ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৫ ০৬:৫১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ কথা জানিয়েছেন। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এ কথা জানান আলী রীয়াজ।
আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এনসিসির প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে। নতুন প্রস্তাবিত কমিটির কাঠামোতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি থাকার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, নতুন প্রস্তাবিত কমিটিতে তারা থাকবেন না। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। কমিটি শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগ এই কমিটির অন্তর্ভুক্ত হবে না।
তিনি বলেন, এই কমিটি হবে সাত সদস্যবিশিষ্ট, যেখানে সভাপতি থাকবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকবেন-প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার (নিম্নকক্ষ), স্পিকার (উচ্চকক্ষ), বিরোধীদলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি (আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন), প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। সভাপতিত্ব করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার।
এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপারপাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকের ষষ্ঠ দিনের আলোচনার শুরুতে আলী রীয়াজ এই আশার কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি, আপনাদের সাথে আলোচনা করছি যে কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন-সংযোজনের মধ্য দিয়ে আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে, অর্থাৎ একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছাতে পারব। আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে যে আমরা পারব।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনায় ক্ষেত্রবিশেষে অগ্রগতি এবং ক্ষেত্রবিশেষে মতপার্থক্য থাকলেও তারা আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। কমিশনের বৈঠক ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে পরস্পরের মধ্যে কথা বলছেন। এটি একটি ইতিবাচক দিক। আলোচনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানান আলী রীয়াজ।
বুধবারের আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল। বৈঠকে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, এনসিসি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় আরও উপস্থিত আছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।
ভোরের আকাশ/এসএইচ