চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাণিজ্য আলোচনার ফলাফল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকায় বাজারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে এখনও। তার উপর চীনের দুর্বল তেলচাহিদা ও ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তেলের বাজারে। এ অবস্থায় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে আরও একবার পতন লক্ষ্য করা গেছে বুধবার।এদিন সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১৫ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৬ দশমিক ৭২ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড ১০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৬৪ দশমিক ৮৮ ডলারে লেনদেন হয়। খবর রয়টার্সের।প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই দিনব্যাপী এক চূড়ান্ত আলোচনা শেষে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা একটি সমঝোতার কাঠামোতে একমত হয়েছেন। এর মাধ্যমে বাণিজ্য বিরতি আবার সচল করার পাশাপাশি চীনের বিরল খনিজ ও চুম্বক জাতীয় পণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথ সুগম হবে বলে জানান মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। এই দুই দেশ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও শীর্ষ তেলভোক্তা হওয়ায় তাদের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি বিশ্ববাজারে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে।ফিলিপ নোভার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, জ্বালানি তেলের এই মূল্য সংশোধনের পেছনে রয়েছে প্রযুক্তিগত মুনাফা গ্রহণ এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই বাজারে সতর্কতা।লুটনিক আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে ব্রিফিং গ্রহণের পরই এটি অনুমোদন করবেন। বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, চীনের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমে গেলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকলে তা তেলের চাহিদা ও দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।অন্যদিকে, তেল সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ওপেক প্লাস জোট। জুলাই মাসে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে জোটটির, যা উৎপাদন হ্রাস তুলে নেয়ার ধারাবাহিক চতুর্থ পদক্ষেপ। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, আঞ্চলিক বাজারে এই অতিরিক্ত তেলের চাহিদা সেভাবে তৈরি হবে না।ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের জলবায়ু ও পণ্য বিশ্লেষক হামাদ হুসেইন বলেন, সৌদি আরবসহ ওপেক প্লাস জোটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কিছুটা ভারসাম্য আনতে পারে। তবে, এই চাহিদা মৌসুমি হওয়ায় আমরা এখনও আশা করি বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬০ ডলারে নেমে আসবে।মার্কেট সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত তেল মজুত ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল কমেছে।রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, ৬ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের তেল মজুত ২০ লাখ ব্যারেল কমলেও ডিজেল ও গ্যাসোলিনের মজুত কিছুটা বেড়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১১ জুন ২০২৫ ০৯:৫২ পিএম
বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠক শুরু
চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নিরসনে লন্ডনে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সোমবার যুক্তরাজ্যের ল্যাঞ্চেস্টার হাউজে শুরু হওয়া এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন উভয় দেশের শীর্ষ বাণিজ্য ও অর্থনীতিবিষয়ক প্রতিনিধি।যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। চীনের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী হে লিফেং। আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলমান পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। সেই প্রেক্ষাপটেই নতুন করে এই আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে।বৈঠকে চীনের বিরল খনিজ রপ্তানি এবং আধুনিক প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি, কম্পিউটার চিপসহ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যে চীনের প্রবেশাধিকার নিয়েও উভয় পক্ষ মতবিনিময় করছে।উল্লেখযোগ্যভাবে, গত মাসে দুই দেশ সীমিত পরিসরে শুল্ক আরোপ স্থগিত করতে সম্মত হয়েছিল। তবে এরপরই উভয় দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তোলে।বৈঠকের পূর্বপ্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ফোনালাপে উষ্ণতা দেখা যায়। ট্রাম্প সেই আলোচনাকে ‘খুবই ভালো’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং উভয় নেতা পরস্পরের দেশে সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।এর আগে গত মে মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে শুল্ক হ্রাসে কিছু অগ্রগতি হলেও চীনের খনিজ সম্পদ ও চুম্বক রপ্তানির বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। সে কারণেই লন্ডনের এই বৈঠকে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বলে জানা গেছে।বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনার সফলতা বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।ভোরের আকাশ।।হ.র
১০ জুন ২০২৫ ০৫:৩১ এএম
চীনের চাকরি ছেড়ে তরুণী চলে এলেন হিরো আলমের কাছে
চীনের চাকরি ছেড়ে দেশে চলে এসেছেন, দেশে ফিরেই শুরু করলেন হিরো আলমের সঙ্গে মিউজিক ভিডিওর কাজ। কিশোরগঞ্জের মেয়ে সাইকা সুবহা তান্নু। ২০১৯ সালে চলে যান চীনের হাংঝু শহরে, মায়ের কাছে। মা সেখানেই চাকরি করেন।এরপর তান্নুও সেখানে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম কোম্পানিতে চাকরি নেন। নিজ মনে চাকরিই করছিলেন। তবে শোবিজ দুনিয়ার প্রতি ব্যাপক আকর্ষণ ছিল এই তরুণীর। তাই কাজের ফাঁকে ছোট ছোট ভিডিও বানাতেন। সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করতেন। মানুষজন নানা প্রতিক্রিয়া জানাতেন। সেসব তার মনে আলোড়ন তৈরি করত।দেশের কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের খেয়াল করতেন তান্নু। ইচ্ছা ছিল দেশে ফিরে এসে মিডিয়ায় কাজ করবেন। এভাবেই পরিচয় হয় হিরো আলমের সঙ্গে। তাকে নিজের ইচ্ছার কথা বলেন।হিরো আলমের ইতিবাচক সাড়া পাওয়ায় চীন থেকে চলে আসেন ঢাকায়। দেখা করেছেন হিরো আলমের সঙ্গে। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজও শুরু করেছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
০৩ জুন ২০২৫ ০৩:১৩ পিএম
৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী
