বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৫ এএম
বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ
বাগেরহাটের রামপাল ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয় সন্ন্যাসী বাজারের অন্তত ২০টি দোকান ও কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে নেতাকর্মীরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়,রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কয়েকমাস ধরে দুই সভাপতি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। বিভিন্ন সময় উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে ।
শনিবার (২ আগস্ট) রাতে ইউনিয়নের বেতবুনিয়া পাকা রাস্তার মাথায় মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আলিমের লোকজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১জনকে মারধর করেন। ওই রাতেই আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মারধরের প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে রোবরার বিকেলে আব্দুল আলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের লোকজন পুলিশের অনুমতিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
এসময় আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন অতর্কিতভাবে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজনের উপর হামলা করে। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজুসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। হামলার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজন আব্দুল আলিমের লোকজনের উপর হামলা করে। তারা আব্দুল আলিমের বসতবাড়ি,সন্ন্যাসী বাজারের ২০টি দোকান ভাঙচুর করেন।
সন্ন্যাসী বাজারে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু, সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন দফায় দফায় আব্দুল আলিমের লোকজনকে ধাওয়া করে এবং বাজারের বিভিন্ন দোকান ভাঙচুর করেছেন। আর বাজারের পাশে থাকা দুটি ভবনের ছাদ থেকে সাজুর লোকদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছেন আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন। পুলিশ থামানোর চেষ্টা করলেও ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা থামেননি। কিছুক্ষণ পরে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কয়েক মিনিটের জন্য শান্ত হলেও পরে পুলিশের সামনেই আবারও লাঠিশোটা, ধারালো অস্ত্র নিয়ে দোকান ও পাশে থাকা আব্দুল আলিমের বাড়ি ভাঙচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে সন্ধ্যার আগমুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা তাদের চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।
সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের জনপ্রিয়তা দেখে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী নিজেদের ভরাডুবি ভেবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য আমাদের লোকদের উপর হামলা করেছে। তাদের হামলায় আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও মজনুর নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, রামপাল থানা পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে।
সংঘর্ষে আহত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন আমাদের হামলা করেছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে; কিন্তু তারা অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা করে।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারকে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভোরের আকাশ/মো.আ.