মালয়েশিয়ায় ৪৪ বাংলাদেশিসহ ১১৪ অভিবাসী আটক
মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৪৪ বাংলাদেশিসহ ১১৪ বিদেশিকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। আটকদের মধ্যে ৪৪ জন বাংলাদেশি, আটজন ভারতীয়, নয়জন পাকিস্তানি, ২৮ জন নেপালি, আটজন ইন্দোনেশীয়, ১২ জন মিয়ানমারের নাগরিক, চারজন ভিয়েতনামি ও একজন কম্বোডিয়ান। শুক্রবার (৩০ মে) জোহর ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর দাতুক মোহাম্মদ রুসদি মোহাম্মদ দারুস এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পেকান নেনাস ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।
দাতুক মোহাম্মদ রুসদি আরও বলেন, রাজ্যের অভিবাসন আইন লঙ্ঘনকারী বিদেশিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইমিগ্রেশন বিভাগ কোনো নিয়োগকর্তা, ভবনের মালিক বা অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও সুরক্ষা প্রদানকারী ব্যক্তির সঙ্গে আপোস করবে না।
এর আগে, গত ২৮ মে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় একযোগে ‘অপস মাহির’ নামে একটি সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে মোট ১২৮ বিদেশি ও চারজন স্থানীয় নাগরিককে আটক করা হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বিনা উসকানিতে ইরানে ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে বিশ্ব। এ হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যুকে কতটা সহজে হজম করবে ইরান তা নিযে চলছে নানা হিসেব নিকেষ। ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে এরই মধ্যে ইরানকে কড়া বার্তা দিয়েছে ট্রাম্প। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান ঘাটিকে যেন ইরান লক্ষ্যবস্তু না কওে সে বিষয়ে সতর্ক করেছে। কিন্তু কঠোর প্রতিশোধের বার্তা দিয়েছে এরান।এদিকে এই উস্কানির সমস্ত পরিণতির দায় ইসরায়েলি নেতৃত্বের ওপর বর্তাবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটি সতর্ক করে বলেছে এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গতকাল এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই হামলা জাতিসংঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইন উভয়েরই লঙ্ঘন।বিবৃতিতে বলা হয় হয়, এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ সামরিক পদক্ষেপের বিপদ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। এই উস্কানির সমস্ত পরিণতির দায় ইসরায়েলি নেতৃত্বের ওপর বর্তাবে। ১৫ জুন ওমানে শুরু হতে যাওয়া মার্কিন-ইরান পারমাণবিক আলোচনার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এ হামলাটি ঘটল। এর ফলে নতুন করে মার্কিন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ইসরায়েলের সহিংস কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের একটি সার্বভৌম সদস্য রাষ্ট্র, তার নাগরিক, ঘুমন্ত শান্তিপূর্ণ শহর এবং পারমাণবিক শক্তি অবকাঠামো স্থাপনার বিরুদ্ধে বিনা উস্কানিতে সামরিক হামলা স্পষ্টতই অগ্রহণযোগ্য।মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি সম্পর্কে যে কোনো সন্দেহ ও কুসংস্কার দূর করার জন্য সংঘাত কমাতে এবং সমাধান খুঁজে বের করার জন্য কষ্টার্জিত বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টাকে দুর্বল এবং পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।এতে আরও বলা হয়েছে, মস্কো পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) পদক্ষেপগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া আশা করে, সংস্থাটি পরিস্থিতির একটি মূল্যায়ন প্রদান করবে এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলি হামলার সম্ভাব্য রেডিওলজিক্যাল পরিণতি বিশ্লেষণ করবে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা দেশটির পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলার পর আইএইএ-র বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সাথে যোগসাজশের অভিযোগ এনেছে।এছাড়া বিমান হামলার পর তেহরান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি সতর্ক করে দিয়েছেন, শুক্রবারের হামলার জন্য ইসরায়েলের ‘কঠোর শাস্তি আশা করা উচিত’।