ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে হলিক্রস কলেজের ১ নম্বর গেইটের সামনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে হঠাৎ কে বা কারা ওই স্থানে ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়, তবে আরও দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তেজগাঁও থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, “রাত ১০টার দিকে হলিক্রস কলেজের গেইটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও টহলরত সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখান থেকে দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে।”
তিনি আরও জানান, কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে হলিক্রস কলেজের ১ নম্বর গেইটের সামনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে হঠাৎ কে বা কারা ওই স্থানে ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়, তবে আরও দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।ঘটনার পর রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তেজগাঁও থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, “রাত ১০টার দিকে হলিক্রস কলেজের গেইটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও টহলরত সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখান থেকে দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে।”তিনি আরও জানান, কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।ভোরের আকাশ//হ.র
সারাদেশে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন (TCV) ২০২৫ সফল করার পথে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ চিহ্নিত করে এক যুগান্তকারী গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন (HSF)-এর আয়োজনে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর কৌশলগত অংশীদারিত্বে ‘Sharing of Situation Analysis Report on English Medium School & Qawmi Madrasa’ শীর্ষক এক সভায় এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব এ.টি.এম. সাইফুল ইসলাম, যিনি এই গবেষণাটিকে বাংলাদেশে প্রথম বলে উল্লেখ করেন।গবেষণার মূল ফলাফল: দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন চ্যালেঞ্জ: গ্যাভী সিএসও'র চেয়ার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। তিন মাসব্যাপী পরিচালিত এই গবেষণায় মিক্সড মেথড ব্যবহার করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরিচালনা কমিটির সাক্ষাৎকার, FGD ও KII-এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের চ্যালেঞ্জ (ভ্যাকসিন দ্বিধা): ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর স্বাস্থ্য সুবিধায় অগ্রগতি থাকলেও, টিকাদান কার্যক্রমে প্রধান বাধা 'ভ্যাকসিন দ্বিধা' (Vaccine Hesitancy):উদ্বেগ ও স্বাচ্ছন্দ্য: অধিকাংশ শিক্ষক ও অভিভাবকের মধ্যে ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা, মান ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তারা অনেকে প্রাইভেট হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।প্রশাসনিক ও স্থান সমস্যা: কিছু স্কুলে স্থান সংকুলান, অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতা এবং প্রচারণার অভাব পরিলক্ষিত হয়।যোগাযোগের বাধা: সরকারি বা এনজিও ভ্যাকসিনেটররা অনুমোদন ছাড়া স্কুলে প্রবেশ করতে পারেন না, যা টিকা প্রাপ্তিতে বড় চ্যালেঞ্জ।কওমি মাদ্রাসার চ্যালেঞ্জ (সচেতনতা ও যোগাযোগ): কওমি মাদ্রাসাগুলোতে স্বাস্থ্য ও টিকাদান কার্যক্রম খুবই সীমিত। এখানে মূল সমস্যা সচেতনতার অভাব ও কাঠামোগত বাধা।স্বাস্থ্যসেবার অভাব: অধিকাংশ মাদ্রাসায় ফার্স্ট এইড কিট নেই এবং শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলে নিকটস্থ ফার্মেসি বা ক্লিনিকে নেওয়া হয়।ভ্যাকসিনের তথ্য ও গুজব: মাদ্রাসার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি ভ্যাকসিনের মান, নিরাপত্তা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। কখনও কখনও টিকা সম্পর্কে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।নিবন্ধনের সমস্যা: মাদ্রাসায় টিকাদানে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ খুবই সীমিত।ইউনিক সামাজিক বাধা: ছেলে মাদ্রাসায় নারী ভ্যাকসিনেটর এবং মেয়ে মাদ্রাসায় পুরুষ ভ্যাকসিনেটর কাজ করার অনুমোদন নেই।TCV ক্যাম্পেইন ২০২৫: টার্গেট ও উদ্যোগ: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হবে।টিকাদানের লক্ষ্য: প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৯ম শ্রেণী/সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ০৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিদ্যমান ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ শেখ ছাইদুল হক বলেন, এই ক্যাম্পেইন সফল করতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবং কওমি মাদ্রাসাসহ সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জরুরি।