লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাত থেকে শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর আজদাবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে জিম্মি থাকা শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার এক বিবৃতিতে লিবিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল এই তথ্য জানিয়েছেন।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে পাঁচজন নারী রয়েছেন। পাচারকারীরা তাদের জিম্মি করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করছিল। একই সঙ্গে তাদের ওপর চালানো হচ্ছিল শারীরিক নির্যাতন।
এই ঘটনায় লিবিয়া, সুদান ও মিসরের পাঁচ নাগরিককে পাচারকারী সন্দেহে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে কবে থেকে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বন্দি ছিলেন এবং তারা কোন কোন দেশের নাগরিক— সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বলছে, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সংঘাত এড়াতে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে। এই যাত্রায় লিবিয়া তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এই পথে মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকিও থাকে ব্যাপক।
শুধু পাচারের নয়, মানবপাচারকারীদের হাতে শারীরিক নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনাও লিবিয়ায় নতুন নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির কুফরা শহরের পার্শ্ববর্তী মরুভূমির একটি গণকবর থেকে ২৮ অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জিলখারা এলাকা থেকেও আরেকটি গণকবর থেকে ১৯টি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত লিবিয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রায় ৮ লাখ ২৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী অবস্থান করছেন। তাদের বেশিরভাগই ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় লিবিয়াকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন।
সূত্র: লিবিয়া অ্যাটর্নি জেনারেল, জাতিসংঘ
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
গুপ্তচরবৃত্তির শাস্তি আরও কঠোর করতে নতুন আইন পাস করেছে ইরান। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্টে বিপুল ভোটে পাস হওয়া এ আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি শত্রু রাষ্ট্র বা গোষ্ঠীর জন্য গোয়েন্দা তৎপরতায় জড়িত থাকলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। সেইসঙ্গে তার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা যাবে।নতুন আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো সাজার বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ থাকবে না। আর মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে ইরানের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সুযোগ থাকবে।তবে এই আইন পাস হওয়ার পরই দেশটির কয়েকজন আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত এই আইনের মানবাধিকারের দিকগুলো নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।বিবিসি বাংলা ও ইরান ফন্ট পেজ জানিয়েছে, সংশোধিত আইনে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলকে ‘শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠী’ চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আর মিনিস্ট্রি অব ইন্টেলিজেন্সকে তাদের নেটওয়ার্ক শনাক্ত করার কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।এর আগে পাস হওয়া খসড়া আইনে ‘শত্রু রাষ্ট্র বা গোষ্ঠী’ কী, তা স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল সেই অস্পষ্টতাকে তুলে ধরে আইনটি সংসদে ফেরত পাঠায়। এবার সেই সংশোধনসহ আইনটি পুনরায় অনুমোদন পেয়েছে।সংশোধিত আইনের আরও একটি ধারা অনুযায়ী, যদি কেউ জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বা জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করার আশঙ্কায় বিদেশি চ্যানেল বা শত্রু নেটওয়ার্কে তথ্য বা ভিডিও পাঠায়, তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধে দণ্ড হিসেবে কারাদণ্ড ও সরকারি বা জনসেবা থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।এই নতুন আইন পাসের পেছনে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা সংকটের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হন। ইরান অভিযোগ করেছে, এসব হামলায় মোসাদের এজেন্টরা ইরানের ভেতরে সরাসরি অংশ নেয় এবং গ্রেপ্তার হওয়া এজেন্টদের বড় অংশই ইরানি নাগরিক।যুদ্ধবিরতির পর ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে এবং অনেকের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার বা দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে—সেই বিষয়ে ইরানি কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কিছু জানায়নি।সূত্র: বিবিসি বাংলা, ইরান ফন্ট পেজভোরের আকাশ//হ.র
