× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পাবনার প্রবীণ শিক্ষক এখন রাজমিস্ত্রির জোগালি!

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫ ১০:০৭ এএম

রাজমিস্ত্রীর জোগালি হিসেবে খোয়া বস্তায় বরছেন গয়ানাথ সরকার

রাজমিস্ত্রীর জোগালি হিসেবে খোয়া বস্তায় বরছেন গয়ানাথ সরকার

প্রতিদিন ভোর সকালে ভাঙাচোরা একটি বাই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পড়াতে, ফিরতেন রাতে। অনেকেই তার কাছে প্রাইভেট পড়ে  উচ্চ জায়গায় পৌঁছেছেন।  মাস শেষে অনেক শিক্ষার্থী টাকা দিয়েছে আবার কেউবা দিতে পারেনি। কোনদিনও তিনি সে টাকা চাননি।

কিন্তু আজ তিনি ভাগ্যের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। একসময় হাতে খাতা ও পকেটে কলম থাকলেও বর্তমানে রাজমিস্ত্রীর জোগালির কাজ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষক গয়ানাথ সরকার।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের এই প্রবীণ শিক্ষক।তিনি রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্ত্রী ও তিন সন্তানের ভরণপোষণ এবং লেখাপড়া টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বড় ছেলে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে, দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেণিতে এবং মেয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। প্রাইভেট পড়িয়ে এবং ওই কেজি স্কুলে চাকরি করে যে টাকা আয় করতেন তাতে করে ভালোই চলত তার। কিন্তু বেতন না বাড়ায় স্কুলের চাকরি ছেড়ে দেন গয়ানাথ সরকার। এরপর প্রাইভেট পড়ানোয় সীমাবদ্ধ থাকেন।

দারিদ্রের কারণে নিজের পড়ালেখা হয়নি বলে তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ করার ইচ্ছে নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছেন তিনি।

‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাস করেন গয়ানাথ সরকার । কিন্তু পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। শুরু করেন প্রাইভেট পড়ানো। পাশাপাশি দিনমজুরির কাজ করেও তিনি জীবনযাপন করতেন। ইংরেজি ও অঙ্কে পারদর্শী ছিলেন। পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশায় মনোনিবেশ করেন।

‎দিন-রাত ব্যাচ আকারে প্রাইভেট পড়াতে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যেই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে গয়ানাথের শিক্ষকতার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ এলাকায়। বাড়ি বাড়ি পড়ানো শুরু করেন। এরপর পৌর শহরে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে চাকরি পান। অল্প বেতন হলেও শুধু সম্মানের জন্য এই পেশাকে আঁকড়ে ধরেন।

‎চাটমোহর পৌর এলাকার বিভিন্ন স্কুলের যেসব ছাত্রছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন তিনি, সেসব স্কুল থেকে অভিভাবকদের বলা হয়েছিল, 'স্কুলের শিক্ষকদের কাছে না পড়ালে নম্বর কম পেলে এ জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় বলে হুমকি দেওয়া হয়।' এরপর থেকেই  গয়ানাথের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যায়। একটা সময় পুরোপুরি বেকার হয়ে পড়েন প্রবীণ এই শিক্ষক। দিশেহারা হয়ে পড়েন সংসার চালাতে। বেঁচে নেন এমন কষ্টের পথ।

‎এক দিকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  অন্যদিকে তিন সন্তানকে পড়াশোনার টাকা জোগাড় করতে হচ্ছে। তার কাছে পড়ে অনেকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ও বড় বড় উচ্চ স্থানে পৌঁছালেও আজকে তিনি রাজমিস্ত্রীর জোগালির কাজ করছেন। দিনে ৩০০/৪০০ টাকা করে মজুরি পেয়ে থাকেন। এটা দিয়েই কোনোমতে সংসারের চাকা ঘুরিয়ে থাকেন।

‎এলাকাবাসীর কয়েকজন বলেন, অনেক বছর ধরে আমরা দেখতেছি তিনি কঠোর পরিশ্রম করে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতেন। নিজের বাড়িতেও ব্যাচ করে পড়াতেন। অল্পদিনেই ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিলেন। আমরা দেখেছি সে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি। কারও সঙ্গে কোনোদিন অসদাচরণ করেননি। সাধারণভাবে জীবনযাপন করছেন। সবার সঙ্গে মিষ্টি ভাষায় কথা বলতেন। এখন দেখতেছি তিনি রাজমিস্ত্রীর জোগালির কাজ করছেন। এটা খুবই দু:দুঃখজনক। তার একটা ব্যবস্থা হওয়া দরকার।

‎তারা আরও বলেন,  বর্তমান সময়ে অনেকে অসদুপায়ে উপার্জন করে থাকেন। সমাজে অনেকে মাদক ব্যবসা ও সুদের ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু তিনি শিক্ষক হয়েও ওসব অসৎ পথ বেঁচে নেননি। তাদের মত মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রে দরকার আছে।

‎ ইব্রাহিম হোসেন মোল্লা নামের এক অভিভাবক  বলেন, আমার ছেলে ছোটবেলা অঙ্কে বেশ দুর্বল ছিল। অনেক দূর থেকে আমার ছেলেকে গয়ানাথ স্যারের কাছে নিয়ে আসতাম। এই লোকটি শত-শত শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। ব্যাপা আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু তিনি আজকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবনযাপন করছেন। এটি খুবই দু:দুঃখজনক ব্যাপার। তার একটি কর্মসংস্থান হওয়া জরুরি।