ক্যাম্পেইন সফল করতে সুপারিশমালা-গবেষণা প্রতিবেদনে TCV কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে:অফিসিয়াল যোগাযোগ: সরকার থেকে অফিসিয়াল চিঠি দিয়ে TCV কার্যক্রমের তারিখ ও সময় জানানো এবং DGHS/EPI থেকে ফোকাল পারসন নিয়োগ করে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা।সচেতনতা বৃদ্ধি: শিক্ষক, অভিভাবক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের জন্য ওরিয়েন্টেশন সেশন আয়োজন করে ভ্যাকসিন সুবিধা, নিরাপত্তা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।গুজব নিরসন: টিকাদানের ক্ষেত্রে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং যেকোনো গুজব দেখা দিলে দ্রুত তা দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ।সুবিধামতো সময়: ভ্যাকসিনেশন স্কুল/মাদ্রাসার ক্লাস চলার সময়ে বা শিক্ষার্থীদের সুবিধামতো সময়ে আয়োজন করতে হবে এবং অনুপস্থিতদের জন্য বিকল্প ইপিআই সেন্টার ব্যবহার করতে হবে।কভারেজ: টিকাদান কার্যক্রমের রেকর্ড ও কভারেজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ এবং জন্ম নিবন্ধন নেই এমন শিশুদের ক্ষেত্রে কাগজে সংরক্ষণ করতে হবে।অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (ডাঃ আবু আহম্মদ আল মামুন), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনপিও (ডাঃ চিরঞ্জিত দাস), এবং অপরাজেয় বাংলার নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/জাআ
রাজধানীতে মশার উপদ্রব লাগামহীন। মশা মারতে ‘কামান দাগানো’র মতো হাজার কোটি টাকা খরচেও রাজধানীবাসীর জন্য তা স্বস্তি এনে দিতে পারেনি। উল্টো মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে ‘কচু পাতার পানি’র মতো। এখানে একটি ছোট মশা নগরবাসীর জীবন বিপন্ন করে তুলছে।যখন-তখন প্রাণ চলে যাচ্ছে মানুষের। একেকটি পরিবার স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব-অসহায় হয়ে পড়ছে। দুই সিটির বিশেষজ্ঞ, অঢেল টাকা খরচ আর প্রচার-প্রচারণা সবই যেন জলে যাচ্ছে। শুধু চলতি বছরই মারণব্যাধি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ময়কর হলো দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৫ জন মারা গেলেও উত্তর সিটিতে মারা গেছে ২৯ জন।একই শহরের একাংশে কম মৃত্যু আর আরেক অংশে কয়েক গুণ বেশি মৃত্যুতেও দক্ষিণ সিটির তেমন বিকার নেই। উদ্যোগ আর হাঁকডাকেরও শেষ নেই। কিন্তু মশার উপদ্রব কমে না। মশার কামড়ে সৃষ্ট ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যুর মিছিলও থামে না। এতে নগরবাসীর দিন কাটছে চরম দুর্দশায়।এই যেমন রাজিবুল হক ও সানজিদা ইসলাম দম্পতি। তারা থাকেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে। একমাত্র মেয়ে জাইমা নিদাতের বয়স চার বছর।জাইমা চঞ্চল প্রকৃতির হলেও কাটাতে হচ্ছে বন্দি জীবন! এই দম্পতির বাসায় তিনটি জানালা ও একটি বারান্দা থাকলেও সূর্যের খানিক আলোতেই ভরসা করতে হয়। মশা তথা ডেঙ্গু আতঙ্কে তিন জানালায় নেট লাগানো। এতে হালকা আলো এলেও বাতাস আর প্রবেশ করতে পারে না। একটি মাত্র বারান্দায় নেট লাগানোর ব্যবস্থাও না থাকায় রাতদিন বন্ধই রাখতে হচ্ছে। এমন বন্দি দশায়ই কেটে যাচ্ছে জাইমার শৈশব।একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করা রাজিবুল হক বলেন, ‘কী আর বলব। এভাবেই কেটে যাচ্ছে। মেয়ের মাকে বলেছি দিনের বেলায় বারান্দার পাশটা একটু খুলে দিতে। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য খুললেও বাসা মশার দখলে চলে যায়। ভয়ে ভয়ে থাকি। কারণ ডেঙ্গুতে আক্রান্তে মৃত্যুর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি দেখছি।’সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই দম্পতির মতো একই অবস্থা রাজধানীর বেশির ভাগ বাসিন্দারই। সম্প্রতি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মশার উপদ্রব বাড়ায় ভয় ও ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে নাগরিকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব আরো বাড়তে থাকবে। আগে শীতকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও এবার দেখা যেতে পারে ভিন্ন চিত্র।দুই সিটিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডিএনসিসিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৪২ জন, ডিএসসিসিতে সাত হাজার ৭৭৬ জন। ডিএনসিসি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ২৯ জনের আর ডিএসসিসিতে ১০৫ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন করে দুই সিটিতে আরো ২৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরে ১৪১ জন, দক্ষিণে ১১৪ জন ভর্তি হয়। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত উত্তরে একজন এবং দক্ষিণে আরো একজন মারা গেছে। বর্তমানে দুই সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছে ৮৫৯ জন।