৭০ টাকার। বেঙ্গল বিল্ডার্সের জেনারেল ম্যানেজার এইচ এম আফজাল হোসাইন প্যাকেজ-১১ এর সরেজমিনে খালিদের কাজের রিপোর্ট দিয়েছেন ৩০,৫৭,৬৫১.৪৯ টাকার।এতে দেখা যায় যে, খালিদ কাজের অতিরিক্ত ১৫ লাখ ২২ হাজার টাকা নিয়েছেন। আর এই টাকা পরিশোধ না করেই উল্টো আরও ৩৫ লাখ টাকা দাবি করছে খালিদ। এ টাকা না দিলে প্রকল্প এলাকায় কাজ করতে দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে।এতে চরমভাবে হুমকীর মুখে পড়েছে প্রকল্পের কাজ।ভোরের আকাশ/আজাসা
নোয়াখালীর হাতিয়া সংলগ মেঘনা পাড়ের মানুষের আজীবনের দুঃখ নদীর ভাঙ্গন। আর সেই ভাঙ্গন রোধে সরকার তথা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে চলছে হাতিয়ায় নলের চর এলাকার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ। সেখানে চলমান ২৮টি প্রকল্পের মধ্যে ১১ এবং ১৩ এই দুটি প্রকল্পে জিও ব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি করছে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। সম্প্রতি স্থানীয় খালিদ নামের এক ব্যক্তি এই কাজে বাধার সৃষ্টি করে বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছে সে ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। সেই সাথে চাদা না দিলে চলমান কাজ বন্ধে করে দেয়ার হুমকী দিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের মাধ্যমে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড প্যাকেজ-১১ ও ১৩ নামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুটি প্রকল্পে নোয়াখালীর হাতিয়ায় নলের চর এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে ৭৫৪ মিটার এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধের কাজ পায়। সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা, ব্লক তৈরি ও ফেলানোর কাজ চলমান। চলতি বছরের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকির জন্য বেঙ্গল বিল্ডার্সেও একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকল্প এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।এদিকে কাজের সুবিধার্থে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড প্যাকেজ-১১ এ ৩৭৭ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজের ব্যবস্থপনার দায়িত্ব দেয় ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (অপারেশন্স) বশির আহমদ এবং আল খায়ের ট্রেডিং এর পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাপ্টেন (অব.) মাসুদুর রহমান। চুক্তিতে ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ শুধু প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এছাড়া চুক্তির শর্তানুযায়ী ২০ শতাংশ লভ্যাংশের মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স পাবে ১৫ শতাংশ, আর ‘আল খায়ের ট্রেডিং’ ম্যানেজমেন্ট ফি হিসেবে পাবে ৫ শতাংশ। উভয় পক্ষের চুক্তি অনুযায়ী কাজ চলমান থাকা অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোম্পানীটি কাজের বিল বিল পায় ২২ লাখ ৫৬ হাজার একশ টাকা। যার মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স কর্তৃক পূর্বে কাজ করা ছিল ৮ লাখ ৩৮ হাজার ১৮৮ টাকার। আর ১ম বিলের কাজ শেষে ৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার মালামাল ‘আল খায়ের ট্রেডিং’ এর পক্ষে জনৈক খালিদ বুঝে নেয়।বিনিয়োগের তুলনায় কম বিল পাওয়া নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এই বিরোধের জেরে ১ম বিলের কাজ শেষে হিসাব নিকাশ চুড়ান্ত করে বেঙ্গল বিল্ডার্সের অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে মাসুদুর রহমান বেঙ্গল বিল্ডার্সের অনুকুলে ১০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করে ১ম বিলের হিসাব ও ১ম চুক্তি সমাপ্ত করেন।পরবর্তীতে আলোচনার সাপেক্ষে ‘বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ ও ‘আল খায়ের ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং’ এর মধ্যে দ্বিতীয় দফা চুক্তি (সংশোধিত চুক্তি) স্বাক্ষরিত হয়। দ্বিতীয় চুক্তিটির (সংশোধিত) শর্তে উল্লেখ থাকে যে, এই চুক্তির সকল কার্যক্রম ১ম বিলের কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হবে। এই চুক্তির শর্তানুযায়ী খালিদ বিল পাওয়ার পর্যন্ত সর্বোচচ ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করিতে পারবে। আর বিল পাবার তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিনিয়োগকৃত ৪০ লাখ টাকা ফেরত পাবে।