জয়নুল আবদিন ফারুকের প্রশ্ন
ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৪৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় ফ্যাসিবাদ আওয়ামী দোসর কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে শঙ্কায় ফেলার চেষ্টাকারীদের কঠোরভাবে রুখে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আবারো বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র এনে দিয়েছেন মুগ্ধ-আবু সাঈদরা, সেই গণতন্ত্রকে শেষ করে দেওয়ার জন্য হাসিনার প্রেতাত্মারা এখনো সচিবালয়ে বসে আছে। তাই আজ গণতন্ত্র ফোরামের দাবি হবে- আপনাদের মাধ্যমে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, যারা ২০১৮ সালের দিনের ভোট রাতে করে এমপি হয়েছে, যারা ২০২৪ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে সেই প্রেতাত্মারা এখনো সর্বত্র বসে আছে।
সিইসিকে উদ্দেশে সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, আপনাকে আমরা ভালো করেই জানি, একজন সৎ ও দক্ষ ব্যক্তি। আপনার কাছে অনুরোধ থাকবে, যারা ২০২৬ সালের নির্বাচন পরিচালনায় কোনোভাবে আওয়ামী প্রেতাত্মারা, যারা ’১৪, ‘১৮ ও ’২৪ সালের নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তারা যেন দায়িত্ব পালন করতে না পারে- সেই দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান রেখে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বিএনপি জীবনভর লড়াই করেছে গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্রের লড়াইয়ে আমি মা হারিয়েছি, বাবা হারিয়েছি, ভাই হারিয়েছি। আয়না ঘরে দিন দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সেই আয়না ঘরের পরিবর্তে স্বচ্ছ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তারেক রহমানের আহ্বানে সাড়া দিন। আমাদের নেতা যেভাবে কাজ করতে বলেছেন, সেইভাবে কাজ করুন।
পিআর পদ্ধতির দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলোর উদ্দেশ্যে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমি বলব, পিআর পদ্ধতি যদি আনতে হয় জনগণের কাছে যান, নির্বাচিত হয়ে শেরে বাংলা নগরের সংসদে যান, সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে ক্ষমতায় যান, সংবিধান পরিবর্তন করে পিআর পদ্ধতি দিন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছরে বুঝে ফেলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচন একটাই- আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। সেই ভোটকে মৃত ব্যক্তির ভোট দ্বারা জালিয়াতি করেছে শেখ হাসিনা। এখন সেই হাসিনা দিল্লিতে বসে, তার বাংলাদেশে থাকা দোসরদের দিয়ে চক্রান্ত করছে।
বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, ফ্যাসিবাদী প্রশাসন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে নির্বাচন সম্ভব নয়। আওয়ামী দোসরা প্রশাসনের রন্ধে রন্ধে বসে আছে। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় তারা লিপ্ত থাকবে।
গত ১৭ বছর আমরা দেখেছি কিভাবে ডিএনএ টেষ্ট করে প্রশাসনসহ সকল স্তরে আওয়ামী মতাদর্শের লোকরাই বিভিন্ন পদে আসীন করা হয়েছে। তারা নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আওয়ামী লীগ চাকরি দিয়েছে। আজকে তারাই উপজেলা, জেলাসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার দেশ থেকে পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে একের পর এক আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করার অপচেষ্টায় ছিল, সরকার কঠোর হস্তে সেগুলো প্রতিরোধ করছে। সচিবালয়ে কর্মচারীরা আন্দোলন করেছে, আনসার নামে আওয়ামী দোসররা আন্দোলন করেছে। তারা এখনও থেমে নেই, যেকোন সময় দেশের গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। কোন কুচক্রী মহল যাতে নির্বাচন বানচাল করতে না পারে।
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ও কৃষক দলের সহ-সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওবাদুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় আয়োজিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির নেতারা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