ফাইল ছবি
আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষ করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো পাঠানো হবে আজ বা আগামীকালের মধ্যে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সংলাপের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আশা করছি পরশু দিনের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।’
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২১তম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের আলোচনার বিষয়ের মধ্যে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান।
দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, সেগুলোর মন্তব্যের জন্য বুধবার পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। আশা করছি বিভিন্ন মন্তব্যকে সংশ্লিষ্ট করে, প্রাথমিক পর্যায়ে যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো আজ বা আগামীকালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে পারব। এর সঙ্গে এ পর্যন্ত (দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ) যেগুলো ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো সংযুক্ত করে পরশু দিনের মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আমরা যেভাবে হোক সনদের চূড়ান্ত রূপ; অন্তত পক্ষে, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো স্পষ্ট করতে হবে এবং সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কয়েকটি দলের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সেগুলো সমন্বিত করে একটি প্রস্তাব আপনাদের সামনে হাজির করতে চাচ্ছি। কারণ প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব বক্তব্য থাকবে, সেটি বিবেচনায় প্রস্তাবগুলো নিয়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে একমত হওয়া বিষয়গুলো : ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের মাধ্যমে একমত হওয়া বিষয়গুলো হলো- সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ (নোট অব ডিসেন্ট), সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত বিধান, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণার কাঠামো, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ (নোট অব ডিসেন্ট), সংবিধান সংশোধন, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান (নোট), নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ বিধান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্যক্তির মেয়াদকাল এবং পুলিশ কমিশন গঠন।
এদিন সকালে ২১তম দিনের সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়োগ ও গঠন কাঠামো এবং নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বাকি অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। রাষ্ট্রকাঠামোর ২০টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে ১২টিতে নোট অব ডিসেন্টসহ রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। বাকি কিছু বিষয়ে আংশিক সমঝোতা হয়েছে। দ্বিতীয় দফার আলোচনায় খসড়া বিষয়ে দলগুলোর মতামত আজ বুধবার দুপুরের মধ্যে জমা দিতে হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টির মতো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন।
এ ছাড়া কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত আছেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগেই ব্যালট বাক্সে ৫০ শতাংশ ব্যালট রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী—এমন বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া জবানবন্দিতে।চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি মামলায় দেওয়া পাঁচ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন।জবানবন্দিতে মামুন দাবি করেন, গুম, নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারের মতো স্পর্শকাতর ও গুরুতর নির্দেশনা সরাসরি আসত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিতেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকি।তিনি বলেন, “আমি পুলিশের সর্বোচ্চ পদে থাকলেও এসব কার্যক্রম সম্পর্কে আমাকে অনেক সময় অবহিত করা হতো না। সামরিক উপদেষ্টা সরাসরি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এসব পরিচালনা করতেন।”জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ব্যারিস্টার আরমানকে টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স (টিএফআই) সেলে আটকে রাখার বিষয়টিও ছিল ওই গোপন কার্যক্রমের অংশ।সাবেক আইজিপি মামুন আরও দাবি করেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ‘জিন’ নামে ডাকতেন। কারণ, তাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অত্যন্ত কার্যকর ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হতো।জবানবন্দিতে মামুন অভিযোগ করেন, “জুলাই আন্দোলন দমনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ব্যবহৃত হয় মারণাস্ত্র এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়।” এসব নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করতেন বলে জানান তিনি।তিনি বলেন, “আন্দোলন দমন নিয়ে প্রতিরাতে চলত বৈঠক। সেখানেই নির্ধারিত হতো কে কোথায় যাবে, কীভাবে ব্যবস্থা নেবে।”প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।তার জবানবন্দিতে উঠে আসা এই তথ্যগুলো দেশের প্রশাসন, রাজনীতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিষয়টি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