ঢাকার দুই সিটির মশক পরিস্থিতি এবং সাবধানতা নিয়ে মশা বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ যদি সব কাজ করেই থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণ কেন হচ্ছে না? এটি একটি বড় প্রশ্ন। কে কী করছে, সচেতনতা কতটা বাড়ল, এগুলো ছাড়িয়ে বড় কথা হচ্ছে ডেঙ্গু আরো বাড়বে। এখন যে চিত্র আমরা দেখছি এটি কিন্তু স্বাভাবিক চিত্র নয়। চলতি মাসে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে। এই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে শীতেও ডেঙ্গু থাকবে। হয়তো কিছুটা কমে আসবে, তবে অন্যান্য বছর এই সময়ে ততটা না থাকলেও এবার থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মশক কার্যক্রমে গতি আনা উচিত।’বছর বছর মশা নিধনে বাজেট বাড়লেও উপদ্রব কমে না: দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ বছরে ঢাকার মশা নিধনের নানা পদক্ষেপের পেছনে খরচ হয়েছে এক হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে দুই সিটিতে মশা নিধনে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫৪ কোটি টাকা। ডিএসসিসি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় রাখা হয়। অন্যদিকে উত্তরে প্রায় ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে রাখা হয় ৬৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন ও পরিবহন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক এবং মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে বরাদ্দ রাখা হয়।২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরে এক কোটি টাকা বাড়িয়ে মশা নিধনে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ডিএসসিসি। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে মশা নিধনে ফগার, হুইল ও স্প্রে মেশিন বাবদ আরো দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য ১৮৭ কোটি টাকা টাকা, মোট বাজেটের ৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অথচ আগের বছরে ছিল ১১০ কোটি টাকা।মশা নিধনে দুই সিটির কার্যক্রম: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল-বিকাল প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করা হয়। এ বছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর জনসচেতনতার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ছোট ছোট টিম করে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে। ওয়ার্ড সচিবদের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে যে যাই বলুক শুধু কীটনাশক ছিটিয়ে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যদি তাই হতো নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, লার্ভিসাইড বা কীটনাশক প্রয়োগ করা হলেও কেন মশা কমছে না। আসল সমস্যা এই শহরের কাঠামোতে। কারণ এ শহরে ড্রেন, ডোবা, নর্দমা, বিল, ঝিল ও খালে পানির প্রবাহ নেই। এসব স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এতে পানির ঘনত্ব বেড়ে মশা প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর সবাই সিটি করপোরেশনকেই দোষ দিচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশন এমনটা বললেও দক্ষিণে প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং করার জন্য সকালে সাত মশককর্মী আর বিকেলে ছয় মশককর্মী থাকার কথা থাকলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ বাস্তবে এমনটা দেখা যায় না।জানা গেছে, উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক সময়ের স্প্রে থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া অনেক ধরনের কমিটি করা হয়েছে। কারিগরি কমিটি, স্পেশাল টাস্কফোর্স কমিটি, ওয়ার্কিং কমিটি, ওয়ার্ড লেভেল কমিটি, এখন আবার নতুন কীটনাশকের গুণাগুণ যাচাইয়ের জন্য কমিটি। এসব কমিটিতে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। কিন্তু এর পরও মশা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।তবে উত্তরে এই মশককর্মীর কার্যক্রম তদারকির জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সহযোগিতা নিলেও দক্ষিণ সেটি করেনি বলে জানা গেছে। ডিএনসিসি জলাশয়গুলোতে নোভালরুন ট্যাবলেট ছিটিয়েছে। দুই সিটিতেই জলাশয়গুলোর কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারেও এবার গতি কম।এমন পরিস্থিতিতে মাঝেমধ্যেই ভারি বৃষ্টিতে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের আগে উন্মুক্ত ড্রেন, বক্স-কালভার্টের বর্জ্য যেভাবে অপসারণের প্রয়োজন ছিল, সেখানেও এবার ঘাটতি আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। উত্তরে মশক নিধনের জন্য কিছু হুইলব্যারো মেশিন সংগ্রহ করা হলেও সেগুলো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টেকনিক্যাল কমিটি বুঝে না নিলে কিছু করা যাচ্ছে না। যে যা-ই বলুক বাসিন্দাদের ভোগান্তি আর কমছে না।