আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৫:৪১ এএম
ওড়িশায় শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব ও হুমকির প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিলেন ছাত্রী
ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ফকির মোহন কলেজে শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব ও হুমকির প্রতিবাদে নিজ শরীরে আগুন দিয়েছেন এক ছাত্রী। তার শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন এক সহপাঠীও, যিনি ৭০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। দুজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (১৩ জুলাই) বালাসোর জেলার কলেজ চত্বরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির বরাতে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক কলেজের বিভাগীয় প্রধান সমীর কুমার সাহু। তিনি ওই ছাত্রীকে বারবার অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এর প্রতিবাদে ওই ছাত্রী ও আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী কলেজ গেটে বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্রীটি হঠাৎ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের কাছে গিয়ে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এর আগে ১ জুলাই কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। অভিযোগে তিনি শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব ও মানসিক নির্যাতনের বিস্তারিত তুলে ধরেন। যদিও কমিটি অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং শিক্ষক সাহু তার ওপর মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেন।
কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ জানান, ছাত্রী মানসিক চাপে ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে শিক্ষক সাহু অভিযোগ অস্বীকার করায় তদন্তে বিলম্ব হয়।
ঘটনার পরপরই শিক্ষক সমীর কুমার সাহুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বালাসোরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ জানান, ঘটনার তদন্তে একাধিক দল কাজ করছে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এদিকে, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ বলেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক এবং কলেজ অধ্যক্ষ—দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাটি ভারতে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে দায়বদ্ধতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমে ঘটনার নিন্দা ও বিচারের দাবি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনরাও।
কালের সমাজ//হ.র