জুলাই সনদ বাস্তবায়ন
নিখিল মানখিন
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৪ এএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যে চূড়ান্ত রূপ পাচ্ছে না জুলাই সনদ। তৃতীয় দফা বেড়েছে ঐক্য কমিশনের মেয়াদ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য কমিশনের হয়েছে কয়েক মাসের সিরিজ বৈঠক। গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে চারটি বিশেষ পদ্ধতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম দফা বৈঠকেই দলগুলোর মতবিরোধের বিষয়সমূহ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে ‘বিশেষ পদ্ধতি’র প্রস্তাব উঠায় দফায় দফায় বৈঠকের নামে সময়ক্ষেপণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক আগেই সনদ বাস্তবায়ন করা হলে জাতীয় নির্বাচনের মাসও আরো এগিয়ে আনা যেতো- এমন আক্ষেপও করেছেন অনেকে।
জুলাই সনদ ঘোষণা নিয়ে ঘটছে একের পর এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন- অনেক আগে থেকেই এমন দাবিতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াত। এই সনদেই সংস্কার, বিচার, সংবিধানসহ বিভিন্ন মৌলিক ইস্যুর সমাধান থাকতে হবে বলে দল দু’টির দাবি। আর এই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা ফুটে উঠছে না। ইস্যুটি নিয়ে দলগুলোর বাগযুদ্ধ শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক মাঠযুদ্ধে গড়ানোর পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েকটি অভিন্ন দাবিতে মাঠে নামছে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে দলগুলো প্রাথমিকভাবে তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
চার পদ্ধতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন- অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।’
এদিকে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতির উপায় নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তৃতীয় ধাপের সংলাপের তৃতীয় দিনে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয় উত্থাপন করেছে কমিশন। তার মধ্যে রয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের মাধ্যমে জনগণের বৈধতা নেওয়া।
এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে তারা জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ ধারা অনুযায়ী সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদ ২০২৫-এ মূল সংস্কারগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে একটি ‘সংবিধান আদেশ’ (সিও) জারি করতে পারে। এ সাংবিধানিক আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
বিশেষজ্ঞরা আরও প্রস্তাব করেছেন, সাংবিধানিক আদেশকে একটি গণভোটে উপস্থাপন করা যেতে পারে, যা আগামী সাধারণ নির্বাচনের একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সাংবিধানিক আদেশে গণভোটের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যদি সাংবিধানিক আদেশ জনগণের অনুমোদন পায় গণভোটের মাধ্যমে, তবে তা প্রণয়ন তারিখ থেকেই বৈধ বলে গণ্য হবে।
ঐকমত্য কমিশন ও জুলাই সনদ
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় মাসের জন্য কাজ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম দফার আনুষ্ঠানিক আলোচনা গত ৩১ জুলাই শেষ হয়েছে। পূর্বঘোষিত জুলাইয়ের মধ্যে সনদ ঘোষণা করতে পারেনি কমিশন। তারপর আগস্টের প্রথমার্ধেও সনদ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল কমিশন। দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকায় কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই মেয়াদেও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত তৃতীয় দফা মেয়াদ বেড়েছে ঐকমত্য কমিশনের। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের তুলনায় অনৈক্যের তীব্রতাই যেন বেড়েছে।
এর আগে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে এই কমিশনের সহ-সভাপতি করা হয়। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশনকে ছয় মাস সময় দেওয়া হয়। সেই সময় শেষ হওয়ার তারিখ ছিল আগামী ১৫ আগস্ট। তার পর থেকেই দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে ঐকমত্য কমিশনের।
বাস্তবায়ন পদ্ধতি : তিন দলের তিন পদ্ধতির দাবি
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে ঐকমত্য কমিশন। কিন্তু কমিশনের প্রস্তাবিত স্পর্শকাতর কিছু সুপারিশের সঙ্গে অনৈক্য রয়ে গেছে বিএনপির। আগের মতোই বিএনপির বিপরীত অবস্থানে জামায়াত ও এনসিপি। আর সনদ বাস্তবায়নে বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি-এই তিন দল তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলেছে।
বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহের মধ্যে রয়েছে-গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন। সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির প্রক্লেমেশন (রাষ্ট্রপতির ঘোষণা) বা গণভোটের মাধ্যমে এবং এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চেয়েছে। এর বাইরে অন্তত ১০টি দল সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নিয়ে সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়।
অন্যদিকে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন মনে করে, সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ জারির সুপারিশ করা হবে। এটি সনদ বাস্তবায়নের সবচেয়ে ভালো বিকল্প। আর সংবিধান-সম্পর্কিত নয়, এমন প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের
মাধ্যমে।
দলগুলোর অবস্থান
গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে ব্রিফিংয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। অবশ্য বিএনপি ও জামায়াত নেতারা এ নিয়ে এখনও মন্তব্য করেননি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আমরা ১০৬ ধারা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত চাই না। আমরা গণপরিষদ নির্বাচন চাই। তা এই সরকারের মাধ্যমেই করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আমাদের মতামত জানাবো।’
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের প্রস্তাবকে আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখতে চাই। বিশেষ করে আমরা আগে থেকেই গণভোটের কথা বলেছি। সেটি নির্বাচনের আগে হোক বা পরে হোক। গণভোট হতে হবে।’
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত বিষয়ে কথা বলেছেন। নতুন করে জুলাই ঘোষণার ২২ নম্বর অনুচ্ছেদ সামনে আনা হয়েছে। অথচ এর কোনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই।
‘যেসব প্রস্তাব সাংবিধানিক না, তা সরকার আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে। সাংবিধানিক বিষয়গুলো পরবর্তী সংসদে কার্যকর হতে পারে।’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আবারও বিভাজনের দিকে উসকে দিয়েছে। সরকার নিজেরা সিদ্ধান্ত না নিয়ে আবারও দলগুলোর দিকে বল ঠেলে দিয়েছে। দায় নিতে চাচ্ছে না। গণভোট ও সাংবিধানিক আদেশের প্রস্তাব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এটি সরকারের কথা নয়। এ নিয়ে হয়তো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আরও আলোচনা হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের মতামতে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের কথা বলা হচ্ছে। বলা হয়েছে জুলাই ঘোষণার ২২-এর ধারা অনুযায়ী এটি করা হবে। অথচ ২৫-এর ধারা অনুযায়ী এটি স্ববিরোধিতা। আবার গণভোটের কথা বলা হচ্ছে। আমরা মনে করি, বিদ্যমান সরকার যেভাবে ১০৬ অনুচ্ছেদে অনুযায়ী ক্ষমতায় আছেন, সে রকম একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কিনা। এরপর একটি অধ্যাদেশ হতে পারে।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আইনি ভিত্তি না দিয়ে করলে সনদ বাস্তবায়ন কঠিন হবে। এক্ষেত্রে ১০৬ অনুসরণ করা যেতে পারে। তবে এর সুরক্ষার জন্য যে পদ্ধতির কথাই বলা হোক আমরা সেটির পক্ষে।’
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি বলেন, ‘সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো আগামী সংসদে পাস করতে হবে। আর একমত হওয়া বিষয়গুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে হবে। তাছাড়াও সংবিধানের ১০৬ অনুযায়ী প্রয়োজনে সনদ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আমরা মনে করি গণভোট সমস্যা আরও বাড়াবে।’
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘গণভোটের বিষয়টি সংবিধানে নেই। এটি নির্বাচিত সংসদ করবে। আমরা সনদ বাস্তবায়ন চাই। তবে সুরক্ষার জন্য এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন কেউ চ্যালেঞ্জ না করতে না পারে।’
ভাসানী জনশক্তি পার্টির মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ‘সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জুলাই ঘোষণার ২২ ধারা ২৫-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা মনে করি, ১০৬ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট মতামত দেবেন। আর পরবর্তী সংসদ তা কার্যকর করবে।’
এদিকে, জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েকটি অভিন্ন দাবিতে মাঠে নামছে জামায়াতে ইসলামীসহ চারটি দল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে দলগুলো প্রাথমিকভাবে তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। এরপর নতুন কর্মসূচি দেবে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিস গত সোমবার পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগের দিন রোববার কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
এদিকে জানা যায়, এই চার দলের সঙ্গে নতুন করে আরও তিনটি দল যুগপৎ কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছে। দল তিনটি হচ্ছে নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
ভোরের আকাশ/এসএইচ