সংগৃহীত ছবি
বৃষ্টির পানি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, ঘাম, গুমট পরিবেশ—সব মিলিয়ে চুলের জন্য বেশ বিরূপ এক সময় বর্ষাকাল। বৃষ্টির মৌসুমে চুলে বেশ কিছু সমস্যা বেশি দেখা যায়। খুশকি, চুল শ্রীহীন হয়ে পড়া, চুল পড়া, উকুন ও ছত্রাকের সংক্রমণ বেড়ে যায়। সমস্যা সম্পর্কে আগে জানা থাকলে প্রতিরোধ ও প্রতিকার দুই-ই সহজ হয়।
বর্ষা এবং চুলের সমস্যা একসঙ্গে চলে। আর্দ্রতা, স্যাঁতসেঁতে ভাব এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন আপনার চুলকে প্রাণহীন, দুর্বল, ভাঙা-প্রবণ করে তুলতে পারে। এই সময় আমরা অনেকেই রাসায়নিক সমৃদ্ধ পণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ি যা উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। তাই ঘরোয়া সমাধান বেছে নেওয়াই উত্তম। এই বর্ষায় গোলাপজল এবং নারিকেল তেলের জুটি আপনার চুলে প্রাকৃতিক ত্রাণকর্তা হতে পারে। বর্ষা ঋতুতে বা অন্য সময়েও চুল সুস্থ, আর্দ্র এবং মজবুত রাখার ক্ষেত্রে এই দুটি প্রাচীন উপাদান কার্যকর।
বর্ষাকালে কেন চুল বেশি ভেঙে যায়?
অতিরিক্ত আর্দ্রতা চুলের খাদকে নরম করে, আরও ছিদ্রযুক্ত এবং ভঙ্গুর করে তোলে। উপরন্তু, বৃষ্টির পানির দীর্ঘায়িত ব্যবহার অ্যাসিডিক বা দূষিত হতে পারে এবং মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। যে কারণে চুল ও স্ক্যাল্পে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নারিকেল তেলের প্রচুর পুষ্টিকর উপাদান এবং গোলাপজলের হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য চুলের জন্য দারুণ উপকারী। বিশেষ করে বর্ষাকালের স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এই দুই উপাদান অনেক বেশি কার্যকরী।
বর্ষাকালে চুল ভাঙার জন্য নারিকেল তেলের উপকারিতা
১. গভীর পুষ্টি এবং আর্দ্রতা আটকে রাখে
নারিকেল তেল বেশিরভাগ তেলের তুলনায় চুলের খাদে ভালোভাবে প্রবেশ করে। এটি প্রোটিন ক্ষয় কমায় এবং আর্দ্রতা আটকে রাখে, চুল শুকিয়ে যাওয়া এবং ভেঙে যাওয়া রোধ করে।
২. চুল লম্বা করে
নারিকেল তেলে লরিক অ্যাসিড থাকে, যা চুলের প্রোটিনের প্রতি তীব্র আকর্ষণ করে। এটি চুলের গঠনকে শক্তিশালী করে, বিশেষ করে যখন চুল ক্রমাগত আর্দ্রতার সংস্পর্শে থাকে তখন এটি সহায়ক।
৩. মাথার ত্বকের সুরক্ষা
স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বক মানে স্বাস্থ্যকর চুল। নারিকেল তেল প্রকৃতিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল, যা খুশকি এবং মাথার ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধে এটি কার্যকর করে তোলে, যা বর্ষাকালে একটি সাধারণ সমস্যা।
৪. চুল মসৃণ করে
বর্ষার সময় চুল অমসৃণ হয়ে যেতে পারে। নারিকেল তেল বাতাসের অতিরিক্ত আর্দ্রতার বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে কাজ করে, চুলের ত্বক মসৃণ করে।
বর্ষাকালে চুলের জন্য গোলাপজলের উপকারিতা
১. আর্দ্রতা বজায় রাখে
ভারী তেল বা সিরামের বিপরীতে, গোলাপজল খুবই হালকা এবং সতেজ। এটি মাথার ত্বক এবং চুলের খাদকে ভারী না করেই আর্দ্রতা প্রদান করে, যা তৈলাক্ত চুল বা মাথার ত্বকের জন্য আদর্শ।
২. পিএইচ ব্যালেন্সার
বর্ষা আপনার মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। গোলাপজল এটি সংশোধন করে এবং চুলকে শক্তিশালী এবং কম ভাঙা-প্রবণ করে তুলতে একটি স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বকের পরিবেশ তৈরি করে।
৩. স্ক্যাল্প ভালো রাখে
দূষণকারী পদার্থের সাথে বৃষ্টির পানি মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। গোলাপজলে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা জ্বালাপোড়া প্রশমিত করে এবং চুলকানি কমায়।
