× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আল-জাজিরার তথ্যচিত্রে

ড. ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা

ভোরের আকাশ ডেস্ক

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫ ০৯:০০ পিএম

ড. ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা

ড. ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা

শেখ হাসিনার পতন এবং পরবর্তী বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে একটি বিশেষ তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। এতে যেমন আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনার ভয়াবহ দুঃশাসনের কথা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনই ক্রান্তিকালে দায়িত্ব নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে দেশকে সঠিক পথে পরিচালনা করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

গত শুক্রবার প্রকাশিত ‘রিবিল্ডিং বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি আফটার শেখ হাসিনা’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্রে ফুটে উঠেছে ১৫ বছর পুলিশ, র‍্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করে কীভাবে খুন, গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী মত ও চিন্তাশক্তিকে দমন করা হয়েছিল। এছাড়া উঠে এসেছে কীভাবে ফ্যাসিবাদের ইতিহাস রচনা করেছিল শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অপশাসনের বর্ণনা তুলে ধরে হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা উঠে এসেছে আল-জাজিরার এ তথ্যচিত্রে। এছাড়াও দেশ গঠনে প্রশাসনের সংস্কারসহ, বিচার ব্যবস্থা পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরা হয়।

এতে আরও বলা হয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তারা (শিক্ষার্থীরা) আমাকে ফোন দিয়েছিল, আমি বললাম, না আমি না। আমি দেশ পরিচালনার সঙ্গে জড়িত হতে চাই না। বাংলাদেশে অনেক যোগ্য লোক আছে, তাদের খুঁজে বের করো। কিন্তু সবাই বলছিল, আপনাকেই সেখানে থাকতে হবে।’

তথ্যচিত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জেন জির বেশিরভাগের কাছে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে থাকলেও অনেক অভিভাবকের কাছে তিনি ছিলেন ট্রাজিক নায়িকা। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৭১ সালে ক্ষমতায় আসেন এবং পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। কিন্তু এর চার বছর পর শেখ হাসিনার ইউরোপর সফরের সময় তার বাবাকে সপরিবারে সামরিক অভ্যুত্থানে হত্যা করা হয়।  পরে বিদেশে নির্বাসন জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।

এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। এই সময়ে বিরোধীদলের অনেক নেতাকর্মীকে হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনী বিনাবিচারে আটকে রাখে। ভুক্তভোগী পরিবারের একজন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। ২০১৫ সালে তার বাবা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসি দেয়া হয়। ফাঁসি কার্যকরের ৯ মাস পর হুম্মামকে হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ করে একটি জানালাবিহীন কক্ষে আটকে রাখে।

হুম্মাম জানিয়েছেন, তাকে আয়নাঘর নামে একটি কুখ্যাত গোপন কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল।

আল-জাজিরাকে হুম্মাম কাদের বলেন, সত্যি কথা বলতে এটাকে আয়নাঘর বলা হয়; কারণ এটি এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি কাউকে দেখতে পাবেন না। এটা এমনি একটি জায়গা যেখানে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন।

আয়নাঘরে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তারা যখন খুশি আসে, তুলে নেয়, জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মারধর করে। এটা একটা মানসিক নির্যাতন। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জোরপূর্বক গুমের শিকার কয়েকজনকে হঠাৎ ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের একজন আবদুল্লাহিল আমান আযমী। দীর্ঘ আট বছর আয়নাঘরে আটকে রাখার পর গত বছরের ৭ আগস্ট তাকে একটি রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ৬৯ হাজার ৭৯৪ ঘণ্টা আমি আটক ছিলাম। আমি রাতে কখনো ঘুমাতে পারতাম না। প্রতি রাতে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা। একটু শব্দ হলেই আমি ভয় পেতাম। ওরা কি আমাকে নিয়ে যেতে আসছে? আমি শুধু ভোরের অপেক্ষা করতাম। কারণ আমি মনে করতাম, তারা আমাকে দিনের বেলায় হত্যা করবে না।

আযমি আরও বলেন, আটক থাকা অবস্থায় আমি প্রকৃতিক আলো দেখিনি, সূর্য, চাঁদ, আকাশ, মেঘ কিছুই দেখিনি।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও কোনো কারণ ছাড়াই ২০০৯ সালে জেনারেল আযমিকে বরখাস্ত করা হয়। এবং এর সাত বছর পর তাকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আয়নাঘরে আটকে রাখা হয়। নিজ দেশে নির্যাতন-নিপীড়ন সত্ত্বেও শেখ হাসিনা বিশ্ব থেকে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেতে থাকেন। ভয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। 