‎শিক্ষক গয়ানাথ সরকার বলেন, অসংখ্য ছাত্রকে প্রাইভেট পড়িয়েছি। অনেকের ভালো কর্মসংস্থান হয়েছে। অনেক টাকা বেতন পেয়ে তারা খুবই সুখে আছে। এটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা পেশায় থাকলেও এখন আমি রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালাচ্ছি।  ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস যে আমাকেও রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে হবে। এটি করতে লজ্জা লাগলেও সংসার পরিচালনা করার জন্য আমাকে করতেই হবে।

‎চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। আমি তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেবো। তার সাথে কথা বলে তার প্রত্যাশা কি জেনে আমরা উপজেলা প্রশাসন তার পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায় সেই চেষ্টা করবো।

ভোরের আকাশ/মো.আ.

  • শেয়ার করুন-
৬০০ টাকা ভাতায় ৩৫ বছর, মাতৃস্নেহে বধির ইনস্টিটিউটে রাবেয়া

৬০০ টাকা ভাতায় ৩৫ বছর, মাতৃস্নেহে বধির ইনস্টিটিউটে রাবেয়া

ছাত্রী নিয়ে উধাও শিক্ষক, বাবাকে নিয়ে ছেলের আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল

ছাত্রী নিয়ে উধাও শিক্ষক, বাবাকে নিয়ে ছেলের আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল

প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে পিরোজপুরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে পিরোজপুরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

জয়পুরহাটে শিক্ষার্থীদের বেদম পেটালেন শিক্ষক

জয়পুরহাটে শিক্ষার্থীদের বেদম পেটালেন শিক্ষক

ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

 মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য নতুন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা বিসিবির

 তুর্কি ড্রামা ‘কুরলুস উসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন স্কটল্যান্ডের নারী

তুর্কি ড্রামা ‘কুরলুস উসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন স্কটল্যান্ডের নারী

 মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবস্থলে সামরিক বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৪০

মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবস্থলে সামরিক বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৪০

 বদলি ও পদায়নে নতুন নীতিমালা কার্যকর করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বদলি ও পদায়নে নতুন নীতিমালা কার্যকর করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

 যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে

 ট্রাম্পের জন্মদিনে হোয়াইট হাউসে ইউএফসি লড়াই: ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

ট্রাম্পের জন্মদিনে হোয়াইট হাউসে ইউএফসি লড়াই: ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

 বিয়ের সাজে কেয়া পায়েল: অভিনয় ও ব্যবসার দুই জগতেই নজর কাড়লেন তিনি

বিয়ের সাজে কেয়া পায়েল: অভিনয় ও ব্যবসার দুই জগতেই নজর কাড়লেন তিনি

 শাকিব খানের ‘সোলজার’-এর প্রথম লুক প্রকাশ

শাকিব খানের ‘সোলজার’-এর প্রথম লুক প্রকাশ

 বিসিবি নির্বাচনের পর কমিটিতে দায়িত্ব বণ্টন সম্পন্ন

বিসিবি নির্বাচনের পর কমিটিতে দায়িত্ব বণ্টন সম্পন্ন

 আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে সিরিজ শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে সিরিজ শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের

 বাংলাদেশ-সৌদি আরবের সম্পর্ক ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের প্রতীক’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশ-সৌদি আরবের সম্পর্ক ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের প্রতীক’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

 ২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

 পে স্কেল নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

পে স্কেল নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

 দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৫০ ইমাম নিহত, ৮৩৫ মসজিদ ধ্বংস

দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৫০ ইমাম নিহত, ৮৩৫ মসজিদ ধ্বংস

 নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মালদ্বীপে প্রবাসীদের স্মারকলিপি

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মালদ্বীপে প্রবাসীদের স্মারকলিপি

 কখন বুঝবেন আপনার শরীর ও মন বিশ্রাম চাইছে

কখন বুঝবেন আপনার শরীর ও মন বিশ্রাম চাইছে

 সকালে কমলার রস খাওয়া কি ক্ষতিকর? জানুন বিশেষজ্ঞদের মতামত

সকালে কমলার রস খাওয়া কি ক্ষতিকর? জানুন বিশেষজ্ঞদের মতামত

 যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় কখনোই এআইয়ের পরামর্শ নেওয়া উচিত নয়

যেসব স্বাস্থ্য সমস্যায় কখনোই এআইয়ের পরামর্শ নেওয়া উচিত নয়

 শেখ হাসিনা ও কামাল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা

শেখ হাসিনা ও কামাল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা

সংশ্লিষ্ট

পাংশায় ওয়ান শুটারগান সহ দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার

পাংশায় ওয়ান শুটারগান সহ দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার

খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যা

খুলনায় যুবককে গুলি করে হত্যা

অপূর্ব পাল কর্তৃক পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদ

অপূর্ব পাল কর্তৃক পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদ

দিন যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী উৎফুল্লতা ততটাই বাড়ছে

দিন যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী উৎফুল্লতা ততটাই বাড়ছে