ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৬:৫৯ পিএম
ছবি : ভোরের আকাশ
অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত নোয়াখালীর হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাট এলাকা। আজ দুপুর আড়াইটায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত নোয়াখালীর হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাট এলাকা। অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো প্লাবিত হয়েছে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল। এতে জেলার দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার মূল ভূখণ্ডেও জলাবদ্ধতা বেড়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেঘনার ঢেউয়ে হরণী ইউনিয়নের চতলারঘাট ও আশপাশের এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। জোয়ারের তোড়ে ভেঙে গেছে সাত-আটটি দোকানঘর। চেয়ারম্যানঘাটের মাছঘাটও নদীতে বিলীন হওয়ার পথে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, গত ২৯ মে ঝড় ও জোয়ারে মাছঘাটের একাংশ নদীতে বিলীন হয়। এবার টানা দুই দিনের জোয়ারে অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে গেছে। ইলিশ মৌসুমে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
হাতিয়ার সুখচর এলাকার বাসিন্দা মো. শামীমুজ্জামান বলেন, সুখচর, চর আমান উল্লাহসহ আশপাশের এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, নিঝুম দ্বীপসহ উপজেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তুপানিয়া, আল-আমিন গ্রাম ও নলচিরায় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারে তুপানিয়া, আল-আমিন গ্রাম ও নলচিরা এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা শহর-সদরেও জলাবদ্ধতা : গত দুই দিনের বৃষ্টিপাতে জেলা শহর মাইজদীসহ সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আজ বিকেলে মাইজদীর জজ আদালত-সংলগ্ন সড়ক, আদালত প্রাঙ্গণ, রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর, চৌমুহনী পৌরসভা, হাজীপুর, রসুলপুর ও কাদিরপুর এলাকার অনেক গ্রামীণ সড়ক ও বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে আছে।
চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, পানি নামছে ধীরে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক মানুষ এখনো পানিবন্দী। সড়ক ডুবে থাকায় চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, নিম্নাঞ্চলগুলোতে কিছু এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। পানি নিষ্কাশনে কাজ চলছে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মাইজদীতে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