সংগৃহীত ছবি
গণঅভ্যুত্থানের সময় আহতদের সেবায় যাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আপনারা কেবল চিকিৎসক নন, এই জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নায়ক। আপনারা যেভাবে এই দুঃসময়ে সেবা দিয়েছেন, জাতি তা কোনোদিন ভুলবে না।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে আহত আন্দোলনকারীদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানে আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠানে’ এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
বার্তার শুরুতেই প্রফেসর ইউনূস মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সেদিনের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতির জন্য এটি এক মর্মান্তিক ক্ষতি। যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আমি তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এই দুর্ঘটনা আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়, চিকিৎসা পেশার বিশাল দায়িত্ব ও মানবিক মূল্যবোধ। যখন চারদিকে কান্না আর আতঙ্ক, তখন আপনাদের সেবা আমাদের একমাত্র আশার আলো।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন আহতদের চিকিৎসা বন্ধ করা যায় না, তেমনি চলমান আন্দোলনের সময়ও সেই নীতির ব্যত্যয় হওয়া উচিত নয়। কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা সেই ব্যতিক্রমই দেখেছি’ বলেন তিনি। তাঁর ভাষায়, ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু গুলি চালিয়েই থেমে থাকেনি, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যেন কেউ চিকিৎসা না পায়।
চিকিৎসকদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসকদের সেই সময়কার ভূমিকা কোনও যুদ্ধক্ষেত্রের চিকিৎসকদের সাহসকেও হার মানায়। যখন রাস্তায় রক্তাক্ত ছাত্রদের হাসপাতালে এনে ফের হামলা চালানো হয়েছে, ডাক্তার-নার্সদের হুমকি দেওয়া হয়েছে—তখনও আপনারা পিছু হটেননি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আহতদের জন্য রক্তের সংকট ছিল, প্রশাসনের রক্তচক্ষু এড়িয়ে আপনারা রক্তের ব্যবস্থা করেছেন। আহতদের পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবস্থাপত্রে অন্য নাম, অন্য রোগ লিখে তাদের পুলিশের কাছ থেকে আড়াল করেছেন। প্রাইভেট ডাক্তাররা প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে হাসপাতালে গিয়ে গোপনে চিকিৎসা দিয়েছেন। রক্ত দেওয়ার সরঞ্জামের সরবরাহ ছিল না, আপনারা নিজেরাই এগুলো ব্যবস্থা করেছেন। এন্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ আপনারা নিজেরাই সরবরাহ করেছেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই ও কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।সোমবার (২৮ জুলাই) মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে এক বৈঠকে এই কথা বলেছেন তিনি।এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সন্ত্রাস দমনে তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাস দমন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। আমরা দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।’প্রায় ৪০ মিনিটব্যাপী এই বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনা মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধির সাথে শুল্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন বলেও জানা গেছে।চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তরে মার্কিন সরকারের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।অধ্যাপক ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য গঠনে কাজ করা কমিশনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান, কমিশন খুব ভালো কাজ করছে। অধ্যাপক আলী রিয়াজের নেতৃত্বে সদস্যরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।ভোরের আকাশ/জাআ
স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী, বৈরী গোয়েন্দা সংস্থা থেকে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সরকারি কর্মচারীদের সাবধানতা অবলম্বনে নির্দেশনা দিতে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে সরকারি কর্মচারীদের সাতটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।এর আগে, গত ৮ জুলাই এ চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিবদের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠি পাওয়ার পর এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক করে চিঠি দিচ্ছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এমতাবস্থায় উল্লিখিত বিষয়ের আলোকে আপনার মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতারণামূলক ফাঁদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য অধিকতর সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’১. সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতারণামূলক ফাঁদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য অধিকতর সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।২. এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।৩. এরূপ অপরাধের বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে গোয়েন্দা সংস্থা/আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অতিসত্বর অবহিত করা যেতে পারে যাতে গোয়েন্দা সংস্থা সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।৪. সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পদের পরিচয়, অবস্থান ও দৈনন্দিন কার্যক্রম প্রকাশ না করার ব্যাপারে সতর্ক থাকা।৫. কোনো প্রকার প্রলোভনমূলক ভিডিও কল, ছবি বা চ্যাটের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা।৬. অপরিচিত বা অল্প পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে খুব দ্রুত ঘনিষ্ঠ না হওয়া।৭. অনলাইন চ্যাট বা ভিডিও কলে গোপন তথ্য, ছবি বা ভিডিও শেয়ার না করা।ভোরের আকাশ/জাআ
আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। পুলিশের আইজির বরাত দিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রেস সচিব।শফিকুল আলম বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রিভিউ করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও প্রধান উপদেষ্টা এরকম একটা মিটিং করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে দ্বিতীয় মিটিং হলো। এই মিটিংয়ে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত এসেছে।তিনি বলেন, মিটিংয়ে প্রথমে আলোচনা হয়েছে কো-অর্ডিনেশন নিয়ে। আর্মি, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন এদের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন বাড়ানোর কথা বারবার জোর দিয়ে বলা হয়েছে। কো-অর্ডিনেশন লোকাল লেভেলে এবং ন্যাশনাল লেভেলে খুব দ্রুততার সঙ্গে বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ইলেকশনের আগে পুলিশের প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে। পুলিশের আইজি মহোদয় বলেছেন, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেড় লাখ পুলিশের ট্রেনিং হবে নির্বাচন উপলক্ষ্যে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচুর মিস ইনফরমেশন অলরেডি সার্কুলেট হয়েছে। সামনে এটা আরও বাড়তে পারে। এটাকে সামনে রেখে ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার হবে যেখানে এই মিস-ইনফরমেশনগুলোকে আমরা ডিফাইন করতে পারব। সেটি ক্রিয়েট করার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। এটা নিয়ে অনেক বিশদ আলোচনা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, অব্যাহত আলোচনার মাধ্যমে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই ঐতিহাসিক জুলাই সনদের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় পৌঁছাতে যাচ্ছে কমিশন।সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের ২০তম দিনের বৈঠকের শুরুতে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন।অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আপনাদের সহযোগিতায় আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে আমাদের একটি সনদের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় নিয়ে যেতে পারবে বলে আমরা আশা রাখি।তিনি বলেন, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে বারবার আমরা পরিবর্তন ও সংস্কার করি এই কারণে যে, এতে করে যেন সকলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে একমত হতে পারে। এ পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। যদিও দুটি বিষয়ে নোট অফ ডিসেন্ট রয়েছে। তবুও আমি বলব, যেহেতু সবাই ছাড় দিচ্ছেন, সে কারণে এই ঐকমত্য গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো কোনো না কোনোভাবে আমাদের নিষ্পত্তি করতেই হবে। যেমন ধরুন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের সবার দীর্ঘদিনের সংগ্রাম রয়েছে এবং এ বিষয়ে একটি কাঠামো আমাদের জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে আমরা এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আরেকবার না যাই। এ কারণেই বারবার আলোচনা করার মাধ্যমে আপনাদের মতামতের প্রতিফলন ঘটিয়ে, তা পরিবর্তন পরিমার্জন ও প্রয়োজনে সংশোধন করা হচ্ছে।এ সময় আলোচনা একইভাবে অব্যাহত রেখে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছানোর জন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