গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫ ১০:০০ এএম
সংগৃহীত ছবি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হওয়ায় গোপালগঞ্জে কারফিউ চলছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবৎ থাকবে।
আজ সকাল থেকে রাস্তায় খুব একটা গাড়ি দেখা যায়নি। অফিসগামী মানুষ ছাড়া তেমন কেউ ঘর থেকে বেরও হয়নি। রাস্তায় কোথাও পুলিশ চোখে না পড়লেও কয়েকটি জায়গায় আনসার সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জ শহরে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নামে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে এনসিপি। তবে সকাল ৯টার পর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল ও সমাবেশে বাধা দিয়ে হামলা চালান।
সদর উপজেলার কংশুরে পুলিশের গাড়ি, ইউএনওর বহর, পৌর পার্কের সমাবেশস্থল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, এমনকি জেলা কারাগারের চারপাশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
দুপুর ২টার কিছু পর এনসিপির শীর্ষ নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। সমাবেশ শেষে ফেরার সময় তাদের ওপর আবার হামলা হয়। একপর্যায়ে তারা জেলা পুলিশের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে সন্ধ্যায় এনসিপি নেতাদের গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় নেওয়া হয়।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে গতকাল দিনভর দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন। হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীরা বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মাইক ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তারা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নির্লিপ্ত ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগসহ রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকাতেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, রাতের পরিস্থিতি বিবেচনায় গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র। তবে শহরে প্রবেশের পথে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করায় অনেক পুলিশ সদস্য ঢুকতে পারেননি বলে জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