আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫ ০৪:২৫ এএম
জার্মানিতে আশ্রয় আবেদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বিএএমএফ। জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ৬১ হাজার ৩৩৬ জন প্রথমবারের মতো জার্মানিতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম।
জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় মোট ৭২ হাজার ৮১৮টি আশ্রয় আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬১ হাজার ৩৩৬টি ছিল প্রাথমিক আবেদন এবং বাকি ১১ হাজার ৪৮২টি ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের বা আপিল আবেদন। ২০২৪ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ৩২ হাজার ২০১টি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্তে কঠোর তল্লাশি এবং বলকান রাষ্ট্রগুলোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপই এই পতনের মূল কারণ। পাশাপাশি, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর দেশটির অভিবাসীদের মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।
২০২৫ সালে আফগান নাগরিকরা আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে সংখ্যায় শীর্ষে উঠে এসেছে। এ সময় ১৫ হাজার ১৮১ জন আফগান এবং ১৫ হাজার ১২৭ জন সিরীয় নাগরিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।
তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ২ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি সিরীয় নাগরিক স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে গেছেন।
জার্মান সরকারের নতুন সীমান্ত নীতির আওতায় কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। সম্প্রতি বার্লিনের একটি প্রশাসনিক আদালত এক রায়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাবলিন পদ্ধতি অনুসরণ না করে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো আইনবহির্ভূত।
৯ মে সোমালিয়ার তিন নাগরিককে পোল্যান্ডে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় আদালত জানান, কোনো ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর আগে তার আশ্রয় আবেদন কোন দেশ গ্রহণ করবে তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
এই রায়ের পরও জার্মান সরকার তাদের সীমান্ত নীতি অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে এর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ক্ষমতায় এসেছেন অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের নির্দেশ দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডোব্রিন্ট জানিয়েছেন, সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে তারা ইউরোপীয় আইনের ৭২ ধারা প্রয়োগ করছেন। তার মতে, জরুরি পরিস্থিতিতে এই ধারা আশ্রয় প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী কাজ করছি। তবে বিষয়টি ইউরোপীয় বিচার আদালতের বিবেচনায় আসা উচিত।”
এ বিষয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৮ জুলাই জার্মানিতে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস, ডিপিএ, স্টেয়ার্ন
ভোরের আকাশ//হ.র