৪. ঝলমলে চুল
ধোয়া বা স্প্রে হিসাবে গোলাপজলের ধারাবাহিক ব্যবহার চুলে একটি প্রাকৃতিক, স্বাস্থ্যকর ঝলমলে ভাব এনে দেয়। যা বর্ষায় আপনার চুল পুনরুজ্জীবিত করে।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
বৃষ্টির দিনে ঘরে সুন্দর সময় কাটাতে চাইলে পছন্দের বই পড়তে পারেন, গরম চা বা কফি উপভোগ করতে পারেন, অথবা পরিবারের সাথে লুডু, দাবা বা তাস খেলতে পারেন। মচমচে ভাজাভুজি যেমন পাকোড়া বা জিলাপি তৈরি করতে পারেন, পছন্দের সিনেমা দেখতে পারেন এবং এক কাপ গরম চা বা কফির সাথে জানালার পাশে বসে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পারেন। বর্ষার আগমন মানেই হঠাৎ বৃষ্টিতে বাইরে যাওয়ার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়া। এমন পরিস্থিতিতে মন খারাপ না করে, বরং ঘরের ভেতরেই বৃষ্টির দিনটিকে বিশেষভাবে উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। যদিও বাঙালিরা বৃষ্টি মানেই আরামের ভাতঘুম বোঝে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন আরও অনেক উপায়ে এই অলস দিনটিকে মন ভালো করার পাশাপাশি জীবনের প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে ব্যবহার করা যায়।এক কাপ গরম চাবৃষ্টি উপভোগের প্রথম শর্ত হলো এক কাপ গরম চা বা কফি। জানালার পাশে বসে, প্রিয় বই হাতে বা হালকা গান শুনতে শুনতে এই উষ্ণ পানীয়তে চুমুক দিলে মুহূর্তটি কবিতার মতোই কাব্যিক হয়ে ওঠে।চিঠিতে স্মৃতি রোমন্থনবর্তমান সময়ে হাতে লেখা চিঠি প্রায় হারিয়ে গেলেও, বৃষ্টির দিনে পুরোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে মনের আবেগ নিয়ে একটি চিঠি লেখা যেতে পারে। অথবা নিজের ডায়েরির পাতায় ভাবনা, অনুভূতি ও স্বপ্নের কথা তুলে ধরার এই চর্চা মানসিক শান্তি এনে দেয়।গাছে-বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাযাদের বারান্দায় ছোট টবের গাছ আছে, তারা এই সময়টাতে গাছের যত্ন নিতে পারেন। পুরোনো পাতা ছেঁটে দেওয়া, গাছ পরিষ্কার করা বা নতুন চারা লাগানো যেতে পারে। বৃষ্টির পানি এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক সুবিধা হিসেবে কাজ করে।রঙতুলিতে মনের কথাযারা আঁকতে ভালোবাসেন, বৃষ্টির দিন তাদের জন্য অসাধারণ অনুপ্রেরণা। জানালার পাশে বসে বৃষ্টিভেজা প্রকৃতির চিত্র কাগজে তুলে আনুন। এটি সৃজনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও নিশ্চিত করবে।পেটপুজো ও বিশেষ রান্নাবৃষ্টির দিনে পরিবারের জন্য বিশেষ খাবার রান্না করা এক ভিন্ন আনন্দ দেয়। গরম খিচুড়ি আর গরুর মাংস, পিয়াজু, চিতই পিঠা কিংবা গরম স্যুপ এই দিনটির স্বাদ বাড়িয়ে তোলে। রান্নার কাজে পরিবারের অন্যদের যুক্ত করলে দিনটি আরও আনন্দময় হয়ে উঠবে।ফেলে আসা দিনের গল্প ও ছবি দেখাবৃষ্টির দিন হতে পারে পুরোনো অ্যালবাম খুলে ছবি দেখা এবং সেই ছবিগুলোর গল্প শোনা বা শেয়ার করার অসাধারণ সুযোগ। এটি স্মৃতিচারণ করে মন ভালো করে তোলে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করে।জাগিয়ে তুলুন লেখক সত্ত্বাআবেগপ্রবণ মুহূর্তে লেখালেখির দিকে ঝোঁকেন অনেকে। বৃষ্টির দিনে আবেগ আর প্রকৃতির সংমিশ্রণে ছোট গল্প কিংবা কবিতা লিখে ফেলুন। এটি আপনার লেখকসত্ত্বার উন্মেষ ঘটাতে পারে।শখের ক্রাফ্টিংয়ের মাধ্যমে ঘর সাজানোপুরোনো বোতল, কাগজ, কাপড় বা অপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজানোর ভিন্নধর্মী জিনিস তৈরি করতে পারেন। সহজ টিউটোরিয়াল অনুসরণ করে আপনার ঘরটিকে করে তুলুন আরও আকর্ষণীয়।পছন্দের মুহূর্ত অন্যদের জানানপ্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে নিজের অনুভূতি তুলে ধরতে পারেন অডিও বা ভিডিও ব্লগে। বৃষ্টির দিনের গল্প, স্মৃতি বা ভাবনা নিয়ে ভিডিও রেকর্ড করে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার বা অনলাইনে প্রকাশ করা যেতে পারে।বৃষ্টির দিন শুধু প্রকৃতিরই নয়, আমাদের ভেতরের সৃজনশীলতা ও আত্ম-অনুসন্ধানকেও জাগিয়ে তোলে। তাই এই সময়টাকে একঘেয়েমি না ভেবে বরং নিজের মতো করে উপভোগ করুন। এমনকি কখনো কখনো নিঃশব্দে বসে শুধুই বৃষ্টির শব্দ শোনাটাও এক অনন্য জীবনানুভূতি হতে পারে।ভোরের আকাশ/তা.কা
