ছবি-ভোরের আকাশ
সকল মতপার্থক্য ও দলীয় বিভেদ ভুলে বিএনপিকে সংগঠিত করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা। তিনি বলেন, দলের কঠিন সময়ে যারা রাজপথে ছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেইসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের আগামী দিনে নেতৃত্বে আনতে হবে।
শনিবার (২১ জুন) সকালে মানিকগঞ্জের গিলন্ড এলাকায় অবস্থিত মুন্নু ক্যাফের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত জেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
আফরোজা খানম রিতা বলেন, ‘এখন সময় একসঙ্গে কাজ করার। ব্যক্তি স্বার্থ বা গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে না থেকে সবাইকে এক হয়ে দলের শক্তি বাড়াতে হবে। কারণ সামনে আরও কঠিন সময় আসছে, আন্দোলনের সময় আসছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে যারা রাজপথে ছিলেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন, আন্দোলন চালিয়ে গেছেন—তাঁদেরই নেতৃত্বে থাকতে হবে। দল তখনই শক্তিশালী হবে, যখন ত্যাগীরা সামনে আসবেন।’
সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে জেলা বিএনপির এই নেত্রী বলেন, এই আন্দোলনকে তৃণমূলে পৌঁছে দিতে হবে। এর জন্য প্রথম ধাপ হলো সংগঠনকে মজবুত করা। তাই দলীয় সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করতে হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য এস এ জিন্নাহ কবীরের সঞ্চালনায় অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, অ্যাডভোকেট নূরতাজ আলম বাহার, সত্যেনকান্ত পন্ডিত ভজন, গোলাম আবেদীন কায়সার, অ্যাডভোকেট আ তা ম জহীর আলম খান লোদী, অ্যাডভোকেট মোকসেদুর রহমান, গোলাম কিবরিয়া সাঈদ ও আব্দুস সালাম প্রমূখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পুনর্গঠন করতে হবে। ত্যাগী নেতা-কর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতের আন্দোলনে সংগঠন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
বর্ধিত সভা শেষে জেলা বিএনপির সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
নেতারা জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে জেলার প্রতিটি উপজেলায় এ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে অন্তত ২০টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে সীমান্তঘেঁষা ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বহু গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কাটেনি দুর্গত মানুষের।ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, পরশুরামে ১২টি ও ফুলগাজীতে ৮টি পয়েন্টে নদীর বাঁধ ভেঙেছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীতে ১০টি, কহুয়ায় ৬টি ও সিলোনিয়ায় ৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন এলাকা প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।ফুলগাজীর দৌলতপুরের বাসিন্দা রেজিয়া বেগম বলেন, “গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কিছুটা সামলে উঠেছিলাম, এবার আবার সব পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রতিবারই জুলাই-আগস্টে বাঁধ ভাঙে, এখন মনে হয় এই এলাকায় জন্মেই ভুল করেছি।”উত্তর শ্রীপুরের বাসিন্দা আলী আজ্জম বলেন, “বাঁধে ভাঙনের কারণে তীব্র স্রোতে পানি ঢুকছে। বিদ্যুৎ নেই, নেটওয়ার্কও নেই। সরকার বদলায়, কিন্তু আমাদের ভাগ্য বদলায় না।”গাইনবাড়ির পুষ্পিতা রাণী বলেন, “ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। বাচ্চা ও বয়স্কদের নিয়ে চরম কষ্টে আছি। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরমে। বাঁধ মজবুত না হলে প্রতিবছরই এই দুর্ভোগ হবে।”ফেনীর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তিন দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (৯ জুলাই) রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড হয়েছে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি। বৃহস্পতিবারও হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, “রাত ৯টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামে। তবে ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরই বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সদর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে দেড় হাজারের বেশি মানুষ। ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ছয় উপজেলায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভোরের আকাশ/হ.র
রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে ২৫ কেজি ওজনের একটি পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) বিকালে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের উজানে স্থানীয় জেলের জালে বিশাল আকৃতির মাছটি ধরা পড়ে।জানা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন জেলে বুধবার দুপুর থেকে দলবেঁধে পদ্মায় পাঙ্গাস মাছ ধরার জাল ফেলেন। বিকালে নদী থেকে জাল তুলতেই বিশাল আকৃতির মাছটি ধরা পড়ে। আড়তে মাছটি বিক্রির ওজন দেওয়া হয়। বিশাল আকৃতির পাঙ্গাসের ওজন হয় ২৫ কেজি। ২৫ কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়ার মোহন মন্ডলের আড়তে তোলা হয়। সেখানে ১৬৭০ টাকা কেজি দরে ৪১ হাজার ৭৫০ টাকায় মাছটি বিক্রি হয়।দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের শাকিল সোহান মৎস্য আড়তের মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহন শেখ ৪১ হাজার ৭৫০ টাকা দিয়ে মাছটি ক্রয় করে। ক্রয়কৃত মাছটি ১৭০০ টাকা কেজি দরে ৪২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন।মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান শেখ বলেন, ২০২৫ সালের পদ্মার সবচেয়ে বড় পাঙ্গাস মাছটি নিলামে আড়তে বিক্রি হয়েছে। মাছটি আমি ক্রয় করেছি। সামান্য লাভে মাছটি মৌলভীবাজার জেলার এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।ভোরের আকাশ/জাআ
