গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫ ১২:৫২ পিএম
ছবি : ভোরের আকাশ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে খুচরা সার ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিন।
এর আগে গতকাল সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশের পিনুর মোড় এলাকার বাদশা মিয়া (৫৫) নামের এক খুচরা সার ব্যবসায়ীর ঘর থেকে এসব সার গুলো জব্দ করা হয়। বাদশা মিয়া ওই ইউনিয়নের হুড়াভায়াখাঁ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম।
প্রশাসনের তথ্যমতে, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং অধিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাদশা মিয়ার দোকানে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ টিএসপি সার মজুত করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সেগুলো জব্দ করে। তদন্তে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া সার গুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল সরকার এবং মৃত প্রদীপ সরকারের বরাদ্দকৃত। তারা এ সার অবৈধভাবে বাদশা মিয়ার দোকানে মজুত করেন বিক্রির উদ্দেশ্যে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, সারগুলো পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মজুত করা হয়েছিল এবং তা কালোবাজারে বিক্রি করার জন্যই রাখা হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেন, ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ কুমার দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বরাদ্দের সার নির্ধারিত গোডাউনে না রেখে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে গোপনে বাজারজাত করে আসছেন। এতে উপজেলা কৃষি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতাও রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাইবান্ধা জেলা বাফার ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ বলেন, 'উদ্ধার হওয়া সারগুলো ডিলার ননি গোপাল সরকার উত্তোলন করেন। সার পরিবহনকারী ট্রাকের নম্বর ছিল ঢাকা মেট্রো-ন ১৯-৫৯৮৫।'
ডিলার ননি গোপালের ছেলে রিপন এ বিষয়ে বলেন, 'প্রদীপ চন্দ্রের বরাদ্দকৃত সার আমি তার ম্যানেজার জয়ন্ত বাবুকে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাদশা মিয়ার ঘরে কীভাবে গেল, তা জয়ন্ত বাবুই ভালো বলতে পারবেন।
মৃত প্রদীপ সরকারের ম্যানেজার জয়ন্ত বাবু বলেন, 'সারগুলো বিক্রি করা হয়নি। গোডাউনে জায়গার অভাবে পাশের ইউনিয়নের খুচরা ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার ঘরে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছিল।'
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, 'বিষয়টি জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং সারগুলো জব্দ করি। বর্তমানে সারগুলো আমার জিম্মায় রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিন বলেন, 'ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩৩ বস্তা টিএসপি সার উদ্ধার করি। তবে ঘরটি তালাবদ্ধ থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত সার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, সারগুলো বিসিআইসি ডিলার ননি গোপাল ও প্রদীপ সরকারের বরাদ্দকৃত। তাদের গোডাউন সোনারায় ইউনিয়নের ছাইতানতোলা বাজার এবং রামজীবন ইউনিয়নের ডোমের হাট বাজারে অবস্থিত। দহবন্দে এই সার কীভাবে এলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