আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫ ০২:৪৯ এএম
লিবিয়ায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান, আটক অন্তত ১,৫০০
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। রাজধানী ত্রিপোলির পূর্বাঞ্চলে পরিচালিত এই অভিযানে অন্তত দেড় হাজার বিদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২০ জুলাই) এই অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রী আলী আল-আবেদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পূর্ব ত্রিপোলির একটি এলাকায় চালানো তল্লাশিতে দেখা গেছে, সেখানকার বেশ কিছু আবাসনে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বিদেশি শ্রমিকরা বসবাস করছিলেন। আটক ব্যক্তিদের কারও কাছেই বৈধ পাসপোর্ট, বাসিন্দার অনুমতিপত্র কিংবা স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছিল না।
এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, অভিযান চালানো এলাকাটি আসলে একটি অস্থায়ী অভিবাসী শিবির। এটি উঁচু প্রাচীরে ঘেরা এবং বিশাল প্রবেশদ্বার রয়েছে। সেখানে মূলত মিসর এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা বসবাস করছিলেন। শিবির এলাকায় একটি ছোট মুদি দোকান, মাংসের দোকান এবং সবজির দোকানও দেখা গেছে।
শ্রমমন্ত্রী আরও জানান, ওই শিবিরে বসবাস, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ন্যূনতম কোনো মানদণ্ডই মানা হয়নি। আটক অভিবাসীদের লিবিয়ার অবৈধ অভিবাসনবিরোধী কর্তৃপক্ষের পরিচালিত কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং জাতীয় আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও আটক ব্যক্তিদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট ঘোষণা আসেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার অংশ হতে পারে।
২০১১ সালে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সমর্থিত অভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের শাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই সংঘাত ও বিভক্তির মধ্যে রয়েছে লিবিয়া। বর্তমানে দেশটিতে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসন রয়েছে—ত্রিপোলিভিত্তিক প্রধানমন্ত্রী আবদেলহামিদ দাবেইবাহর সরকার এবং পূর্বাঞ্চলভিত্তিক একটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী।
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের জন্য লিবিয়া অন্যতম প্রধান যাত্রাপথে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর হাজার হাজার অনিবন্ধিত অভিবাসী লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন। দেশটির উপকূল থেকে ইতালির দূরত্ব মাত্র ৩০০ কিলোমিটার হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এই পথটি অনেকের কাছেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
চলতি জুলাইয়ের শুরুর দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন কমিশনার এবং গ্রিস, ইতালি ও মাল্টার মন্ত্রীরা লিবিয়া সফর করেন। সফরে লিবিয়ার সঙ্গে অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ধরপাকড় অভিযানের পেছনে ইউরোপীয় চাপও একটি বড় ভূমিকা রেখেছে।
সূত্র: এএফপি
ভোরের আকাশ//হ.র