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত ইব্রাহিম বাবুর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে পথসভা শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ্, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ একটি দল শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানায়। এ সময় নিহতের পিতা নুর ইসলাম, মাতা হাজেরা বেগম, স্ত্রী সাহিনা বেগম ও একমাত্র ৩ বছরের শিশু কন্যা আয়েশা খাতুনের পাশে বসে ঘটনার বর্ণনা শোনেন তারা। পরে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ও আমাদের সংগঠন দেখবো। আপনারা এই পরিবারের পাশে থাকবেন। এরপর এনসিপি প্রতিনিধি দলটি নিহত ইব্রাহিম বাবুর কবর জিয়ারত করে ও কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে সীমান্তের দিকে যান এনসিপির নেতারা। এ সময় ইব্রাহিমের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না বলে স্লোগান দেন তারা।ভোরের আকাশ/জাআ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিসহ দুটি স্থাপনা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদখল হয়ে থাকা ২৫ শতাংশ ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের মসজিদ রোড এলাকায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন এই অভিযান পরিচালনা করেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের মসজিদ রোড এলাকায় জেলা প্রশাসন চেম্বারসহ স্থানীয়দের প্রায় ২৫ শতক জায়গা বন্দোবস্ত দেন। বিষয়টি চলামান মামলায় হেরে যায় জেলা প্রশাসন। উচ্চ আদালত জায়গাটি প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে নির্দেশনা দেন।বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মসজিদ রোড এলাকায় উপস্থিত হন। এসময় চেম্বার অব কমার্সের ভবনে থাকা দোকানদারদের মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিলে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।মামলার রায় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন অর্পিত সম্পত্তির ২৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ জায়গা জেলা চেম্বারসহ বিভিন্ন জনের কাছে বন্দোবস্ত দেন। লীলাময় ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তি ২০১২ সালের জুলাই মাসে জায়গাটির মালিকানা দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা চেম্বার অব কমার্স। জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তি হওয়ায় ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ লীলাময় ভট্টাচার্যের পক্ষে রায় দেন। সরকার পক্ষ এই অর্পিত সম্পত্তির আপীল রায় ডিক্রির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতে রিভিউ দায়ের করেন। পরে মামলার বাদি রিভিউর বিরুদ্ধে একটি আবেদন করেন। উচ্চ আদাললের আপীল ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালের অর্পিত সম্পত্তির অপীল মোকদ্দমার রায় ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য এক আদেশ দেন।ভূমি মন্ত্রণালয়ের (আইন অধিশাখা-৪) ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিলের পরিপত্র দ্বারা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন আইন ২০০১ এর ২২ (৩) ধারা বিধান বিদ্যামান থাকায় এবং ভূমি মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন স্মারকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন ট্রাইব্যুনাল ও আপীল ট্রাইবুনালের রায় বাস্তবায়নের নির্দেশনা রয়েছে। আপীল ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে প্রতিকার চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই উচ্চ আদালত রিট দায়েরের জন্য কোনো প্রস্তাব প্রেরণের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করে। ২০১৬ সালের অর্পিত আপীল রায়ের কার্যকারিতার উপর সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ নেই। অর্পিত আপীল ট্রাইব্যুনাল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত দেয়া ডিক্রি বাস্তবায়নের আদেশ বিদ্যমান থাকায় মামলার রায়-ডিক্রি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আইনত আর কোনো বাধা নেই বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি মতামত দেন।তবে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে উচ্ছেদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। চেম্বারও কিছু বলেনি।জায়গার মালিক নির্মল ভট্টাচার্য বলেন, এটি আমাদের পূর্ব পুরুষের জায়গা ছিল। বিভিন্ন কারণে এটি অর্পিত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হয়। সরকারের অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পনের আইন করার পর আমরা ২০১২ সালে মামলা করি এবং ২০১৮ সালে রায়। ২০১৯ সালে উচ্ছেদের নোটিশ আসে। উচ্চ আদালতে দুই-একটি রিট হওয়ার পর রায় আমাদের পক্ষে আসে। জেলা প্রশাসন প্রত্যেক লীজকে সরে যেতে নোটিশ দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন বলেন, 'আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চেম্বারসহ দুটি স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।'ভোরের আকাশ/জাআ