যশোরে শফিকুল আলম
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫ ০৭:১২ পিএম
মাথা খারাপ হয়েই বাংলাদেশের মিডিয়ার সম্প্রচার বন্ধ করছে ভারত
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের পতনে ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সে কারণে তারা (ভারত) আমাদের কয়েকটি মিডিয়ার সম্প্রচার সেদেশে বন্ধ করেছে। আমরা তা করতে চাই না। গতকাল শনিবার বিকেলে যশোরের কেশবপুর পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুল আলম বলেন, আমরা অনেক দিন থেকে দেখছি ভারত আমাদের নিয়ে প্রোপান্ডা ছড়াচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নেই, বরং জোরে কথা বলে নাটক করে বিনোদন দেয়াটা যেন তাদের সাংবাদিকতা। সেক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিকতা অনেক দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয়। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের যে মিডিয়াগুলো বন্ধ করা হয়েছে তারা অনেক ভালো নিউজ করে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় কারা জড়িত সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। প্রথমিকভাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাকি জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা আমাদের সরকারের বিবৃতি দিয়েছি। শনিবার রাতে মিটিং আছে, সেখানে আইসিটি অ্যাক্টের অধ্যাদেশ প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করতেই আজ রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি মিটিং।
কিছু মিডিয়া স্বেরাচারী শাসকের টুলস ছিলো মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, বিগত সময়ে কিছু কিছু মিডিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। বিরোধীদলের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল। অনেক মিডিয়া আওয়ামী লীগের টুলস হিসেবে কাজ করেছে। এখন আমরা চাই আমাদের সাংবাদিকতা দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয় হোক। যাতে মিডিয়ার লাভ হবে। কেননা সামনে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তখন স্বাধীন সাংবাদিক করতে পারবেন। এখনই আপনারা আপনাদের জায়গা গড়ে নেন।
ভুয়া মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কাউকে কোন মামলা দিয়ে হয়রানি করতে বিশ্বাসী না। আমরা কি কোন মামলা দিচ্ছি, মামলা তো দিচ্ছে রাজনৈতিক দল। আমাদের সরকার বলে দিয়েছে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। কাউকে কোন হয়রানি করা আমাদের কোন উদ্দেশ্য নয়।
বাংলাদেশে সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর বিশেষ প্রতিনিধি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর সদস্য ও পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন প্রমুখ।
এর আগে ‘এসো মিলি প্রাণের টানে, সম্প্রীতির বাঁধনে’ স্লোগানে বিদ্যালয়টির প্রথম পুনর্মিলনীর শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলমসহ অতিথিরা অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছালে তাদেরকে লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উৎসবের আবহ বিরাজ করছে। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এলাকায় আসেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রাক্তনীরা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। যেন বেলুর আর ফেস্টুন নয়, নানান শ্রেণী পেশার মানুষের মিলন মেলা বেসেছিল বিদ্যালয় প্রঙ্গনে। উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
রাতে সেখানে আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ এক সংগীতানুষ্ঠান। দেশবরণ্য কণ্ঠ শিল্পী মনির খানসহ সেখানে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের শিল্পীরা।
ভোরের আকাশ/এসআই