আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৫:৪৪ এএম
‘বুম বুম তেল আবিব’ গান ঘিরে ইরানে ঝড়
ইসরায়েলকে উদ্দেশ্য করে তৈরি ‘বুম বুম তেল আবিব’ শিরোনামের একটি গান ইরানে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। ২০ জুন প্রকাশের পর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গানটি পেয়েছে ৫৭৭ মিলিয়ন ভিউ। ইরান, মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও রাশিয়ায় গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। গানটির গীতিকার ও শিল্পী মার্কিন নাগরিক লুকাস গেজ।
গানটিতে ইসরায়েলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। অনেকেই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিওতে এই গানের অডিও ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। বিষয়টি নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তেহরান টাইমস।
“তোমার সকল মন্দ কাজের জন্য তুমি মন্দ ফলাফল পাবে। তুমি মৃত শিশুদের নিয়ে উপহাস করছিলে, এখন তুমি আঘাত পাচ্ছ। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র তোমার আকাশ আলোকিত করে দিয়েছে। এখন তুমি ফিলিস্তিনিদের মতো আতঙ্কিত।”
শিল্পী লুকাস গেজ বলেন, “এই গানটি মূলত ন্যায়বিচারের প্রতি মানবতার আকাঙ্ক্ষা থেকে তৈরি। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ আবেগ দ্বারা চালিত। সঙ্গীত হলো এমন এক হাতিয়ার যা মানুষের হৃদয়ে পৌঁছায়—এবং সেটিই আমি কাজে লাগাতে চেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার যে একটি বিদেশি পরজীবী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত—তা অনেক আমেরিকান এখন বুঝতে পারছে। যারা মিডিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণ করে, তারা আমেরিকাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আমরা যুদ্ধ চাই না, বরং সত্য ও মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে চাই।”
গানটির প্রসঙ্গে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের গালিবাফ বলেন, “‘বুম বুম তেল আবিব’ এখন ইরানিদের কাছে জনসাধারণের কূটনীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি শুধু একটি সঙ্গীত নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিক্রিয়ার একটি বহিঃপ্রকাশ।”
গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে মন্তব্য—“গ্র্যামির জন্য মনোনীত হওয়া উচিত এই গান”, “ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী সঙ্গীত”।
ইতোমধ্যেই গানটির নাম লেখা টি-শার্ট বাজারে এসেছে।
গাজার নিহত শিশুদের নিয়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের উপহাসের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে গানে, যা দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গানটি শুধু একটি ভাইরাল ট্র্যাক নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতি, যুদ্ধবিরোধী বার্তা ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে একটি নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। ইরান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিমা বিশ্বের অনেক সাধারণ মানুষ গানটির সঙ্গে নিজেদের অনুভূতির মিল খুঁজে পেয়েছেন।
এই গানের উত্থান ইঙ্গিত দেয়—রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দিতেও সঙ্গীত হয়ে উঠতে পারে অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার।
কালের সমাজ//হ.র