ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫ ১২:২০ এএম
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে পারে শিগগিরই
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ফের উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে। তবে এবার লক্ষ্য একটাই—সিন্ডিকেটমুক্ত অভিবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার প্রস্তুতির মধ্যে আগামী ১৫ মে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এ বিষয়ে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান সরকারের আমলেই মালয়েশিয়া শ্রমবাজারকে সিন্ডিকেটের করালগ্রাস থেকে মুক্ত করার এটিই উপযুক্ত সময়। অতীতে ২০১৬-১৮ সালে মাত্র ১০টি এবং ২০২২-২৪ সালে ২৫ থেকে ১০০ এজেন্সির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সীমিত এজেন্সিকে মুনাফা এনে দেওয়ার কারণে এই বাজারে দুর্নীতি, অতিরিক্ত খরচ এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণে প্রতি কর্মীকে গড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১.৫২ লাখ টাকাই ছিল অবৈধ চাঁদা। এইভাবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
এই সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের তালিকায় রয়েছে প্রবাসী ও প্রাক্তন সরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ—যেমন বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন (স্বপন), তার সহযোগী দাতোশ্রী আমিন নূর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সচিব মনিরুস সালেহীন, সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদসহ আরও অনেকে।
অভিযোগ রয়েছে, এদের যোগসাজশেই সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এবং হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ শরিফুল হাসান বলেন, এফডব্লিউসিএমএস-এর মতো অনলাইন সিস্টেমকে অটোমেটেড স্বচ্ছ পদ্ধতিতে রূপান্তর না করা পর্যন্ত সিন্ডিকেট নির্মূল সম্ভব নয়।
শ্রমিকদের বৈধকরণও গুরুত্বপূর্ণ, যারা মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থান করছেন, তাদের নিয়মিত করতে হবে।
অতীতে প্রতারিত হওয়া ১৮ হাজার কর্মীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান সরকার মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে পুরনো সিন্ডিকেটের ফিরিয়ে আনার যেকোনো অপচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করতে প্রস্তুত। শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলেও তা হতে হবে সবার জন্য সমান সুযোগের ভিত্তিতে।
সুশাসন ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার নতুনভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সরকার চাইছে, দেশের গরিব ও খেটে খাওয়া কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করতে—যেন আর কেউ প্রতারণার শিকার না হন।
ভোরের আকাশ/হ.র