অনেকেই দিন শুরু করেন এক গ্লাস টাটকা কমলার রস দিয়ে। সকালের নাস্তায় এটি একপ্রকার ঐতিহ্যেই পরিণত হয়েছে। ভিটামিন ‘সি’-সমৃদ্ধ কমলার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক সুন্দর রাখে, এমনকি হৃদযন্ত্রেরও সুরক্ষা দেয়—এমনটাই সাধারণ ধারণা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সকালে খালি পেটে কমলার রস পান করা কি আসলেই নিরাপদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরটা এতটা সরল নয়।কমলার রসে কী কী পুষ্টি থাকে?কমলার রস পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে আছে ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম, ফোলেটসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান। মার্কিন কৃষি বিভাগ (USDA)-এর তথ্য অনুযায়ী, এক কাপ (প্রায় ২৫০ গ্রাম) কমলার রসে থাকে প্রায় ১২২ ক্যালোরি, ২১ গ্রাম প্রাকৃতিক চিনি, ১.৭ গ্রাম প্রোটিন এবং ৪৪৩ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম।এই রস কোষের ক্ষতি রোধ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস বা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া, যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে, তাদের জন্যও এটি উপকারী হতে পারে—কারণ এটি প্রস্রাবকে কম অ্যাসিডিক করে, যা কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।খালি পেটে কমলার রস খাওয়া কতটা নিরাপদ?বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে খালি পেটে কমলার রস পান করলে অনেকের হজমে সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়ায়, বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর।‘Roczniki Państwowego Zakładu Higieny’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কমলা ও আঙুরের রস খালি পেটে পান করলে GERD (গ্যাস্ট্রো-ওইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এতে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে ফিরে আসে, যা বুক জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি তৈরি করে। ডায়াবেটিস রোগীরা কি সকালের নাস্তায় কমলার রস খেতে পারেন?কমলা ফল হিসেবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণত নিরাপদ, কারণ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স প্রায় ৪৩। কিন্তু কমলার রস খাওয়া একেবারে আলাদা বিষয়। রস বানানোর সময় ফাইবার বাদ পড়ে যায়, ফলে এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ) সরাসরি রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি পেটে কমলার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগী বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকর।ফল না রস—কোনটি ভালো?পুষ্টিবিদদের মতে, পুরো কমলা খাওয়া সব সময়ই রসের চেয়ে বেশি উপকারী। পুরো ফলে ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হজমেও সাহায্য করে। এছাড়া আস্ত কমলা খেলে পেটও ভালোভাবে ভরে, ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের আশঙ্কা কমে যায়।