আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৫:৫৬ এএম
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ। তিনি ইসরায়েলের অর্থনীতিকে ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা এবং সব ধরনের সহায়তা বন্ধেরও আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে তার সর্বশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। খবর আল জাজিরা।
‘ফ্রম ইকোনমি অব অকুপেশন টু ইকোনমি অব জেনোসাইড’ শিরোনামে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে আলবানিজ দাবি করেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান নিপীড়ন, সহিংসতা ও গণহত্যার পেছনে বড় বড় করপোরেট কোম্পানিগুলোর সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে সহায়তা করছে, অন্যদিকে এর মাধ্যমে মুনাফাও অর্জন করছে।
প্রতিবেদনে অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানি, নজরদারি প্রযুক্তি সরবরাহকারী, ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাতা এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়, যারা ইসরায়েলের দমন-পীড়ন ও অবৈধ বসতি সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছে।
আলবানিজ বলেন, “রাজনৈতিক নেতারা যখন গাজার রক্তপাত থামাতে ব্যর্থ, তখন অনেক করপোরেট প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের বর্ণবাদ, দখলদারি এবং গণহত্যা থেকে সরাসরি লাভবান হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আলবানিজ জানান, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের তেল আবিব শেয়ারবাজারে ২০০ শতাংশ দরবৃদ্ধি হয়েছে, যার বাজারমূল্য বেড়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি ডলার। তিনি বলেন, “এক জাতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, আরেক জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হচ্ছে। স্পষ্টতই কারও কারও জন্য গণহত্যাও লাভজনক।”
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে প্রায় ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। লক্ষাধিক মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, ধ্বংস হয়েছে বহু হাসপাতাল, স্কুল এবং অবকাঠামো। গাজার ৮৫ শতাংশ অঞ্চল বর্তমানে ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আলবানিজ তার বক্তব্যে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বলেন, “এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শুধু ফিলিস্তিনি জনগণ নয়, গোটা মানবতা হুমকির মুখে পড়বে। এখনই সময় আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার।”
ভোরের আকাশ//হ.র