যদি তাকে ৪০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হয় তাহলে ৪০ লাখের অতিরিক্ত বিনিয়োগকৃত টাকা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বেঙ্গল বিল্ডার্স পরিশোধ করবে। এক্ষেত্রে বেঙ্গল বিল্ডার্স ১৫% লভ্যাংশের পরিবর্তে ৮% লভ্যাংশ পাবে মর্মে নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি কাজে খরচের আগে বেঙ্গল বিল্ডার্স থেকে আল খায়ের ট্রেডিং-কে অনুমোদন নেয়ার শর্ত যোগ করা হয় এবং চুক্তি করা হয়। চুক্তিমতে, প্রজেক্টের কাজের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়ার পরই কেবল আল খায়ের ট্রেডিং সেই কাজ করতে পারবে।এদিকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা সময়ে দ্বিতীয় চুক্তি অনুযায়ী খালিদ ১২ লাখ টাকা বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছ থেকে গ্রহণ করলেও প্রকল্পে কোনো কাজই সে করে না। শুধু তালবাহানা করে কাজ বন্ধ রাখে এবং সময়ক্ষেপণ করে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখার কারণে খুলনা শিপইয়াড নোটিশ দিয়ে একটি সভা আহ্বান করে। পূর্বনির্ধারিত সভায় খালিদ অনুপস্থিত থাকে। যার ফলে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ বেঙ্গল বিল্ডার্সকে কাজ চালু রাখার বিষয়ে প্রচন্ড চাপ দেয়। প্রকল্পের কাজ চালু রাখা ও বেঙ্গল বিল্ডার্সের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে দ্বিতীয় চুক্তির শর্তানুযায়ী দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখার কারণে খালিদকে লিখিতভাবে নোটিশ দিয়ে চুক্তিটি বাতিল করা হয়।লিখিতভাবে চূড়ান্ত নোটিশও প্রদান করা হয়। নোটিশের ৪ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয় যে, If you there are any outstanding payments, we request that you provide official documentary evidence of approval from the Water Development Board and bring it to the head office of Bengal Builders & Construction Ltd.কিন্ত খালিদ বেঙ্গল বিল্ডার্সের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে প্রকল্প এলাকা থেকে বেঙ্গল বিল্ডার্সের প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ট্রাক ভর্তি ৫ হাজার ১৭৬টি জিও ব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এ নিয়ে স্থানীয় থানায় খালিদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রথমত অভিযোগ করা হয়, পরবর্তীতে একটি এজাহার দায়ের করে বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এ সময় খালিদ বেঙ্গল বিল্ডার্সের কাছে এক কোটি টাকা চাদা দাবি করে। খালিদের সে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে গত ২৩ এপ্রিল রাতে হাতিয়া থেকে ঢাকা আসার সময় সোনাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে বেঙ্গল বিল্ডার্সের তিনজন কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়। তাদেরকে মাইজদীর নবাব হোটেলে ৪ দিন ধরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে। এ খবর পেয়ে ২৭ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সেখান থেকে অপহৃত বেঙ্গল বিল্ডার্সের জেনারেল ম্যানেজার এইচ এম আফজাল হোসাইন, ম্যানেজার মো. রাসেল মাহমুদ ও ইঞ্জিনিয়ার রাকিবকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মুক্তি পেয়ে তারা ঢাকায় ফেরেন। বেঙ্গল বিল্ডার্সের অভিযোগ- খালিদের লোকজন তাদেরকে অপহরণ করে।এ দিকে গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড-এর হিসাব রক্ষক মো. হায়দার হোসেনকে (৫৫) অস্ত্রে মুখে অপহরণ করে খালিদ ও তার লোকজন। এ বিষয়ে হায়দারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘ আমি হাতিয়া প্রজেক্ট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মাইজদীর সোনাপুর বাসস্ট্যান্ড নামলে বিকেল ৪ টার দিকে খালেদ ও তার বাহিনীর ২৫-৩০ জন সশ্রস্ত্র ক্যাডার আমাকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।এ সময় তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে ঢাকাস্থ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলে। তারা আমাকে ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ৩৫ লাখ টাকা দাবি করে। এসময় তারা আমার সাথে থাকা ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেয় এবং জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। জানা গেছে, এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখার স্বার্থে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে খালিদকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে বিভিন্ন হিসাব দাখিল করা হয়। তাতে দেখা যায়, ১ম বিলের হিসাব সমাপ্তির পর দ্বিতীয় চুক্তি অনুযায়ী মালামালসহ খালিদ প্রায় সাড়ে ৪১ লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্তু সেই পরিমাণ কাজ খালিদ করেনি। বেঙ্গল বিল্ডার্স কর্তৃক খালিদের কাজের হিসাব পাওয়া যায়। প্রকল্পে কর্মরতরা জানায়, খালিদ প্রজেক্টে ২২-২৫ লাখ টাকার কাজ করেছে। ইঞ্জিনিয়ার আশিকুর রহমান (আশিক) প্যাকেজ-১১ এর সরেজমিনে খালিদের কাজের রিপোর্টও দিয়েছেন ২৮,২০,৮৭০ টাকার। বেঙ্গল বিল্ডার্সের জেনারেল ম্যানেজার এইচ এম আফজাল হোসাইন প্যাকেজ-১১ এর সরেজমিনে খালিদের কাজের রিপোর্ট দিয়েছেন ৩০,৫৭,৬৫১.