মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার লাতু সীমান্ত দিয়ে ফের ১২ জন রোহিঙ্গা মুসলমানকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। শুক্রবার (১৩ জুন) রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই পুশইনের ঘটনা ঘটে।স্থানীয়দের সহায়তায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৫২ ব্যাটালিয়নের লাতু বিওপি টহল দল বিএসএফের পুশইন করা এসব ব্যক্তিকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে ৭ জন শিশু, ১ পুরুষ ও ৪ জন নারী রয়েছেন। শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি।আটকদের মধ্যে রয়েছেন—সায়েরা খাতুন (৬০), মারিয়া খাতুন (৫০), নূর খাতুন (৩০), মো. তারুক (১৮), মো. রফিক (১২), মো. হোসেন (১০), মো. হারেশ (৭), নূর হাবিবা (৬), মো. আয়াশ (৪), সুমিয়া (১০), রমেদা খাতুন (২০) ও রাশেদা বেগম (৫)। পরিচয় নিশ্চিত করার পর বিজিবি তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করে।বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রাতে লাতু সীমান্ত এলাকা দিয়ে ওই ১২ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে বিজিবির সহায়তায় তাদের আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী শরনার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে।এর আগে একই দিন ভোরে উপজেলার নিউ পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ আরও ১৩ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ৬ জন শিশু ছিল। তাদেরও আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।বিজিবি ও স্থানীয়দের নজরদারির পরও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পুশইনের ঘটনায় বড়লেখা সীমান্ত এলাকায় বাড়ছে উদ্বেগ। এখন পর্যন্ত এই সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ২৯৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি। বিএসএফ তাদেরকে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে প্রবেশে সহায়তা করেছে।বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরিফ জানান, বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ বাংলাদেশিদের পুশইন অব্যাহত রেখেছে বিএসএফ। শুক্রবার ভোরে পাল্লাথল বিওপির টহল দল সীমান্ত এলাকা থেকে ১৩ জন ও মধ্যে রাতে ১২ জনকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে তারা সবাই কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার বালুখালী শরনার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা। শরনার্থী ক্যাম্পের সাথে আমাদের যোগাযোগ প্রক্রিয়া হয়েছে। যাছাই-বাছাই শনাক্ত হওয়ার পর তাদের আজ সকালে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কাশেম সরকার জানান, আটক ব্যক্তিরা সবাই কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। তারা সবাই বালুখালী শরনার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা। বিএসএফ তাদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গের শামিল। আটকদের ব্যাপারে যথাযথ প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।ভোরের আকাশ/আজাসা
১৪ জুন ২০২৫ ০৬:৩৭ পিএম
সিলেট-সুনামগঞ্জের সীমান্তে ৭০ জনকে পুশইন
সিলেটের চারটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে শিশুসহ ৭০ জনকে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।বুধবার (১১ জুন) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো হয় তাদের। এরপর তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টহল সদস্যরা।বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি ও মিনাটিলা এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ সীমান্ত দিয়ে ৫৩ জন এবং সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করা হয়।জৈন্তাপুরের শ্রীপুর বিওপি ২টি পরিবারের মোট ১৭ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। তারা ৭ জন কুড়িগ্রাম জেলার এবং ১০ জন লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা। মিনাটিলা বিওপি ৪টি পরিবারের ২৩ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, ৭ জন নারী ও ৭ জন শিশু রয়েছে। সবাই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ বিওপি ২টি পরিবারের ১৩ জনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ৬ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা।এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার নোয়াকোট বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ছনবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ৪টি পরিবারের ১৭ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ৫ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৮ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা।বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি টহল জোরদার করেছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১২ জুন ২০২৫ ০৩:২৬ পিএম
মেহেরপুরের মুজিবনগরে ১২ জন পুশইন
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস সীমান্ত দিয়ে ১২ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।মঙ্গলবার (১০ জুন) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ৯৭/১ সীমান্ত পিলার এলাকা দিয়ে তাদের পুশ ইন করে বিএসএফ। পরে বিজিবি খবর পেয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে তাদের আটক করে মুজিবনগর থানা পুলিশকে হস্তান্তর করে।পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার ফুলমতি গ্রামের রহমত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪২), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শাহাজাদী খাতুন (৩০), ছেলে মিরাজ আলী (১৫), একই থানার কবুরামাবুদ গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী লাভলী খাতুন (৪২), ছেলে হাছেন আলী (২০), বাবুল হোসেন (২৪), বাবুল হোসেনের স্ত্রী জেনমিন খাতুন (২০), ছেলে জহিদ হোসেন (৩), জাকির হোসেন (১), হাছেন আলীর স্ত্রী জান্নাতী খাতুন (১৮), ১০ দিন বয়সী মেয়ে হাসিনা খাতুন, শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন হোসেন (২৫)।পুলিশ জানায়, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের কেউ ১০ বছর আগে, কেউ ১৫ বছর আগে ভারতে গিয়েছিল। তারা বিভিন্ন ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশি বলে দাবি করছে। আমরা তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মুজিবনগর থানায় হস্তান্তর করেছি। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এছাড়া পুশ ইন বিষয়ে আমরা রাঙ্গেরপোতা ১৬১ বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দিয়েছি।ভোরের আকাশ/জাআ
১০ জুন ২০২৫ ০৩:১৮ পিএম
কুড়িগ্রামে পুশইন ঠেকাতে রাতভর পাহারা
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা সীমান্তে পুশইন ঠেকাতে মানব দেয়াল বানিয়ে সীমান্তে রাতভর পাহারা দিয়েছে এলাকাবাসী। এসময় বিজিবি ও আনসার বাহিনীও অবস্থান নেয়।স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার পর শোভারকুটি ও শিপেরহাট সীমান্তে ভারতের আসামের ধুবরী জেলার গোলকগঞ্জ থানার বিএসএফ সদস্যরা দুটি পিকাপ ভ্যানে ৫০ থেকে ৬০ নাগরিককে ফাইস্কারকুটি সীমান্তে এনে সব লাইট বন্ধ করে পুশইনের চেষ্টা করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় শতশত মানুষ বিজিবির কচাকাটা ও কেদার ক্যাম্পের সদস্য ও আনসার সদস্যের কয়েকটি টিম সীমান্তে অবস্থান নেয়। ওদিকে ভারত সীমান্তে নেয় বিএসএফ।বিজিবির কুড়িগ্রাম ২২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুব উল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তে বিএসএফ অবৈধভাবে পুশইন করতে না পারে সেজন্য বিজিবি, আনসার সদস্যসহ সীমান্তবাসি যৌথ ভাবে পাহারা দিচ্ছে। টহল জোরদার করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