ইরান ও ইসরায়েলের আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা: ইরান ও ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের স্নায়ুযুদ্ধ এবার সরাসরি যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। চলছে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা। ইসরায়েল গতকাল শুক্রবার ভোররাতে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাল। মধ্যপ্রাচ্যের চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটির মধ্যে চলমান দীর্ঘ উত্তেজনার সাম্প্রতিকতম অধ্যায় এটি।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ভেতরে শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এ আচমকা হামলায় ইরানের শীর্ষ তিনজন সামরিক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল।তবে শুক্রবার ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি ঘটিয়েছে। এর জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলকে ‘চড়া মূল্য’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের শত্রু ইরান ও ইসরায়েল এখন সরাসরি সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা, আক্রমণ করার ক্ষমতা ও আত্মরক্ষার উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) ২০২৩ সালের ‘দ্য মিলিটারি ব্যালান্স’ প্রতিবেদন অনুসারে: ইরানের ৬ লাখ ১০ হাজার সক্রিয় সৈন্য রয়েছে।এর মধ্যে সেনাবাহিনীতে রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার, আইআরজিসিতে ১ লাখ ৯০ হাজার, নৌবাহিনীতে ১৮ হাজার, বিমানবাহিনীতে ৩৭ হাজার ও বিমান প্রতিরক্ষায় ১৫ হাজার সৈন্য। ইরানে ৬ লাখ ১০ হাজার সক্রিয় সৈন্য রয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীতে রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার, আইআরজিসিতে ১ লাখ ৯০ হাজার, নৌবাহিনীতে ১৮ হাজার, বিমানবাহিনীতে ৩৭ হাজার ও বিমান প্রতিরক্ষায় ১৫ হাজার সৈন্য। এ ছাড়া ইরানের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৩ লাখ ৫০ হাজার। কিছু ব্যতিক্রম বাদে ১৮ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হয়। ইসরায়েলের ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ সক্রিয় সৈন্য রয়েছে-সেনাবাহিনীতে ১ লাখ ২৬ হাজার, নৌবাহিনীতে ৯ হাজার ৫০০ ও বিমানবাহিনীতে ৩৪ হাজার। তাদের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার। ১৮ ঊর্ধ্ব বয়সী অধিকাংশ নারী ও পুরুষের জন্য সামরিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক, তবে নির্দিষ্ট কিছু ছাড় আছে।সামরিক ব্যয় : স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইরান সামরিক খাতে ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার ব্যয় করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। একই বছর ইসরায়েল ব্যয় করেছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন (২ হাজার ৭৫০ কোটি) ডলার, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। এ খাতে ব্যয় বেড়েছে মূলত ৭ অক্টোবরের পর শুরু করা গাজা যুদ্ধের কারণে।স্থলবাহিনী : দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে: ইরানের আছে ১০ হাজার ৫১৩টির বেশি যুদ্ধ ট্যাংক, ৬ হাজার ৭৯৮টি আর্টিলারি গান ও ৬৪০টির বেশি সাঁজোয়া যান। সেনাবাহিনীর আছে ৫০টি হেলিকপ্টার এবং আইআরজিসির আছে ৫টি। ইসরায়েলের আছে প্রায় ৪০০টি যুদ্ধ ট্যাংক, ৫৩০টি আর্টিলারি গান ও ১ হাজার ১৯০টির বেশি সাঁজোয়া যান।বিমানবাহিনী : দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে: ইরানের বিমানবাহিনীর কাছে আছে ৩১২টি যুদ্ধোপযোগী বিমান, আর আইআরজিসির আছে ২৩টি। বিমানবাহিনীর রয়েছে ২টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সেনাবাহিনীর ৫০টি এবং আইআরজিসির ৫টি। ইসরায়েলের রয়েছে ৩৪৫টি যুদ্ধোপযোগী বিমান ও ৪৩টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার।নৌবাহিনী : দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে: ইরানের নৌবাহিনীর আছে ১৭টি ট্যাকটিক্যাল সাবমেরিন, ৬৮টি উপকূলীয় টহল ও যুদ্ধজাহাজ, ৭টি করভেট, ১২টি ল্যান্ডিং শিপ, ১১টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ও ১৮টি লজিস্টিক ও সহায়ক জাহাজ। ইসরায়েলের রয়েছে ৫টি সাবমেরিন এবং ৪৯টি উপকূলীয় টহল ও যুদ্ধজাহাজ।বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা : দ্য মিলিটারি ব্যালান্স ২০২৩ অনুসারে, ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো আয়রন ডোম, যা সম্প্রতি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বড় অংশ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এ ব্যবস্থায় একটি রাডার আছে, যা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র, এর গতি ও দিক নির্ণয় করে। নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র বিশ্লেষণ করে ক্ষেপণাস্ত্রটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়বে কি না। হুমকি মনে হলে ‘মিসাইল ফায়ারিং ইউনিট’ তা গুলি করে ভূপাতিত করে। প্রতিটি লঞ্চারে ২০টি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র থাকে। ইসরায়েলে ১০টি আয়রন ডোম ইউনিট রয়েছে। মধ্য ও দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে অন্যান্য ব্যবস্থাও আছে। ডেভিড’স স্লিং ৪০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে পারে। দ্য অ্যারো সিস্টেম ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম।ইসরায়েলের ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ সক্রিয় সৈন্য রয়েছে- সেনাবাহিনীতে ১ লাখ ২৬ হাজার, নৌবাহিনীতে ৯ হাজার ৫০০ ও বিমানবাহিনীতে ৩৪ হাজার। তাদের রিজার্ভ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার। ইরান গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটি ‘আজারাখশ’ (ফার্সি অর্থ বজ্র) নামের স্বল্প-পাল্লার ও নিচু উচ্চতায় আঘাত হানতে সক্ষম প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করে। এটি ইনফ্রারেড, রাডার ও ইলেকট্রো-অপটিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে এবং যানবাহনে স্থাপনযোগ্য। ইরানের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভূমি-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।এর মধ্যে রয়েছে ৪২টির বেশি রাশিয়া নির্মিত দীর্ঘ পাল্লার এস-২০০, এস-৩০০ ও স্থানীয়ভাবে তৈরি বাভার-৩৭৩; ৫৯টির বেশি মাঝারি–পাল্লার মার্কিন এমআইএম–২৩ হক, এইচকিউ–২জে ও খোরদাদ-১৫ এবং ২৭৯টি স্বল্পপাল্লার চীনের তৈরি সিএইচ–এসএ–৪ ও ৯কে৩৩১ টর-এম১ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্ট অনুসারে, ইরানের কাছে অন্তত ১২ ধরনের স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।এর মধ্যে টোন্দার-৬৯-এর পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার, আর খোররামশহর ও সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত। ইসরায়েলের আছে অন্তত চার ধরনের স্বল্প, মাঝারি ও মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর মধ্যে এলওআরএর পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার এবং জেরিকো-৩এর পাল্লা ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার।পারমাণবিক সক্ষমতা : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলে মনে করা হয়। তবে তাদের একটি সমৃদ্ধ পারমাণবিক কর্মসূচি রয়েছে এবং দেশটি একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র পরিচালনা করে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ২০০০-এর দশকের শুরুতে এক ফতোয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।অবশ্য গত মে মাসে ইরান সতর্ক করে জানায়, দেশটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে তারা তাদের পারমাণবিক নীতিমালা পরিবর্তন করতে পারে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান হোসেইন বাকেরি এবং ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। তাদের মৃত্যুর পর গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে দুই র্শীষ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। শুক্রবার (১৩ জুন) পৃথক ডিক্রিতে এই দুই কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে দেশটির দুই র্শীষ বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন আয়াতুল্লাহ খামেনি।ডিক্রিতে ইসরায়েলের হামলায় নিহত মেজর জেনারেল বাকেরির ও মেজর জেনারেল সালামির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং নতুন কমান্ডারের যোগ্যতা এবং মূল্যবান অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। এছাড়া ইসরায়েলের হামলার জবাব দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি এবং সক্ষমতা ক্রমাগত বৃদ্ধির জন্য নতুন কমান্ডারের জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।এর আগে শুক্রবার ভোরের দিকে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন এলাকায় সামরিক ও পারমাণবিক অবকাঠামোর ওপর হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। তেহরানের বিভিন্ন আবাসিক ভবন লক্ষ্য করা হয়। এতে অনেক সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারান এবং দেশটির উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হন।নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান হোসেইন বাকেরি, ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতামু আম্বিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ এবং দুই পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহাম্মাদ মাহদি তেহরাঞ্চি ও ফেরিদুন আব্বাসি উল্লেখযোগ্য।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার পর শুক্রবার (১৩ জুন) বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৭% এরও বেশি বেড়ে গেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, এর ফলে বহু মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দামের কাছাকাছি পর্যায়ে উঠেছে তেলের দাম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৫.১ ডলার বা প্রায় ৭.৪% বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৪.৪৬ ডলারে পৌঁছেছে। ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের দাম ৫.১ ডলার বা ৭.৫% বেড়ে ৭৩.১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলি সরকার বলেছে, তারা শুক্রবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী অভিযানের অংশ। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাতানজে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তদন্তে সাইটের বাইরে কোনো তেজস্ক্রিয় বা রাসায়নিক দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এসইবি বিশ্লেষক ওলে হভালবি রয়টার্সকে বলেন, প্রাথমিক উদ্বেগ ছিল সর্বশেষ ঘটনাবলী হরমুজ প্রণালীর উপর প্রভাব ফেলবে কি না, সেটি নিয়ে। মূল জলপথটি আগেও বর্ধিত আঞ্চলিক অস্থিরতার কারণে প্রভাবের ঝুঁকিতে ছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি প্রভাবিত হয়নি। বিশ্বের মোট ব্যবহৃত তেলের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এই হরমুজ প্রণালী দিয়ে যায়। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে, প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া অথবা এই অঞ্চলের প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রতি ব্যারেলের দাম ১২০-১৩০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। বিশ্লেষক জানিভ শাহ বলেন, মূল প্রশ্ন হলো তেলের এই দাম বৃদ্ধি সপ্তাহান্তের চেয়ে বেশি সময় ধরে চলবে - নাকি এক সপ্তাহের জন্য। আমাদের ইঙ্গিত হলো যে, একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা কম এবং তেলের দাম বৃদ্ধি সম্ভবত প্রতিরোধ করা যাবে। ভোরের আকাশ/আজাসা
ইরানের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এর মধ্যে দেশটির রাজধানী তেহরানের একাধিক স্থানে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা। এতে অন্তত ৭৮ জন নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম।যদিও হতাহতের এই সংখ্যা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি ইরানের সরকার।শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব দিকে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। পরে ইরানের আরও কয়েকটি প্রদেশে হামলা চালায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এই হামলার মাধ্যমে বিশেষ করে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব এবং দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী পরমাণু বিজ্ঞানীর প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।এদিকে ইসরাইলের হামলার জবাব দিতে ইরান শতাধিক অ্যাটাক ড্রোন ব্যবহার করে পালটা হামলার চেষ্টা চালালেও তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। বেশিরভাগ ড্রোনই ইসরাইল এবং জর্ডানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকিয়ে দিয়েছে।টাইমস অব ইসরাইলের বরাত দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কার্টজ জানিয়েছেন, ইরানে বিমান হামলা চালানোর পর পুরো ইসরায়েলজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ইসরাইলের সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির সরকার।ইসরাইলের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি বলেছেন, মার্কিন সহায়তায় চালানো এই হামলার জন্য ইসরাইলকে নির্মম পরিণতি ভোগ করতে হবে।ভোরের আকাশ/আজাসা