ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৫ ০৯:১২ পিএম
গাজায় খাদ্য-সঙ্কট উদ্বিগ্ন ট্রাম্প
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট ঘিরে অবশেষে মুখ খুললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের লাগাতার সামরিক অভিযান ও অবরোধে বিপর্যস্ত গাজায় যখন খাদ্য, পানি, ওষুধের জন্য হাহাকার, ঠিক তখনই ট্রাম্প জানালেন, গাজায় বহু মানুষ অনাহারে ভুগছেন... আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। কীভাবে এর সমাধান করা যায়, তা-ও দেখছি।
আবুধাবি থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি নিয়ে আগামী মাসের মধ্যে ‘ইতিবাচক’ কোনো অগ্রগতির আশায় রয়েছেন তিনি। তবে সেই শান্তি আলোচনার রূপরেখা বা কৌশল নিয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি।
গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সেনার হামলা অব্যাহত রয়েছে। শক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বিমান ও স্থল হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫০ জন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালিল আল-দেকরান জানান, বেত লাহিয়া শহরের হাসপাতালে আহতদের ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় কাগজের টুকরো ছড়িয়ে দিয়েছে, যাতে হুমকির ভাষায় বলা হয়েছে- যত দ্রুত সম্ভব দক্ষিণে সরে যাও! এতে আতঙ্কে অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা আরও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন পরবর্তী গন্তব্য কোথায়, কেউই জানেন না। মানবিক সহায়তার রাস্তা ইসরায়েলি অবরোধে কার্যত বন্ধ।
গত মার্চে হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই নেতানিয়াহু সরকার গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রবেশের সব পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। ফলে গাজায় এখন চলছে জীবনের জন্য বাঁচার খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসা পাচ্ছে না লক্ষাধিক মানুষ। হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলি অবরোধ যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে গাজার মানুষ আরও ভয়াবহ সঙ্কটের মুখে পড়বে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অবরোধ তুলে দেওয়ার আহ্বান জানালেও এখনও পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায়নি নেতানিয়াহু সরকারের পক্ষ থেকে।
গাজার এই মানবিক বিপর্যয় কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, পুরো বিশ্ব বিবেকের সামনে এক কঠিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে এই শতাব্দীতে, জাতিসংঘের চোখের সামনে দাঁড়িয়ে কি এভাবে একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া যায়? এখন বিশ্ব নেতাদের সাহসী ও কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণের আশা ক্ষীণ।
ভোরের আকাশ/জাআ