কিন্তু ২০২৪ সালের জুন মাস এসে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হযে যায়। চাকরিতে কোটা নিয়ে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা পরিপত্র সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ অবৈধ ঘোষণার পর ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করেন। জুলাই মাসে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে শত শত মানুষ প্রাণ হারায়। ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার বাসভবন ঘেরাও করে। এর মধ্যেই তিনি ভারতে পালিয়ে যান।

তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং জনগণের প্রতি তাদের সহমর্মিতার চিত্র। সেনাবাহিনীর ভূমিকা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয় আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। অন্তর্বর্তী সরকারের ধারণা, বিগত সরকারের মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠরা বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা এবং তার দোসররা আক্ষরিক অর্থেই ব্যাংক ডাকাতি করেছিল, কখনো কখনো অস্তিত্ব নেই এমন কোম্পানিগুলোকেও কোটি কোটি ঋণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমার ২৮ বছরের আইএমএফের কর্মজীবনে কখনো দেখিনি যে, বেসরকারি খাতের অভিজাতদের ওপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা দখল করা সম্ভব হয়েছে। শুধু ওই ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই নয়, নিয়ন্ত্রণ ও ডাকাতির জন্য এমনটি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার আমলের অনেক মন্ত্রী, এমপি এখন বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। তাদের একজন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সাবেক এই ভূমিমন্ত্রীর বার্ষিক বেতন ছিল ১৫ হাজার ডলারেরও কম। কিন্তু লন্ডনে অর্ধ মিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে আল-জাজিরার একটি অনুসন্ধানী দল।

তথ্য বলছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশে তার আরও সম্পদ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
 কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান, ১৬টি অবৈধ জাল উদ্ধার

কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান, ১৬টি অবৈধ জাল উদ্ধার

 রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ঈশ্বরগঞ্জে মানববন্ধন

রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ঈশ্বরগঞ্জে মানববন্ধন

 সিরাজগঞ্জে চেক প্রতারণার মামলায় প্রধান শিক্ষিকার কারাদন্ড

সিরাজগঞ্জে চেক প্রতারণার মামলায় প্রধান শিক্ষিকার কারাদন্ড

 জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু হানিফ খন্দকারের স্মরণ সভা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু হানিফ খন্দকারের স্মরণ সভা

 ‎পিরোজপুরে রিকের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

‎পিরোজপুরে রিকের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

 মা ইলিশ রক্ষায় পিরোজপুরে মোবাইল কোর্টের অভিযান, জাল বিনষ্ট

মা ইলিশ রক্ষায় পিরোজপুরে মোবাইল কোর্টের অভিযান, জাল বিনষ্ট

 আশুলিয়ায় বিশেষ অভিযানে ৮ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

আশুলিয়ায় বিশেষ অভিযানে ৮ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

 যশোর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ২

যশোর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ২

 কন্যাশিশুদের প্রতি পরিবার ও সমাজের সৃষ্টিভঙ্গি পরির্বতন করতে হবে

কন্যাশিশুদের প্রতি পরিবার ও সমাজের সৃষ্টিভঙ্গি পরির্বতন করতে হবে

 শিবচরে সাংবাদিকের বাসা থেকে নগদ অর্থসহ স্বর্নালঙ্কার চুরির অভিযোগ

শিবচরে সাংবাদিকের বাসা থেকে নগদ অর্থসহ স্বর্নালঙ্কার চুরির অভিযোগ

 কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিজিবি'র অভিযানে ভারতীয় মালামাল আটক

কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিজিবি'র অভিযানে ভারতীয় মালামাল আটক

 ইসলায়েলে শহিদুলকে আটকের ঘটনায় বিএনপির উদ্বেগ

ইসলায়েলে শহিদুলকে আটকের ঘটনায় বিএনপির উদ্বেগ

 বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

 টাঙ্গাইলে টুকুর পক্ষে মমতাজ করিমের নির্বাচনী মতবিনিময় সভা

টাঙ্গাইলে টুকুর পক্ষে মমতাজ করিমের নির্বাচনী মতবিনিময় সভা

 আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

 সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রেল প্রকৌশলী

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রেল প্রকৌশলী

 চিতলমারীতে হিন্দু বাড়িতে ডাকাতি

চিতলমারীতে হিন্দু বাড়িতে ডাকাতি

 শহিদুল আলমকে আটকের ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা

শহিদুল আলমকে আটকের ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা

 টেকনাফে লোকালয়ে থাকা ৩৭ রোহিঙ্গাসহ আশ্রয়দাতা নারী আটক

টেকনাফে লোকালয়ে থাকা ৩৭ রোহিঙ্গাসহ আশ্রয়দাতা নারী আটক

সংশ্লিষ্ট

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সেফ এক্সিট খুঁজছি না, আমি দেশেই থাকব: রিজওয়ানা

সেফ এক্সিট খুঁজছি না, আমি দেশেই থাকব: রিজওয়ানা

নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