লেবাননের পূর্বাঞ্চলের বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ইরান-সমর্থিত শিয়া সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর পাঁচজন সদস্য রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির একটি নিরাপত্তা সূত্র। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এই হামলা চালানো হয়।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দাবি, বেকা উপত্যকায় হিজবুল্লাহর অভিজাত রাধওয়ান ইউনিটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও অস্ত্রাগার ছিল এই হামলার লক্ষ্যবস্তু।বেকা অঞ্চলের গভর্নর বশির খোদর জানিয়েছেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে সাতজন সিরীয় নাগরিক। এটি ছিল গত বছরের যুদ্ধবিরতির পর এ অঞ্চলে ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, “এই হামলার মাধ্যমে হিজবুল্লাহকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। তারা রাধওয়ান ইউনিট পুনর্গঠন করে ইসরায়েলে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। এর জবাবে ইসরায়েল সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে।” তিনি আরও বলেন, “এই হামলার মাধ্যমে লেবানন সরকারকেও একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে— যুদ্ধবিরতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।”হামলার প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, “বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলের এই হামলা লেবাননের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসনের ভয়াবহতা বাড়িয়ে তুলেছে।” তবে দলটির পক্ষ থেকে তাদের সদস্যদের হতাহতের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। লেবানন সরকারও এ ঘটনায় এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এরপর থেকে এ ধরনের বড় হামলা এটাই প্রথম।সূত্র: রয়টার্সভোরের আকাশ//হ.র
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর আজদাবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে জিম্মি থাকা শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার এক বিবৃতিতে লিবিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল এই তথ্য জানিয়েছেন।উদ্ধারকৃতদের মধ্যে পাঁচজন নারী রয়েছেন। পাচারকারীরা তাদের জিম্মি করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করছিল। একই সঙ্গে তাদের ওপর চালানো হচ্ছিল শারীরিক নির্যাতন।এই ঘটনায় লিবিয়া, সুদান ও মিসরের পাঁচ নাগরিককে পাচারকারী সন্দেহে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।তবে কবে থেকে এই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বন্দি ছিলেন এবং তারা কোন কোন দেশের নাগরিক— সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বলছে, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সংঘাত এড়াতে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে। এই যাত্রায় লিবিয়া তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এই পথে মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকিও থাকে ব্যাপক।শুধু পাচারের নয়, মানবপাচারকারীদের হাতে শারীরিক নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনাও লিবিয়ায় নতুন নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির কুফরা শহরের পার্শ্ববর্তী মরুভূমির একটি গণকবর থেকে ২৮ অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জিলখারা এলাকা থেকেও আরেকটি গণকবর থেকে ১৯টি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত লিবিয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রায় ৮ লাখ ২৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী অবস্থান করছেন। তাদের বেশিরভাগই ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় লিবিয়াকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন।সূত্র: লিবিয়া অ্যাটর্নি জেনারেল, জাতিসংঘভোরের আকাশ//হ.র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফটোসেশনে 'থাম্বস আপ' ভঙ্গিতে ছবি তোলার ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রখ্যাত ইরানি ফুটবল রেফারি আলিরেজা ফাঘানি। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তোলা এই ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ইরানে জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল হামলার শিকার হলে, যুক্তরাষ্ট্র বি-২ বোম্বার দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালায়। এ অবস্থায় ইরানজুড়ে জাতীয়তাবাদ আরও প্রবল হয়ে উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের সঙ্গে ফাঘানির ঘনিষ্ঠতা ইরানিদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।জানা গেছে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চেলসি প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ৩-০ গোলে হারায়। ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ফাঘানি। খেলা শেষে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তোলেন এবং ‘থাম্বস আপ’ ভঙ্গিতে দেখা দেন।উল্লেখ্য, আলিরেজা ফাঘানি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফুটবল রেফারিদের একজন। ২০১৯ সালে ইরান ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন গ্রহণ করেন এবং বর্তমানে সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।এদিকে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস-সমর্থিত ফার্স নিউজ এজেন্সি এ ঘটনাকে “অসম্মানজনক” বলে মন্তব্য করেছে। তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলা হয়, “ইরানের ভূমিতে একের পর এক হামলা, এক হাজারের বেশি শহীদের রক্তপাতের পরে আলিরেজা ফাঘানি ট্রাম্পকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং তাঁর ভঙ্গির অনুকরণে ছবি তোলেন—এটি জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”ফাঘানি পরে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ট্রাম্পের পাশে তোলা ছবিটি পোস্ট করেন এবং ক্যাপশনে লেখেন, “আবারও ফুটবল ইতিহাসের অংশ হতে পেরে কৃতজ্ঞ।”সরকারপন্থী অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। থার্ড জেনারেশন খোমেনি রেভল্যুশন নামে এক্স-হ্যান্ডেলে লেখা হয়, “আলিরেজা ফাঘানি তাঁর ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি ইরানেই সম্পন্ন করেছেন। অথচ আজ তিনি সেই দেশের ঘোরতর শত্রুর সঙ্গে হাসিমুখে স্মারক ছবি তুললেন!”সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, ফার্স নিউজ এজেন্সিভোরের আকাশ//হ.র