লাকসামে হাতুড়ে চিকিৎসায় প্রতারিত সাধারণ মানুষ!
কুমিল্লার বৃহত্তর লাকসাম উপজেলাজুড়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চলছে দেদারসে। সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রশাসন নীরব ভূমিকায় এলাকার জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি বর্তমান সরকার হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেধিক চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে ডাক্তার না লেখার নির্দেশনা দিলেও তা কেউই মানছে না। যে যার মত করে মানুষের সাথে প্রতারণার মধ্য দিয়ে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলাগুলো জুড়ে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি কিংবা অন্যান্য চিকিৎসা চলে আসছে প্রতিনিয়ত। গাছ-গাছড়ার ভেষজ চিকিৎসা থেকে শুরু করে আকুপাংচার, হাইড্রোথেরাপী, অ্যারোমাথেরাপীসহ বিভিন্ন ব্যতিক্রমী চিকিৎসা চালু রয়েছে স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিক ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে।বিশেষ করে- হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ কিংবা ইউনানি চিকিৎসা এখন এলাকার লোকজনের কাছে অতি পরিচিত। অথচ ওইসব ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকদের কোন বৈজ্ঞানিক সনদ, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নেই।সূত্রগুলো আরও জানায়, এ অঞ্চলে ওইসব চিকিৎসকরা নিজেদেরকে হরেক-রকম আজগুবি উপাধিতে তুলে ধরে বিভিন্ন কাল্পনিক স্থান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন বলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ধর্ম গ্রন্থকে জ্ঞানের উৎস দাবি করে দেশবিদেশের মহান অলি-আল্লার নাম ভাঙ্গিয়ে নিজের তৈরি বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসাবে চালিয়ে দিচ্ছেন।এলাকার বিভিন্ন হাটাবাজারে ওইসব চিকিৎসকদের জলসার সামনে হরেক রকম গাছ-গাছড়ার বাকল, শিকড়, ফল-ফলাদি ও বিভিন্ন জলজ-বনজ কিংবা উভয়চর প্রাণীর অংশ বিশেষ দেখা যায়। জেলা দক্ষিণাঞ্চলের শহর এলাকার অলি-গলিসহ গ্রামের পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে সাইনবোর্ড সর্বস্ব অসংখ্য ডাক্তারখানা, হেকিমি দাওয়াখানা, কবিরাজ ঘর, তৈল-পানি পড়া হুজুরের আসন, হোমিও মেডিসিন হাউস, প্রাইভেট ক্লিনিক, তথাকথিত ডাক্তার চেম্বার, পীর দরবেশের দরবার, তাবিজ তোলাসহ হরেক রকম রোগ নিরাময়ের কবিরাজি চেম্বার।এসব হাতুড়ে ডাক্তার-কবিরাজদের গাছ-গাছড়ার বড়ি, হালুয়া, সিরাপ, বিক্রি আর বর্ণচোরা যাদুমন্ত্র বিশারদদের তেলেসমাতি ব্যবসা চলছে খোদ স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। ডাক্তার-কবিরাজখানায় স্টেরয়েড, সিনড্রোম, ভায়াগ্রা, ফরমালিন, প্যারিয়াকট্রিন, জেনেরিক, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডসহ হরেক রকম মাদকদ্রব্য, রেকটিফাইট ¯প্রীট, এ্যালকোহল পণ্য, উচ্চ মাত্রায় নেশা জাতীয় ও যৌন উত্তেজক ওষুধসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে ওইসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে। অথচ ওইসব চিকিৎসকদের তৈরি ঔষধে হরেক-রকম বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ও কালার রং ব্যবহার করলেও ওইসব দ্রব্যের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার এবং বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। এলাকার স্বল্প শিক্ষিত যুবক-যুবতী ও বৃদ্ধরা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে তাদের মধ্যে বেশির ভাগ লোকই ওইসব চিকিৎসকদের খরিদ্দার। ভেষজ ও হারবালের নামে স্বাস্থ্য ভাল করা, ওজন কমানো- বাড়ানো, ন সমস্যা, চর্ম, হাঁপানী, বাত-ব্যাথা, দাঁত-চোখের সমস্যা, অশ্ব-গেজ, ভগন্দর, হ্যাপাটাইটিস, এইডস্ধসঢ়;, ক্যান্সার, ডায়বেটিসসহ হরেক রকম রোগে চিকিৎসা করছেন তারা। যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও ঔষধ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরের কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও বিস্তারিত তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।ভোরের আকাশ/মো.আ.