ঢাকার লালবাগের শহীদনগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বসবাস ওয়াশিউর রহমান নামের এক টেকনিশিয়ানের। তিনি বলেন, ‘দিনরাত নাই। সব সময় মশার যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। কয়েল, মশারি কিছুতেই নিস্তার নেই। কিভাবে যে ঢুকে তা বুঝতে পারি না। বাসায় কারো জ্বর হলেই ভয়ে থাকি।’মিরপুরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল করীম মাঝি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে আমাদের বাসার গলিতে পানি জমে। কয়েক ঘণ্টা পর পানি সরে গেলেও কিছু জায়গায় পানি আটকে থাকে। ড্রেন আর জমা পানিতে মশার বাচ্চা কিলবিল করতে দেখি। আগে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের যে পরিমাণ স্প্রে করতে দেখতাম এখন ততটা দেখি না। মনে হয় দায়সারা কাজ করে।’জানা গেছে, বর্তমানে ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তারা ওয়ার্ড সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞাত না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ফলে কোন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে, সেটি তারা বুঝতে পারছেন না। আগে ড্রোন দিয়ে ওপর থেকে মশার ক্লাস্টার চিহ্নিত করে সেখানে ওষুধ ছিটানোর কাজও চলেছে কখনো কখনো। ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্মীয়মাণ ভবন বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা, মশা বা মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পেলেই জরিমানা করা হয়েছে। গুণী ও জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে ডেঙ্গুবিষয়ক নানা প্রচারাভিযানও চালাতে দেখা গেছে। এখন এসব দেখা যায় না।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ১০টি করে ২০টি অঞ্চলে ২০ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও আছেন ১১ জন। আগে মশককর্মীদের ওষুধ দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতেন প্রতিটি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর। দুই সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর ছিলেন ১২৬ জন। এখন কাঠামোতে সমস্যা হওয়ায় মাঠের কাজেও প্রভাব পড়ছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কী বলছেন: এসব বিষয়ে ডিএসসিসির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ডেঙ্গু ফোকাল পারসন ডা. ফারিয়া ফয়েজ বলেন, ‘আগে ওয়ার্ড সচিবদের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও এখন আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে। এখানে কোনো ঘাটতি নেই। বরং আগের চেয়ে এখন ভালোভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর বিভিন্ন ওয়ার্ডের মশককর্মীরা অনুপস্থিত থাকায় ঘাটতি তৈরি হয়। এটি পরবর্তী সময়ে পূরণ হয়ে গেছে। যদিও একটু অদক্ষ হওয়ায় তাদের সময় লাগছে।’১০৫ জন মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণে ২৪ জন মারা গেছে। আর যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা চিকিৎসা নিতে এসে মারা গেছে।’ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মশক নিধনে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। হুইলব্যারো মেশিনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন ডা. ইমদাদুল হক।’পরে উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হুইলব্যারো মেশিন এখনো রিসিভ করা হয়নি। দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে রিসিভ করা হবে। আমাদের কাছে এলেও এটি টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে রিসিভ করতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী স্যার কেন আমার সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন তা জানি না। এই বিষয়ে কথা বলবেন আমাদের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্যার। তিনি আমাকে বললে আমি কথা বলতে পারতাম। আমরা চাইলেই কথা বলতে পারব না। মিটিং হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপনও হয়েছে, আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলব না।’পরে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরীর অফিশিয়াল নাম্বারে বারবার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র: কালের কণ্ঠভোরের আকাশ/মো.আ.
ঢাকাসহ সারা দেশে আজ দুপুরে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে ঢাকার আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকার আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি। এ ছাড়া দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।এ সময় দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।গতকালকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৩ শতাংশ। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এদিকে সবশেষ সারা দেশের জন্য দেওয়া ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আজ সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝাররি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।ভোরের আকাশ/মো.আ.