আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৫:০৬ এএম
ইইউতে অনিয়মিত অভিবাসনে শীর্ষে বাংলাদেশিরা
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। ইউরোপীয় সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ফ্রন্টেক্স জানায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ইইউ সীমান্ত অতিক্রম করেছেন ৭৫ হাজার ৯০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকই সর্বাধিক।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করেছেন ৩১ হাজার ৯৪৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩১১ জনই বাংলাদেশি—যা মোট আগমনের প্রায় ৩২ শতাংশ।
এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইরিত্রিয়ার নাগরিকরা (৪,৪৬১ জন) এবং তৃতীয় অবস্থানে মিসরের নাগরিকরা (৩,৭২৩ জন)। এরপর রয়েছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাগরিকরা।
২০২৪ সালে ইতালিতে প্রবেশ করা সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীর সংখ্যা এরই মধ্যে ৫,৫৭৫ জনে পৌঁছেছে। পুরো ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮,৭৫২ জন।
ফ্রন্টেক্স জানায়, সামগ্রিকভাবে ইইউতে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমের হার ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কমলেও মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট এখনো সবচেয়ে ব্যস্ত।
এই রুট ব্যবহার করে ২৯ হাজার ৩০০ জন ইউরোপে প্রবেশ করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। লিবিয়া এখনো এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রার প্রধান ট্রানজিট দেশ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশটির উপকূল থেকে চলতি বছরে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছেন—যা গত বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।
পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুটে আগমন কমেছে ২৫ শতাংশ, যার সংখ্যা নেমে এসেছে ১৯ হাজার ৬০০-তে। তবে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত লিবিয়া থেকে নতুন রুট তৈরি হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে এই পথে আগমন কিছুটা বেড়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার রুটে অভিবাসনপ্রবণতা গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমেছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে এই রুটে শনাক্ত করা হয়েছে ১১ হাজার ৩০০ জন, আর জুন মাসে মাত্র ৩০০ জন।
বিপরীতে, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা এই বছরের প্রথমার্ধে ১৯ শতাংশ বেড়েছে। জুন মাসে আগমনের হার দ্বিগুণ হয়েছে। ফ্রন্টেক্স বলছে, এই রুটে আলজেরিয়া প্রধান ট্রানজিট দেশ হয়ে উঠেছে এবং পাচারকারীরা এখন উত্তর আফ্রিকা থেকে এই পথেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগরে ৭৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন।
ফ্রন্টেক্স বলছে, ইইউ দেশগুলোর সঙ্গে ট্রানজিট রাষ্ট্রগুলোর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ফলেই কিছু রুটে অভিবাসনের হার কমেছে। তবে মধ্য ও পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে আগমন এখনো উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে।
কালের সমাজ//হ.র