অতিরিক্ত সেবনের ঝুঁকিকমলা বা কমলার রস—দুটিই উপকারী, তবে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত সেবনে দেখা দিতে পারে বুক জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, এমনকি দাঁতের এনামেল ক্ষয়ও। নিয়মিত অতিরিক্ত কমলার রস খেলে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি এবং হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাহলে কীভাবে খাবেন?বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন—খালি পেটে নয়, খাবারের পর বা মাঝেমধ্যে কমলার রস পান করা ভালো।চিনি ছাড়া টাটকা রসই সর্বোত্তম।দিনে এক গ্লাসের বেশি না খাওয়াই উত্তম।কমলার রস স্বাস্থ্যকর হলেও সময়, পরিমাণ ও অভ্যাসের ওপরই নির্ভর করে এটি উপকারী না ক্ষতিকর হবে। খালি পেটে নয়, বরং সঠিক সময়ে পরিমিত পরিমাণে কমলার রস পান করলেই পাওয়া যায় এর আসল উপকারিতা।ভোরের আকাশ//হর
বরিশালের চিংড়ি মাছের জলভরা বা জলটোবা তৈরি করতে, খোসা ছাড়ানো চিংড়িকে ডাল বাটা, মশলা ও বেসন দিয়ে মেখে বড়ার আকারে ভেজে নেওয়া হয়। এই ভাজা বড়াগুলো সুস্বাদু ঝোলে দেওয়া হয়, যা "জল" তৈরি করে। এই ঝোল বা গ্রেভি মূলত নারকেল দুধ ও অন্যান্য মশলার মিশ্রণে তৈরি করা হয়, যা বড়াগুলোকে নরম করে এবং একটি বিশেষ স্বাদ দেয়চিংড়ি দিয়ে সুস্বাদু সব খাবার তৈরি করা যায়। তার একটি হলো চিংড়ির জল বড়া। এটি তৈরি করা যেমন সহজ, খেতেও দারুণ স্বাদ। তবে সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে চিংড়ি বড়া তৈরি করা যাবে না। কারণ এটি সতর্কতার সঙ্গে তৈরি না করলে বড়ার আকৃতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অতিথি আপ্যায়নে বা ঘরোয়া রান্নায় রাখতে পারেন চিংড়ির এই পদ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক চিংড়ির জল বড়া তৈরির রেসিপি-তৈরি করতে যা লাগবেছোট চিংড়ি- ১ কাপনারিকেলের দুধ- ১ কাপলবণ- স্বাদমতোকাঁচা মরিচ কুচি- ৪-৫টাসরিষার তেল- ৫ চা চামচতেজপাতা- ১টিজিরা- ১/২ চা চামচদারুচিনি- ১ টুকরাএলাচ- ২টিপেঁয়াজ কুচি- ১টিআদা রসুন বাটা- ২ চা চামচহলুদের গুঁড়া- ১ চা চামচমরিচের গুঁড়া- ১ চা চামচজিরা গুঁড়া- ১ চা চামচঘি- ১ চা চামচ।সংগৃহীত ছবিযেভাবে তৈরি করবেনপ্রথমে ছোট চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিন। এবার তাতে লবণ ও ২-৩টি কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট বলের মতো তৈরি করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা, জিরা, আস্ত গরম মসলা ও পেঁয়াজ কুচি ভাজুন। এবার একে একে আদা রসুন বাটা, লবণ, হলুদ, মরিচের গুঁড়া, জিরা গুঁড়া দিয়ে কষাতে হবে।মসলা কষানো হলে নারিকেলের দুধ দিয়ে নেড়ে আগে থেকে তৈরি করা চিংড়ির বলগুলো দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। ৫-৬ মিনিট পর বলগুলো শক্ত হয়ে ঝোল ঘন হলে, কাঁচা মরিচ কুচি ও ঘি দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার গরম গরম ভাত, পোলাও, খিচুড়ি, রুটি কিংবা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন সুস্বাদু চিংড়ির জল বড়া।ভোরের আকাশ/তা.কা
বর্তমানে অ্যাপল সিডার ভিনেগার বা আপেল ভিনেগার স্বাস্থ্যসচেতনদের অন্যতম প্রিয় প্রাকৃতিক উপাদান। শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়াতেই নয়, বরং এটি শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমকে সঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিপাক প্রক্রিয়া বাড়ানো থেকে শুরু করে হজমে সহায়তা—সব ক্ষেত্রেই এর প্রভাব স্পষ্ট।বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে খালি পেটে অ্যাপল সিডার ভিনেগার পান করলে এর উপকারিতা আরও বেড়ে যায়। এটি শরীরের পুষ্টি শোষণকে বাড়ায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সামগ্রিক সুস্থতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নিই, খালি পেটে অ্যাপল সিডার ভিনেগার পান করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা—০১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে:অ্যাপল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের কার্বোহাইড্রেট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি খাবার হজমের গতি কমিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে। ডায়াবেটিস কেয়ার-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে ঘুমানোর আগে ভিনেগার সেবন করেন, তাদের পরদিন সকালে রক্তে শর্করার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে।০২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:সকালে অ্যাপল সিডার ভিনেগার পান করলে তা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। BMJ Nutrition, Prevention & Health জার্নালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ভিনেগার সেবনকারীদের ওজন কিছুটা কমে এবং বিপাকীয় কার্যকারিতা উন্নত হয়।০৩. হজমশক্তি বাড়ায়:ভিনেগারের প্রাকৃতিক অম্লতা পেটের অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়, যা খাবার দ্রুত ভাঙতে সাহায্য করে। এটি পুষ্টি শোষণ উন্নত করে, পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি কমায়। এছাড়া অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটিয়ে হজমতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।০৪. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে:সকালে নিয়মিত অ্যাপল সিডার ভিনেগার খাওয়া ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এটি হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে ও ধমনীতে চর্বি জমার ঝুঁকি কমায়।০৫. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়:অ্যাপল সিডার ভিনেগারে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান ও pH ভারসাম্য রক্ষাকারী গুণ। এটি শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করতে সহায়তা করে, ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও সতেজ। নিয়মিত সেবনে ত্বকের প্রদাহ বা একনে নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।ওজন কমাতে অ্যাপল সিডার ভিনেগার সঠিকভাবে পান করার উপায়:ওজন কমানোর জন্য এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে ১–২ চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। প্রয়োজনে পরিমাণ ধীরে ধীরে ১–২ টেবিল চামচ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে, তবে অবশ্যই পানি মিশিয়ে নিতে হবে।সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:যদিও পরিমিত পরিমাণে অ্যাপল সিডার ভিনেগার সাধারণত নিরাপদ, তবে অতিরিক্ত সেবন বিপরীত ফল দিতে পারে।দাঁতের এনামেল ক্ষয়পেটে অস্বস্তি, বুকজ্বালা বা বমি বমি ভাবঘন অবস্থায় খেলে গলায় জ্বালাপোড়াকিছু ওষুধের (যেমন ইনসুলিন বা ডাইইউরেটিক) সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াতাই সবসময় পানি দিয়ে মিশিয়ে পান করুন এবং যাদের পূর্ববর্তী কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।বাড়িতে অ্যাপল সিডার ভিনেগার তৈরি করার সহজ পদ্ধতি:আপেল টুকরো করে একটি কাচের জারে নিন, তার সঙ্গে চিনি ও পানি যোগ করে কাপড়ে ঢেকে দিন। মিশ্রণটি উষ্ণ ও অন্ধকার স্থানে ৩–৪ সপ্তাহ রেখে দিন এবং মাঝে মাঝে নেড়ে দিন। এরপর তরলটি ছেঁকে আরও ৩–৪ সপ্তাহ রেখে দিন যতক্ষণ না এতে ভিনেগারের টক গন্ধ তৈরি হয়।সতর্ক থাকুন, সচেতনভাবে খান, আর প্রাকৃতিক উপায়ে রাখুন শরীরকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত।ভোরের আকাশ//হ.র