দেশে চলমান গণ-অভ্যুত্থান ও জনতার বিপুল ত্যাগের পর যেকোনো পরবর্তী সরকারের জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া বিষয়ক এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।ড. নজরুল বলেন, “হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ দিয়েছে, বহু মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো জনগণ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এত বড় ত্যাগ দেয়নি। এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে নতুন সরকার পরিচালনা করা কঠিন হবে।”তিনি আরও বলেন, “সংস্কার না করা গেলে আগামী দুই দশকেও আর তা করা সম্ভব হবে না। এ সুযোগ হারালে জাতি দীর্ঘদিন পিছিয়ে পড়বে।”বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “রাজনৈতিক সরকারের প্রভাব বিচার ব্যবস্থায় কিছুটা থাকতেই পারে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন কোনো নিরপেক্ষ সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন রাজনৈতিক স্বার্থে বাতিল করে দেওয়া হয়। যেমনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামোর ক্ষেত্রেও ঘটেছে।”তিনি বলেন, “এই অনিয়ম বন্ধ করতে হলে আইনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। সে লক্ষ্যে নতুন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।”নিম্ন আদালতে সরকারি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “সরকারি উকিল হয়েও কেউ যদি অর্থের বিনিময়ে প্রতিপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে, তা হলে সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাসে আঘাত লাগে।”এই সমস্যা সমাধানে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।এই খসড়া অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি আইনজীবীদের জন্য পেশাগত মানদণ্ড ও জবাবদিহির নতুন কাঠামো প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।ভোরের আকাশ//হ.র
গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার নতুন সম্ভাবনা কাজে লাগানো এবং পশুপালন খাতকে আধুনিক ও আত্মনির্ভরশীল করতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।আজ (বুধবার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি অনন্য মন্ত্রণালয়, কারণ এটি আমাদের সমুদ্র ও খামার উভয় খাতের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। কিন্তু আমরা এখনো গভীর সমুদ্রের সম্পদ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের জানতে হবে—আমাদের কী আছে, কী হারাচ্ছি এবং কেন পিছিয়ে আছি।”তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সম্ভাব্য অঞ্চল চিহ্নিত করতে আধুনিক জরিপ চালানো জরুরি। প্রয়োজনে জাপান বা থাইল্যান্ডের মতো দেশ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণের পরামর্শ দেন অধ্যাপক ইউনূস। “জাপান এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা যৌথ উদ্যোগের বিষয়টি বিবেচনা করছি। তবে আগে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও জরিপ জরুরি। এটি কেবল বেশি মাছ ধরার বিষয় নয়, বরং একটি নতুন শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ।”পশুপালন খাতে খাদ্য সংকট, রোগব্যাধি এবং ভ্যাকসিনের উচ্চমূল্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পশুখাদ্য ও ভ্যাকসিন উৎপাদনে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। খরচ কমাতে ও আত্মনির্ভরশীলতা গড়তে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।”বিশ্ববাজারে হালাল মাংসের চাহিদা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের এই বাজারে প্রবেশের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়া এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমাদের অবশ্যই বিষয়টি অন্বেষণ করতে হবে।”কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চামড়া খাতে সিন্ডিকেট সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “একই ধরনের সমস্যা যেন পুনরায় না ঘটে, সে জন্য এখনই আগাম পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “চিড়িয়াখানায় পশুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, এমনকি খাবার চুরির অভিযোগও শুনেছি। এটি অমানবিক ও হৃদয়বিদারক। চিড়িয়াখানার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার দরকার।”তিনি দেশের পশু চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকেও আধুনিকায়নের তাগিদ দিয়ে বলেন, “বহু পশু চিকিৎসা কেন্দ্রই অকার্যকর ও পুরোনো ধাঁচের। কৃষক ও পোষা প্রাণীর মালিকদের জন্য সেগুলোকে প্রকৃত সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।”সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ//হ.র
বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০ নারী আসন বহাল রেখে সাত শতাংশ আসনে সরাসরি প্রার্থী করার সংশোধিত প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনে সংশোধিত প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান রাখার কথা বলা হয়। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলে। সিপিবি, বাসদ ও জেএসডি সরাসরি ভোটের কথা বলে।তবে জামায়াতসহ ইসলামি দলগুলো সংখ্যানুপাতিক হারে ১০০ আসনে নারীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান রাখার কথা বলে। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের কথা বলে। এমন অবস্থায় কমিশন ১৪ জুলাই সংশোধিত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে। সেখানে বলা হয়, যে দল ২৫টির বেশি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, তাদের ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।তবে ওই দিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। পরে আরেক দিনের আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন, যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে। ১৪তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই হার বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার কথা বলা হয়।আজ নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন থেকে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।১৪তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। রাজনৈতিক দলগুলো এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে সংসদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০-এ উন্নীত করবে। পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্তসংখ্যক নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেন।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনীর (যা ৮ জুলাই ২০১৮ সালে সংসদে পাস হয়) মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়ানো হয়। সে হিসাবে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকার বিধান রয়েছে। তবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫(৩) ও (৩ ক)-এর আওতায় সংরক্ষিত নারী আসনের বিধান চতুর্দশ সংসদের পর আর কার্যকর থাকবে না।ভোরের আকাশ/জাআ