আগামী ৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও’য়ের নেতৃত্বে ১৫০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। এই সফরের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও’য়ের নেতৃত্বে ১৫০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আগামী ৩১ মে থেকে ২ জুন ঢাকা সফর করবেন। প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে বিডা আয়োজিত এক সেমিনারে যোগ দেবেন। এছাড়া জয়েন্ট ইকোনমিক কমিটির বৈঠকে যোগ দেবে প্রতিনিধিদল।একইসঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবে তারা। চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকা সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনা প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। এই সফরের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।চীনা প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, চীনা প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরকালে উভয় পক্ষ একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময় অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজন করবে। সেখানে শত শত চীনা এবং বাংলাদেশি উদ্যোগ অংশগ্রহণ এবং আরও সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণ করবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
২৩ মে ২০২৫ ০৮:৫৯ পিএম
বাংলাদেশ-জাপান বৈঠকে আলোচনায় ভারত-চীন ইস্যু
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক বৃহস্পতিবার (১৬ মে) টোকিওতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছাড়াও আঞ্চলিক ভূরাজনীতি, বিশেষ করে ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।টোকিও ঢাকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাও জাপানের নজরে এসেছে। বৈঠকে জাপান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানতে চাইতে পারে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, ঢাকা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলে এবং কারও সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে গিয়ে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না।বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং জাপানের পক্ষে থাকবেন সিনিয়র ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার আকাহোরি তাকেশি।বৈঠকটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে আলোচনা হবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে আঞ্চলিক ইস্যুতে আলোচনা হবে দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে।এ ছাড়া, আলোচনায় আসবে বিগ-বি প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, যার সঙ্গে ভারত যুক্ত হতে চাইলে জাপান তা বিবেচনায় রাখবে বলে জানা গেছে।বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফর নিয়েও আলোচনা হবে। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি।সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে জাপানের আগ্রহ রয়েছে। ভারত বা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিষয়ে টোকিওর উদ্বেগ থাকলেও, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রেখে কূটনীতি পরিচালনা করে থাকে।ভোরের আকাশ//হ.র
১৫ মে ২০২৫ ১১:২৬ এএম
বাংলাদেশে চীনের আধিপত্য বাড়ছে
গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের বাণিজ্যিক প্রভাব অভূতপূর্ব হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো খাতে চীনের সম্পৃক্ততাকে অর্থনৈতিক আধিপত্য হিসেবে দেখাতে চাইছেন কেউ কেউ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে চীনের রপ্তানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যে আধিপত্য এখন চীনা পণ্যের। দেশের মোট আমদানির প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসছে পূর্ব এশিয়ার দেশটি থেকে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মোট আমদানির ৩০ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। একই সময়ে ভারত থেকে আমদানি হার ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিবেশি দেশটির প্রায় দ্বিগুণ পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করছে চীন।দেখা গেছে, টেক্সটাইলের কাঁচামাল, ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও ভারী যন্ত্রপাতিতে চীনের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বিবিএসের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে বাংলাদেশের আমদানি বাজারে চীনের আধিপত্য গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর সময়ে বাংলাদেশের মোট আমদানির ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ এসেছে চীন থেকে, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় সারে ৫ শতাংশ বেশি।এর আগে, নভেম্বরে ২৮ দশমিক ১২ শতাংশ পণ্য এসেছে চীন থেকে। আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার সারে ৫ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে ২৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ পণ্য দেশটি থেকে এসেছে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সারে ৭ শতাংশ।বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বাজারে দিন দিন চীনা পণ্যের আধিপত্য বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে রয়েছে শিল্প খাতের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য দেশটির ওপর নির্ভরতা এবং চীনের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও বাণিজ্যিক কৌশল। বাংলাদেশের শিল্প মালিকরা যেকোন দেশের চেয়ে কম দামে চীন থেকে কাঁচামাল ও শিল্প যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে পারছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজার ধরতে চীন নানা ধরনের বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। চীনের পর ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক অংশীদার। এর আগে ভারতই বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ছিল।গত ডিসেম্বরে ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ দেশের মোট আমদানির ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় যা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের তৃতীয় অংশীদার ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানির ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় ১ শতাংশ কম। বাংলাদেশে চীনের রপ্তানি বাড়ার পেছনে তিনটি কারণ জানা গেছে। চীনের পণ্য অন্যান্য দেশের তুলনায় সাশ্রয়ী। পাশাপাশি বিলম্বিত পেমেন্ট সুবিধা রয়েছে দেশটিতে। শিল্পযন্ত্রপাতি ক্রয়ে সুবিধা পায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এছাড়া চীনে বর্তমানে ডিফ্লেশন বা স্ফীতিহ্রাস চলছে। অর্থাৎ এখানে সব পণ্যের দাম পূর্বের তুলনায় কমে গেছে। যে কারণে দেশটির রপ্তানিকারকরা কম দামে বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে পারছেন।এ প্রসঙ্গে অর্থনীতি বিশ্লেষক মো. মাজেদুল হক বলেন, চীনে বর্তমানে ডিফ্লেশন চলছে, যার কারণে তাদের রপ্তানি পণ্যের দাম কমেছে। এ সুযোগ নিয়ে তারা বাংলাদেশের বাজারে আধিপত্য দেখাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ হিসেবে সামনে এসেছে। বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগও বাড়ছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এছাড়া দেশটি থেকে বাংলাদেশের নেওয়া ঋণের পরিমাণ সারে ৭ বিলিয়ন ডলারের মতো।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চীনের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্য যেমন সুযোগ এনেছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। এখন সময় এসেছে এই সম্পর্ককে কিভাবে আরও সমতাভিত্তিক ও টেকসই করা যায় সে বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার।ভোরের আকাশ/এসএইচ