ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়ম
ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:২৮ পিএম
সংগৃহীত ছবি
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে তৎপর রয়েছে সরকার। রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি ভবনে সাবেক সচিব ও নির্বাচন কশিনার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের দেওয়া ১২টি ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিলের পর এবার তাদের তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা অনুসন্ধান দলের নিয়মিত কাজের অংশ।’
দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের আগামী ১৭, ১৮ ও ২১ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত’ সচিব পদমর্যাদার ১২ কর্মকর্তাকে ‘পুরস্কার হিসেবে’ শেখ হাসিনার আমলে ‘পরিকল্পিতভাবে’ এসব ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। এই কর্মকর্তারা হলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. জহুরুল হক, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান, সাবেক সচিব এমএ কাদের সরকার, সাবেক সিনিয়র সচিব এম আসলাম আলম, সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ, সাবেক সচিব মো. সিরাজুল হক খান, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ, সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সাবেক সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সাবেক সিনিয়র সচিব ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান এবং সাবেক সিনিয়র সচিব এসএম গোলাম ফারুক।
গত ৫ মে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল ওই বিষয়ে খবর সম্প্রচার করে। টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধানমন্ডি-৬ এর প্লট নম্বর ৬৩ মূলত সরকারি খাসজমি, যার বাজারমূল্য অত্যন্ত বেশি।
অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে জমিটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং সেখানে ১৪ তলা একটি ভবন নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভবনটিতে রয়েছে দুটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট ও নিচতলাসহ দুই তলা গাড়ি পার্কিং। ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট দুটি বরাদ্দ দেওয়া হয় দুদকের সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান এবং জহরুল হকের নামে। বাকি ১০টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পান অপর সাবেক সচিব ও কর্মকর্তারা। এই প্রতিবেদন আমলে ১২ মে দুদকের একটি দল অভিযান চালায় এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানায়।
এরপর গেল ৯ জুলাই দুদকের উপপরিচালক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য সংস্থার সহকারী পরিচালক আল-আমিনকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছে। দলের অন্য সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক নাহিদ ইমরান।
গৃহায়ন মন্ত্রণালয় বলছে, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ‘গৃহায়ন ধানমন্ডি (১ম পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় অনৈতিকভাবে উচ্চমূল্যের ফ্ল্যাট বরাদ্দের অভিযোগ অনুসন্ধানে অভিযান চালানো হয়। ওই প্রকল্পে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ১৩ নম্বর (নতুন ৬/এ) সড়কের ৭১১ নম্বর (নতুন ৬৩) বাড়িতে ১৮টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৬০ শতাংশ (১২টি) সরকারি ও ৪০ শতাংশ (৬টি) বেসরকারি কোটায় বরাদ্দযোগ্য ছিল।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের গঠিত একটি তদন্ত কমিটির সুপারিশ আমলে নিয়ে ৮ জুলাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল করে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