৪৯ টাকার।এতে দেখা যায় যে, খালিদ কাজের অতিরিক্ত ১৫ লাখ ২২ হাজার টাকা নিয়েছেন। আর এই টাকা পরিশোধ না করেই উল্টো আরও ৩৫ লাখ টাকা দাবি করছে খালিদ। এ টাকা না দিলে প্রকল্প এলাকায় কাজ করতে দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে।এতে চরমভাবে হুমকীর মুখে পড়েছে প্রকল্পের কাজ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে শত শত বিঘা সরকারি জমি দখল এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অসংখ্য সম্পদের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি।দুদক সূত্রে জানা গেছে, ইলিয়াস মোল্লাহ এবং তার পরিবারের নামে রাজধানীর শ্যামপুর, বিরুলিয়া, সাভার এবং আইয়াজ প্যালেস এলাকায় কয়েকশ বিঘা জমি ও স্থাবর সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। বিরুলিয়ায় রয়েছে প্রায় ৬০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত একটি বাগানবাড়ি এবং ছেলের নামে পৃথক একটি বাংলো। এছাড়া তার নামে তিনটি ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকানার তথ্যও মিলেছে।দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ৪৭৩টি প্লট, মিরপুর-১ নম্বরে জাতীয় চিড়িয়াখানার জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ২ একর জমি এবং তুরাগ নদের অংশ ভরাট করে মিরপুর-২ নম্বরে নির্মিত ২০০টির বেশি বস্তিঘরের দখলেরও প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া, মিরপুর-১২ এলাকায় ‘ইলিয়াস মোল্লাহর বস্তি’ নামে পরিচিত জায়গায় নদীভরাট করে শত শত ঘর তৈরি করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ দিয়ে ভাড়া আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।এ সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের উপপরিচালক মো. মোজাম্মিল হোসেনের সই করা তলবি নোটিশে আগামী ৯ জুলাই সকাল ১১টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ইলিয়াস মোল্লাহকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জমি, বাড়ি, ব্যাংক হিসাব, পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্ন, যানবাহনের কাগজপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সংশ্লিষ্ট সব নথিপত্র দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তবে দুদক ও বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইলিয়াস মোল্লাহ বর্তমানে পলাতক বা বিদেশে রয়েছেন। অনুসন্ধান টিম ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থায়— যেমন ব্যাংক, বিআরটিএ, ভূমি অফিস, রাজউক, বিদ্যুৎ বিভাগ, তিতাস গ্যাস, সিটি কর্পোরেশন ও এনবিআর— তার এবং তার পরিবারের সম্পদ ও বিনিয়োগসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। কিছু নথি ইতিমধ্যেই দুদকের হাতে এসেছে বলেও জানা গেছে।ইলিয়াস মোল্লাহর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, তার নগদ ও ব্যাংক জমাসহ মোট সম্পদ ছিল ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি ২০১৮ সালে বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ১১ লাখ টাকায়। সম্পদের মধ্যে রয়েছে মাছের খামার, অ্যাগ্রো ফার্ম, বিপণিবিতান, দুটি বাড়ি, একটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং স্ত্রীর নামে ৩২ ভরি ও নিজের নামে ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার। তবে স্থানীয়দের মতে, এ হিসাব বাস্তব সম্পদের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।দুদকের অনুসন্ধান বলছে, ইলিয়াস মোল্লাহর অবৈধ সম্পদের অন্যতম উৎস মিরপুরের দুয়ারীপাড়া। ১৯৮১ সালে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ৪৭৩টি প্লটের মালিকানা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া বিরোধের সুযোগ নিয়ে ওই জমি দখলে নেন ইলিয়াস। প্লট দখল করে সেখানে বসবাসরতদের বারবার উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, প্লট ভেঙে সংখ্যা বাড়িয়ে পুনরায় বিক্রি এবং অস্থায়ী দোকান ও মার্কেট থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, “অনুসন্ধান কর্মকর্তার এখতিয়ার রয়েছে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তলব করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও বক্তব্য গ্রহণ করার। যদি তিনি সহযোগিতা না করেন, তবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারাবেন।”ইলিয়াস মোল্লাহর রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ২০০৫ সালে পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।ভোরের আকাশ//হ.র