ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫ ০১:৫১ পিএম
সংগৃহীত ছবি
মার্কিন কেন্দ্রীয় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির সড়কে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। এক দিন আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই শহরে দেশটির শীর্ষ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করেছেন। গতকাল বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ট্রাম্পের যুক্তি, ওয়াসিংটন ডিসিতে সহিংসতা ও সংঘবদ্ধ অপরাধ মাত্রা ছাড়িয়েছে। এ কারণে তিনি পুলিশের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বভার জাতীয় রক্ষীবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছেন।
তবে তার এই উদ্যোগকে ভালো চোখে দেখেননি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মেয়র মুরিয়েল বাউসার। ‘অপরাধ মাত্রা ছাড়িয়েছে’, ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেন তিনি। ট্রাম্পের উদ্যোগকে ‘আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার’ প্রচেষ্টা বলে আখ্যা দেন মুরিয়েল।
মুরিয়েল বলেন, ‘এটি এমন একটি সময় যখন সম্প্রদায়ের সকল সদস্যকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজ নিজ এলাকায়, অলিগলিতে যা করা দরকার, তাই করে দেখাতে হবে। আমাদের শহর ও আমাদের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করতে, আমাদের নিজেদের ঘরের নিয়ম-নীতি অক্ষুণ্ন রাখতে এবং এই ব্যক্তির (ট্রাম্পের) এসব উদ্যোগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি হাউসে (মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ) জয়লাভ (২০২৬ সালের অন্তর্বর্তী নির্বাচনে) করে। এতে এ ধরনের আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে রাশ টেনে ধরা যাবে।
এর আগে মুরিয়েল কিছুটা রক্ষণাত্মক ভূমিকায় ছিলেন। তিনি সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, বাড়তি (সেনা) কর্মকর্তাদের আগমন থেকে কি ভাবে সর্বোচ্চ ফায়দা নেওয়া যায়, সেটার দিকে আমি নজর দিচ্ছি। তবে ‘ব্রেকফাস্ট ক্লাবে’ দেওয়া রেডিও সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগ অন্যান্য মার্কিন শহরের জন্য সতর্কবার্তা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার্কিন রাজধানীর পর্যটকবান্ধব জায়গা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সাঁজোয়া যানকে টহল দিতে দেখা গেছে।
কর্মকর্তারা জানান, ডিসিতে মোট ন্যাশনাল গার্ডের মোট ৮০০ সদস্য ও ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ৫০০ সদস্য মোতায়েন করা হতে পারে। রিপাবলিকান দলের নেতা ট্রাম্প এর আগে নিউইয়র্ক ও শিকাগোতেও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের হুমকি দিয়েছিলেন। ওই দুই শহরও ডেমোক্র্যাট পার্টির নিয়ন্ত্রণে। গত সোমবার এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই মার্কিন রাজধানীতে ক্যামোফ্লাজ পরা সেনাদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
তারা বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনের বাইরে ব্যারিকেড বসিয়েছেন। তাদেরকে পর্যটকদের সঙ্গে ছবিও তুলতে দেখা গেছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যরোলিন লেভিট জানান, সোমবার রাতে ফেডারেল এজেন্টরা ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করছেন তারা। খুন, বন্দুক সহিংসতা, মাদক পাচার, অশ্লীল কাজে অংশগ্রহণ, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ অন্যান্য অপরাধে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ক্যারোলিন। ‘আমরা মাত্র শুরু করলাম’ বলেন তিনি।
ক্যারোলিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পরবর্তী এক মাস ধরে ট্রাম্প প্রশাসন নিরবচ্ছিন্নভাবে এই জেলার সব হিংস্র অপরাধীকে খুঁজতে থাকবে এবং তাদেরকে গ্রেপ্তার করবে। আইনভঙ্গ করা, জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি ও আইন মেনে চলা মার্কিনীদের বিপদে ফেলার কোনো সুযোগ থাকবে না।
এফবিআই পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল পরবর্তীতে বলেন, গ্রেপ্তারের উদ্যোগে তার সংস্থার এজেন্টরাও অবদান রেখেছেন।
সোমবার রাতে এক সশস্ত্র অপরাধী লোগান সার্কেলে বন্দুক হামলা চালিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যা করার পর ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের উদ্যোগ নেন। হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র এক মাইল দূরে অবস্থিত লোগান সার্কেল ডিসির সবচেয়ে জনবহুল ও জনপ্রিয় লোকালয়ের অন্যতম।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, লোগান সার্কেলের বন্দুক হামলা ২০২৫ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে ১০০তম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
ভোরের আকাশ/তা.কা